আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
359 views
in পবিত্রতা (Purity) by (59 points)

(১) ইলেকট্রনিক্স জিনিসে নাপাক লেগে গেলে জিনিসটি পরিষ্কার করার উপায় কী?যদি পানি দিয়ে ধুতে গেলে নষ্ট হওয়ার আশংকা থাকে।মুছে নাপাকি দূর করার নিয়ম কি?ভেজা কাপড় দিয়ে মুছতে হবে নাকি শুকনো কাপড় দিয়ে ঘষে মুছলেন হবে? কয়বার মুছতে হবে?                                            (২) পায়খানা করার পর পায়ুপথ হাত দিয়ে ধোয়ার পর হাত আঙ্গুল সহ পানি দিয়ে তিনবার ধোয়ার পরও যদি হাত বা আঙ্গুল বা দুটোতে একসাথে পায়খানার গন্ধ থেকে যায় তাহলে হাত বা আঙ্গুল বা দুটোই কি তখনও নাপাক থাকবে?যদি নাপাক থাকে তাহলে পরিষ্কার করার উপায় কি?                                    (৩) তায়াম্মুম করার জন্য মাটি,বালু বা ধুলা জমে থাকে এমন কোন জায়গা না পেলে ঘরের দেয়ালে একবার হাত লাগিয়ে মুখমন্ডল এবং আর একবার হাত লাগিয়ে কনুই পর্যন্ত দুই হাত মাসাহ করলে তায়াম্মুম হবে কী?                                                (৪)রোযা থাকা অবস্থায় যদি মযী বের হয় এবং গোপনাঙ্গ পানি দিয়ে ধুতে গেলে যদি গোপনাঙ্গের ভিতরে পানি ঢুকে যাওয়ার আশংকা থাকে তাহলে গোপনাঙ্গ পরিষ্কার করার উপায় কি? ‌‌‌‌                                         

1 Answer

0 votes
by (597,330 points)
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
(১) নাজাসতকে ১০টি পদ্ধতিতে পবিত্র করা যায় যথা-
(১)ধৌত করা,যেমন কাপড় ইত্যাদি।
(২)মোছা, যেমন আয়না,তলোয়ার ইত্যাদি।
(৩)টুকা দিয়ে নাজাসত দূর করা,যেমন গাড় বীর্য কে টুকা দিয়ে কাপড় থেকে দূরে সরিয়ে ফেলা,ইত্যাদি।
(৪)ঘর্ষণ, মর্দন, যেমন শরীর বিশিষ্ট নাজাসত যাকে ঘর্ষণ-মর্দন করে দূর করা হলে তা পবিত্র হয়ে যায়,ইত্যাদি।
(৫)শুকিয়ে নাজাসতের আসর দূর হয়ে যাওয়া,যেমন জমিন,গাছ ইত্যাদি শুকিয়ে পবিত্র হয়ে যায়,ইত্যাদি।
(৬)জ্বালানো, যেমন গোবর ইত্যাদি জ্বলে ভস্ম হয়ে ছাই হয়, যা পবিত্র।ইত্যাদি।
(৭)এক অবস্থা থেকে ভিন্নরূপ ধারণ করে পবিত্র হওয়া।যেমনঃ মদ থেকে সিরকায় পরিণত হওয়া যা কিনা পবিত্র।ইত্যাদি।
(৮)দেবাগত,যেমন মানুষ এবং খিনযির ব্যতীত সকল প্রকার প্রাণীর চামড়া কে লবন মাখিয়ে রৌদ্রে রাখলে তা পবিত্র হয়ে যায়,ইত্যাদি।
(৯)যবেহ, প্রাণীকে যবেহ করার মাধ্যমে উক্ত প্রাণীর চামড়া পবিত্র হয়ে যায়।যদি এমন প্রাণীও হয় যার গোস্ত ভক্ষণ করা হারাম,তবে তার চামড়াকে পবিত্র করে দেয়,ইত্যাদি।
(১০)নরখ,তথা যদি কোনো কোঁপে নাজসত পড়ে যায় তাহলে উক্ত কোঁপের মুনাসিব পরিমাণ পানি বাহিরে নিক্ষেপ করলেই উক্ত কোপ পবিত্র হয়ে যায়।ইত্যাদি।
এই মোট দশ ভাবে কোনো অপবিত্র জিনিষকে পবিত্র করা যায়। বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন- https://www.ifatwa.info/118

