আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

+1 vote
1,008 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (40 points)
এক বোনের প্রশ্ন
  আমার ভাই বলতে গেলে ২৪ঘন্টার ২০ঘন্টাই ফ্রি ফায়ার  গেম খেলে।স্বলাত টা কোনমত আদায় করে, তাও সব ওয়াক্ত না।রাতের বেশিরভাগ আর দিনেরও বেশিরভাগ সময় গেম নিয়েই থাকে।এর ফলে ওর চোখের খুবই খারাপ অবস্থা। এছাড়াও দিন দিন ওর মেজাজ বেশির থেকে বেশি খারাপের দিকে যাচ্ছে।বড় বোন হিসেবে তো আমাকে মানেই না।আব্বু-আম্মুর কথাও শোনে না,খিটখিটে মেজাজ নিয়ে কথা বলে বাড়ির সবার সাথে। তো ও কে এই ভয়ানক গেম থেকে দূরে আনার কি উপায়?

1 Answer

0 votes
by (565,890 points)
উত্তর
بسم الله الرحمن الرحمن


কোরআনে কারীমে মু'মিনদের উত্তম ও প্রশংসনীয় গুনাবলীর আলোচনা করতে যেয়ে বলা হয়,
ﻭَﺍﻟَّﺬِﻳﻦَ ﻫُﻢْ ﻋَﻦِ ﺍﻟﻠَّﻐْﻮِ ﻣُﻌْﺮِﺿُﻮﻥَ
যারা অনর্থক কথা-বার্তায় নির্লিপ্ত,(মু'মিনুন-৩) 
ﻭَﺇِﺫَﺍ ﻣَﺮُّﻭﺍ ﺑِﺎﻟﻠَّﻐْﻮِ ﻣَﺮُّﻭﺍ ﻛِﺮَﺍﻣًﺎ
এবং যখন অসার ক্রিয়াকর্মের সম্মুখীন হয়, তখন মান রক্ষার্থে ভদ্রভাবে চলে যায়।(ফুরকান-৭৩)

ইসলামে দু’ ধরণের খেলাধুলাকে বৈধ রেখেছে দু’শর্ত সাপেক্ষে।

যে দুই ধরণের খেলা জায়েজ-

১-শারিরীক উপকার নিহিত।যেমন দৌড়, ফুটবল ও ক্রিকেট ও হতে পারে।

২-দ্বীনের শত্রুর বিরুদ্ধে প্রশিক্ষণমূলক খেলা। যেমন তীরন্দাজী, ঘোড় দৌড় ইত্যাদি।

এসব খেলা জায়েজ থাকার জন্য শর্ত দু’টি। যথা-

১- ফরজ ও ওয়াজিব কোন ইবাদতে বিঘ্ন না হতে হবে।

২-এর সাথে আর কোন গোনাহের বিষয় মিলিত না হতে হবে। যেমন জুয়া, বেপর্দা ইত্যাদি।
এছাড়া বাকি সব খেলাই অহেতুক হওয়ায় মাকরূহ বা নাজায়েজ।

ফ্রি ফায়ার গেম সহ যাবতীয় ভিডিও গেম এ অনর্থক খেলার মাঝে শামিল। যেহেতু এর দ্বারা শারিরিক কোন উপকার নেই। অহেতুক সময় নষ্ট করা, তাই এটি অপছন্দনীয়। কিন্তু বর্তমানের ভিডিও গেমগুলোতে নানা ধরণের হারাম মিউজিক থাকে।যা সম্পূর্ণই নাজায়েজ। আর এসব মারামারি দৃশ্যগুলো বড়দের সহ বাচ্চাদের মন মগজে খুবই খারাপ প্রতিক্রিয়া  সৃষ্টি করে থাকে। বাচ্চাদের প্রতিহিংসা পরায়ন, প্রতিশোধী মনোভাবাপন্ন বানিয়ে দেয়।

আমাদের ধারণা এসব ভিডিও গেম এবং সিনেমাগুলোর এ্যাকশন দৃশ্যগুলোর কুপ্রভাবে বড়রা সহ কম বয়সী বাচ্চাদের দ্বারাও বড় বড় অপরাধমূলক কাজ বৃদ্ধি পাচ্ছে।

তাই এসব অহেতুক ভিডিও গেম থেকে বিরত রাখাই জরুরী।

ফাতাওয়ায়ে শামীতে আছে   

وكره كل لهو لقوله عليه الصلاة والسلام كل لهو المسلم حرام إلا ثلاثة: ملابعة اهله، وتأديبه لفرسه، مناضلته بقوسه… ألخ

وقال ابن عابدين- كره كل لهو أى كل لعب وعبث (رد المحتار، كتاب الحظر والإباحة-6/395،
যার সারমর্ম হলো প্রত্যেক অনার্থক খেলা ধুলাই নিষেধ। 

তাকমিলাতু ফাতহিল মুলহিম গ্রন্থে আছেঃ     
وأما ما لم يرد فيه (اى فى اللهو) النص عن الشارع، وفيه فائدة وصلحة للناس، فهو بالنظر الفقهى على نوعين: الأول ما شهدت التجربة بأن ضرورة أعظم من نفعه، ومفاسده أغلب على منافعه، وأنه من اشتغل بها ألهاه عن ذكر الله وحده، وعن الصلوات الله والمساجد، إلتحق بذالك بالمنهى عنه لإشراك العلة، فكان حراما أو مكروها، (تكملة فتح الملهم-4/434-435)
যার সারমর্ম হলো যেই খেলা খেলার দ্বারা শারীরিক উপকার হয়,এবং ইসলামেএ বিধান পালন করতে কোনো বাধা সৃষ্টি না করে,তাহলে সেটা জায়েজ। 
অন্যথায় সেটা জায়েজ নয়।     
,
আরো জানুনঃ 
,
★সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে গেম খেলা কোনোভাবেই জায়েজ নেই।
এর জন্য মহান আল্লাহর শাস্তি ভোগ করতে হবে।
   
কোনো বড় মান্যবর ব্যাক্তিদের দিয়ে তাকে এই খেলার ক্ষতির বিষয় বুঝানোর চেষ্টা করুন।
দাওয়াত ও তাবলিগের মেহনতে পাঠাতে পারেন,বা কোনো হক্কানী শায়েখের কাছে বা তাদের মজলিসে পাঠাতে পারেন।
,
পারিবারিক ভাবে বুঝিয়ে ফিরাইতে পারেন।
তাতে কাজ না হলে মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেওয়া সহ
কঠোরতা আরোপ করতে পারেন। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 141 views
...