আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
367 views
in সালাত(Prayer) by (23 points)

আসসালামু আ'লাইকুম

১)

কি কি কারণে রোজা ভঙ্গ হয় ? কখন কাজা ওয়াজিব হয় আর কখন কাজা , কাফফারা ২ টাই ওয়াজিব হয় ?

২)

কিতাবুস সাওম এ দেখলাম - " যদি কেউ ভুলে অথবা অসতর্কতার কারণে অথবা জোরপূর্বক বাধ্য করার কারণে পানাহার করে তাহলে সিয়াম ভঙ্গ হবে না এবং তার উপর কাজা কাফফারা কোনটাই ওয়াজিব হবে না "

কিন্তু হানাফি ফিকহ গ্রুপে দেখলাম- " জোরপূর্বক বাধ্য করার কারণে পানাহার করে তাহলে সিয়াম ভঙ্গ হয় "

কোনটি সঠিক ? আর এটি কি হানাফি ফিকহ এর ফতুয়া নাকি বর্তমান আলেমদের ?

৩)

আহকামে জিন্দেগী বইয়ে পেয়েছি - - তারাবি পরানোর বদলে টাকা নেয়া জায়েজ নেই।

আমার জনা মতে এই বই হানাফি ফিকহ অনুযায়ী লেখা। তাছাড়া একজনের লেখায় দেখলাম -- হানাফি ফিকহে এই বিষয়টি নাজায়েজ।

কিন্তু আমাদের দেশের অধিকাংশ হানাফি হওয়া সত্বেও টাকা #চুক্তি করে তারাবি পড়ায় কেন?

তাদের কি এই বিষয় জানাইনি তাদের ওস্তাদ নাকি তারা অমান্য করছে?

যারা এরুপ করে তাদের বিধান কি?

1 Answer

0 votes
by (708,200 points)
edited by
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
ডা.নিশাত তাম্মিম লিখেন,
বাহির থেকে কোনো বস্তু দেহের অভ্যন্তরে প্রবেশ করার পর রোযা ভঙ্গ হবে কি না? এ সম্পর্কে মূলনীতিঃ
এ ব্যাপারে ফকিহগণ একমত যে,ততক্ষণ পর্যন্ত রোযা ভঙ্গ হবে না,যতক্ষণ না পাঁচটি বস্তু একত্রিত হচ্ছে।অর্থাৎ কোন বস্তু দেহের অভ্যন্তরে প্রবেশ করলেই রোযা ভঙ্গ হয়না ,যে পর্যন্ত নিন্মোল্লিখিত পাঁচটি জিনিষ পাওয়া যাচ্ছে।
হানাফী ফিক্বহের উসূল-
১। বস্তুকণার বৈশিষ্ট্যঃ দৃশ্যমান হওয়া, ছোট-বড়, পুষ্টিকর-অপুষ্টিকর যাই হোক।
২। গ্রহণযোগ্য পদ্ধতিঃ গন্তব্যে স্থায়ীভাবে অবস্থান করা।(বাদায়ে সানায়ে-২/২২৭)
৩। বস্তুকণার প্রবেশপথঃ মুখ, নাক, মলদ্বার। (চোখ, কান, মূত্রনালী, যোনীপথ, ত্বক, লোমকূপ ইত্যাদি গ্রহণোযগ্য প্রবেশপথ নয়।
৪। বস্তুকণার গন্তব্যঃ গলা, পাকস্থলী, অন্ত্র। (ইতোপুর্বে মস্তিষ্ককেও অন্তর্ভুক্ত করা হতো, কিন্তু পরবর্তীতে চিকিৎসাবিজ্ঞানের উন্নতির ফলে জানা গিয়েছে যে, খাবার সরাসরি মস্তিষ্কে পৌঁছে না, তাই এটিকে গন্তব্য থেক বাদ দেয়া হয়েছে।)
৫। প্রতিবন্ধকঃ ভুলে অথবা আধিক্যের কারণে বস্তুকণা প্রবেশ করলে রোযা ফাসিদ হবে না। যেমন- কেউ ভুলে কোন ঔষধ খেয়ে ফেললো কিংবা ধোয়া ও ধূলাবালির আধিক্যের কারণে তা নাক-মুখ দিয়ে প্রবেশ করলো,তাহলে এমতাবস্থায় রোযা ভঙ্গ হবে না।
সাউদী স্থায়ী কমিটির ফতোয়ার মূলনীতি-
১। দৃশ্যমান বস্তুকণা মুখ অথবা নাক দিয়ে প্রবেশ করে পাকস্থলীতে পৌঁছা। অবস্থান করা জরুরী নয় (ইমাম আহমাদ, ইমাম মালিক, ইমাম শাফেঈ রহ.)।
২। শক্তিবর্ধক বা পুষ্টিকর বস্তু যেকোন পথে প্রবেশ করিয়ে দেহের শক্তিবর্ধন করা হলে (যেমন- শিরাপথে স্যালাইন), কিংবা শক্তিবর্ধক বস্তু ইচ্ছাকৃতভাবে দেহ থেকে অধিক পরিমাণে বের করে শক্তি হ্রাস করা হলে। যেমন- হিজামা, রক্তদান ইত্যাদি। । (ইবনে তাইমিয়্যাহ রহ.)
৩। প্রতিবন্ধকঃ ভুলে, অনিচ্ছায়, বাধ্য হয়ে, না জানার কারণে বস্তুকণা প্রবেশ করলে রোযা ফাসিদ হবে না।

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
মুখ,নাক,কান এবং প্রস্রাব পায়খানার রাস্তা দিয়ে পাকস্থলী কিংবা দেমাগে কোনো কিছু প্রবেশ করলে রোযা ফাসিদ হবে। তাছাড়া হায়েয নেফাসের রক্ত, সহবাস বা হস্তমৈথুন দ্বারা বীর্যপাত ঘটালে রোযা ফাসিদ হয়ে যাবে। 

ভুলে রোযাকে নষ্ট করলে বা শরীয়ত অনুমোদিত কোনো কারণে রোযা ভাঙ্গলে তখন শুধুমাত্র কাযা ওয়াজিব হবে।এক্ষেত্রে কাফফারা আসবে না। নতুবা কাযা কাফফারা উভয়টা আসবে। 

(২)
" জোরপূর্বক বাধ্য করার কারণে পানাহার করে তাহলে সিয়াম ভঙ্গ হয় "

এটা হানাফি ফিকহের ফাতাওয়ায়। 

(৩)চুক্তি করে টাকা নেওয়া জায়েয না। তবে কেউ হাদিয়া দিয়ে দিলে তা অবশ্যই জায়েযই হবে। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (708,200 points)
সংযোজন ও সংশোধন করা হয়েছে। 

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 464 views
0 votes
1 answer 341 views
0 votes
1 answer 133 views
...