আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

+1 vote
249 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (20 points)
আসসালামু আলাইকুম
আমি একজন মারাত্মক সংশয়বাদী মানুষ,যার কারনে আমার জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠছে....

একটা ব্যপারে আমি কিছুতেই কোন সিদ্ধান্তে আসতে পারছি না,তাই আপনাদের সাহায্য চাচ্ছি

সমস্যাটা বৈবাহিক সম্পর্কে সমস্যা হওয়া নিয়ে (প্লিজ বুজে নিবেন কারন আমি ওই কথাটা লিখতে ভয় পাই,উচ্চারণ করতেও ভয় পাই)

সমস্যাটা হলো আমি মহিলা হয়েও এই ব্যাপারে আমার প্রচুর ওয়াসওয়াসা কাজ করে,,এই ওয়াসওয়াসার জন্য আমি অনেক সময় কারো কথার উত্তর পর্যন্ত দেই না,ভাবনাটা মন থেকে দুর করে নাউজুবিল্লাহ আস্তাগফিরুল্লাহ পড়ে তারপর উত্তর দেই,এমন কি আমি মোনাজাতে মুখে উচ্চারণ করে আল্লাহকে কিছু বলি না এই ভয়ে যে যদি মুখ ফসকে কিছু বের হয়ে যায়,মোনাজাতেও মনে মনেই আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করি

ইদানীং শুধু সব কাজের সাথেই শর্ত জুরে দিতাম,সমস্যা এতটাই বেশি যে এই চিন্তা ছাড়া অন্য কোন চিন্তা আমি এখন করতেই পারছি না,,দিনরাত এমনকি ঘুমের মধ্যেও এই এক চিন্তা আমার মাথায় ঘুরতে থাকে

তবে শর্ত গুলো আমি মনে মনেই বলি,পরে যাতে সন্দেহ না হয় সেজন্য খাতায় সংকেত দিয়ে লিখেও রাখি

কিন্তু এখন আমার মনে হচ্ছে হয়ত দুটা শর্ত আমি মুখেও বলে ফেলছি

কিন্তু
১ঃ- আমার প্রখর চিন্তা শক্তি ধারা যতদূর মনে হয় আমি এগুলো মনে মনেই বলছি

২ঃ-মনে মনে আসা ভাবনাগুলো আমি যে সংকেত দিয়ে লিখে রাখি যাতে করে পরে বুজতে পারি, যেহেতু পুরা কথা লেখা হয়না তাই আমার ধারনা এটা ভাবনার সময় এর আগে পরে ভাবনা সব কিছু যোগবিয়োগ করে আমার ফলাফল আসে আমি কথাগুলো মনে মনেই বলছি

৩ঃ-আমি খেয়াল করে দেখছি যে আমার একা একা কথা বলার অভ্যাস নাই,একা একা যা বলি সেটা মনে মনেই বলি,আর তাছাড়া যখন থেকে আমার এই ওয়াসওয়াসা শুরু হইছে তখন থেকে আমি আরো সতর্ক হয়ে গেছি যাতে আমি একা একা কোন কথাই মুখে না বলি

৪ঃ- যদি মুখে বলিও থাকি তাহলে এমন একটা পুরো বাক্য বলে আমি সেটা খাতায় লিখব না বা যে জিনিসটা আমি ভাবতে লিখতেও ভয় পাই সেই কথা মুখে বলে আমি কোন রিয়েক্ট না করে নরমাল থাকতে পারব এটা আমি হতে পারি না,,কারন মনে মনে ভেবেই আমি স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে পারছি না সেখানে মুখে বলে ওই দিন আমার স্বাভাবিক থাকাটাই অস্বাভাবিক ব্যাপার-

৫ঃযেদিন ভাবনাটা আসে সেদিন সন্দেহ হয় না,,একদুইদিন পর থেকেই সন্দেহ হতে থাকে
৬ঃ-কিভাবে কি শর্ত বলছি সেটাও মনে করতে পারছি না,আধ শর্ত দিয়ে কিছু বলছি নাকি এমনি বলছি সেটাও মনে করতে পারছি না,,,তবে মনের ভেতর যন্ত্রণা হচ্ছে সন্দেহ হচ্ছে  আর মনে হচ্ছে আমি এটা মুখে বলছি আর শর্ত দিয়ে বলছি

এতগুলো যুক্তি আমার কাছে থাকার পরও আমার শুধু মনে হচ্ছে আমি হয়তবা মুখেও বলছি,,আর যে কাজে এমন সন্দেহ হচ্ছে সে কাজ আমি করতে না চাইলেও আমার অজান্তে হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে,তাই শুধু মনে হচ্ছে হায় আল্লাহ যদি আমি মুখেও বলি থাকি তাহলে কি হবে

এখানে উল্লেখ্য যে

১ঃ- বিয়ের দুমাস আগে আমার কাবিন করানো হয়,,ওইদিন আমাকে বা আমার হাসবেন্ডকে কবুল বলানো হইনি

