খুশুখুজু সহকারে নামাজ পড়তে হবে।
সুরা বাকারার ২৩৮ নং আয়াতে মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ
وَ قُوۡمُوۡا لِلّٰهِ قٰنِتِیۡنَ ﴿۲۳۸﴾
এবং তোমরা আল্লাহর সামনে বিনীতভাবে দন্ডায়মান হও।
হাদীস শরীফে এসেছে, হযরত আয়েশা রাঃ বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ ﷺ কে জিজ্ঞাসা করেছি যে, নামাজে এদিক সেদিক তাকানোর ব্যাপারে আপনি কী বলেন? জবাবে তিনি বলেছেন,
عن عائشة أم المؤمنين قالت سَأَلْتُ رَسولَ اللَّهِ ﷺ عَنِ الِالْتِفاتِ في الصَّلاة فَقالَ هو اخْتِلاسٌ يَخْتَلِسُهُ الشَّيْطانُ مِن صَلاةِ العَبْدِ
অর্থাৎ এটা হলো শয়তানের ছোঁ মারা, যা দ্বারা শয়তান আল্লাহর বান্দাদেরকে নামাজ থেকে গাফেল ও উদাসীন করে ফেলে।
(বুখারী হাদিস-৭৫১)
রাসূলুল্লাহ (সা:) একথাও বলেছেন যে, “যখন তোমাদের মাঝে কোন ব্যক্তি নামাজের জন্য দাঁড়ায় তবে সে যেন সর্বাত্মকভাবে আল্লাহর দিকে অনুপ্রাণিত থাকে, নিবিষ্ট থাকে, এমনিভাবেই যেন নামাজ শেষ করে এবং নামাজে মুখ ফিরিয়ে এদিক-সেদিক তাকিয়ো না। কেননা, যতক্ষণ তোমরা নামাজে রত থাক, ততক্ষণ তোমরা আল্লাহর সঙ্গে কথাবার্তা বলছ।” (কানজুল উম্মাল : ৪ খ: ১০৮ পৃ:)
.
★সুতরাং নামাজি কোনো ব্যাক্তিকে নামাজের মধ্যে এরকম বলা ঠিক নয়।
এতে খুশুখুজু ঠিক থাকেনা।
(০২)
প্রস্রাব চেপে রেখে নামাজ পড়া মাকরুহ।
এতে নামাজের খুশু-খুজু (একাগ্রতা) বিঘ্নিত হয় এবং হৃদয় মন নিবিষ্ট করে পরিপূর্ণ তৃপ্তির সঙ্গে নামাজ আদায় করা সম্ভব হয় না। তাই এসব চাপ থেকে মুক্ত হয়ে পূর্ণ তৃপ্তি ও স্থিরতার সঙ্গে নামাজ আদায় করা উচিত।
হাদিস শরিফে প্রস্রাব-পায়খানা ও বায়ুর চাপ নিয়ে নামাজ আদায় করতে নিষেধ করা হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আরকাম (রা.) বলেন, আমি হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে বলতে শুনেছি, ‘যখন কেউ নামাজে দাঁড়িয়ে যায়, আর কারও প্রস্রাব-পায়খানার প্রয়োজন দেখা দেয়; সে যেন প্রথমে প্রয়োজন সেরে নেয়। (জামে তিরমিজি, হাদিস- ১৪২)
প্রস্রাব-পায়খানা এবং বায়ুর চাপ নিয়ে নামাজ শুরু করা মাকরূহে তাহরিমি। আর স্বাভাবিক অবস্থায় নামাজ শুরু করার পর নামাজের মাঝে এমন চাপ সৃষ্টি হলে নামাজের পর্যাপ্ত ওয়াক্ত বাকি থাকা সত্ত্বেও এ অবস্থায় নামাজ চালিয়ে যাওয়া মাকরূহ। এ ধরনের ক্ষেত্রে নামাজ ছেড়ে দিয়ে প্রয়োজন শেষ করে পূর্ণ চাপমুক্ত হয়ে নামাজ আদায় করা উচিত। অবশ্য নামাজের ওয়াক্ত যদি এতটাই কম থাকে, যাতে প্রয়োজন সারতে গেলে নামাজ কাজা হয়ে যেতে পারে; সেক্ষেত্রে সম্ভব হলে এ অবস্থায়ই নামাজ পড়ে নেওয়া যাবে। তবে পর্যাপ্ত ওয়াক্ত থাকার পরও কোনো ইমাম বা একাকী নামাজ আদায়কারী যদি এ অবস্থায় নামাজ পড়ে নেয় তবে এমনটি করা মাকরূহ হলেও তাদের নামাজ আদায় হয়ে যাবে। পুনরায় পড়া জরুরি নয়। কিন্তু ভবিষ্যতে এরূপ করা থেকে বিরত থাকতে হবে। (রদ্দুল মুহতার/১; ৩৪১ ও ৬৪৪)