আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

+2 votes
526 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (45 points)

১। অনেক মানুষকে god of business, god of gaming, এরকম আরো অনেক  পদবী দেওয়া হয়  এরকম বলা কি জায়েজ?

 

২। ছোট কুফরি অথবা বড় কুফুরী করে সে যদি তওবা না করে মারা যায় তাহলে সে কি চির জাহান্নামী হয়ে যাবে ? 

 

৩।  বর্তমানে বিশ্বের বিভিন্ন জায়গায় স্পার্ম ব্যাংক তৈরি হয়েছে সেখানে অনেক পুরুষেরই স্পার্ম কালেক্ট করা হয় এগুলো জায়গায় স্পার্ম ডোনেট করা কি জায়েজ ?

 

৪। যেহেতু আল্লাহর কোন জেন্ডার নেই  তা সত্ত্বেও তাকে অনেক সময় He  শব্দটি দিয়ে কেন সম্বোধন করা হয় ?

৫। গাইরুল্লাহ্ নামে কসম খাওয়া অর্থাৎ আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো নামে কসম খাওয়া এটা কি ছোট শিরক নাকি বড় শিরক ? এরকম করে কেউ যদি তওবা না করে মারা যায় তাহলে সে কি চির জাহান্নামী হবে ?

1 Answer

0 votes
by (589,140 points)

ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
(১)
god of business, god of gaming, এরকম আরো অনেক  পদবী দেওয়া হয়  এরকম বলা নাজায়েয।

(২)
বড় কুফুরী করে যদি কেউ তওবা না করে মারা যায় তাহলে সে কি চির জাহান্নামী হবে।তবে ছোট কুফরী করে মারা গেলে হবে না।

(৩)
বর্তমানে বিশ্বের বিভিন্ন জায়গায় স্পার্ম ব্যাংক তৈরি হয়েছে সেখানে অনেক পুরুষেরই স্পার্ম কালেক্ট করা হয় এগুলো জায়গায় স্পার্ম ডোনেট করা সম্পূর্ণ নাজায়েয ও হারাম।


(৪)
গায়রুল্লাহ কে আল্লাহর মুকাবেলায় দার করিয়ে কসম খেলে বড় শিরক হবে।নতুবা ছোট শিরক।


