ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
(১)
শায়খ’ আরবি শব্দ, বাংলা অর্থ বৃদ্ধ ও বয়স্ক। সাধারণত পঞ্চাশ ঊর্দ্ধ বয়স হলে شَيْخ বলা হয়। আরবরা বয়স্ক ও সম্মানিত ব্যক্তিকে শায়খ বলেন, অনুরূপ উস্তাদকেও তারা শায়খ বলেন। হাদিসের ছাত্ররা তাদের হাদিসবিশারদ উস্তাদকে শায়খ বলেন। আমরা শায়খ দ্বারা হাদিসের উস্তাদ ও রাবি দ্বারা শায়খের ছাত্রকে বুঝিয়েছি। শায়খ ও রাবি আপেক্ষিক শব্দ। নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করেছেন হিসেবে আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু রাবি, তাবে‘ঈ আ‘রাজ হিসেবে তিনি শায়খ। হাদিস শাস্ত্রে গভীর পাণ্ডিত্যের অধিকারী, দীর্ঘ দিন হাদিসের পঠন ও পাঠনে নিরত শায়খকে কেউ ‘শায়খুল হাদিস’ বলেন। ভারত উপমহাদেশে বুখারি শরীফের পাঠদানকারীকে ‘শায়খুল হাদিস’ বলা হয়। হাদিসে তার দক্ষতা থাক বা না-থাক। আবার হাদিসে পারঙ্গম হওয়া সত্ত্বেও যদি বুখারির দরস না দেন, তাহলে তিনি শায়খুল হাদিস নন। এ পরিভাষা ঠিক নয়। তাই আমাদের সমাজে ‘শায়খুল হাদিস’ একটি পদের নাম, যোগ্যতার পরিচায়ক উপাধি নয়।
মুহাদ্দিস: ‘মুহাদ্দিস’ আরবি শব্দ, বাংলা অর্থ বর্ণনাকারী বা বক্তা। হাদিসের পঠন-পাঠনকে যারা পেশা হিসেবে গ্রহণ করেন, তাদেরকে পরিভাষায় مُحَدِّث ‘মুহাদ্দিস’ বলা হয়। ‘মুহাদ্দিস’ কর্তাবাচক বিশেষ্য, এ শব্দের আদেশসূচক ক্রিয়া দ্বারা আল্লাহ নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামকে সম্বোধন করেছেন। ইরশাদ হচ্ছে:
﴿ وَأَمَّا بِنِعۡمَةِ رَبِّكَ فَحَدِّثۡ ١١ ﴾ [الضحى: ١١]
“আর আপনার রবের অনুগ্রহ আপনি বর্ণনা করুন”।[1] অর্থাৎ রিসালাত ও নবুওয়ত সবচেয়ে বড় নিয়ামত, অতএব যে রিসালাত দিয়ে আপনাকে প্রেরণ করা হয়েছে তা পৌঁছে দিন, আর যে নবুওয়ত আপনাকে দেওয়া হয়েছে তা বর্ণনা করুন।[2]
নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম ‘মুহাদ্দিস’, কারণ তিনি কুরআন ও হাদিস বর্ণনা করে রিসালাত ও নবুওয়তের দায়িত্ব আঞ্জাম দেন। পরবর্তীতে শুধু হাদিস বর্ণনাকারীদের মুহাদ্দিস বলা হয়। এ পরিভাষা সাহাবিদের যুগেও ছিল, আব্দুল্লাহ ইব্ন ওমর রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু আবু সাঈদ খুদরি রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুকে বলেন:
وَقَدْ بَلَغَنِي أَنَّكَ مُحَدِّثٌ عَنْ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي ذَلِكَ.
“আমার নিকট পৌঁছেছে যে, আপনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে অমুক বিষয়ে বর্ণনা করেন”?[3] অতএব সনদে বিদ্যমান সকল রাবি মুহাদ্দিস। তারা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের কথা, কর্ম, সমর্থন ও গুণগানকে যথাযথ সংরক্ষণ ও বর্ণনা করেন। ভারত উপমহাদেশে বুখারি শরীফ ব্যতীত হাদিসের অন্যান্য কিতাব পাঠদানকারীকে মুহাদ্দিস বলা হয়। এ পরিভাষা সঠিক নয়।
শাইখ, কোনো সম্মাণিত ব্যক্তিকে সম্বোধন করে বলা হয়ে থাকে।
শাইকুল হাদিস, যিনি সহিহ বুখারি পড়ান, তাকে শায়খুল হাদিস বলা হয়ে থাকে।
মুহাদ্দিস, যিনি হাদিসের কিতাব পড়ান, তাকে মুহাদ্দিস বলা হয়ে থাকে।
শাইখুল ইসলাম, যিনি মুসলমানদের আমিরের ভুমিকায় অবতির্ণ হন, তাকে শাইখুল ইসলাম বলা হয়ে থাকে।
মুজাদ্দিদ, যিনি দ্বীনকে সংস্কার করে থাকেন, তাকেই মুজাদ্দিদ বলা হয়ে থাকে।
মুফতি, যিনি ফাতাওয়া দিয়ে থাকেন, তাকেই মুফতি বলা হয়ে থাকে।
মাওলানা, যিনি দাওয়রায়ে হাদিস পর্যন্ত পড়াশোনা করে থাকেন, তাকে মাওলানা বলা হয়ে থাকে।
মুফাসসির , যিনি তাফসির করেন, কুরআনের ব্যখ্যা করে থাকেন, তাকে মুফাস্সির বলা হয়ে থাকে।
(২)
একাকী উলঙ্গ হওয়া কখনো উচিৎ নয়। কেননা ফিরিশতা তো আমদের সাথে সব সময় থাকেন। তবে কেউ যদি উলঙ্গ হয়ে অজু করে নেয় , তাহলে তার অজু হয়ে যাবে। উলঙ্গ হওয়ার দরুণ তার অজুতে কোনো সমস্যা হবে না। এবং পরবর্তীতে কাপড় পরিধান করার পর আবার অজু করতে হবে না। বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন-
https://www.ifatwa.info/13101