আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
1,833 views
in সালাত(Prayer) by (32 points)
আসসালামুয়ালাইকুম।

১. তাহাজ্জুদের নামাজ কি জামায়াতে পড়া যায়? জামায়াতে পড়ার ক্ষেত্রে কোনো বাধা-নিষেধ আছে?

২. সাহু সিজদা কখন ওয়াজিব হওয়ে যায়? নামাজের ভেতরে ফরজ আর ওয়াজিব কি কি? যা পড়া বা মেনে চলা বাধ্যতামূলক? নতুবা নামাজ হবে নাহ?

৩. মাঝে মাঝে এমন হয় যে, এশার এর নামাযে একটু দেরি হওয়ার দরুন, এশার এর পর দু'রাকাত সুন্নাহ আদায় করতে করতে দেখা যায়, হুজুর তারাবীহ শুরু করে দেয়। তাই মাঝে মাঝে আত্তাহিইয়াতু এর পর আল্লাহুম্মা সাল্লি'আলা মুহাম্মাদিন ওয়া'আলা আলি মুহাম্মাদ, এই টুক পড়ে সালাম ফিরিয়ে ফেলি। এতে কি নামাজের ক্ষতি হওয়ে যাবে?

জাযাকাল্লাহ খাইরান।

1 Answer

0 votes
by (573,870 points)
edited by
জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 


(০১)
পাঁচ ওয়াক্ত ফরয নামায, জুমআ ও দুই ঈদের নামায জামাতে আদায় করা হল ইসলামের শিআর। এছাড়া তারাবী, রমযানের বিতর, ইস্তিসকা ও সূর্যগ্রহণের নামায জামাতে আদায় করা হাদীস দ্বারা প্রমাণিত ও সুন্নত। 

কিন্তু তাহাজ্জুদসহ অন্যান্য সুন্নত ও নফল নামায শরীয়তের দৃষ্টিতে একাকী ও ঘরে আদায় করার মতো নামায। যে কারণে এগুলোতে আযান-ইকামত এবং জামাতের আয়োজনের বিধান নেই। 

হযরত আবদুল্লাহ ইবন উমর রা. বলেন, নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘হে লোকসকল! তোমরা ঘরে নামায আদায় কর, ঘরকে কবর বানিও না।’-সহীহ মুসলিম ১/২৬৫

হযরত যায়েদ ইবনে ছাবিত রা. বলেন, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘হে লোকসকল! তোমরা ঘরে নামায আদায় কর। কেননা, মানুষের সর্বোত্তম নামায হল ঘরের নামায। তবে ফরয  নামায ব্যতিত।’

হযরত আবদুল্লাহ ইবনে সাআদ রা. বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে ঘরে নামায পড়া সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলাম। তিনি বললেন, আমার ঘর মসজিদের কত নিকটে তারপরও আমি ঘরে নামায পড়তে ভালবাসি। তবে ফরয        নামায মসজিদে পড়ি।’ (শামায়েলে তিরমিযী ২০)

তাহাজ্জুদসহ সকল প্রকার নফল নামাযের জামাত কাউকে ডাকা ছাড়া ইমাম ব্যতিত দু’জন হলে জায়েজ, তিনজন হলে মতভেদ আছে, চারজন হলে জায়েজ নেই সর্বসম্মতিক্রমে।

فى طحطاوى على مراقى الفلاح- ( ويوتر بجماعة ) استحبابا ( في رمضان فقط ) عليه إجماع المسلمين لأنه نقل من وجه والجماعة في النقل في غير التراويح مكروهة فالاحتياط تركها في الوتر خارج رمضان وعن شمس الأئمة أن هذا فيما كان على سبيل التداعي أما لو اقتدى واحد بواحد أو اثنان بواحد لا يكره وإذا اقتدى ثلاثة بواحد اختلف فيه وإذا اقتدى أربعة بواحد كره اتفاقا (حشية الطحطاوى على مراقى الفلاح، كتاب الصلاة، باب الوتر واحكامه-386)
সারমর্মঃ
তারাবিব ব্যাতিত অন্যান্য নফল নামাজ জামা'আতের সাথে আদায় করা মাকরুহ।
তবে যদি কেহ নামাজ পড়ে,এমতাবস্থায় কেহ এসে ইক্তেদা করে,তাহলে তাহা মাকরুহ নয়।
এভাবে তিন জন ইক্তেদা করলে মাকরুহ হবে কিনা,সে মর্মে উলামায়ে কেরামদের মাঝে মতবিরোধ রয়েছে। 
তবে চার জন হলে সর্বসম্মতিক্রমে মাকরুহ হবে।     

তবে অন্যান্য মাযহাব কিছু ইসলামী স্কলারদের মতে এটি জায়েজ আছে।
তাই তাদের মতানুসারী গন সেই মত অনুযায়ী আমল করতে পারবেন।     

(০২)
নামাযে যেকোনো ভুলের কারণে সেজদা সাহু ওয়াজিব হয়ে যায় না। বরং ভুলে নামাযের কোনো ওয়াজিব ছুটে গেলে কিংবা কোনো ফরয বা ওয়াজিব বিলম্বিত হলে ওয়াজিব হয়। আর যদি ভুলে কোনো ফরয ছুটে যায়, তবে সেজদা সাহু করা যথেষ্ট নয়, বরং পুনরায় নামায আদায় করতে হবে। আর কোনো সুন্নত বা মুস্তাহাব ছুটে গেলে সেজদা সাহু করার বিধান নেই। 

হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

حدثنا عبد الله بن يوسف، أخبرنا مالك بن أنس، عن ابن شهاب، عن عبد الرحمن الأعرج، عن عبد الله بن بحينة رضي الله عنه، أنه قال: صلى لنا رسول الله صلى الله عليه وسلم ركعتين من بعض الصلوات، ثم قام فلم يجلس، فقام الناس معه، فلما قضى صلاته ونظرنا تسليمه كبر قبل التسليم، فسجد سجدتين وهو جالس، ثم سلم.

আবদুল্লাহ ইবনে বুহায়না রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক নামায আমাদের দুই রাকাত পড়ান। তারপর না বসে দাঁড়িয়ে যান। মুকতাদীরাও তাঁর সাথে দাঁড়িয়ে যায়। যখন তিনি নামায পূর্ণ করলেন এবং আমরা তাঁর সালাম ফিরানোর অপেক্ষা করছিলাম তখন সালাম ফিরানোর আগে তাকবীর দিলেন এবং বসা অবস্থায় দুটি সেজদা করলেন। তারপর সালাম ফিরালেন। 
(সহীহ বুখারী, হাদীস ১২২৪ সহীহ মুসলিম, হাদীস ৫৭০)
,
নামাজের ফরজ ওয়াজিব সংক্রান্ত বিস্তারিত জানুনঃ

(০৩)
হ্যাঁ এতটুকু পড়াতে নামাজ হয়ে যাবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 193 views
...