আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

+1 vote
388 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (25 points)
১. অমুসলিমকে জাযাকাল্লাহু খাইরান, বারাকাল্লাহু ফীক বা এই জাতীয় দোয়া সূচক বাক্য বলা যাবে কিনা? যদি বলা না যায়, তাহলে তার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশের ভাষা কী হবে?

২. অমুসলিমদের আদাব বলার বিধান কি? শুনেছি এটা আরবি শব্দ।

1 Answer

+1 vote
by (574,050 points)
edited by
জবাব
بسم الله الرحمن الرحيم 


(০১)
শরীয়তের বিধান হলো অমুসলিমকে জাযাকাল্লাহু খাইরান, বারাকাল্লাহু ফীকা বলা যাবেনা।

হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

حَدَّثَنَا الْحُسَيْنُ بْنُ الْحَسَنِ الْمَرْوَزِيُّ، بِمَكَّةَ وَإِبْرَاهِيمُ بْنُ سَعِيدٍ الْجَوْهَرِيُّ قَالاَ حَدَّثَنَا الأَحْوَصُ بْنُ جَوَّابٍ، عَنْ سُعَيْرِ بْنِ الْخِمْسِ، عَنْ سُلَيْمَانَ التَّيْمِيِّ، عَنْ أَبِي عُثْمَانَ النَّهْدِيِّ، عَنْ أُسَامَةَ بْنِ زَيْدٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " مَنْ صُنِعَ إِلَيْهِ مَعْرُوفٌ فَقَالَ لِفَاعِلِهِ جَزَاكَ اللَّهُ خَيْرًا فَقَدْ أَبْلَغَ فِي الثَّنَاءِ " .

উসামা ইবনু যাইদ (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ  কাউকে অনুগ্রহ করা হলে সে যদি অনুগ্রহকারীকে বলে, “তোমাকে আল্লাহ তা'আলা কল্যাণকর প্রতিদান দিন" তবে সে উপযুক্ত ও পরিপূর্ণ প্রশংসা করল।

সহীহ,তিরমিজি ২০৩৫ মিশকাত (৩০২৪), তা’লীকুর রাগীব (২/৫৫), রাওযুন নায়ীর (৮)।

  
أَخْبَرَنَا إِسْحَاقُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، قَالَ أَنْبَأَنَا أَبُو مُعَاوِيَةَ، قَالَ حَدَّثَنَا هِشَامُ بْنُ عُرْوَةَ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ بَعَثَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم أُسَيْدَ بْنَ حُضَيْرٍ وَنَاسًا يَطْلُبُونَ قِلاَدَةً كَانَتْ لِعَائِشَةَ نَسِيَتْهَا فِي مَنْزِلٍ نَزَلَتْهُ فَحَضَرَتِ الصَّلاَةُ وَلَيْسُوا عَلَى وُضُوءٍ وَلَمْ يَجِدُوا مَاءً فَصَلُّوا بِغَيْرِ وُضُوءٍ فَذَكَرُوا ذَلِكَ لِرَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَأَنْزَلَ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ آيَةَ التَّيَمُّمِ قَالَ أُسَيْدُ بْنُ حُضَيْرٍ جَزَاكِ اللَّهُ خَيْرًا فَوَاللَّهِ مَا نَزَلَ بِكِ أَمْرٌ تَكْرَهِينَهُ إِلاَّ جَعَلَ اللَّهُ لَكِ وَلِلْمُسْلِمِينَ فِيهِ خَيْرًا .

