আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
942 views
in সুন্নাহ-বিদ'আহ (Sunnah and Bid'ah) by (45 points)
আসসালামু আলাইকুম । আজকে এক ব্যক্তির বড় চুল দেখে একটু মজা করে একজনকে বললাম যে পেছন থেকে মেয়েদের মতো দেখা  যায় । আসলে আমি বুঝিনি বাবরি চুল কোনটা ।

আমার কি মজা করার কারণে গুনাহ হয়েছে?
###########################

1 Answer

0 votes
by (697,760 points)
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
https://www.ifatwa.info/3411 নং ফাতাওয়ায় আমরা বলেছি যে,
চুল কাটা ও শরয়ী বিধি-বিধান।
চুল  সম্পর্কে শরয়ী বিধান হচ্ছে,পরিবেশ ও পরিস্থিতি এবং আবহাওয়া সাথে সমতা রেখে বাবড়ি চুল ও চুলমুন্ডন,এ দু-থেকে যে কোনো একটিকে গ্রহণ করা যাবে,এতে কোনোপ্রকার বিধি-নিষেধ নেই।তবে বাবড়ি চুল রাখা সুন্নাত  এবং চুল মুন্ডন করাও হানাফি মাযহাব মতে সুন্নাত,অর্থাৎ উভয়টিই সুন্নাত ।(ফাতওয়ায়ে রশিদিয়া)

এবং চুলকে কেটে খাটো করাও যাবে তবে বিষয়টা একটু ব্যখ্যা সাপেক্ষ্য।
সুতরাং চুল কাটা সম্পর্কে ইসলামী বিধান হচ্ছে,চতুর্দিকে সমান করে কাটা,যতটুকু সামনের দিকে কাটা হবে ততটুকু পিছন ও মাথার মধ্যখান এবং উভয় সাইট থেকেও কাটতে হবে,উভয় সাইট ও পিছনের দিকে চুল ফেলে দিয়ে সামন বা মধ্যখানে চুল রেখে দেয়া কখনো জায়েয হবে না বরং তা হারাম হবে। আফসোস!আজকে আমাদের যুবসমাজ এ বিজাতীয় বিকৃতিমূলক সংস্কৃতিককে অত্যান্ত আন্তরিকতা সাথে গ্রহণ করছে।অথচ হাদীসে সুস্পষ্টভাবে বর্ণিত আছে,যে যে ব্যক্তি  যে জাতীর অনুকরণ করবে সে তাদের-ই অন্তর্ভুক্ত হবে।
মাথার একদিকে চুল ফেলে দিয়ে অন্যদিকে চুল রেখে দেওয়া নাজায়েজ তা নিম্নোক্ত হাদীস সমূহ থেকে অত্যান্ত  সুস্পষ্টভাবে বুঝা যাচ্ছে।
ﻋَﻦْ ﺍﺑْﻦِ ﻋُﻤَﺮَ ﺭﺿﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻬﻤﺎ ﺃَﻥَّ ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ : ( ﻧَﻬَﻰ ﻋَﻦْ ﺍﻟْﻘَﺰَﻉِ ) ، ﻗﺎﻝ ﻧﺎﻓﻊ – ﺃﺣﺪ ﺭﻭﺍﺓ ﺍﻟﺤﺪﻳﺚ – ﻓﻲ ﺗﻔﺴﻴﺮ ﺍﻟﻘﺰﻉ : ﻳُﺤْﻠَﻖُ ﺑَﻌْﺾُ ﺭَﺃْﺱِ ﺍﻟﺼَّﺒِﻲِّ ﻭَﻳُﺘْﺮَﻙُ ﺑَﻌْﺾٌ .
তরজমাঃ- হযরত ইবনে উমর রাঃ থেকে বর্ণিত আছে যে,নবী কারীম সাঃএকটি শিশুর মাথার এক অংশের চুল ফেলে দিয়ে অন্য অংশের চুল রেখে দিতে নিষেধ করেছেন।(সহীহ বুখারী- ৫৯২১,
সহীহ মুসলিম-২১২০)

