আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
211 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (12 points)
আসসালামুলাইকুম শায়খ।

১)কেউ যদি কনো পাত্রে বা গ্লাসে মদ বা মদ জাতীয় দ্রব্য পান করে,তাহলে কী ঐই গ্লাস বা পাত্র পানি দিয়ে পরিষ্কার করে পরে ব্যাবহার করতে পারবে?

২)কোনো ব্যাবহার্য বস্ততে বা জামা কাপরে মদ বা মদ জাতীয় দ্রব্য লাগলে,সেগুলো কী পরিষ্কার করে ব্যাবহার করা যাবে?

৩)কোনো জামা কাপরে বা কোনো বস্তুতে আলকোহল জাতীয় পারফিউম ইউস করলে,সেই জামাকাপর বা বস্তু কী পরিষ্কার করে ব্যাবহার করাযাবে?

1 Answer

0 votes
by (597,330 points)
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
(১) কোনো পাত্রে বা গ্লাসে মদ বা মদ জাতীয় দ্রব্য পান করার পর ঐ গ্লাস বা পাত্র পানি দিয়ে পরিষ্কার করে পরবর্তীতে ব্যবহার করা যাবে। 

(২) কোনো ব্যাবহার্য বস্ত বা জামা কাপরে মদ বা মদ জাতীয় দ্রব্য লাগার পর সেগুলো পরিষ্কার করে ব্যাবহার করা যাবে।

(৩) কোনো জামা কাপরে বা কোনো বস্তুতে আলকোহল জাতীয় পারফিউম ইউস করলে,সেই জামাকাপর বা বস্তু ব্যবহার করার বিধান জানার পূর্বে আমাদেরকে এ্যলকোহল সম্পর্কে জানতে হবে। 

(১)
বর্তমান সময়ে বাজারে পাওয়া যাওয়া এলকোহল কি হালাল না হারাম?এ সম্পর্কে বিশিষ্ট ফকিহ শাইখুল ইসলাম তাক্বী উসমানী (দাঃবা) লিখেন,
وان معظم الكحول التي تستعمل اليوم في الادوية والعطور وغيرها لا تتخذ من العنب او التمر انما تتخذ من الحبوب او القشور او البترول وغيره
ভাবার্থঃএলকোহল যা আজ বিভিন্ন ঔষধ বা আতর/সেন্টে ব্যবহৃত হয়ে আসছে তার অধিকাংশই আঙ্গুর বা খেজুর থেকে তৈরী হচ্ছে না।
বরং তা বিভিন্ন প্রকার শস্যদানা,খোসা,এবং খনিজ পদার্থ ইত্যাদি থেকেই তৈরী করা হচ্ছে।(বিধায় সেগুলো হারাম হবে না যতক্ষণ না মদ হওয়ার পূর্ণবিশ্বাস হচ্ছে)(তাকমিলাতু ফাতহুল মুসলিম 3/608)

সু-প্রিয় পাঠকবর্গ!
কোনো প্রকার এলকোহল সম্পর্কে যদি জানা যায় যে, সেটা মদ থেকে তৈরী করা হয়েছে,অথবা যা সেবন করলে নেশা চলে আসে তাহলে তা অবশ্যই মদের মতই হারাম।আর যদি এলকোহলটি মদ থেকে তৈরী হওয়া সম্পর্কে জানা না যায়, তাহলে তা হারাম হওয়ার আপাদত কোনো কারণ পাওয়া যাচ্ছে না। হারাম প্রমাণিত না হলে যেহেতু প্রত্যেক জিনিষের মৌলিকত্ব বৈধ,বিধায় সেটাও বৈধ হবে।

ঠিকতেমনিভাবে কোনো হারামের মৌলিকত্ব বদলে গিয়ে যদি তা ভিন্নরূপ ধারণ করে তবে সেটাও বৈধ হবে।

যেহেতু সিটাইল ক্রিম  ব্যাপক প্রচলিত, অন্যদিকে অনুসন্ধানে দেখা গেছে যে, এলকোহলের অধিকাংশ ই মদ থেকে তৈরী হয় না, তাই কোনো এলকোহল সম্পর্কে হারাম প্রমাণিত হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত তা হালাল ও বৈধ। সুতরাং উক্ত দৃষ্টিভঙ্গি তে সিটাইল অ্যালকোহলযুক্ত ক্রিম বৈধ। এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন- https://www.ifatwa.info/165


