আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
260 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (26 points)
আসসালামু আলাইকুম,

একব্যক্তি কোন প্রতিস্টানে চাকুরি রত অবস্থায় সেই প্রতিসঠানের বেশ কিছু অর্থ নিজের প্র‍য়োজনে ব্যবহার করেছিল। যদিও তার নিয়ত ছিল এই অর্থ অফিসের একাউন্টে জমা দেওয়ার আগেই টাকা এডজাস্ট করে দিবে। কিন্তু সেই সময় ও সুযোগ হওয়ার আগেই সে সেই চাকুরী ছেড়ে দেয়। দীর্ঘদিন পর যখন ওই ব্যক্তির এই বিষয়টা খেয়াল হলো তখন খোজ নিয়ে জানতে পারল সেই প্রতিসঠানটা আর নেই অথবা অন্য কোন নামে কোম্পানি খুলেছে বা ব্যবসা করছে যেটা খুজে বের করা বা জানা ওই ব্যক্তির পক্ষে সম্ভব না। এখন ওই ব্যক্তির করনীয় কি?
এখানে একটা বিষয় উল্লেখযোগ্য ওই প্রতিসঠান মুলত একটি থার্ডপার্টি কাস্টমার সার্ভিস কোম্পানি ছিল, যার অধিকাংশ কর্মীরা বিভিন্ন কলা কৌশল করে বিভিন্ন সময় কাস্টমারদের টাকা নিজেরা নিয়ে নিত। তাদের এই কাজের চেইনটা ছিল কোম্পানির নিম্নপদ থেকে একদম উপর পদের অফিসারদের পযর্ন্ত, যেটা একসময় ওই ব্যক্তি জানতে পারে, এবং অনেকটা লোভে পড়ে সেও আমানতের এই গোনাহ কাজে জড়িয়ে পড়ে। কিন্তু সে এখন তওবা করতে চায় এবং এই টাকার ব্যাপারে কি করতে পারে? অনুগ্রহ করে জানাবেন।

জাজাকাল্লাহু খাইরান

1 Answer

0 votes
by (573,870 points)
জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم  


প্রথমেই কিছু মাসয়ালা জেনে নেইঃ

শরীয়তের বিধান হলো  কারো নিকট বান্দার হক পাওনা থাকলে,প্রথমে উক্ত হক পরিশোধের জন্য সাধ্যমত চেষ্টা করতে হবে।সাধ্যমত চেষ্টা করার পরও যদি সেই হককে আদায় করা সম্ভব না হয়, তাহলে উক্ত প্রাপ্য হক্বকে সেই ব্যক্তির পক্ষ থেকে সদকাহ করে দিবে।এবং আল্লাহ তা'আলার নিকট খালিছ নিয়তে তাওবাহ করবে। আল্লাহ তা'আলা কারো প্রতি সন্তুষ্ট হয়ে গেলে নিজ পক্ষ্য থেকে বান্দার হককে আদায় করে দিবেন।
,
আবু হুরায়রা (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত হাদিস তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: "যে ব্যক্তি তার ভাইয়ের সম্মানহানি বা অন্য কোন বিষয়ে যুলুমের জন্য দায়ী, সে যেন আজই তার কাছ থেকে মাফ করিয়ে নেয়; সে দিন আসার পূর্বে যে দিন কোন দিনার (স্বর্ণমুদ্রা) বা দিরহাম (রৌপ্যমুদ্রা) থাকবে না। সে দিন তার কোন সৎকর্ম থাকলে সেটা থেকে তার যুলুমের পরিমাণ কেটে নেয়া হবে। আর তার কোন সৎকর্ম না থাকলে তার প্রতিপক্ষের পাপের কিছু তার উপর চাপিয়ে দেয়া হবে।"[সহিহ বুখারী (২৪৪৯)]

আরো জানুনঃ 

বান্দার হক,এটি অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। 
যতক্ষন পর্যন্ত তাহা আদায় না করা হয়,বা ঐ বান্দা তাকে মাফ না করবে,কোনো আমলেই তাহা মাফ হবেনা।

হাদীস শরীফে এসেছেঃ    

عن أبي ہریرۃ رضي اللّٰہ عنہ أن رسول اللّٰہ صلی اللّٰہ علیہ وسلم قال: العمرۃ إلی العمرۃ کفارۃ لما بینہما الخ۔ (صحیح البخاري رقم: ۱۷۷۳، صحیح مسلم رقم: ۴۳۷)

সারমর্মঃ এক ওমরা থেকে আরেক ওমরাহ মাঝের সমস্ত গুনাহ মোচন কারী,,, 

এই হাদীসের ব্যাখ্যায় বলা হয়েছে    

(ہذا الحدیث) تدل علی محو جمیع السیئات الصغائر والکبائر غیر حقوق العباد في أرجح الأقوال عند العلماء … أما حقوق العباد ومظالمہم لابد من ردہا إلی أصحابہا۔ (التصویر النبوي للقیم الخلقیۃ والتشریعیۃ / العمرۃ إلی العمرۃ والحج المبرور ۱؍۱۱۹ الشاملۃ)

সারমর্মঃ এই হাদীস সমস্ত ছগীরা কবিরা গুনাহ মাফের ঈঙ্গিত বহন করে,কিন্তু হুকুকুল ইবাদ তথা বান্দার হক ব্যাতিত।
এটা উলামায়ে কেরামদের প্রাধান্য পাওয়া মত।  

আরো জানুনঃ 

★হারাম টাকার বিধান হল, তা প্রাথমিকভাবে মূল মালিকের কাছে ফেরত দেয়া।নতুবা সওয়াবের নিয়ত ব্যতীত ফকির-মিসকিনদের  মাঝে সদকা করে দেয়া।

 من ملك بملك خبيث ولم يمكنه الرد الى المالك فسبيله التصدق على الفقراء

যদি কারো নিকট কোনো হারাম মাল থাকে,তাহলে সে ঐ মালকে তার মালিকের নিকট ফিরিয়ে দেবে।যদি ফিরিয়ে দেয়া সম্ভব না হয়,তাহলে গরীবদেরকে সদকাহ করে দেবে।(মা'রিফুস-সুনান১/৩৪)

★সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে যেহেতু তাদের খুজে বের করা বা জানা ওই ব্যক্তির পক্ষে সম্ভব না। এখন ওই ব্যক্তির করনীয় হলো 
 উক্ত টাকা সদকাহ করে দিবেন।
যেহেতু সেই টাকা অন্যায় ভাবে অর্জিত টাকা,কাস্টমারদের থেকে অন্যায় ভাবে কলা কৌশল করে নেওয়া টাক,তাই এক্ষেত্রে দান করার সময় সেসব কাস্টমারদের ছওয়াবের নিয়ত করবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...