ﻋَﻦْ ﺍﺑْﻦِ ﻋُﻤَﺮَ ﺭﺿﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻬﻤﺎ ﺃَﻥَّ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲَّ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﺭَﺃَﻯ ﺻَﺒِﻴًّﺎ ﺣَﻠَﻖَ ﺑَﻌْﺾَ ﺭَﺃْﺳِﻪِ ﻭَﺗَﺮَﻙَ ﺑَﻌْﻀًﺎ ﻓَﻨَﻬَﻰ ﻋَﻦْ ﺫَﻟِﻚَ ، ﻭَﻗَﺎﻝَ : ( ﺍﺣْﻠِﻘُﻮﻩُ ﻛُﻠَّﻪُ ﺃَﻭْ ﺍﺗْﺮُﻛُﻮﻩُ ﻛُﻠَّﻪُ )
 তরজমাঃ-হযরত ইবনে উমর রাঃ থেকে বর্ণিত, নবী কারীম সাঃ একবার একটি ছোট বালককে দেখলেন যে তার অর্ধেক মাথায় চুল মুন্ডিত এবং অর্ধেক মাথায় চুল অবশিষ্ট রয়েছে, তখন নবী কারীম সাঃএত্থেকে নিষেধ করে বললেনঃহয়তো তুমি সারা মাথা মুন্ডিয়ে ফেল নতুবা সমস্ত চুল রেখে দাও।(ইমাম আলবানী রহ ইহাকে সহীহ বলেছেন)
(সুনানু নাসায়ী-৫০৪৮,সুনানু আবি-দাউদ-৪১৯৫) 

ﻋﻦ ﺃﻧﺲ ﺑﻦ ﻣﺎﻟﻚ ﺭﺿﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻪ ﺃﻧﻪ ﺭﺃﻯ ﻏﻼﻣﺎ ﻟﻪ ﻗﺮﻧﺎﻥ ﺃﻭ ﻗﺼﺘﺎﻥ ﻓﻘﺎﻝ . ﺍﺣﻠﻘﻮﺍ ﻫﺬﻳﻦ ﺃﻭ ﻗﺼﻮﻫﻤﺎ ﻓﺈﻥ ﻫﺬﺍ ﺯﻱ اليهود ، 
তরজমাঃ- হযরত আনাছ রাঃ একবার এক বালককে দেখলেন তার মাথার মধ্যে (চুলের) দুইটি সিং বা বড় দুই গুচ্ছ চুল রয়েছে,তখন তিনি বললেনঃতুমি হয়তো এই দু'টি কে মুন্ডিয়ে নাও অথবা কেটে সমান করে দাও।
কেননা এরকম কিছু রেখে কিছু ফেলে দেয়া ইহুদীদের কৃতিকর্ম ও নিদর্শন। 
(সুনানে আবু-দাউদ, ৪১৯৭;

ইমাম তাবারানী সহ অনেক মুহাদ্দিস রাহ. হযরত ইবনে উমর রাঃথেকে নবী কারীম সাঃএর বানী বর্ণনা করেন,সিংগা লাগানোর প্রয়োজন ব্যতীত (ফ্যাশনের জন্য শুধু)ঘাড় বা গর্দনা মুন্ডন করা অগ্নিপূজারকদের কাজ-কর্ম। (শেষ)

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন! 
বাবড়ি চুল রাখা সুন্নত। যদি কেউ সুন্নত জানার পরও বাবড়ি চুলকে নিয়ে উপহাস করে , তাহলে তার ঈমান চলে যাবে। তবে সুন্নত না জেনে যদি কেউ মশকারা করে বা কোনো পুরুষ বাবড়ি চুল রাখতে গিয়ে মেয়েদের মত পিঠ বা কমর পর্যন্ত চুলকে লম্বা করে নেয়,তাহলে এমতাবস্থায় তার কোনো গোনাহ হবে না। বাবড়ি চুল তিন তরিকায় রাখা যায়, কাধ পর্যন্ত, কান পর্যন্ত এবং এ দুয়ের মধ্যখান পর্যন্ত।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...