ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
(1)
من حفظ عشر آيات من أول سورة الكهف عصم من الدجال (رواه مسلم) من قرأ العشر الأواخر من سورة الكهف، فإنه عصمة من الدجال» أخرجه النسائي.
সূরা কাহফের প্রথম ও শেষ দশ আয়াত কেউ পড়লে আল্লাহ দাজ্জালের ফিতনা থেকে হেফাজত করবেন।তবে সূরা কাহফের শেষ দশ আয়াত সম্ভলিত বর্ণনা সায।
(2)
সু-প্রিয় পাঠকবর্গ!
উপরোক্ত আলোচনা থেকে প্রতিয়মান হলো,
গোঁফ কাটর পদ্ধতি নিয়ে অনেক শক্ত মতবেদ রয়েছে।
যে জন্য কেউ কেউ যেমনঃ আল্লামা ইরাক্বী কাযী ইয়ায থেকে দুটিরই বৈধতা প্রদান করে বলেন যেকোনো পদ্ধতিকে নি:সন্দেহে গ্রহণ করা যাবে।
(তরহুস তাছরীব)
সু-প্রিয় পাঠকবর্গ!
তবে উপরোক্ত আংষিক আলোচনা ও উপরোক্ত কিতাব সমূহ পূর্ণভাবে অনুধাবন করার পর আমরা কেচি দিয়ে ছেঁচে ছোট করার পদ্ধতিকে উত্তম বলে ঘোষণা দিতে পারি।
কেননা সুনানে নাসাঈ এর এক বর্ণনায় এসেছে,
হযরত আবু হুরায়রা রাযি থেকে বর্ণিত আছে,
ﻋﻦ ﺃﺑﻲ ﻫﺮﻳﺮﺓ ﺃﻥ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﻗﺎﻝ : " ﺧﻤﺲ ﻣﻦ ﺍﻟﻔﻄﺮﺓ : ﺍﻟﺨﺘﺎﻥ، ﻭﺣﻠﻖ ﺍﻟﻌﺎﻧﺔ، ﻭﻧﺘﻒ ﺍﻹﺑﻂ، ﻭﺗﻘﻠﻴﻢ ﺍﻟﻈﻔﺮ، ﻭﺗﻘﺼﻴﺮ ﺍﻟﺸﺎﺭﺏ ."
নবীজী সাঃ বলেনঃ
পাঁচটি জিনিষ (স্বভাবত) সুন্নাত।
(১)খৎনা করা,
(২)নাভির নীচ পরিস্কার করা,
(৩)বগলের রোম পরিস্কার করা,
(৪)নক কাটা,
(৫)গোফ ছেঁচে ছোট করা।
সুতরাং অন্যান্য রেওয়াতকে উপরোক্ত রেওয়াতের উপর মাহমুল করা হবে।
যেমন শা'ফী মাযহাবের গবেষক ও বিশিষ্ট মুহাদ্দিস ইমাম নববী রাহ লিখেনঃ
ﻭﻗﺎﻝ ﺍﻟﻨﻮﻭﻱ ﻓﻲ " ﺍﻟﻤﺠﻤﻮﻉ " ( 1/340 ) :
" ﻭﻫﺬﻩ ﺍﻟﺮﻭﺍﻳﺎﺕ – ﻳﻌﻨﻲ ﺭﻭﺍﻳﺎﺕ ( ﺃﺣﻔﻮﺍ .. ﺃﻧﻬﻜﻮﺍ .. ﺍﻟﺸﻮﺍﺭﺏ ) - ﻣﺤﻤﻮﻟﺔٌ ﻋﻨﺪﻧﺎ ﻋﻠﻰ ﺍﻟﺤﻒ ﻣﻦ ﻃﺮﻑ ﺍﻟﺸﻔﺔ ، ﻻ ﻣِﻦ ﺃﺻﻞ ﺍﻟﺸﻌﺮ " ﺍﻧﺘﻬﻰ .
