আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
200 views
in ঈমান ও বিশ্বাস (Faith and Belief) by (10 points)
closed by
আসসালামু আলাইকুম, শায়েখ।

আমার প্রশ্ন,

আমি ইসলামী ফাউন্ডেশন কর্তৃক বুখারী শরীফের বাংলা অনুবাদের বইয়ে পরিচালকের কথা অংশে একটা লিখা দেখি যেখানে লিখা আছে:

" ইমাম বুখারী রাহিমাহুল্লাহ ১৬ বছর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের রওজার পাশে বসে সহিহ হাদীস গুলো লিপিবদ্ধ করার আগে মোরাকাবার মাধ্যমে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সম্মতি লাভ করতেন।"

১. এখানে উনি যেই বিষয়টি উল্লেখ করেছেন আদৌকি এমন কিছু বুখারী রহিমাহুল্লাহ বলেছেন? নাকি এটা উনি নিজে থেকে বানিয়ে বলেছে।

২. যদি না বলে থাকে তাহলে এইধরনের আক্বিদা পোষণ করা কতটুকু শরিয়াহ সম্মত।

জাযাকাল্লাহু খাইরান।
closed

1 Answer

0 votes
by (574,260 points)
selected by
 
Best answer
জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 


(১.২)
ইসলামী ফাউন্ডেশন কর্তৃক বুখারী শরীফের বাংলা অনুবাদে যে লেখাটি আছেঃ
" ইমাম বুখারী রাহিমাহুল্লাহ ১৬ বছর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের রওজার পাশে বসে সহিহ হাদীস গুলো লিপিবদ্ধ করার আগে মোরাকাবার মাধ্যমে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সম্মতি লাভ করতেন।"
,
এটি ছহীহ।

ইমান বুখারী বলেন, আমি আমার এই কিতাব মসজিদুল হারামে বসে রচনা করেছি এবং আমি সেখানে কোন হাদীছ প্রবেশ করাইনি যতক্ষণ না আমি ইস্তিখারাহর দু’রাক‘আত নফল ছালাত আদায় করেছি এবং হাদীছটি বিশুদ্ধ হওয়ার ব্যাপারে নিশ্চয়তা লাভ করেছি।

 ভাষ্যকার ইবনু হাজার আসক্বালানী বলেন, এর অর্থ এই হ’তে পারে যে, তিনি প্রথমে দেশে বসে এটি সংকলন করেন। অতঃপর এটির রচনা ও অনুচ্ছেদ সমূহ বিন্যস্ত করেন মাসজিদুল হারামে বসে। এরপরে তিনি হাদীছ সমূহের তাখরীজ বা বিশুদ্ধতা যাচাই করেছেন নিজের দেশে বা অন্যত্র গিয়ে। 

যেটা তাঁর কথায় বুঝা যায় যে, তিনি সেখানে ১৬ বছর অবস্থান করেছিলেন। কেননা তিনি এই দীর্ঘ সময়ের পুরাটা মক্কায় কাটাননি’। ইবনু ‘আদী একদল বিদ্বান থেকে বর্ণনা করেন যে, ইমাম বুখারী তাঁর কিতাবের ‘শিরোনাম সমূহ’ (تراجم) নির্ধারণ করেছিলেন রাসূল (ছাঃ)-এর কবর ও মিম্বরের মধ্যবর্তী স্থানে বসে। এ সময় তিনি প্রতিটি শিরোনামের জন্য দু’রাক‘আত করে ছালাত আদায় করেন। ভাষ্যকার ইবনু হাজার বলেন, পূর্বের সাথে এটির কোন বৈপরীত্য নেই। কেননা হ’তে পারে তিনি প্রথমে এগুলির খসড়া প্রস্ত্তত করেছিলেন। অতঃপর এখানে বসে চূড়ান্ত করেন (ফাৎহুল বারীর ‘ভূমিকা’ খন্ড (কায়রো : দারুর রাইয়ান ২য় সংস্করণ ১৪০৭/১৯৮৭) ৫১৩-১৪ পৃঃ)।

তিনি আরও বলেন, আমি আমার কিতাবে প্রতিটি হাদিস লেখার পূর্বেই গোসল করেছি এবং দু রাকাআত নামায আদায় করে নিয়েছি। অপর বর্ণনা হতে জানা যায় যে, ইমাম বুখারী তাঁর স্বীয় কিতাবের শিরোনাম সমূহ রাসুলে করিম এর রওজা এবং মসজিদে নববির মধ্যস্থলে বসে লিখেছিলেন এবং প্রত্যেক শিরোনামের জন্য দুরাকায়াত নফল নামাজ আদায় করেছেন। ইমাম বুখারীর প্রায় ৬ লাখ হাদীস মুখস্থ ছিল। 