কাবিনের দু মাস পর ইজাব-কবুল মাধ্যমে আমাদের বিয়ে সম্পন্ন করা হয়

কাবিন নামায় অনুমতি দেওয়া আছে কিনা আমরা কেউ জানি না,,কাবিন নামায় সাইন করানোর আগে আমার হাসবেন্ডকে পড়ে শুনানো হলেও সে এতটা নার্ভাস ছিল যে সে এখন মনেই করতে পারছে কি লিখা ছিল

২ঃ- বিয়ের পর আমাদের মধ্যে এমন কোন কথা বা আলোচনা কখনো হইনি যাতে পরবর্তীতে আমাকে অনুমতি দেওয়া হইছে,কারন আমরা কেউ কাউকে ছাড়া থাকার কথা ভাবতেও পারি না

তবে অন্য প্রসংগে যেমন আমি বাপের বাড়ি যেতে চাই,আরো কয়েকদিন থাকতে চাই এসকল কথার উত্তরে হয়ত "তোমার যা ইচ্ছা হয় করবা" এ ধরনের কথা বলে থাকতে পারে

এই ধরনের কথা দ্বারা কি অনুমতি পাওয়া হয়ে যায়,নাকি স্পষ্ট ভাবে ওই কথা বলে অনুমতি দিতে হবে?

এখন আমি কি করব তীব্র ধারনা যুক্তির উপর ভিত্তি করে নিশ্চিন্ত থাকব যে ওই কাজ করলেও আমার বৈবাহিক সম্পর্কে কোন সমস্যা হবে না
নাকি সন্দেহকে গুরুত্ব দিয়ে পুরা পাগল হয়ে যাব,কেননা এই কাজ আমি না চাইলেও হয়ে যেতে পারে

২ঃ- কোন মহিলা পুরুষকে শর্ত দিয়ে.... দিলে তা কার্যকর হয়না,কিন্তু কোন মহিলা শর্তে নিজের উপর দিলে সেটা কি কার্যকর হবে?

নাকি কেনায়া শর্ত এগুলো শুধু পুরুষের জন্যই প্রযোজ্য?

1 Answer

0 votes
by (559,140 points)
জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 


(০১)
ইসলামের মূল থিউরী হল স্বামী স্ত্রীর মাঝে বিচ্ছেদ না হোক। তারা মিলেমিশে থাকুক। সমস্যা হলে উভয়ে বসে তা সমাধানের চেষ্টা করা উচিত। তাতে সমস্যার সমাধান না হলে পারিবারিক মুরুব্বীদের পরামর্শের আলোকে সমাধান করা উচিত। তারপরও যদি সমাধান না আসে। তাহলে নিরূপায় অবস্থায় ইসলাম তালাক দেবার অধিকার দিয়েছে স্বামীকে।

হাদীস শরীফে এসেছে   

عن ابن عمر رضي اللّٰہ عنہما أن رسول اللّٰہ صلی اللّٰہ علیہ وسلم قال: أبغض الحلال إلی اللّٰہ عزوجل الطلاق۔ (سنن أبي داؤد ۱؍۳۰۳، المستدرک للحاکم ۲؍۲۱۸ رقم: ۲۸۰۹، السنن الکبریٰ ۷؍۳۱۶)

রাসুলুল্লাহ সাঃ বলেন যে সবচেয়ে নিকৃষ্টতম হালাল হলো তালাক প্রদান করা।
,
★শরীয়তের বিধান অনুযায়ী  মহিলা নিজের উপর কেবল তখনি তালাক পতিত করতে পারবে, যদি স্বামী তাকে তালাক দেবার অধিকার দিয়ে থাকে।
.
এ অধিকার বিবাহ সম্পন্ন হওয়ার পর দিলে তা অধিকার বলে সাব্যস্ত হবে।
বিবাহ সম্পন্ন হওয়ার পূর্বে এ অধিকার দিলে সেটি তালাকে তাফবিজের অধিকার বলে সাব্যস্ত হবেনা।
,
যদি নিকাহনামা ইজাব কবুল হওয়ার পর লেখা হয়,এবং স্বামী জেনে শুনে ১৮ নং ধারায় স্ত্রীকে তালাকের ক্ষমতা দিয়ে থাকে,তাহলে স্ত্রী তালাকে তাভবিজের ক্ষমতা প্রাপ্ত হবে।
নতুবা নয়।
,
তালাকে তাভবিজের ক্ষমতা প্রাপ্ত হওয়ার পর স্ত্রী নিজের নফসের উপর তালাক দিতে পারবে।
যদি সে স্বামীকে তালাক দেয়,তাহলে সেটি তালাক হিসেবে সাব্যস্ত হবেনা। 

★★সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে স্ত্রী কোনোভাবেই  তালাক প্রদানের ক্ষমতা পায়নি।
তাই তার তালাক যেভাবেই দিক,তাহা কার্যকর হবেনা।

আরো জানুনঃ
,
(০২)
তালাক প্রদানের ক্ষমতা প্রাপ্ত হওয়ার পর স্ত্রী যেইভাবেই বলুক,যদি বলে যে আমি আমার নফসকে তালাক প্রদান করিলাম,তাহলে তালাক হয়ে যাবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 388 views
...