আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
365 views
in ঈমান ও বিশ্বাস (Faith and Belief) by (33 points)

(আমার সম্পূর্ন টা পড়া খুবই জরুর)

আমার ভাই (বয়স ২২) গোসলে খুব  বেশী সময় নেয়। এবং  যেকোনো সময় পানির প্রয়োজোন হলে এতে যদি সামান্য হাত ধুয়ে তাহলে অনেক পানি অপচয় করে।

এ নিয়ে আমার আম্মা ভাইকে পরামর্শ দিলেন,তা থেকে ফিরে আসার জন্য। 

কিন্তু ভাইয়ের রাগ উঠার কারনে আম্মার সাথে বেয়াদবি কন্ঠে উচু কন্ঠে কথা বলে ফেলেন। উনি ওয়াসওয়াসার শিকার।

প্রশ্ন ১: আমার ভাই এ থেকে পরিত্রানের উপায় কি?

প্রশ্ন ২: (বেশী গুরুত্ত্বপূর্ন)। মুফতি দিলোয়ার হুসাইন এবং ওলীপুরি সাহেব এর বয়ানে শুনলাম

''কোনো আলিম ইসলামের কথা বলার কারনে যদি কোনো মুসলামান ওই আলিম কে ইসলামের পক্ষে  কথা বলার কারনে  যদি আলিম কে গালি দেয়া হয়,তাইলে ওই ব্যাক্তির ঈমান চলে যায় ও বউ অ তালাক হয়ে যায়।"

আমার প্রশ্ন হলো, "আমার আম্মু-ও তো বড় ভাইয়াকে হারাম কাজ তথা পানি অপচয় থেকে বাচার জন্য মোটকথা হারাম থেকে পরিত্রানের জন্য বলেছেন। 

কিন্তু এই যে আমার ভাই আম্মুর ভালো পরামর্শ এর বিপরীতে যে আম্মুর সাথে রাগ করে কথা বললেন,এতে আমার ভাইয়ের ঈমান চলে যাবে কি না? কারন আমার আম্মু তো উনাকে হালাল উপদেশ দিয়েছেন হারাম থেকে বাচার জন্য।(যা ওলীপুরি সাহেব এর বয়ান দ্বারা উপরে উল্লেখিত)

1 Answer

0 votes
by (589,260 points)
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
إِنَّ الْمُبَذِّرِينَ كَانُواْ إِخْوَانَ الشَّيَاطِينِ وَكَانَ الشَّيْطَانُ لِرَبِّهِ كَفُورًا
নিশ্চয় অপব্যয়কারীরা শয়তানের ভাই। শয়তান স্বীয় পালনকর্তার প্রতি অতিশয় অকৃতজ্ঞ।( সূরা বনি ঈসরাইল-২৭)

গোনাহের কাজ ব্যতীত অন্যান্য সমস্ত কাজে মাতাপিতার বিধি-নিষেধের অনুসরণ করা ওয়াজিব।কেননা রাসূলুল্লাহ সাল্লাহু আলাইহিসসালাম বলেছেন,
ﻻ ﻃﺎﻋﺔ ﻓﻲ ﻣﻌﺼﻴﺔ ﺇﻧﻤﺎ ﺍﻟﻄﺎﻋﺔ ﻓﻲ ﺍﻟﻤﻌﺮﻭﻑ
গোনাহের কাজে কারো অনুসরণ করা যাবে না,অনুসরণ একমাত্র নেককাজ সমূহেই করা যাবে।(সহীহ বুখারী-৭২৫৭,সহীহ মুসলিম-১৮৪০)

অন্যত্র বর্ণিত আছে
ﻟَﺎ ﻃَﺎﻋَﺔَ ﻟِﻤَﺨْﻠُﻮﻕٍ ﻓِﻲ ﻣَﻌْﺼِﻴَﺔِ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﻋَﺰَّ ﻭَﺟَﻞَّ
আল্লাহর অবাধ্যতায় কোনো মাখলুকের অনুসরণ করা যাবে না।(মুসনাদে আহমদ-১০৯৮)

