আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
718 views
in হালাল ও হারাম (Halal & Haram) by (10 points)
edited by
আসসালামু'আলাইকুম মুহতারাম,

নজর/দৃষ্টিকে হেফাজত করার কিছু কৌশল শিখিয়ে দিন ওস্তাদ। সেই সাথে, আল্লাহ রাব্বুল আলামিন বান্দার জন্য কি পুরস্কার রেখেছেন (যারা আল্লাহর ভয়ে নজরকে হেফাজত করে) তা একটু আলোচনা করুন।

1 Answer

0 votes
by (598,650 points)
বিসমিহি তা'আলা

জবাবঃ-

আল্লাহ তা'আলা বলেন,

ﻗُﻞ ﻟِّﻠْﻤُﺆْﻣِﻨِﻴﻦَ ﻳَﻐُﻀُّﻮﺍ ﻣِﻦْ ﺃَﺑْﺼَﺎﺭِﻫِﻢْ ﻭَﻳَﺤْﻔَﻈُﻮﺍ ﻓُﺮُﻭﺟَﻬُﻢْ ﺫَﻟِﻚَ ﺃَﺯْﻛَﻰ ﻟَﻬُﻢْ ﺇِﻥَّ ﺍﻟﻠَّﻪَ ﺧَﺒِﻴﺮٌ ﺑِﻤَﺎ ﻳَﺼْﻨَﻌُﻮﻥَ

মুমিনদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টি নত রাখে এবং তাদের যৌনাঙ্গর হেফাযত করে। এতে তাদের জন্য খুব পবিত্রতা আছে। নিশ্চয় তারা যা করে আল্লাহ তা অবহিত আছেন।

ﻭَﻗُﻞ ﻟِّﻠْﻤُﺆْﻣِﻨَﺎﺕِ ﻳَﻐْﻀُﻀْﻦَ ﻣِﻦْ ﺃَﺑْﺼَﺎﺭِﻫِﻦَّ ﻭَﻳَﺤْﻔَﻈْﻦَ ﻓُﺮُﻭﺟَﻬُﻦَّ

ঈমানদার নারীদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে নত রাখে এবং তাদের যৌন অঙ্গের হেফাযত করে।(সূরা নূর-৩০-৩১)

আল্লাহ তা'আলা অন্যত্র বলেন,

ﻳَﻌْﻠَﻢُ ﺧَﺎﺋِﻨَﺔَ ﺍﻟْﺄَﻋْﻴُﻦِ ﻭَﻣَﺎ ﺗُﺨْﻔِﻲ ﺍﻟﺼُّﺪُﻭﺭُ

চোখের চুরি এবং অন্তরের গোপন বিষয় তিনি জানেন।(সূরা গাফির-১৯)

ﺇِﻥَّ ﺍﻟﺴَّﻤْﻊَ ﻭَﺍﻟْﺒَﺼَﺮَ ﻭَﺍﻟْﻔُﺆَﺍﺩَ ﻛُﻞُّ ﺃُﻭﻟـﺌِﻚَ ﻛَﺎﻥَ ﻋَﻨْﻪُ ﻣَﺴْﺆُﻭﻻً

নিশ্চয় কান, চক্ষু ও অন্তঃকরণ এদের প্রত্যেকটিই জিজ্ঞাসিত হবে।(সূরা বনী ইসরাঈল-৩৬)

হযরত জারির ইবনে আব্দুল্লাহ রাযি থেকে বর্ণিত,তিনি বলেন,

ﻋﻦ ﺟﺮﻳﺮ ﺑﻦ ﻋﺒﺪ ﺍﻟﻠﻪ ﺭﺿﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻪ ﻗﺎﻝ : " ﺳَﺄَﻟْﺖُ ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﻋَﻦْ ﻧَﻈَﺮِ ﺍﻟْﻔُﺠَﺎﺀَﺓِ ﻓَﺄَﻣَﺮَﻧِﻲ ﺃَﻥْ ﺃَﺻْﺮِﻑَ ﺑَﺼَﺮِﻱ ."

আমি রাসূলুল্লাহ সাঃ কে হঠাৎ হারামে পতিত হওয়া দৃষ্টি সম্পর্কে জিজ্ঞাস করলাম।তিনি প্রতিউত্তরে বললেন,আমি যেন তাৎক্ষণাৎ দৃষ্টিকে অন্যদিকে ফিরিয়ে নেই।

(সহীহ মুসলিম-২১৫৯)

রাসূলুল্লাহ সাঃ হযরত আলী রাযি কে ওসিয়ত করে বললেন,

« ﻳَﺎ ﻋَﻠِﻲُّ ﻻَ ﺗُﺘْﺒِﻊِ ﺍﻟﻨَّﻈْﺮَﺓَ ﺍﻟﻨَّﻈْﺮَﺓَ، ﻓَﺈِﻥَّ ﻟَﻚَ ﺍﻷُﻭﻟَﻰ ﻭَﻟَﻴْﺴَﺖْ ﻟَﻚَ ﺍﻵﺧِﺮَﺓُ »

হে আলী! তুমি গায়রে মাহরাম মহিলার দিকে লাগাতার দৃষ্টি দিও না।অযাচিত ভাবে প্রথমবার দৃষ্টি পড়ে গেলে কোনো সমস্যা নাই।দ্বিতীয়বার আর কখনো দৃষ্টি দিবে না।(সুনানু-আবি-দাউদ-২১৪৯,সুনানু তিরমিযি-২৭৭৭)

দৃষ্টির হেফাজত অত্যন্ত ভালো ও উত্তম কাজ।দৃষ্টির হেফাজত না করলে,অনেক ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে-
(১)