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
(১)
ইলেকট্রনিক্স জিনিসে নাপাক লেগে গেলে যদি পানি দিয়ে ধুতে গেলে নষ্ট হওয়ার আশংকা থাকে, তাহলে উক্ত নাজাসতের আসরকে দূর করে দিলেই পবিত্র হয়ে যাবে।  ভেজা কাপড় বা শুকনা কাপড় ,কোনোটাই শর্ত নয়। বরং নাজাসত দূর করে দিলেই পবিত্র হয়ে যাবে। এবং কত বার মুছতে হবে? সেটাও শর্তের অন্তর্ভুক্ত নয়। বরং কোনো ভাবে নাজাসত দূর করে দিলেই উক্ত জিনিষ পবিত্র হয়ে যাবে। 

(২)
নাজাসতের আসর দূর হওয়ার পরও হাতে দুর্গন্ধ থেকে গেলে, সেই দুর্গন্ধর কারণে হাত বা শরীর নাপাক হবে না।  হ্যা এই দুর্গন্ধকে মাঠি ইত্যাদি দ্বারা পবিত্র করা যাবে। 

(৩)  
আল্লাহ তা'আলা বলেন,
فَلَمْ تَجِدُواْ مَاء فَتَيَمَّمُواْ صَعِيدًا طَيِّبًا فَامْسَحُواْ بِوُجُوهِكُمْ وَأَيْدِيكُمْ إِنَّ اللّهَ كَانَ عَفُوًّا غَفُورًا
যদি পানিপ্রাপ্তি সম্ভব না হয়, তবে পাক-পবিত্র মাটির দ্বারা তায়াম্মুম করে নাও-তাতে মুখমন্ডল ও হাতকে ঘষে নাও। নিশ্চয়ই আল্লাহ তা’আলা ক্ষমাশীল।(সূরা নিসা-৪৩)

(জমিন ছাড়া) মাটি জাতীয় অন্যান্য জিনিসের উপরও তায়াম্মুম করা দুরুস্ত আছে; যেমন, মাটি, বালু, পাথর, বিলাতী মাটি, পাথর চুন, হরিতাল, সুরমা, গেরুমাটি ইত্যাদি। মাটি জাতীয় জিনিস না হইলে উহার উপর তায়াম্মুম জায়েয নহে; যেমন- সোনা, রূপা, রাং, গেহু, কাঠ, কাপড় এবং অন্যান্য শস্য ইত্যাদি। কিন্তু যদি এই সব জিনিসের উপর মাটি জমিয়া থাকে, তবে অবশ্য মাটির কারণে ইহার উপর তায়াম্মুম দুরুস্ত হইবে।

ফাতাওয়ায়ে বর্ণিত রয়েছে,কোন জিনিষ দ্বারা তায়াম্মুম করা যাবে আর কোন জিনিষ দ্বারা তায়াম্মুম করা যাবে না।
(وَمِنْهَا الصَّعِيدُ الطَّيِّبُ) يَتَيَمَّمُ بِطَاهِرٍ مِنْ جِنْسِ الْأَرْضِ. كَذَا فِي التَّبْيِينِ كُلُّ مَا يَحْتَرِقُ فَيَصِيرُ رَمَادًا كَالْحَطَبِ وَالْحَشِيشِ وَنَحْوِهِمَا أَوْ مَا يَنْطَبِعُ وَيَلِينُ كَالْحَدِيدِ وَالصُّفْرِ وَالنُّحَاسِ وَالزُّجَاجِ وَعَيْنِ الذَّهَبِ وَالْفِضَّةِ وَنَحْوِهَا فَلَيْسَ مِنْ جِنْسِ الْأَرْضِ وَمَا كَانَ بِخِلَافِ ذَلِكَ فَهُوَ مِنْ جِنْسِهَا. كَذَا فِي الْبَدَائِعِ.
যে জিনিষ মাঠির জিনস বা প্রকার থেকে হবে,সে জিনিষ দ্বারা তায়াম্মুম জায়েয রয়েছে।যে জিনিস আগুনে দিলে জ্বলেও না, গলেও না তাহা মাটি জাতীয়। তাহার উপর তায়াম্মুম দুরুস্ত আছে। যে জিনিস জ্বলিয়া ছাই হইয়া যায় বা গলিয়া যায়,যেমন স্বর্ণ রৌপ্য ইত্যাদি।তাহার উপর দুরুস্ত নহে।এবং ছাইয়ের উপর তায়াম্মুম দুরুস্ত নহে।
(ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া-১/২৬)


সু-প্রিয় পাঠকবর্গ ও প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
দেয়ালে যদি রং বা প্লাষ্টার না থাকে, বরং হয়তো শুধমাত্র ইট থাকে, বা চোনা দেওয়া থাকে, তাহলে দেয়ালে তায়াম্মুম করা যাবে। 

(৪)
যৌনাঙ্গের বাহিরের অংশ আলতো ভাবে পরিস্কার করে নিলেই হবে। অথবা ভিজা কাপড় দ্বারা বাহিরের অংশকে পরিস্কার করে নিলেই হবে। 



(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...