আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
182 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (6 points)
আমার জানা মতে,হানাফি মাযহাব অনুযায়ী ইহুদি  খ্রিস্টান দের ইসলামিক আইন অনুযায়ী বিচার করা হবে,তাদের নিজেদের ধর্মের আইন অনুযায়ি না।কিন্তু আল্লাহ তো সূরা কাফিরুনে বলেছেন তাদের ধর্ম তাদের,আমাদের ধর্ম আমাদের।এটা কি তাদের উপর জুলুম হচ্ছে না?

ইবন হাজার(রহি.) তার আল-মুহাল্লাহ তেও এই কথাই বলেছেন বলে আমি জানি।এটার পর্যালোচনা করলে উপকৃত হবো।পাশাপাশি হানাফি মাযহাবের দলিল গুলো সম্পর্কে ও জানতে চাচ্ছি।

1 Answer

0 votes
by (574,260 points)
জবাব
بسم الله الرحمن الرحيم 


ইসলামী রাষ্ট্র কখনও কোন অমুসলিমকে নিজের ধর্মপালনে বাধা দেয়না। কিংবা জোর করে ইসলাম গ্রহণ করতে বাধ্য করেনা। পবিত্র কুরআন এ ব্যাপারে পরিষ্কার ঘোষণা দিয়েছেঃ-
لَاۤ اِکۡرَاہَ فِی الدِّیۡنِ

“দ্বীন গ্রহণের ব্যাপারে কোন জোর-যবরদস্তি নেই।” (আল-বাকারাঃ ২৫৬)
,
★তাদের উপাসনালয়ের উপর হস্তক্ষেপ না করা। কেননা,নিজ নিজ ধর্ম পালন করার অধিকারও ব্যক্তিগত অধিকারের অন্তর্ভুক্ত।

প্রত্যেকটি অমুসলিম নাগরিক সম্পূর্ণ নিরাপদ ও নিশ্চিন্ত মনে নিজ নিজ উপসনালয়ে যাতায়াত করবে। কেউ তাদের নিরাপত্তা বিঘ্নিত করতে পারবে না। আবু উবায়দ (রহঃ) ‘কিতাবুল আমওয়াল’ নামক গ্রন্থে এমন কতিপয় অঞ্চলের নাম উল্লেখ করেছেন, যা খিলাফতের নিকট পরাজিত হয়েছিল। কিন্তু সেখানের অধিবাসী অমুসলিমদেরকে তাদের ধর্ম পালন এবং উপাসনার পূর্ণ সুযোগ দেওয়া হয়েছিল। অমুসলিমদের ধর্মীয় স্থাপনা বা উপসনালয়ের কোন ক্ষতিসাধন তো দূরের কথা বরং খিলাফত নিজ দায়িত্বে সেগুলো রক্ষণাবেক্ষণ করে থাকে। ইতিহাস স্বাক্ষী, খিলাফত যখন জেরুজালেম শাসন করছিল, তখন খৃষ্টানদের চার্চ এবং গির্জাগুলোকে খুবই ভালভাবে সংরক্ষণ করা হয়েছিল। শুধু তাই নয়, তাদের একটি গুরুত্বপূর্ণ গীর্জার সম্পূর্ণ রক্ষণাবেক্ষন করত একটি মুসলিম পরিবার।

★★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই, 
ইসলামী রাষ্ট্রের আইন,বিচার দ্বারা মানুষকে ইসলাম গ্রহণ করতে বাধ্য করে না, বরং এর দ্বারা দুনিয়া থেকে অন্যায় অনাচার দূর করে ন্যায় ও শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য আদেশ দিয়েছে। এতে প্রমাণিত হয় যে, এটি (لَا إِكْرَاهَ فِي الدِّينِ) আয়াতের পরিপন্থী নয়।
,
,
ইসলামী রাষ্ট্রে যেসব অমুসলিম জিযিয়া/কর দিয়ে থাকবে,তারা ইসলামী শাসন ব্যবস্থা মেনে নিয়েই থাকে।
,
ইসলামী রাষ্ট্রে যেসব অমুসলিম জিযিয়া/কর দিয়ে থাকবে,তারা কোনো মামলা আদালতে তুললে তাদের বিচার কার্য যে ইসলামী আইন অনুযায়ী হবে,সেটির দলিলঃ 

মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ    

سَمّٰعُوۡنَ لِلۡکَذِبِ اَکّٰلُوۡنَ لِلسُّحۡتِ ؕ فَاِنۡ جَآءُوۡکَ فَاحۡکُمۡ بَیۡنَہُمۡ اَوۡ اَعۡرِضۡ عَنۡہُمۡ ۚ وَ اِنۡ تُعۡرِضۡ عَنۡہُمۡ فَلَنۡ یَّضُرُّوۡکَ شَیۡئًا ؕ وَ اِنۡ حَکَمۡتَ فَاحۡکُمۡ بَیۡنَہُمۡ بِالۡقِسۡطِ ؕ اِنَّ اللّٰہَ یُحِبُّ الۡمُقۡسِطِیۡنَ ﴿۴۲﴾