যে সমস্ত বিষয় মাতাপিতার ফায়দাদায়ক এবং সন্তানের জন্য ক্ষতিকর নয়,সে সমস্ত বিষয়ে মাতাপিতার অনুসরণ ওয়াজিব।যদি মাতাপিতা জন্য ফায়দাদায়ক না হয় বা সন্তানের জন্য ক্ষতিকর হয়,সে সমস্ত বিষয়ে মাতাপিতা আদেশ নিষেধের অনুসরণ ওয়াজিব নয়।

ইবনে তাইমিয়্যাহ রাহ বলেন,
ﻭﻳﻠﺰﻡ ﺍﻹﻧﺴﺎﻥ ﻃﺎﻋﺔ ﻭﺍﻟﺪﻳﻪ ﻓﻲ ﻏﻴﺮ ﺍﻟﻤﻌﺼﻴﺔ ، ﻭﺇﻥ ﻛﺎﻧﺎ ﻓﺎﺳﻘﻴﻦ ... ﻭﻫﺬﺍ ﻓﻴﻤﺎ ﻓﻴﻪ ﻣﻨﻔﻌﺔ ﻟﻬﻤﺎ ، ﻭﻻ ﺿﺮﺭ ﻋﻠﻴﻪ " ﺍﻧﺘﻬﻰ .
মাতাপিতা আদেশ নিষেধের অনুসরণ সন্তানের জন্য তখনই ওয়াজিব যখন তা কোনো গোনাহের কাজ হবে না।যদি ও তারা ফাসিক হোক না কেন? উপরোক্ত হুকুম তখনই যখন তা মাতাপিতার জন্য ফায়দাদায়ক হবে,এবং সন্তানের জন্য কোনো ক্ষতির কারণ হবে না।(সন্তানের জন্য ক্ষতির কারণ হলে শরীয়ত কর্তৃক বৈধ জিনিষেও মাতাপিতার অনুসরণ ওয়াজিব হবে না)(আল-ইখতিয়ারাত-১১৪)

চার মাযহাব সম্বলীত সর্ব বৃহৎ ফেক্বাহী গ্রন্থ 'আল-মাওসু'আতুল ফেক্বহিয়্যায়' রয়েছে,
" ﻃﺎﻋﺔ ﺍﻟﻤﺨﻠﻮﻗﻴﻦ - ﻣﻤّﻦ ﺗﺠﺐ ﻃﺎﻋﺘﻬﻢ – ﻛﺎﻟﻮﺍﻟﺪﻳﻦ ، ﻭﺍﻟﺰّﻭﺝ ، ﻭﻭﻻﺓ ﺍﻷﻣﺮ : ﻓﺈﻥّ ﻭﺟﻮﺏ ﻃﺎﻋﺘﻬﻢ ﻣﻘﻴّﺪ ﺑﺄﻥ ﻻ ﻳﻜﻮﻥ ﻓﻲ ﻣﻌﺼﻴﺔ ، ﺇﺫ ﻻ ﻃﺎﻋﺔ ﻟﻤﺨﻠﻮﻕ ﻓﻲ ﻣﻌﺼﻴﺔ ﺍﻟﺨﺎﻟﻖ " ﺍﻧﺘﻬﻰ
যাদের আদেশ-নিষেধ এর অনুসরণ শরীয়ত কর্তৃক ওয়াজিব।যেমন-মাতাপিতা,স্বামী,সরকারী বিধিনিষেধ,এর অনুসরণ ওয়াজিব।
এ হুকুম ব্যাপক হারে প্রযোজ্য হবে না বরং ঐ সময়-ই প্রযোজ্য হবে যখন তা গুনাহের কাজ হবে না।কেননা হাদীস দ্বারা প্রমাণিত রয়েছে আল্লাহর অবাধ্যতায় কোনো মাখলুকের অনুসরণ করা যাবে না।(২৮/৩২৭)

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
ইসলামের কোনো বিধি-বিধান কে হেয় তুচ্ছ জ্ঞান করে যদি তা অমান্য করে , তাহলে তার ঈমান থাকবে না। তবে এমনিতেই যদি কেউ না মানে, তাহলে তার ঈমানে কোনো সমস্য হবে না। আপনার প্রশ্ন থেকে বুঝা যাচ্ছে যে, আপনার ভাই এমনিতেই আপনার মায়ের আদেশকে মানেননি। তাই আপনার ভাইয়ের ঈমান যাবে না। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...