বুখারী শরীফের পুরো নাম হলোঃ আল-জামি আল-সাহীহ আল-মুসনাদ মিন উমুরি রাসূলিল্লাহ ওয়া সুনানিহি ওয়া আইয়ামিহি। বুখারি শরীফ প্রণয়ের স্থানঃ আবুল ফজল মোহাম্মদ বিন তাহেরের বর্ণনা মতে, ইমাম বুখারী তাঁর গ্রন্থখানি বুখারাতে বসে রচনার কাজ শেষ করেছেন। আবার কারো মতে মক্কা মুয়াজ্জামায় আবার কারো মতে বসরাতে। তবে উল্লেখিত সকল বর্ণনা নির্ভুল। কেননা তিনি উল্লেখিত স্থানগুলোর সকল নগরীতে অবস্থান করেছেন। স্বয়ং ইমাম বুখারী বলেছেন, আমি আমার সহিহ বুখারি সঙ্গে নিয়ে বসরা শহরে ৫ বছর অবস্থান করেছি এবং আমার কিতাব প্রণয়ের কাজ শেষ করি। আর প্রতি বছরই হজ্ব পালন করি এবং মক্কা হতে বসরাতে ফিরে আসি। তিনি ৬ লাখ হাদিস হতে যাচাই বাছাই করে সর্বসাকুলে ১৬ বছর নিরলস সাধনা করে এ প্রসিধ্য গ্রন্থখানি প্রণয়ন করেন। এখানে মোট হাদিস আছে সাত হাজার একশত পচাত্তর খানি(৭,১৭৫)। আর পুনরুক্ত ছাড়া আছে চার হাজারের (৪,০০০) মতো। আর কারো মতে, বুখারিতে পুনরুক্ত হাদিস আছে মাত্র একখানি যা রুমালের বর্ণনা।

,

وقد ابتدأ تصنيفه في المسجد الحرام، قال البخاري: «صنفت كتابي هذا في المسجد الحرام وما أدخلت فيه حديثاً حتى استخرت الله تعالى وصليت ركعتين وتيقنت صحته» 

الحطة في ذكر الصحاح الستة - أبو الطيب محمد صديق خان بن حسن بن علي ابن لطف الله الحسيني البخاري القِنَّوجي (طبعة دار الجيل:ج1 ص178)
সারমর্মঃ
ইমাম বুখারী রহঃ বলেন আমি এই কিতাব মসজিদে হারামে লিখেছি।
এখানে যেকোনো হাদীস লিপিবদ্ধ করার আগে আমি ইস্তেখারা করেছি,দুই রাকাত নামাজ পড়েছি,হাদীস ছহীহ হওয়ার ব্যাপারে একীন হয়েছি।  


وجمع تراجمه في المسجد النبوي، قال أبو أحمد بن عدي الجرجاني: «سمعت عبد القدوس بن همام يقول: سمعت عدّة من المشايخ يقولون: حوّل محمد بن إسماعيل البخاري تراجم جامعه بين قبر النبي   ومنبره، وكان يصلي لكل ترجمة ركعتين.»
 وأكمله وبيّضه في بخارى
تاريخ دمشق - أبو القاسم علي بن الحسن بن هبة الله المعروف بابن عساكر (طبعة دار الفكر:ج52 ص71)
সারমর্মঃ
ইমাম বুখারী রহঃ তরজমাতুল বাব রাসুলুল্লাহ সাঃ এর কবরের সামনে লিপিবদ্ধ করেছেন।
প্রত্যেক তরজমাতুল বাবের জন্য তিনি দুই রাকাত নামাজ পড়তেন।
,
এটি এমন কোনো ঘটনা নয় যে বিশ্বাস করতেই হবে।
না করলে ঈমানের সমস্যা হবে,এমন কিছুই নয় এটি।
,
এই ঘটনার সাথে ঈমান আকীদার কোনো সম্পর্ক নেই। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (10 points)
আমি বলতে চাচ্ছিলাম পরিচালক লিখেছেন যে উনি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে সম্মতি লাভ করতেন, আর আপনার উত্তর হল তিনি ইস্তিখারা করেন তার পর লিপিবদ্ধ করতেন অর্থাৎ যা আল্লাহর সম্মতি লাভ। অর্থাৎ তিনি কথাটি ভুল বললেন না?

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...