ইমান বুখারী বলেন, আমি আমার এই কিতাব মসজিদুল হারামে বসে রচনা করেছি এবং আমি সেখানে কোন হাদীছ প্রবেশ করাইনি যতক্ষণ না আমি ইস্তিখারাহর দু’রাক‘আত নফল ছালাত আদায় করেছি এবং হাদীছটি বিশুদ্ধ হওয়ার ব্যাপারে নিশ্চয়তা লাভ করেছি।
ভাষ্যকার ইবনু হাজার আসক্বালানী বলেন, এর অর্থ এই হ’তে পারে যে, তিনি প্রথমে দেশে বসে এটি সংকলন করেন। অতঃপর এটির রচনা ও অনুচ্ছেদ সমূহ বিন্যস্ত করেন মাসজিদুল হারামে বসে। এরপরে তিনি হাদীছ সমূহের তাখরীজ বা বিশুদ্ধতা যাচাই করেছেন নিজের দেশে বা অন্যত্র গিয়ে।
যেটা তাঁর কথায় বুঝা যায় যে, তিনি সেখানে ১৬ বছর অবস্থান করেছিলেন। কেননা তিনি এই দীর্ঘ সময়ের পুরাটা মক্কায় কাটাননি’। ইবনু ‘আদী একদল বিদ্বান থেকে বর্ণনা করেন যে, ইমাম বুখারী তাঁর কিতাবের ‘শিরোনাম সমূহ’ (تراجم) নির্ধারণ করেছিলেন রাসূল (ছাঃ)-এর কবর ও মিম্বরের মধ্যবর্তী স্থানে বসে। এ সময় তিনি প্রতিটি শিরোনামের জন্য দু’রাক‘আত করে ছালাত আদায় করেন। ভাষ্যকার ইবনু হাজার বলেন, পূর্বের সাথে এটির কোন বৈপরীত্য নেই। কেননা হ’তে পারে তিনি প্রথমে এগুলির খসড়া প্রস্ত্তত করেছিলেন। অতঃপর এখানে বসে চূড়ান্ত করেন (ফাৎহুল বারীর ‘ভূমিকা’ খন্ড (কায়রো : দারুর রাইয়ান ২য় সংস্করণ ১৪০৭/১৯৮৭) ৫১৩-১৪ পৃঃ)।
তিনি আরও বলেন, আমি আমার কিতাবে প্রতিটি হাদিস লেখার পূর্বেই গোসল করেছি এবং দু রাকাআত নামায আদায় করে নিয়েছি। অপর বর্ণনা হতে জানা যায় যে, ইমাম বুখারী তাঁর স্বীয় কিতাবের শিরোনাম সমূহ রাসুলে করিম এর রওজা এবং মসজিদে নববির মধ্যস্থলে বসে লিখেছিলেন এবং প্রত্যেক শিরোনামের জন্য দুরাকায়াত নফল নামাজ আদায় করেছেন। ইমাম বুখারীর প্রায় ৬ লাখ হাদীস মুখস্থ ছিল।
বুখারী শরীফের পুরো নাম হলোঃ আল-জামি আল-সাহীহ আল-মুসনাদ মিন উমুরি রাসূলিল্লাহ ওয়া সুনানিহি ওয়া আইয়ামিহি। বুখারি শরীফ প্রণয়ের স্থানঃ আবুল ফজল মোহাম্মদ বিন তাহেরের বর্ণনা মতে, ইমাম বুখারী তাঁর গ্রন্থখানি বুখারাতে বসে রচনার কাজ শেষ করেছেন। আবার কারো মতে মক্কা মুয়াজ্জামায় আবার কারো মতে বসরাতে। তবে উল্লেখিত সকল বর্ণনা নির্ভুল। কেননা তিনি উল্লেখিত স্থানগুলোর সকল নগরীতে অবস্থান করেছেন। স্বয়ং ইমাম বুখারী বলেছেন, আমি আমার সহিহ বুখারি সঙ্গে নিয়ে বসরা শহরে ৫ বছর অবস্থান করেছি এবং আমার কিতাব প্রণয়ের কাজ শেষ করি। আর প্রতি বছরই হজ্ব পালন করি এবং মক্কা হতে বসরাতে ফিরে আসি। তিনি ৬ লাখ হাদিস হতে যাচাই বাছাই করে সর্বসাকুলে ১৬ বছর নিরলস সাধনা করে এ প্রসিধ্য গ্রন্থখানি প্রণয়ন করেন। এখানে মোট হাদিস আছে সাত হাজার একশত পচাত্তর খানি(৭,১৭৫)। আর পুনরুক্ত ছাড়া আছে চার হাজারের (৪,০০০) মতো। আর কারো মতে, বুখারিতে পুনরুক্ত হাদিস আছে মাত্র একখানি যা রুমালের বর্ণনা।
,
وقد ابتدأ تصنيفه في المسجد الحرام، قال البخاري: «صنفت كتابي هذا في المسجد الحرام وما أدخلت فيه حديثاً حتى استخرت الله تعالى وصليت ركعتين وتيقنت صحته»
الحطة في ذكر الصحاح الستة - أبو الطيب محمد صديق خان بن حسن بن علي ابن لطف الله الحسيني البخاري القِنَّوجي (طبعة دار الجيل:ج1 ص178)
সারমর্মঃ
ইমাম বুখারী রহঃ বলেন আমি এই কিতাব মসজিদে হারামে লিখেছি।
এখানে যেকোনো হাদীস লিপিবদ্ধ করার আগে আমি ইস্তেখারা করেছি,দুই রাকাত নামাজ পড়েছি,হাদীস ছহীহ হওয়ার ব্যাপারে একীন হয়েছি।
وجمع تراجمه في المسجد النبوي، قال أبو أحمد بن عدي الجرجاني: «سمعت عبد القدوس بن همام يقول: سمعت عدّة من المشايخ يقولون: حوّل محمد بن إسماعيل البخاري تراجم جامعه بين قبر النبي ومنبره، وكان يصلي لكل ترجمة ركعتين.»
وأكمله وبيّضه في بخارى
تاريخ دمشق - أبو القاسم علي بن الحسن بن هبة الله المعروف بابن عساكر (طبعة دار الفكر:ج52 ص71)
সারমর্মঃ
ইমাম বুখারী রহঃ তরজমাতুল বাব রাসুলুল্লাহ সাঃ এর কবরের সামনে লিপিবদ্ধ করেছেন।
প্রত্যেক তরজমাতুল বাবের জন্য তিনি দুই রাকাত নামাজ পড়তেন।