তারা (ইহুদিরা)  মিথ্যা শুনতে খুবই আগ্রহশীল এবং অবৈধ সম্পদ খাওয়াতে অত্যন্ত আসক্ত; সুতরাং তারা যদি আপনার কাছে আসে তবে তাদের বিচার নিষ্পত্তি করবেন বা তাদেরকে উপেক্ষা করবেন। আপনি যদি তাদেরকে উপেক্ষা করেন তবে তারা আপনার কোন ক্ষতি করতে পারবে না। আর যদি বিচার নিষ্পত্তি করেন তবে তাদের মধ্যে ন্যায় বিচার করবেন; নিশ্চয়ই আল্লাহ্ ন্যায়পরায়ণদেরকে ভালবাসেন।
,
★আলোচ্য আয়াতে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে ক্ষমতা দিয়ে বলা হয়েছে যে, আপনি ইচ্ছা করলে তাদের মোকাদ্দামার ফয়সালা করুন, নতুবা নির্লিপ্ত থাকুন। আরো বলা হয়েছে যে, আপনি যদি নির্লিপ্ত থাকতে চান তবে তারা আপনার কোন ক্ষতি করতে পারবে না। পরে বলা হয়েছে, যদি আপনি ফয়সালাই করতে চান, তবে ইনসাফ ও ন্যায়বিচার সহকারে ফয়সালা করুন। অর্থাৎ নিজ শরীআত অনুযায়ী ফয়সালা করুন। 

কেননা, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নবী হওয়ার পর পূর্ববর্তী সমস্ত শরীআত রহিত হয়ে গেছে। কুরআনে যেসব আইন বহাল রাখা হয়েছে, সেগুলো অবশ্য রহিত হয়নি। [বাগভী]

আব্দুল্লাহ ইবন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহুমা বলেনঃ বনু-নদ্বীর এবং বনু-কুরাইযার মধ্যে যুদ্ধ হত। বনু-নদ্বীর বনু-কুরাইযা থেকে নিজেদেরকে সম্মানিত দাবী করত। বনু-কুরাইযার কোন লোক যদি বনু-নদ্বীরের কাউকে হত্যা করত তাহলে তাকেও হত্যা করা হত। কিন্তু বনু-নদ্বীর যদি বনু-কুরাইযার কাউকে হত্যা করত তাহলে এর বিনিময়ে একশ’ ওসাক খেজুর রক্তপণ হিসাবে আদায় করত। যখন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে আল্লাহ্ তা'আলা মদীনায় পাঠালেন, তখন বনু-নদ্বীরের এক লোক বনু-কুরাইযার এক ব্যক্তিকে হত্যা করল। বনু-কুরাইযা তাদের লোকের হত্যার বিনিময়ে কেসাস দাবী করল। তারা বললঃ আমরা মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট যাব এবং শেষ পর্যন্ত তার কাছেই আসল। তখন এ আয়াত নাযিল হয়। [আবু দাউদঃ ৪৪৯৪]

جاء في الموسوعة الفقهية: لا خلاف بين الفقهاء في أن الحد لا يجب إلا على مكلف .. وأما الإسلام فالأصل عند أبي حنيفة أن الحدود تقام على الذميين ولا تقام على مستأمن, إلا حد القذف فيقام عليه باتفاق فقهاء الحنفية، ولا يقام على الكافر حد الشرب عندهم، وفي حد الزنى تفصيل، قال أبو حنيفة: إذا زنى الحربي المستأمن بذمية تحد الذمية ولا يحد الحربي، وإذا زنى ذمي بمستأمنة يحد الذمي ولا تحد المستأمنة، وقال أبو يوسف كلاهما يحدان، وقال محمد في الصورة الأولى: لا تحد الذمية أيضا، لأن المرأة تابعة للرجل فامتناع الحد في حق الأصل يوجب امتناعه في حق الفرع ... وذهب المالكية إلى أن الكافر يقام عليه حد القذف والسرقة والقتل ولا يسقط عنه بإسلامه، أما حد الزنى فإنه يؤدب فيه فقط ولا يقام عليه الحد إلا إذا اغتصب امرأة مسلمة فإنه يقتل لنقضه العهد، وكذلك لو ارتكب جريمة اللواط فإنه يرجم، ولا حد عليه في شرب الخمر، وقال الشافعية: يستوفى من الذمي ما ثبت ولو حد زنى أو قطع سرقة, ولا يحد بشرب خمر لقوة أدلة حله في عقيدتهم، ولا يشترط في إحصان الرجم أن يكون مسلما، ولا يقام على المستأمن حد الزنى على المشهور عند الشافعية، ويحد الكافر حد القذف ذميا كان أو معاهدا ... وعند الحنابلة إذا رفع إلى الحاكم من أهل الذمة من فعل محرما يوجب عقوبة مما هو محرم عليهم في دينهم كالزنى والسرقة والقذف والقتل فعليه إقامة حده عليه، لما روى ابن عمر: أن النبي صلى الله عليه وسلم أتي بيهوديين فجرا بعد إحصانهما فأمر بهما فرجما ـ وإن كان يعتقد إباحته كشرب خمر لم يحد, وإن تحاكم مسلم وذمي وجب الحكم بينهم بغير خلاف، ويقطع الذمي بالسرقة، وكذلك المستأمن، وقال ابن حامد: لا يقطع المستأمن، وقد نص أحمد على أنه لا يقام حد الزنى على المستأمن ودليل وجوب القطع أنه حد يطالب به, فوجب عليه كحد القذف. اهـ
সারমর্মঃ
আবু হানিফা রহঃ এর মাযহাব এর মত হলো ইসলামী রাষ্ট্রে যেসমস্ত কাফের যিম্মি হিসেবে বসবাস করে,তাদের উপর শরয়ী হদ কায়েম করা হবে।
অন্যান্য মাযহাবে  কিছু ব্যাখ্যা রয়েছে,,,,,,


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...