যে সমস্ত রেওয়াতে গোঁফ কর্তনের জন্য "আহফু"বা "আনহিকু"শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে তা দ্বারা উদ্দেশ্য হল,গোঁফকে কেচি দিয়ে ছেঁচে ঠোটের উপরিভাগ পর্যন্ত কর্তন করা।মুলুৎপাটন নয়।
এবং ইমাম আবুল ওয়ালিদ আল-বাজি রাহ বলেনঃ
ﻗﺎﻝ ﺃﺑﻮ ﺍﻟﻮﻟﻴﺪ ﺍﻟﺒﺎﺟﻲ ﻓﻲ " ﺍﻟﻤﻨﺘﻘﻰ ﺷﺮﺡ ﺍﻟﻤﻮﻃﺄ " ( 7/266 ) :
" ﺇﻧﻬﺎﻙ ﺍﻟﺸﻲﺀ ﻻ ﻳﻘﺘﻀﻲ ﺇﺯﺍﻟﺔ ﺟﻤﻴﻌﻪ ، ﻭﺇﻧﻤﺎ ﻳﻘﺘﻀﻲ ﺇﺯﺍﻟﺔ ﺑﻌﻀﻪ . ﻗﺎﻝ ﺻﺎﺣﺐ " ﺍﻷﻓﻌﺎﻝ " : ﻧﻬﻜﺘﻪ ﺍﻟﺤﻤﻰ ﻧﻬﻜﺎ : ﺃﺛﺮﺕ ﻓﻴﻪ " ﺍﻧﺘﻬﻰ .
ইনহাক শব্দ দ্বারা গোঁফকে মুলুৎপাটন বুঝায় না,বরং তা গোফের কিছু অংশকে কর্তন করা বুঝায়।
মুনতাকা শরহে মুয়াত্বা ৭/২৬৬।
মোটকথা:
গোঁফ চেঁছে ফেলা এবং কেচি দিয়ে ছেঁচে ছোট করে রাখা উভয়ই জায়েজ এবং সুন্নাত।
তবে কোনটি উত্তম এ ব্যপারে সিদ্ধান্ত হচ্ছে,
যেমন বিভিন্ন কিতাবে বর্ণিত আছে,
""গোফ মুন্ডানো জায়েয আছে,তবে কেচি দিয়ে কাটা উত্তম""
কিফায়াতুল মুফতী-৯/১৭৮;
(দারুল এশায়াত উর্দু বাজার করাচি,থেকে ২০০১ ইং তে ৮খন্ডে প্রকাশিত)
""গোফ মুন্ডানো পরিত্যাগ করে কেচি দিয়ে কাটা উত্তম""
ফাতাওয়ায়ে মাহমুদিয়া-১৯/৪২৩;
(দারুল ইফতা," জামেয়া ফারুক্বিয়া করাচি" কর্তৃক সত্যায়িত ও সংশোধিত সংস্করণ-২৫ ভলিউমে প্রকাশিত)
""উভয়টাই জায়েয তবে কেচি দিয়ে কাটা উত্তম""
আহসানুল ফাতাওয়া-৮/৪৫১;
(এইচ.এম.সাঈদ কম্পানি, করাচি থেকে ১০খন্ডে প্রকাশিত-১৩৯৮হিজরী)
(৩)
হযরত ইবনে আব্বাস রাযি থেকে বর্ণিত
وَعَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ وَأَنَسِ بْنِ مَالِكٍ قَالَا: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ - صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ -: " «إِذَا زُلْزِلَتْ تَعْدِلُ نِصْفَ الْقُرْآنِ، وَقُلْ هُوَ اللَّهُ أَحَدٌ تَعْدِلُ ثُلُثَ الْقُرْآنِ، وَقُلْ يَا أَيُّهَا الْكَافِرُونَ تَعْدِلُ رُبْعَ الْقُرْآنِ» "
রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেন,সূরা যিলযাল অর্ধেক কুরআনের সমতুল্য। সূরা ইখলাছ কুরআনের এক তৃতীয়াংশ। সূরা কাফিরুন কুরআনের এক চতুর্থাংশের সমতুল্য। (সুনানু তিরমিযি-২৮৯৪,মিশকাত-২১৫৬)
হযরত আবু হুরায়রা রাযি থেকে বর্ণিত,
وَعَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ - صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ -: «إِنَّ سُورَةً فِي الْقُرْآنِ ثَلَاثُونَ آيَةً شَفَعَتْ لِرَجُلٍ حَتَّى غُفِرَ لَهُ وَهِيَ تَبَارَكَ الَّذِي بِيَدِهِ الْمُلْكُ» " رَوَاهُ أَحْمَدُ وَالتِّرْمِذِيُّ وَأَبُو دَاوُدَ وَالنَّسَائِيُّ وَابْنُ مَاجَهْ.
রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেন,কুরআনের একটি সূরা যেটাতে ত্রিশটি আয়াত রয়েছে।যা বান্দাকে সুপারিশ করে ক্ষমা করিয়ে নিবে।সেটা হল,সূরা মুলক।(মিশকাতুল মাসাবিহ-২১৫৩)