আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
207 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (3 points)
আসসালামু'আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ। আমি গত ৮ মাস ধরে আমার বোনের বাসায় থাকি। আমার দুই ভাগ্নী( ইন্টারে পড়ুয়া & ক্লাস সেভেনে পড়ুয়া) দ্বীনের পথে আসছে আলহামদুলিল্লাহ। আমার দ্বীন পালন নিয়ে আপুর সমস্যা নেই, কিন্তু ভাগ্নীদের দ্বীন পালন আপু মেনে নিতে পারছেনা। আপুর কথা হচ্ছে ওদের বয়স কম, এতো ছোট বয়সে পর্দা, বইপত্র পড়ে নিজেকে আবদ্ধ করে ফেলার দরকার নেই।  শুধু ধর্মকর্ম দিয়ে দুনিয়া চলবেনা। ইদানীং ওরা আমার কাছে থাকলে, গল্প করলে বইপত্র পড়লে, ইভেন কুরআন পড়লেও আপু বকা দিচ্ছে। বাসার পরিবেশ এমন লুকিয়ে কিছু করার সুযোগ নেই। ভাগ্নী যেটা iom এ পড়ছে ওর  iom এর ফীও দিচ্ছেনা।
এমতাবস্থায় আমার কি করনীয়? আমি কি ওদের সাথে দুরত্ব বজায় রাখব? দুরত্ব বজায় রাখার কারণে ওরা যদি দ্বীনের পথ থেকে সরে যায় সেজন্য আমার গুনাহ হবে কিনা?
 বা চলমান পরিস্থিতিতে আমি কিভাবে ওদেরকে সাহায্য করতে পারি পরামর্শ দিলে উপকৃত হব( উল্লেখ্য বাসায় টেলিভিশন, মোবাইল, WiFi সহ বিভিন্ন গুনাহের উপকরণ আছে,,আর বয়স কম, ওইদিকে ইসলামী বইপত্র পড়তে পারছেনা,,,,তো গুনাহর দিকে ধাবিত হওয়ার সম্ভাবনা আছে)।
 প্রশ্নত্তোর কষ্ট করে *Emails are not allowed* এখানে পাঠাবেন।

1 Answer

0 votes
by (597,330 points)
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কুরআনে ইরশাদ করেন-
{ ﻳَﺎﺃَﻳُّﻬَﺎ ﺍﻟﺮَّﺳُﻮﻝُ ﺑَﻠِّﻎْ ﻣَﺂ ﺃُﻧﺰِﻝَ ﺇِﻟَﻴْﻚَ ﻣِﻦ ﺭَّﺑِّﻚَ ﻭَﺇِﻥ ﻟَّﻢْ ﺗَﻔْﻌَﻞْ ﻓَﻤَﺎ ﺑَﻠَّﻐْﺖَ ﺭِﺳَﺎﻟَﺘَﻪُ [ ﺍﻟﻤﺎﺋﺪﺓ 67: ]
হে রাসূল! আপনার প্রতিপালকের পক্ষ থেকে আপনার উপর যা অবতীর্ণ হয়েছে তা আপনি প্রচার করুন। যদি আপনি তা না করেন তাহলে আপনি আল্লাহর বার্তা প্রচার করলেন না। (সূরা মায়েদা : ৬৭)

আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলা আরোও বলেন:
ﺍﺩْﻉُ ﺇِﻟِﻰ ﺳَﺒِﻴﻞِ ﺭَﺑِّﻚَ ﺑِﺎﻟْﺤِﻜْﻤَﺔِ ﻭَﺍﻟْﻤَﻮْﻋِﻈَﺔِ ﺍﻟْﺤَﺴَﻨَﺔِ ﻭَﺟَﺎﺩِﻟْﻬُﻢ ﺑِﺎﻟَّﺘِﻲ ﻫِﻲَ ﺃَﺣْﺴَﻦُ ( ﺍﻟﻨﺤﻞ : ١٢٥ (
আপনি আপনার প্রতিপালকের দিকে আহবান করুন হিকমত বা প্রজ্ঞা দ্বারা এবং সুন্দর ওয়াজ-উপদেশ দ্বারা এবং তাদের সাথে উৎকৃষ্টতর পদ্ধতিতে আলোচনা-বিতর্ক করুন। (সূরা নাহল: ১২৫)