উত্তম/অনুত্তম
প্রশ্ন হতে পারে তাহলে এগুলো ব্যবহার করা উত্তম না পরিত্যাগই উত্তম?সেই প্রশ্নের জবাবে বলা যেতে পারে যে,হাদীস শরীফে আছে, 
নু'মান ইবনে বশির রাযি থেকে বর্ণিত
 ﺇِﻥَّ ﺍﻟْﺤَﻠَﺎﻝَ ﺑَﻴِّﻦٌ ، ﻭَﺇِﻥَّ ﺍﻟْﺤَﺮَﺍﻡَ ﺑَﻴِّﻦٌ، ﻭَﺑَﻴْﻨَﻬُﻤَﺎ ﻣُﺸْﺘَﺒِﻬَﺎﺕٌ ﻟَﺎ ﻳَﻌْﻠَﻤُﻬُﻦَّ ﻛَﺜِﻴﺮٌ ﻣِﻦَ ﺍﻟﻨَّﺎﺱِ ، ﻓَﻤَﻦِ ﺍﺗَّﻘَﻰ ﺍﻟﺸُّﺒُﻬَﺎﺕِ ﺍﺳْﺘَﺒْﺮَﺃَ ﻟِﺪِﻳﻨِﻪِ ، ﻭَﻋِﺮْﺿِﻪِ ، ﻭَﻣَﻦْ ﻭَﻗَﻊَ ﻓِﻲ ﺍﻟﺸُّﺒُﻬَﺎﺕِ ﻭَﻗَﻊَ ﻓِﻲ ﺍﻟْﺤَﺮَﺍﻡِ ، ﻛَﺎﻟﺮَّﺍﻋِﻲ ﻳَﺮْﻋَﻰ ﺣَﻮْﻝَ ﺍﻟْﺤِﻤَﻰ ، ﻳُﻮﺷِﻚُ ﺃَﻥْ ﻳَﺮْﺗَﻊَ ﻓِﻴﻪِ ، ﺃَﻟَﺎ ﻭَﺇِﻥَّ ﻟِﻜُﻞِّ ﻣَﻠِﻚٍ ﺣِﻤًﻰ ، ﺃَﻟَﺎ ﻭَﺇِﻥَّ ﺣِﻤَﻰ ﺍﻟﻠﻪِ ﻣَﺤَﺎﺭِﻣُﻪُ
নিশ্চয়ই হালাল স্পষ্ট এবং হারামও স্পষ্ট, আর এ উভয়ের মাঝে রয়েছে সন্দেহজনক বিষয়, অনেক লোকই সেগুলো জানে না। যে ব্যক্তি এসব সন্দেহজনক বিষয় থেকে দূরে থাকে সে তার দ্বীন ও মর্যাদাকে নিরাপদে রাখে, আর যে লোক সন্দেহজনক বিষয়ে পতিত হবে সে হারামের মধ্যে লিপ্ত হয়ে পড়বে। যেমন কোন রাখাল সংরক্ষিত চারণভূমির পাশে পশু চরায়, আশংকা রয়েছে সে পশু তার ভেতরে গিয়ে ঘাস খাবে। সাবধান! প্রত্যেক রাজারই সংরক্ষিত এলাকা থাকে, সাবধান আল্লাহর সংরক্ষিত এলাকা হলো তার হারামকৃত বিষয়গুলো। জেনে, রেখো, দেহের মধ্যে এক টুকরা গোশত আছে। যখন তা সুস্থ থাকে তখন সমস্ত দেহই সুস্থ থাকে। আর যখন তা নষ্ট হয়ে যায় তখন সমস্ত দেহই নষ্ট হয়ে যায়। স্মরণ রেখো, তা হলো 'কালব' হৃদয়।(সহীহ মুসলিম-১৫৯৯)

সু-প্রিয় পাঠকবর্গ!
উক্ত হাদীসে সন্দেহপূর্ণ তথা যার ব্যাপারে পরিপূর্ণরূপে নিশ্চিত হওয়া যাচ্ছে না, সে সম্পর্কে বলা হচ্ছে যে তা থেকে বিরত থাকতে।তাই এগুলা থেকে যদি বিরত থাকতে পারি তাহলে তো সেটা কতই না উত্তম।আল্লাহ-ই সর্বজ্ঞ। আরো জানুন- https://www.ifatwa.info/11906

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
এ্যলকোহলকে অকাট্য হারাম বলা যাবে না। তাই এ্যলকোহল সম্ভলিত পোষাক পড়া নাজায়েয হবে না। হ্যা এ জাতীয় পোষাককে ধৌত করে পরিধান করাই উত্তম। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...