ইসহাক ইবনু ইবরাহীম (রহঃ) ... আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উসায়দ ইবনু উযায়র (রাঃ) এবং আরো কয়েক ব্যাক্তিকে আয়িশা (রাঃ) এর একটি হার তালাশের জন্য পাঠিয়ে ছিলেন, যা তিনি যে মন্জিলে অবতরণ করেছিলেন সেখানে হারিয়েছিলেন। এমতাবস্থায় সালাতের সময় উপস্থিত হল, অথচ লোকদের উযু ছিলনা আর তারা পানিও পাচ্ছিলেন না। তখন তারা উযু ব্যতীতই সালাত আদায় করলেন। তারপর তারা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট তা উল্লেখ করলেন। আল্লাহ তা’আলা তায়াম্মমুমের আয়াত অবতীর্ণ করলেন। উসায়দ ইবনু হুযায়র (রাঃ) বলে উঠলেন, আল্লাহ তা’আলা আপনাকে উত্তম বিনিময় দান করুন, যখনই আপনার উপর এমন কোন বিপদ অপতিত হয়েছে যা আপনি অপছন্দ করেন, তার মধ্যেই আল্লাহ তা’আলা আপনার ও মুসলমানদের জন্য কল্যাণ নিহিত রেখেছেন।

সহিহ, বুখারি হাঃ ৩৩৬,  মুসলিম (ইসলামিক সেন্টার) হাঃ ৭১৭ ,নাসায়ী ৩২৪)

মুছান্নাফে আব্দুর রাজ্জাকের হাদীস আর তার ব্যাখ্যাঃ 

مصنف عبد الرزاق ومسند الحميدي رواية أخرى بلفظ: إذا قال الرجل لأخيه جزاك الله خيراً فقد أبلغ في الثناء. وفيه موسى بن عبيدة الربذي وهو ضعيف كما قال الهيثمي، وقال فيه الألباني: صحيح لغيره.  
وقد قيد المناوي الأخوة في هذا الحديث بأخوة الإسلام فقال في فيض القدير عند شرح هذا الحديث: إذا قال الرجل) يعني الإنسان (لأخيه) أي في الإسلام الذي فعل معه معروفاً (جزاك الله خيراً) أي قضي لك خيراً وأثابك عليه: يعني أطلب من الله أن يفعل ذلك بك (فقد أبلغ في الثناء) أي بالغ فيه وبذل جهده في مكافأته عليه بذكره بالجميل وطلبه له من الله تعالى الأجر الجزيل، فإن ضم لذلك معروفاً من جنس المفعول معه كان أكمل هذا ما يقتضيه هذا الخبر، لكن يأتي في آخر ما يصرح بأن الاكتفاء بالدعاء إنما هو عند العجز عن مكافأته بمثل ما فعل معه من المعروف، ثم إن الدعاء المذكور إنما هو للمسلم كما تقرر، أما لو فعل ذمي بمسلم معروفاً فيدعو له بتكثير المال والولد والصحة والعافية.

সারমর্মঃ
 রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ  কেহ যদি তার ভাইকে বলে, “তোমাকে আল্লাহ তা'আলা কল্যাণকর প্রতিদান দিন" তবে সে উপযুক্ত ও পরিপূর্ণ প্রশংসা করল।
,
এখানে ভাই বলতে মুসলমান উদ্দেশ্য,,,,।  
,
★সুতরাং অমুসলিমকে জাযাকাল্লাহ বলা যাবেনা।

حَدَّثَنَا هِشَامُ بْنُ عَمَّارٍ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ أَبِي أُمَامَةَ بْنِ سَهْلِ بْنِ حُنَيْفٍ، قَالَ مَرَّ عَامِرُ بْنُ رَبِيعَةَ بِسَهْلِ بْنِ حُنَيْفٍ وَهُوَ يَغْتَسِلُ فَقَالَ لَمْ أَرَ كَالْيَوْمِ وَلاَ جِلْدَ مُخَبَّأَةٍ . فَمَا لَبِثَ أَنْ لُبِطَ بِهِ فَأُتِيَ بِهِ النَّبِيَّ ـ صلى الله عليه وسلم ـ فَقِيلَ لَهُ أَدْرِكْ سَهْلاً صَرِيعًا . قَالَ " مَنْ تَتَّهِمُونَ بِهِ " . قَالُوا عَامِرَ بْنَ رَبِيعَةَ . قَالَ " عَلاَمَ يَقْتُلُ أَحَدُكُمْ أَخَاهُ إِذَا رَأَى أَحَدُكُمْ مِنْ أَخِيهِ مَا يُعْجِبُهُ فَلْيَدْعُ لَهُ بِالْبَرَكَةِ " . ثُمَّ دَعَا بِمَاءٍ فَأَمَرَ عَامِرًا أَنْ يَتَوَضَّأَ فَيَغْسِلَ وَجْهَهُ وَيَدَيْهِ إِلَى الْمِرْفَقَيْنِ وَرُكْبَتَيْهِ وَدَاخِلَةَ إِزَارِهِ وَأَمَرَهُ أَنْ يَصُبَّ عَلَيْهِ . قَالَ سُفْيَانُ قَالَ مَعْمَرٌ عَنِ الزُّهْرِيِّ وَأَمَرَهُ أَنْ يَكْفَأَ الإِنَاءَ مِنْ خَلْفِهِ .