আল্লাহর সঙ্গে কাউকে অংশীদার স্থাপন করাই হলো শিরক। যেমন- আল্লাহ তাআলাকে ছাড়া অন্য কাউকে ইবাদতের উপযুক্ত মনে করে তাঁর উপাসনা করা; অন্য কাউকে আল্লাহর ন্যায় ভালোবাসা; আল্লাহ ব্যতিত অন্যের নামে পশু কুরবানি বা মানত করা; কল্যাণ ও ক্ষতি সাধনের মালিক হিসেবে অন্য কাউকে বিশ্বাস করাসহ এ রকম অসংখ্য বিষয়ে বিশ্বাস স্থাপনই হলো শিরক।শুধু আল্লাহ তাআলার সঙ্গে কাউকে অংশীদার স্থাপন না করেও অনেকে শিরকের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ে। যেমন- আল্লাহ তাআলা যে সব নাম ও গুণাবলী রয়েছে; সে সব বৈশিষ্ট্য ও গুণে তিনি মানুষের একক রব ও মা’বুদ।আল্লাহ তাআলার এ সব গুণ ও বৈশিষ্ট্যের সঙ্গে কোনো নবি, রাসুল, অলি, গাছ ও পাথরসহ কোনো জিনিসকে উদ্দেশ্য করে মুখে, শরীরের কোনো অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ এবং অন্তর দ্বারা ইবাদতমূলক কোনো কাজ করা শিরকে আকবর বা বড় শিরক।উপরোল্লিখিত কাজগুলোর মাধ্যমে একজন মানুষ ইসলামের অমূল্য নিয়ামত থেকে বের হয়ে মুশরিকে পরিণত হয়। কেননা শিরক কুফরিরই নামান্তর। এ কারণে শিরককারীর কোনো নেক আমলই কাজে আসে না বরং সব ভালো কাজগুলো বিফলে পরিণত হয়। আল্লাহ তাআলা শিরক মিশ্রিত কোনো নেক আমলই গ্রহণ করেন না।আল্লাহ তাআলা তাআলা কুরআনুল কারিমের অসংখ্য আয়াতে মানুষকে তাঁর ইবাদত করার জন্য নির্দেশ প্রদান করেছেন এবং শিরক করা থেকে বিরত থাকতে কঠোরভাবে নিষেধ করেছেন। শিরককারী জন্য রয়েছে ভয়াবহ পরিণতি।কুরআনে শিরকের ভয়াবহ পরিণতিশিরকের ভয়াবহ পরিণতি সম্পর্কে আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন, ‘আল্লাহ তাআলা অবশ্যই তাঁর সঙ্গে করা শিরকের গোনাহ ক্ষমা করবেন না। এছাড়া অন্যান্য গত গোনাই হোক না কেন, তিনি যাকে ইচ্ছা ক্ষমা করে দেন। যে ব্যক্তি আল্লাহর সঙ্গে কাউকে শরিক করেছে সে তো এক বিরাট মিথ্যা রচনা করেছে এবং কঠিন গোনাহের কাজ করেছে। (সুরা নিসা : আয়াত ৪৮)আল্লাহ তাআলা শিরককারীর জন্য জান্নাত হারাম করেছেন। তাদেরকে জালিক বা অত্যাচারী ঘোষণা করে তাদের জন্য কোনো সাহায্যকারী থাকবে না বলেও ঘোষণা করেছেন। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘যে ব্যক্তি আল্লাহর সঙ্গে কাউকে শরিক করেছে; আল্লাহ তাঁর ওপর জান্নাত হারাম করে দিয়েছেন। তার পরিণতি হবে জাহান্নাম। এ সব জালিমদের জন্য কোনো সাহায্যকারী নেই।’ (সুরা মায়িদা : আয়াত ৭২)আল্লাহ তাআলা শিরকরে ভয়াবহতা উল্লেখ করে পূর্ববর্তী নবিদেরকে সতর্ক করেছেন। আল্লাহ বলেন, ‘যদি তাঁরা (সব নবি-রাসুলগণ) শিরক করতো তবে অবশ্যই তাদের করা সব নেক আমল বরবাদ হয়ে যেত।’ (সুরা আনআ’ম : আয়াত ৮৮)অন্য আয়াতে আল্লাহ বলেন, ‘আর যে আল্লাহর সঙ্গে শিরক করল; সে যেন আকাশ থেকে ছিটকে পড়ল, অত:পর মৃতভোজী পাখী তাকে ছোঁ মেরে নিয়ে গেল অথবা বাতাস তাকে উড়িয়ে নিয়ে কোনো দূরবর্তী স্থানে নিক্ষেপ করল।’ (সুরা হজ : আয়াত ৩১)সর্বোপরি শিরকের ভয়াবহতার কথা ও ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভূক্ত হয়ে যাওয়ার কথা উল্লেখ করে আল্লাহ তাআলা বিশ্বনবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে উদ্দেশ্য করে সুস্পষ্টভাবে কুরআনে ইরশাদ করেন, ‘(হে নবি!) আপনার প্রতি এবং আপনার পূর্ববর্তী নবিদের প্রতি ওহি করা হয়েছে যে, যদি আল্লাহর সঙ্গে শরিক স্থাপন করেন, তাহলে আপনার সব আমল বিনষ্ট হয়ে যাবে এবং আপনি ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভূক্ত হয়ে যাবেন।’ (সুরা যুমার : আয়াত ৬৫)পরিশেষে...শিরক মারাত্মক অপরাধ। যে অপরাধের কারণে আল্লাহ তাআলা শুধু সাধারণ মানুষই নয় বরং তাঁর প্রিয় নবি ও রাসুলদের সব নেক আমলকে বরবাদ করে দেবেন। উল্লেখিত কুরআনের আয়াতই তাঁর জলন্ত প্রমাণ।আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে শিরকের ভয়াবহ পরিণতি থেকে হিফাজত করুন। সব ধরনের ছোট ও বড় শিরক থেকে হিফাজত করুন। শিরকমুক্ত পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্র গঠনের তাওফিক দান করুন। আমীন


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...