অন্যত্র বলেন:
ﻛُﻨﺘُﻢْ ﺧَﻴْﺮَ ﺃُﻣَّﺔٍ ﺃُﺧْﺮِﺟَﺖْ ﻟِﻠﻨَّﺎﺱِ ﺗَﺄْﻣُﺮُﻭﻥَ ﺑِﺎﻟْﻤَﻌْﺮُﻭﻑِ ﻭَﺗَﻨْﻬَﻮْﻥَ ﻋَﻦِ ﺍﻟْﻤُﻨﻜَﺮِ ﻭَﺗُﺆْﻣِﻨُﻮﻥَ ﺑِﺎﻟﻠَّﻪِ ﻭَﻟَﻮْ ﺁﻣَﻦَ ﺃَﻫْﻞُ ﺍﻟْﻜِﺘَﺎﺏِ ﻟَﻜَﺎﻥَ ﺧَﻴْﺮًﺍ ﻟَّﻬُﻢ ﻣِّﻨْﻬُﻢُ ﺍﻟْﻤُﺆْﻣِﻨُﻮﻥَ ﻭَﺃَﻛْﺜَﺮُﻫُﻢُ ﺍﻟْﻔَﺎﺳِﻘُﻮﻥَ ) ﺁﻝ ﻋﻤﺮﺍﻥ : ١١٠ (
তোমরাই শ্রেষ্ঠ জাতি, মানবজাতির (কল্যাণের) জন্য তোমাদের আবির্ভাব হয়েছে। তোমরা ন্যায়কার্যে আদেশ এবং অন্যায় কার্যে নিষেধ কর এবং আল্লাহতে বিশ্বাস কর। (সূরা আলে ইমরান: ১১০)

আল্লাহ তাবারকা ওয়া তাআলা আরও বলেন:
ﻭَﺍﻟْﻤُﺆْﻣِﻨُﻮﻥَ ﻭَﺍﻟْﻤُﺆْﻣِﻨَﺎﺕُ ﺑَﻌْﻀُﻬُﻢْ ﺃَﻭْﻟِﻴَﺎﺀ ﺑَﻌْﺾٍ ﻳَﺄْﻣُﺮُﻭﻥَ ﺑِﺎﻟْﻤَﻌْﺮُﻭﻑِ ﻭَﻳَﻨْﻬَﻮْﻥَ ﻋَﻦِ ﺍﻟْﻤُﻨﻜَﺮِ ﻭَﻳُﻘِﻴﻤُﻮﻥَ ﺍﻟﺼَّﻼَﺓَ ﻭَﻳُﺆْﺗُﻮﻥَ ﺍﻟﺰَّﻛَﺎﺓَ ﻭَﻳُﻄِﻴﻌُﻮﻥَ ﺍﻟﻠَّﻪَ ﻭَﺭَﺳُﻮﻟَﻪُ ﺃُﻭْﻟَﺌِﻚَ ﺳَﻴَﺮْﺣَﻤُﻬُﻢُ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﺇِﻥَّ ﺍﻟﻠَّﻪَ ﻋَﺰِﻳﺰٌ ﺣَﻜِﻴﻢٌ ( ﺍﻟﺘﻮﺑﺔ : ٧١ (
আর মুমিন পুরুষ ও মুমিন নারীরা একে অপরের বন্ধু, তারা ভাল কাজের আদেশ দেয় আর অন্যায় কাজ থেকে নিষেধ করে, আর তারা সালাত কায়েম করে, জাকাত প্রদান করে এবং আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের আনুগত্য করে। এদেরকে আল্লাহ শীঘ্রই দয়া করবেন, নিশ্চয় আল্লাহ পরক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়। (সূরা তাওবা: ৭১)

