লক্ষ লক্ষ নেকী সম্পর্কে যে হাদীস সমূহ বর্ণিত রেয়েছে, সে সব হাদীসের অধিকাংশকে সনদ হিসেবে উলামায়ে কেরাম যঈফ(দুর্বল) বলেছেন।
হযরত তামীম দারী রাযি থেকে বর্ণিত,
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ، قَالَ: حَدَّثَنَا اللَّيْثُ، عَنِ الخَلِيلِ بْنِ مُرَّةَ، ﻋَﻦِ ﺍﻟْﺄَﺯْﻫَﺮِ ﺑْﻦِ ﻋَﺒْﺪِ ﺍﻟﻠﻪِ ، ﻋَﻦْ ﺗَﻤِﻴﻢٍ ﺍﻟﺪَّﺍﺭِﻱِّ، ﻗَﺎﻝَ : ﻗَﺎﻝَ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ : ( ﻣَﻦْ ﻗَﺎﻝَ : ﺃَﺷْﻬَﺪُ ﺃَﻥْ ﻟَﺎ ﺇِﻟَﻪَ ﺇِﻟَّﺎ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻭَﺣْﺪَﻩُ ﻟَﺎ ﺷَﺮِﻳﻚَ ﻟَﻪُ ، ﺇِﻟَﻬًﺎ ﻭَﺍﺣِﺪًﺍ ﺃَﺣَﺪًﺍ ﺻَﻤَﺪًﺍ، ﻟَﻢْ ﻳَﺘَّﺨِﺬْ ﺻَﺎﺣِﺒَﺔً ﻭَﻟَﺎ ﻭَﻟَﺪًﺍ، ﻭَﻟَﻢْ ﻳَﻜُﻦْ ﻟَﻪُ ﻛُﻔُﻮًﺍ ﺃَﺣَﺪٌ، ﻋَﺸْﺮَ ﻣَﺮَّﺍﺕٍ ﻛَﺘَﺐَ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻟَﻪُ ﺃَﺭْﺑَﻌِﻴﻦَ ﺃَﻟْﻒَ ﺃَﻟْﻒِ ﺣَﺴَﻨَﺔٍ ) ." ﻫَﺬَﺍ ﺣَﺪِﻳﺚٌ ﻏَﺮِﻳﺐٌ ، ﻻَ ﻧَﻌْﺮِﻓُﻪُ ﺇِﻻَّ ﻣِﻦْ ﻫَﺬَﺍ ﺍﻟﻮَﺟْﻪِ ، ﻭَﺍﻟﺨَﻠِﻴﻞُ ﺑْﻦُ ﻣُﺮَّﺓَ ﻟَﻴْﺲَ ﺑِﺎﻟﻘَﻮِﻱِّ ﻋِﻨْﺪَ ﺃَﺻْﺤَﺎﺏِ ﺍﻟﺤَﺪِﻳﺚِ ، ﻗَﺎﻝَ ﻣُﺤَﻤَّﺪُ ﺑْﻦُ ﺇِﺳْﻤَﺎﻋِﻴﻞَ : ﻫُﻮَ ﻣُﻨْﻜَﺮُ ﺍﻟﺤَﺪِﻳﺚِ ."
রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেন, যে ব্যক্তি দশ বার নিম্নোক্ত দু'আ পড়বে, " আশহাদু আন-লা- ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা শারিকা লাহু,ইলাহান ওয়াহিদা,আহাদান,সামাদান,লাম ইয়াত্তাখিয সাহিবাতান ওয়ালা ওয়ালাদা,ওয়া লাম ইয়াকুন লাহু কুফুওয়ান আহাদা" অাল্লাহ তার জন্য চার কোটি নেকী লিখে রাখবেন। ইমাম তিরমিযি রাহ বলেন, এটা সনদের দিক দিয়ে গারীব পর্যায়ের একটা হাদীস।তিনি বলেন, উপরোক্ত সনদ ব্যতীত অন্য কোনো সনদে এই হাদীস আমি পাইনি।এবং খলিল ইবনে মুররাহ মুহাদ্দিসগণের নিকট তত শক্তিশালী নয়।ইমাম বোখারী রাহ বলেন, খলিল ইবনে মুররাহ মুকারুল হাদীস রাবীদের অন্তর্ভুক্ত। সুনানে তিরমিযি-৩৪৭৩ মসনদে আহমদ-১৬৯৫২ তাবারানি-১২৭৮
অন্য এক বর্ণনায় উপরোক্ত দু'আ পড়লে বিশ লাখ নেকির কথা বর্ণিত রয়েছে।(তারিখে ইবনে আসাকির-৩৮/২৯৯)
আপনি অল্প সময়ে আরো যেসব আমল করতে পারেনঃ
সূরা ফাতিহা ৩ বার পড়তে পারেন। কেউ কেউ হিসাব কষে দেখিয়েছেন একবার সূরা ফাতিহা পড়লে ৬০০ টিরও বেশি নেকি পাওয়া যায়। তাই আপনি যদি তিনবার সূরা ফাতিহা পাঠ করেন তবে আল্লাহ্র ইচ্ছায় ১৮০০ এর বেশি নেকি হাসিল করবেন।
আপনি সূরা ইখলাস (ক্বুল হুওয়াল্লাহু আহাদ) ২০ বার পড়তে পারেন। এই সূরা একবার পাঠ করলে কুরআন শরীফের এক তৃতীয়াংশ পড়ার সমান সওয়াব পাওয়া যায়। তাই আপনি যদি এ সূরাটি ২০ বার পাঠ করেন তবে তা ৭ বার কুরআন পড়ার সমতুল্য। অতএব আপনি যদি এ সূরাটি প্রতিদিন এক মিনিটে ২০ বার পাঠ করেন তবে মাসে আপনার ৬০০ বার পাঠ করা হয় এবং বছরে ৭২০০ বার পাঠ করা হয়। যার সওয়াব ২৪০০ বার সম্পূর্ণ কুরআন পড়ার সমতুল্য।
আপনি নিম্নোক্ত দোয়াটি ২০ বার পড়তে পারেন।
لَا إِلَهَ إِلا اللَّهُ وَحْدَهُ لَا شَرِيكَ لَهُ الْمُلْكُ وَلَهُ الْحَمْدُ وَهُوَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ
এর সওয়াব ইসমাঈল (আঃ) এর বংশের ৮ জন দাসকে আল্লাহর ওয়াস্তে মুক্ত করার সমান।
আপনি سُبْحَانَ اللَّهِ وَبِحَمْدِه ১০০ বার পড়তে পারেন। যে ব্যক্তি একদিনে এই দোয়াটি ১০০ বার পড়ে তার সমস্ত গুনাহ মাফ করে দেয়া হয়; যদিও তা সমুদ্রের ফেনার সমান হয় না কেন।
আপনি سُبْحَانَ اللهِ وَبِحَمْدِهِ ও سُبْحَانَ اللهِ الْعَظِيمِ ৫০ বার পড়তে পারেন। এ দুটি এমন বাক্য যা পড়তে খুব সহজ; আমলের পাল্লাতে অনেক ভারী হবে; রহমানের নিকটে অতি প্রিয়; যেমনটি বর্ণনা করেছেন ইমাম বুখারী ও ইমাম মুসলিম।
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: “সুব্হানাল্লাহ, আলহামদুলিল্লাহ, লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ, আল্লাহু আক্বার পাঠ করা যা কিছুর উপর সূর্য উদিত হয়েছে সবকিছু থেকে আমার নিকট অধিক প্রিয়।”[হাদিসটি বর্ণনা করেছেন মুসলিম (২৬৯৫)]আপনি বাক্যগুলো ১৮ বারের বেশি পড়তে পারেন। এ বাক্যগুলো আল্লাহর নিকট সবচেয়ে প্রিয়। এগুলো সর্বোত্তম কথা এবং আমলের পাল্লাতে এগুলোর ওজন অনেক বেশি হবে। যেমনটি এ মর্মে বর্ণিত সহীহ হাদিসসমূহে এসেছে ।
আপনি لَا حَوْلَ وَلَا قُوَّةَ إِلَّا بِاللَّهِ (অর্থ- কোন উপায়-সামর্থ্য নেই, কোন শক্তি নেই আল্লাহ ছাড়া) ৪০ বারের বেশি পড়তে পারেন। এ বাক্যটির সওয়াব জান্নাতের জন্য সঞ্চিত অমূল্য রত্ন; যেমনটি বর্ণিত হয়েছে সহীহ বুখারী ও সহীহ মুসলিমে। একই ভাবে এটি কষ্টসাধ্য দায়িত্ব বহন ও কঠিন কাজসমূহ আঞ্জাম দেয়ার ক্ষেত্রে এক মহৌষধ।
আপনি لاَ إِلَهَ إِلاَّ الله (অর্থ- আল্লাহ ছাড়া সত্য কোন উপাস্য নেই) প্রায় ৫০ বার পড়তে পারেন। এটি সর্বশ্রেষ্ঠ বাক্য ও তাওহীদের বাণী। এটি কালিমায়ে তাইয়্যেবা (উত্তম বাণী) ও সুদৃঢ় বাক্য। যে ব্যক্তির শেষ কথা হবে এই বাক্য তিনি জান্নাতে প্রবেশ করবেন। এছাড়াও এর ফজিলত ও মর্যাদার ব্যাপারে আরও অনেক বর্ণনা রয়েছে।
আপনি سُبْحَانَ اللَّهِ وَبِحَمْدِهِ عَدَدَ خَلْقِهِ، وَرِضَى نَفْسِهِ، وَزِنَةَ عَرْشِهِ، وَمِدَادَ كَلِمَاتِهِ (আল্লাহর পবিত্রতা ও প্রশংসা তাঁর সৃষ্টিকুলের সংখ্যার সমান, তাঁর সন্তুষ্টির সমান, তাঁর আরশের ওজনের সমান, তাঁর বাক্যমালার কালির সমান) এ দোয়াটি ১৫ বারের বেশি পড়তে পারেন। সাধারণ তাসবীহ ও যিকিরের চেয়ে এ বাক্যগুলো পাঠ করার সওয়াব অনেকগুণ বেশি যেমনটি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হতে সহীহ হাদিসে সাব্যস্ত হয়েছে।
আপনি আল্লাহর কাছে ১০০ বারের বেশি ইসতিগফার বা ক্ষমা প্রার্থনা করতে পারেন তথা أَسْتَغْفِرُ اللَّهَ পড়তে পারেন। এর ফজিলত আপনার অজানা নয়। এটি ক্ষমা প্রাপ্তি ও জান্নাতে প্রবেশের উপায়। এটি সুখময় জীবন, শক্তি বৃদ্ধি, বিপদ-আপদ রোধ, সকল কাজ সহজীকরণ, বৃষ্টি বর্ষণ, সম্পদ ও সন্তানের বৃদ্ধি ইত্যাদির মাধ্যম।
আপনি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর উপর ৫০ বার দরূদ পাঠ করতে পারেন। শুধু পড়বেন “সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম”। এর প্রতিদানে আল্লাহ আপনার উপর ৫০০ বার সালাত (রহমত) পাঠাবেন। কারণ একবার দরুদ পাঠ করলে আল্লাহ ১০ বার এর প্রতিদান দেন।