জবাব
بسم الله الرحمن الرحيم
,
ইসলামী শরীয়তে বিবাহ শুদ্ধ হবার জন্য কয়েকটি শর্ত রয়েছে। যথা-
১
বর ও কনেকে কিংবা তাদের প্রতিনিধিকে ইজাব তথা প্রস্তাবনা ও কবুল বলতে হয়।
২
উক্ত ইজাব ও কবুলটি বলতে হয় দুইজন প্রাপ্ত বয়স্ক মসলিম পুরুষ বা একজন পুরুষ ও দুইজন মহিলার সামনে।
قوله صلى الله عليه وسلم : ( لا نكاح إلا بولي وشاهدي عدل ) رواه البيهقي من حديث عمران وعائشة ، وصححه الألباني في صحيح الجامع (7557)
বিয়ের আকদের সময় সাক্ষী রাখতে হবে। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “অভিভাবক ও দুইজন সাক্ষী ছাড়া কোন বিবাহ নেই।” [তাবারানী কর্তৃক সংকলিত, সহীহ জামে (৭৫৫৮)]।
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের বাণী- “তোমরা বিয়ের বিষয়টি ঘোষণা কর।”[মুসনাদে আহমাদ এবং সহীহ জামে গ্রন্থে হাদিসটিকে ‘হাসান’ বলা হয়েছে (১০৭২)]
۔
৩
ইজাব ও কবুলটি উভয় সাক্ষ্যি স্বকর্ণে শুনতে হবে।
فى الدر المختار- ( و ) شرط ( حضور ) شاهدين ( حرين ) أو حر وحرتين ( مكلفين سامعين قولهما معا ) (الدر المختار ، كتاب النكاح،-3/9)
অনুবাদ-বিবাহ সহীহ হওয়ার শর্ত হল শরীয়তের মুকাল্লাফ [যাদের উপর শরীয়তের বিধান আরোপিত হয়] এমন দুইজন আযাদ পুরুষ সাক্ষি বা একজন আযাদ পুরুষ ও দুইজন মহিলা সাক্ষি হতে হবে, যারা প্রস্তাবনা ও কবুল বলার উভয় বক্তব্য স্বকর্ণে উপস্থিত থেকে শুনতে পায়। {আদ দুররুল মুখতার-৩/৯, ফাতওয়ায়ে হিন্দিয়া-১/২৬৮}
উক্ত তিনটির কোন একটি শর্ত না পাওয়া গেলে ইসলামী শরীয়তে বিবাহ শুদ্ধ হয় না।
উপরোক্ত তিনটি শর্ত পাওয়া গেলে বিবাহ হবে,অন্যথায় বিবাহ হবেনা।
,
★★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই বোন,
বিবাহ সহীহ হওয়ার জন্য শর্ত হল দু’জন আযাদ প্রাপ্ত বয়স্ক বিবেকবান দুই জন মুসলিম স্বাক্ষের সামনে পাত্র/পাত্রি প্রস্তাব দিবে আর অপরপক্ষে পাত্র/পাত্রি তা কবুল করবে। আর সাক্ষিগণ উভয়ের কথা সুষ্পষ্টভাবে শুনবে।
আপনাদের বিবাহ যদি এই শর্ত মেনেই হয়ে থাকে,আর বিবাহের সময় যদি আপনারা উভয়েই বালেগ বালেগাহ হোন,তাহলে আপনাদের বিবাহ শুদ্ধ হয়ে গিয়েছে।
নতুন করে আর বিবাহ পড়াতে হবেনা।
,
শরীয়তের বিধান হলো যদি দুইজন প্রাপ্ত বয়স্ক সমঝদার সাক্ষ্যির সামনে প্রাপ্ত বয়স্ক পাত্র ও পাত্রি যদি প্রস্তাব দেয় এবং অপরপক্ষ তা গ্রহণ করে নেয়, তাহলে ইসলামী শরীয়াহ মুতাবিক বিবাহ শুদ্ধ হয়ে যায়। অভিভাবকের সম্মতি থাকুক বা না থাকুক। অভিভাবক জানুক বা না জানুক।
তবে যদি গায়রে কুফুতে বিবাহ করে,তথা এমন পাত্রীকে বিবাহ করে, যার কারণে ছেলে বা মেয়ের পারিবারিক সম্মান বিনষ্ট হয়,
সেই ছুরতেও বিবাহ হয় যায় তবে পিতা সে বিয়ে আদালতের মাধ্যমে ভেঙ্গে দিতে পারে। যদি কুফুতে বিবাহ করে, তাহলে পিতা এ অধিকারও পাবে না।
,
অর্থাৎ কুফু না মিললে অভিভাবক আদালতের মাধ্যমে ভেঙ্গে দেওয়ার অধিকার পাবে,কুফু মিললে সেই অধিকার পাবেনা।
তবে বিবাহ শুদ্ধ হয়ে যাবে।
,
আপনাদের বিবাহ যেহেতু আপনাদের অভিভাবক মেনে নিয়েছেন,তাই কুফুর কোনো সমস্যা নেই।
,
এখন যেহেতু আপনার স্বামী আপনাকে তালাক দিয়েছিলো,তাই এখানে তালাকের মাসয়ালা ধর্তব্য হবে।
,
যদি স্পষ্ট তালাক শব্দ বলে তালাক দেয়,তাহলে এক তালাকে রজয়ী পতিত হয়েছে।
এক্ষেত্রে বিধান হলো ইদ্দতের মধ্যেই স্ত্রীর সাথে স্বামী সুলভ আচরন বা কথা বলার মাধ্যমে ফিরিয়ে নেওয়া।
,
যদি ইদ্দতের মধ্যে ফিরিয়ে না নেয়,তাহলে নতুন করে বিবাহ পড়িয়ে নিতে হবে।
,
সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে যদি স্পষ্ট "" তালাক"" শব্দ ব্যবহার করে আপনাকে তালাক দেয়,আর আপনার ইদ্দতের মধ্যে আপনাকে ফিরিয়ে না নেয়,তাহলে নতুন করে আবার বিবাহ পড়িয়ে নিতে হবে।