আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
588 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (45 points)
  1. জুমার দিনে অনেক এরকম করে যে জুমার নামাজ আদায় করে আবার একই  জোহরের নামাজ আদায় করে এটা কি বেদাত নয় ?

  2. কাবলাল জুমা এবং বাদাল জুমা এই দুটো একই সুন্নাতে মুয়াক্কাদা নামাজ জুমার নামাজের ?

  3. আমি নামাজের মধ্যে কিভাবে দোয়া করব এবং সেটা নিজ ভাষায় সেটা কি শুধুমাত্র   নিজের   নফল  নামাজ ক্ষেত্রে হবে নাকি সুন্নত ওয়াজিব ফরজ হবে ?

  4. শক্তির সৃষ্টি বা ধ্বংস নেই এক রূপ থেকে অন্য রূপে রূপান্তরিত হতে পারে এই জিনিসটা আমরা সাইন্সে পড়েছিলাম কিন্তু ইসলামী দৃষ্টিকোণ থেকে এই বিষয়ে আমার কিরকম আকিদা রাখতে পারি ?

1 Answer

0 votes
by (590,550 points)
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
(১) জুমার দিনে জুমার নামাজ আদায় করার সাথে সাথে জোহরের নামাজ আদায় করার কোনো নযির অতীতে নাই। সুতরাং এটা বিদ’আত। (কিতাবুল ফাতাওয়া-৩/৪৩)

(২) হানাফি মাযহাব মতে জুমূআহ এর নামাযের পূর্বে চার রাকাত নামায পড়া সুন্নাতে মুয়াক্কাদা।
এ সম্পর্কে দলীল হল;
হযরত ইবনে মাসউদ রাযি থেকে বর্ণিত আছে যে,
وروي عن عبد الله بن مسعود: أنه كان يصلي قبل الجمعة أربعا، وبعدها أربعا.
ﺍﻟﺘﺮﻣﺬﻱ ( 523 )
তিনি জুমুআহ এর পূর্বে ও পরে চার রাকাত নামায পড়তেন।(জামে তিরমিযি-৫২৩নং হাদীসের আলোচনায় বর্ণিত)
প্রকাশ থাকে যে,ইবনে মাসউদ রাযি এর উক্ত আ'মল নবীজী সা এর কাছ থেকে জেনেই করেছেন,কেননা গায়রে মা'ক্বুল(আ'কল গবেষনার উর্ধে কোনো) বিষয়ে কোনো সাহাবীর আ'মল হাদীসের মারফুর হুকমে হয়।তাই বুঝা গেল,হযরত ইবনে মাসউদ রাযি নিশ্চয় রাসূলুল্লাহ সাঃ থেকে এ বিষয়টা জেনেই করেছেন।এটা রাসূলুল্লাহ সাঃ এর আ'মল।ইবনে মাসউদ রাযি এর গবেষণা নয় যাতে ভূল ভ্রান্তির সমূহ সম্ভাবনা থাকতে পারে।

হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মুগাফ্ফাল আল মুযানি রাযি থেকে বর্ণিত,রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেনঃ
ﻋﻦ ﻋﺒﺪ ﺍﻟﻠﻪ ﺑﻦ ﻣﻐﻔﻞ ﻗﺎﻝ ﻗﺎﻝ ﺍﻟﻨﺒﻲ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ( ﺑﻴﻦ ﻛﻞ ﺃﺫﺍﻧﻴﻦ ﺻﻼﺓ، ﻗﺎﻟﻬﺎ ﺛﻼﺛﺎً، ﻭﻗﺎﻝ ﻓﻲ ﺍﻟﺜﺎﻟﺜﺔ ﻟﻤﻦ ﺷﺎﺀ ) 
ﺍﻟﻜﺘﺐ » ﺻﺤﻴﺢ ﻣﺴﻠﻢ » ﻛﺘﺎﺏ ﺻﻼﺓ ﺍﻟﻤﺴﺎﻓﺮﻳﻦ ﻭﻗﺼﺮﻫﺎ » ﺑﺎﺏ ﺑﻴﻦ ﻛﻞ ﺃﺫﺍﻧﻴﻦ ﺻﻼﺓ
ﺍﻟﻜﺘﺐ » ﺻﺤﻴﺢ ﺍﻟﺒﺨﺎﺭﻱ » ﻛﺘﺎﺏ ﺍﻷﺫﺍﻥ » ﺑﺎﺏ ﺑﻴﻦ ﻛﻞ ﺃﺫﺍﻧﻴﻦ ﺻﻼﺓ ﻟﻤﻦ ﺷﺎﺀ
প্রত্যেক দুই আযান তথা আযান ও ঈকামাতের মধ্যকার নামায রয়েছে।তিনি এ কথা তিনবার বললেন।তৃতীয়বার বললেনঃ যার ইচ্ছা সে পড়বে।(সহীহ বুখারী-৬০১)

হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে যুবাইর রাযি থেকে বর্ণিত,
ﻋﻦ ﻋﺒﺪ ﺍﻟﻠﻪ ﺑﻦ ﺍﻟﺰﺑﻴﺮ ﺭﺿﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻬﻤﺎ ﻣﺮﻓﻮﻋﺎً : ( ﻣﺎ ﻣﻦ ﺻﻼﺓ ﻣﻔﺮﻭﺿﺔ ﺇﻻ ﺑﻴﻦ ﻳﺪﻳﻬﺎ ﺭﻛﻌﺘﺎﻥ )
নবীজী সাঃ বলেনঃএমন কোনো ফরয নামায নেই যার সামনে বা প্রথমে দু-রাকাত (সুন্নাত/নফল)নামায নেই। (সহীহ ইবনে হিব্বান-২৪৮৮)এই হাদীস এবং তার উপরের হাদীস ব্যাপকতার ধরুণ জুমুআহ এর নামাযকেও শামিল রাখবে।

ইবনে হাজার রাহ বলেনঃ
ﻗﺎﻝ ﺍﺑﻦ ﺣﺠﺮ ﺭﺣﻤﻪ ﺍﻟﻠﻪ : " ﻭﺃﻗﻮﻯ ﻣﺎ ﻳﺘﻤﺴﻚ ﺑﻪ ﻣﻦ ﻣﺸﺮﻭﻋﻴﺔ ﺭﻛﻌﺘﻴﻦ ﻗﺒﻞ ﺍﻟﺠﻤﻌﺔ ﻋﻤﻮﻡ ﻣﺎ ﺻﺤﺤﻪ ﺍﺑﻦ ﺣﺒﺎﻥ ﻣﻦ ﺣﺪﻳﺚ ﻋﺒﺪ ﺍﻟﻠﻪ ﺑﻦ ﺍﻟﺰﺑﻴﺮ ﻣﺮﻓﻮﻋﺎً : ( ﻣﺎ ﻣﻦ ﺻﻼﺓ ﻣﻔﺮﻭﺿﺔ ﺇﻻ ﺑﻴﻦ ﻳﺪﻳﻬﺎ ﺭﻛﻌﺘﺎﻥ ) ﻓﺘﺢ ﺍﻟﺒﺎﺭﻱ ( 3 351/ ) 
জুম্মার নামাযের পূর্বে দু-রাকাত সুন্নাতে মুয়াক্কাদা নামায বিষয়ে সবচেয়ে মযবুত দলীল হচ্ছে,ইবনে হিব্বান রাহ কর্তৃক বর্ণিত হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে যুবাইর রাযি এর নিম্নোক্ত হাদীস।
"এমন কোনো ফরয নামায নেই যার প্রথমে দু-রাকাত (সুন্নাত/নফল)নামায নেই।(ফতহুল বারী-৩/৩৫১--৬০১নং হাদীসের ব্যাখ্যা দ্রষ্টব্য)  বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন- https://www.ifatwa.info/4666

(৩)ফরয ওয়াজিব সহ কোনো নামাযেই আরবী ব্যতীত অন্যান্য ভাষায় দু'আ করা যাবে না। তবে যদি কেউ নফল নামাযে দু'আর রুকুন সমূহে নিজ মাতৃভাষায় আখেরাতমূখী দু'আ করে নেয়,তাহলে তার নামায ফাসিদ হবে না বলে অনেকেই মন্তব্য করে থাকেন।বিস্তারিত জানুন-https://www.ifatwa.info/7858
 
(৪)আল্লাহ তা’আলা বলেন,
كُلُّ مَنْ عَلَيْهَا فَانٍ
ভূপৃষ্টের সবকিছুই ধ্বংসশীল।( সূরা আর-রাহমান-২৬)
আল্লাহ ব্যতীত সবকিছুই ধংসশীল, এমন আকিদা আমাদের সাবইকে রাখতে হবে। শক্তির কোনো শেষ নেই এমন আকিদা রাখা যাবে না। বরং আল্লাহ ব্যতীত সবকিছুই ধংস হবে। হ্যা কিছু শক্তির সাময়িক রূপান্তর হতে পারে। তবে স্থায়ীভাবে কোনো শক্তিই রূপান্তর হবে না। বরং একদিন না একদিন তা শেষ হয়ে যাবে। 

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
শক্তির সাময়িক রূপান্তর হতে পারে। তবে স্থায়ী ভাবে রূপান্তর হবে না। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 287 views
0 votes
1 answer 165 views
0 votes
1 answer 274 views
...