আবূ উমামা ইবনে হুনাইফ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমের ইবনে রবীআ (রাঃ) সাহল ইবনে হুনাইফ (রাঃ)-র নিকট দিয়ে যাচ্ছিলেন। তিনি তখন গোসল করছিলেন। আমের (রাঃ) বলেন, আমি এমন খুবসুরত সুপুরুষ দেখিনি, এমনকি পর্দানশীন নারীকেও এরূপ সুন্দর দেখিনি, যেমন আজ দেখলাম। অতঃপর কিছুক্ষণের মধ্যেই সাহল (রাঃ) বেহুঁশ হয়ে পড়ে গেলেন। তাকে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর নিকট নিয়ে যাওয়া হলো এবং তাঁকে বলা হলো, ধরাশায়ী সাহলকে রক্ষা করুন। তিনি জিজ্ঞেস করলেনঃ তোমরা কাকে অভিযুক্ত করছো? তারা বললো, আমের ইবনে রবীআকে। তিনি বলেনঃ তোমাদের কেউ বদনজর লাগিয়ে তার ভাইকে কেন হত্যা করতে চায়? তোমাদের কেউ তার ভাইয়ের মনোমুগ্ধকর কিছু দেখলে যেন তার জন্য বরকতের দোয়া করে। অতঃপর তিনি পানি নিয়ে ডাকলেন, অতঃপর আমেরকে উযু করতে নির্দেশ দিলেন। তিনি তার মুখমন্ডল, দু’ হাত কনুই পর্যন্ত, দু’ পা গোছা পর্যন্ত এবং লজ্জাস্থান ধৌত করলেন। তিনি আমেরকে পাত্রের (অবশিষ্ট) পানি সকলের উপর ঢেলে দেয়ার নির্দেশ দিলেন। তিনি সাহলের পেছন দিক থেকে পানি ঢেলে দেয়ার জন্য আমেরকে নির্দেশ দেন।

ইবনে মাজাহ ৩৫০৯ আহমাদ ১৫৫৫০, মুয়াত্তা মালেক ১৭৪৭, মিশকাত ৪৫৬২। তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।

★মুহাদ্দিসিনে কেরামদের মতানুসারে এই হাদীসেও ভাই বলতে যে ইসলামের দিক থেকে ভাই,তথা মুসলিম উদ্দেশ্য। 
তাই অমুসলিমকে বারাকাল্লাহু ফীকা বলা যাবেনা।
,
★তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশের ভাষা হিসেবে Thanks ধন্যবাদ Good  ইত্যাদি শব্দ  ব্যবহার করা যাবে।   
,
(০২)
অমুসলিমদের সাথে সাক্ষাৎ হলে সৌজন্য প্রদর্শন স্বরূপ তার কুশলাদি জিজ্ঞাসা করে বা  অন্য কোনভাবে যেমন হাতের দ্বারা ইশারা করে কুশলবিনিময় করার অবকাশ রয়েছে। 

তাকে দাদা আদাবও বলা যেতে পরে। তবে কোন ভাবেই তাকে নমস্কার বা নমস্তে বলা যাবে না। (রহীমীয়া, ৬/১২৬  কিফায়াতুল মুফতী ৯/১০৬)

আরো জানুনঃ 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...