ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
ইতিকাফের রুকুন
মানুষ ইতিকাফের সময়কালে মসজিদের সীমানার ভিতরে থাকবে, শরয়ী জরুরত ব্যতীত এক মুহুর্তের জন্য মসজিদের বাহিরে অবস্থান করবে না। কেননা ইতিকাফকারী যদি এক মুহুর্তের জন্য মসজিদের সীমানার বাহিরে চলে যায়, তাহলে তার ইতিকাফ ফাসিদ হয়ে যাবে।
(১)
নিজস্ব এলাকায় ইতিকাফে একই বয়সের যুবকরা বসলে, একে অন্যের সাথে বেশি কথা বললে এবং সেই কথা বিনা প্রয়োজনে হলে তা মাকরুহ হবে। তবে ইতিকাফ ফাসিদ হবে না।
(২)
ইতিকাফ অবস্থায় বাহিরে লোকদের সাথে প্রয়োজনে কথা বলা যায়, যেমন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কথা বলেছেন।
নবী-সহধর্মিণী সফীয়্যাহ (রাযি.) বর্ণনা করেন যে,
حَدَّثَنَا أَبُو الْيَمَانِ أَخْبَرَنَا شُعَيْبٌ عَنْ الزُّهْرِيِّ قَالَ أَخْبَرَنِي عَلِيُّ بْنُ الْحُسَيْنِ أَنَّ صَفِيَّةَ زَوْجَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم أَخْبَرَتْهُ أَنَّهَا جَاءَتْ إِلَى رَسُولِ اللهِ صلى الله عليه وسلم تَزُورُهُ فِي اعْتِكَافِهِ فِي الْمَسْجِدِ فِي الْعَشْرِ الأَوَاخِرِ مِنْ رَمَضَانَ فَتَحَدَّثَتْ عِنْدَهُ سَاعَةً ثُمَّ قَامَتْ تَنْقَلِبُ فَقَامَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم مَعَهَا يَقْلِبُهَا حَتَّى إِذَا بَلَغَتْ بَابَ الْمَسْجِدِ عِنْدَ بَابِ أُمِّ سَلَمَةَ مَرَّ رَجُلاَنِ مِنْ الأَنْصَارِ فَسَلَّمَا عَلَى رَسُولِ اللهِ فَقَالَ لَهُمَا النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم عَلَى رِسْلِكُمَا إِنَّمَا هِيَ صَفِيَّةُ بِنْتُ حُيَيٍّ فَقَالاَ سُبْحَانَ اللهِ يَا رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم وَكَبُرَ عَلَيْهِمَا فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم إِنَّ الشَّيْطَانَ يَبْلُغُ مِنْ الإِنْسَانِ مَبْلَغَ الدَّمِ وَإِنِّي خَشِيتُ أَنْ يَقْذِفَ فِي قُلُوبِكُمَا شَيْئًا
একদা তিনি রমাযানের শেষ দশকে মসজিদে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর খিদমতে উপস্থিত হন। তখন আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ই‘তিকাফরত ছিলেন। সাফিয়্যাহ তাঁর সঙ্গে কিছুক্ষণ কথাবার্তা বলেন। অতঃপর ফিরে যাবার জন্য উঠে দাঁড়ান। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁকে পৌঁছে দেয়ার উদ্দেশে উঠে দাঁড়ালেন। যখন তিনি (উম্মুল মু’মিনীন) উম্মু সালামাহ (রাযি.)-এর গৃহ সংলগ্ন মসজিদের দরজা পর্যন্ত পৌঁছলেন, তখন দু’জন আনসারী সেখান দিয়ে যাচ্ছিলেন। তাঁরা উভয়ে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -কে সালাম করলেন। তাঁদের দু’জনকে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তোমরা দু’জন থাম। ইনি তো (আমার স্ত্রী সাফিয়্যাহ বিনতু হুয়ায়্যী (রাযি.)। এতে তাঁরা দু’জনে ‘সুবহানাল্লাহ হে আল্লাহর রাসূল’ বলে উঠলেন এবং তাঁরা বিব্রত বোধ করলেন। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ শয়তান মানুষের রক্তের শিরায় চলাচল করে। আমি ভয় করলাম যে, সে তোমাদের মনে সন্দেহের সৃষ্টি করতে পারে।( সহীহ বোখারী-২০৩৫)
সুতরাং ইতিকাফ অবস্থায় প্রয়োজনে মুবাইলে কথা বলা যাবে। স্মার্ট ফোন ব্যবহার না করাই উত্তম। কেননা কখন যে প্রয়োজনের অতিরিক্ত মুবাইল ফোন ব্যবহার করা হয়ে যাবে। তার কোনো হিসাবই থাকবে না। অনলাইন ক্লাস করা জায়েয হবে। তবে ফেইসবুকে খোঁজ খবর নেওয়া কারো সাথে চ্যাট করা মাকরুহ ই হবে।হ্যা বিশেষ প্রয়োজনে ফেইসবুক চালানো বা চ্যাট করা নাজায়েয হবে না। আমাদেরকে মনে রাখতে হবে, মুবাইল এবং ইন্টারনেট এগুলো ইতিকাফের সাথে সাংঘর্ষিক বিয়ষাবলীর একটি।
أَمَّا إذَا أَرَادَ أَنْ يَتَّخِذَ ذَلِكَ مَتْجَرًا فَإِنَّهُ مَكْرُوهٌ وَإِنْ لَمْ يُحْضِرْ السِّلْعَةَ وَاخْتَارَهُ قَاضِي خَانْ فِي فَتَاوِيهِ وَرَجَّحَهُ الشَّارِحُ؛ لِأَنَّهُ مُنْقَطِعٌ إلَى اللَّهِ تَعَالَى فَلَا يَنْبَغِي لَهُ أَنْ يَشْتَغِلَ بِأُمُورِ الدُّنْيَا وَقَيَّدَ بِالْمُعْتَكِفِ؛ لِأَنَّ غَيْرَهُ يُكْرَهُ لَهُ الْبَيْعُ مُطْلَقًا لِنَهْيِهِ - عَلَيْهِ السَّلَامُ - عَنْ الْبَيْعِ وَالشِّرَاءِ فِي الْمَسْجِدِ وَكَذَا كُرِهَ فِيهِ التَّعْلِيمُ وَالْكِتَابَةُ وَالْخِيَاطَةُ بِأَجْرٍ
«البحر الرائق شرح كنز الدقائق ومنحة الخالق وتكملة الطوري» (2/ 327)
(৩) বিশেষ প্রয়োজনে কথা বলা যাবে।
(৪) আরবী তারিখের সূচনা আগের দিনের সূর্যাস্তের পর থেকেই শুরু হয়ে যায়, তাই বিশ রমজান সূর্যাস্তের পূর্বে মসজিদে প্রবেশ করতে হবে। উলামায়ে কেরাম আছরের পূর্বে মসজিদে প্রবেশ করাকে মুস্তাহাব বলে থাকেন। জেনে রাখা ভালো, মাগরিবের কিছূক্ষণ পর যদি কেউ মসজিদে প্রবেশ করে তাহলে তার সুন্নত ইতিকাফ হবে না। বরং তখন মুস্তাহাব ইতিকাফ হবে।
(৫) নিজেকে তো ফরয গোসল করতে হবে। আর মসজিদরে ঐ জায়গাকে ধৌত করতে হবে।