অাক্ষেপ আর অনুশোচনা মনে দানা বানা বাধবে।

(২)

যিনা ব্যভিচারের বাজার গরম হবে।

(৩)

আখেরাতে এর জন্য কঠিন শাস্তির সম্মুখীন হতে হবে।

দৃষ্টিকে হেফাজতে রাখার ফায়দা সমূহ

(১)

অন্তরে নূর ফয়দা হওয়া এবং ঈমানের স্বাদ অনুভব হওয়া।অাল্লাহ তা'আলা চক্ষু হেফাজতের বিষয়কে সূরা নূরে নিয়ে এসেছেন।এবং চক্ষুকে হেফাজত সম্পর্কিত বিষয়ের পরেই নিম্নোক্ত আয়াতকে নিয়ে এসেছেন-

ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻧُﻮﺭُ ﺍﻟﺴَّﻤَﺎﻭَﺍﺕِ ﻭَﺍﻷَﺭْﺽِ

আল্লাহ আকাশ সমূহ ও জমিনের নূর।(সূরা নূর-৩৫)

(২)

অনুভূতি শক্তি সঠিকভাবে কাজ করবে।

(৩)

যে চক্ষু হারাম থেকে বেঁচে থাকবে,সে চক্ষু কখনো জাহান্নামের আগুনে নিক্ষিপ্ত হবে না।

রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেন,

« ﺛﻼﺛﺔٌ ﻻ ﺗَﺮَﻯ ﺃﻋْﻴُﻨُﻬُﻢْ ﺍﻟﻨَّﺎﺭَ ﻳَﻮْﻡَ ﺍﻟﻘِﻴﺎﻣَﺔِ : ﻋَﻴْﻦٌ ﺑَﻜَﺖْ ﻣِﻦْ ﺧِﺸْﻴَﺔِ ﺍﻟﻠﻪ، ﻭﻋَﻴْﻦٌ ﺣَﺮَﺳَﺖْ ﻓﻲ ﺳَﺒِﻴﻞِ ﺍﻟﻠﻪ، ﻭَﻋَﻴْﻦٌ ﻏَﻀَّﺖْ ﻋﻦ ﻣَﺤﺎﺭِﻡِ ﺍﻟﻠﻪ »

তিন ব্যক্তি যাদের চক্ষু কখনো আগুনকে স্পর্শ করবে না।(ক)যে চক্ষু আল্লাহর ভয়ে ক্রন্দন করে(২) যে চক্ষু আল্লাহর রাস্তায় পাহারারত আছে(৩) যে চক্ষু আল্লাহ কর্তৃক নিষিদ্ধ বস্তুর দিকে দৃষ্টি দেয়া থেকে হেফাজতে থাকে।(তাবারানি)

সুতরাং যে ব্যক্তি হারাম দৃষ্টির মাধ্যমে নিজের ভিতর কামনার আগুনকে প্রজ্বলিত করবে না,আল্লাহও তাকে জাহান্নামের আগুনে প্রবেশ করাবেন না।

(৪)

চক্ষুকে হেফাজতের প্রতিদান হলো জান্নাত।

রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেন,

« ﺍﺿْﻤَﻨُﻮﺍ ﻟِﻲ ﺳِﺘًّﺎ ﻣِﻦْ ﺃَﻧْﻔُﺴِﻜُﻢْ ﺃَﺿْﻤَﻦْ ﻟَﻜُﻢُ ﺍﻟْﺠَﻨَّﺔَ : ﺍﺻْﺪُﻗُﻮﺍ ﺇِﺫَﺍ ﺣَﺪَّﺛْﺘُﻢْ، ﻭَﺃَﻭْﻓُﻮﺍ ﺇِﺫَﺍ ﻭَﻋَﺪْﺗُﻢْ، ﻭَﺃَﺩُّﻭﺍ ﺇِﺫَﺍ ﺍﺅْﺗُﻤِﻨْﺘُﻢْ، ﻭَﺍﺣْﻔَﻈُﻮﺍ ﻓُﺮُﻭﺟَﻜُﻢْ، ﻭَﻏُﻀُّﻮﺍ ﺃَﺑْﺼَﺎﺭَﻛُﻢْ، ﻭَﻛُﻔُّﻮﺍ ﺃَﻳْﺪِﻳَﻜُﻢْ »
যে ব্যক্তি ছয়টি জিনিষের জামিন হবে,আমি তার জন্য জান্নাতের জামিন হবো। (১)যখন কথা বলবে তখন সত্য কথা বলবে।(২)যখন ওয়াদা করবে তখন পূর্ণ করবে।(৩)যখন কারো নিকট আমানত রাখা হবে তখন চাহিবামাত্র সেটা ফিরিয়ে দিবে।(৪)তোমাদের লজ্জাস্থানের হেফাজত করো(৫)তোমাদের চক্ষুর হেফাজত করো(৬)তোমাদের হাতকে অন্যায় কাজ থেকে বিরত রাখো।(মসনদে আহমদ)

কামনা প্রবৃত্তির স্থান থেকে সর্বদা নিজেকে বাঁচিয়ে রাখা এবং শরীয়তের বিধি-বিধান কে আন্তরিকতার সাথে পালন করা এবং আল্লাহর নিকট দু'আ ও সাহায্যর মাধ্যমেই নিজের চক্ষুকে হেফাজতে রাখা যায়।

 আল্লাহ-ই ভালো জানেন।

পরামর্শ  প্রদাণে

মুফতী ইমদাদুল হক

ইফতা বিভাগ, Iom.


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...