এবং সূরা তাওবার ১১২ আয়াতে, সূরা হজ্জের ৪১ আয়াতে, সূরা লুকমানের ১৭ আয়াতসহ অন্যান্য স্থানেও উল্লেখ করা হয়েছে যে, আল্লাহর প্রকৃত মুমিন বান্দাদের অন্যতম বৈশিষ্ট হলো সৎকাজের আদেশ ও অসৎকাজের নিষেধ।
এ দায়িত্বপালনকারী মুমিনকেই সর্বোত্তম বলে ঘোষণা করা হয়েছে পবিত্র কোরআনে।
যেমনঃ মহান আল্লাহ বলেন:
ﻭَﻣَﻦْ ﺃَﺣْﺴَﻦُ ﻗَﻮْﻻً ﻣِّﻤَّﻦ ﺩَﻋَﺎ ﺇِﻟَﻰ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﻭَﻋَﻤِﻞَ ﺻَﺎﻟِﺤًﺎ ﻭَﻗَﺎﻝَ ﺇِﻧَّﻨِﻲ ﻣِﻦَ ﺍﻟْﻤُﺴْﻠِﻤِﻴﻦَ ) ﻓﺼﻠﺖ : ٣٣ (
ঐ ব্যক্তি অপেক্ষা কথায় কে উত্তম যে আল্লাহর প্রতি মানুষকে আহবান করে, সৎকর্ম করে এবং বলে, আমি তো মুসলিমদের একজন। (সূরা ফুসসিলাত: ৩৩)

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন:
ﺍﻟﺪِّﻳْﻦُ ﺍﻟﻨَّﺼِﻴْﺤَﺔُ، ﻗُﻠْﻨَﺎ ﻟِﻤَﻦْ ﻗَﺎﻝَ ﻟﻠﻪِ ﻭَﻟِﻜِﺘَﺎﺑِﻪِ ﻭَﻟِﺮَﺳُﻮﻟِﻪِ ﻭَﻟِﺄﺋﻤَّﺔِ ﺍﻟْﻤُﺴْﻠِﻤِﻴﻦَ ﻭَﻋَﺎﻣَّﺘﻬِﻢْ . ( ﺭﻭﺍﻩ ﻣﺴﻠﻢ )
দীন হলো নসিহত। সাহাবিগণ বললেন, কার জন্য ? বললেন, আল্লাহর জন্য, তাঁর কিতাবের জন্য, তাঁর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর জন্য, মুসলিমগণের নেতৃবর্গের জন্য এবং সাধারণ মুসলিমদের জন্য। (মুসলিম) বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন- https://www.ifatwa.info/7831

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন! 
আপনি হেকমতের সাথে আপনার আপুকে দ্বীনের দাওয়াত দিতে থাকেন, আপনার বাগ্নাবাগ্নিকে দাওয়াত ও দ্বীনের বুঝ দিতে গিয়ে হেকমতকে ব্যবহার করুন। হেকমত অর্থ হল, কোনো কারণ বশত কোনো কাজকে সাময়িক করা বা নাকরা। তাই আপনি আপনার বাগ্না বাগ্নিকে ছেড়ে চলে যাওয়ার চেয়ে আপনার আপুকে বরং দ্বীনের পথে ফিরিয়ে নিয়ে আসার চেষ্টা করুন। তাছাড়া সামায়িক আপনি তাদের সাথে আপনার আপুর মনমত ব্যবহার করতে পারেন। 

আপনি যদি আপনার বাগ্নাবাগ্নিকে ছেড়ে চলে যান, এবং তারা বিপথে চলে যায়, তাহলে এর দায়ভার আপনার উপর পড়বে না। বরং আপনার আপুর উপরই পড়বে। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...