আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
156 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (22 points)
1. কোন মেয়ে যদি কোন ছেলেকে দেখে মনে মনে বাজে চিন্তা করে তাহলে  দোষ  কার?? মেয়ে নাকি ছেলে???

2.   অনুরোপ প্রয়োজনের তাগিদে কোন মেয়ে শরিয়ত সম্মত পর্দা করে গেলে আর কোন পুরুষ যদি তাকে নিয়ে মনে মনে বাজে চিন্তা করে তাহলে দোষ কার?? কারণ আল্লাহ উভয়কেই  দৃষ্টি হেফাজত করার নির্দেশ দিয়েছে।

3.  আল কুরআনে মহান আল্লাহ ফরজ বিধান দেওয়ার পর প্রত্যেকটা  ফরজের কথা হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম বলে গেছেন তা কিভাবে করতে হবে তাও বলে গেছেন। তাহলে  মুখ ঢাকা ফরজ এই নিয়ে সুস্পষ্ট বলা নেই কেন ?? আর যদি রাসূল সাল্লাহু সাল্লাম সেটাকে ফরজ না বলেন  তাহলে  কিছু আলেমরা সেটাকে ফরজ বলে কেন?

আর উম্মুল মুমিনীন দের সাথে আমাদের  সাধারণ নারীদের তুলনা করবেন না। তাদেরকে মহান আল্লাহ পাক ঘরে অবস্থান করতে বলেছেন। আর তারা অন্যান্য নারীদের মতো নয়। আর অন্যান্য  নারীদেরকে প্রয়োজনের  তাগিদে বাইরে জীবিকা অর্জনের জন্য  যেতে হয়।
4.তাছাড়া ভ্রমণ কি শুধুমাত্র ছেলেদের জন্যই???
5. বিদাত কি???

6. দ্বীনের ক্ষেত্রে হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যা বলে গেছেন সেটা কি কেউ পরিবর্তন বা  সংযোজন  করতে পারবে??

7. ইজমা ও কিয়াস এই দুইটা কি??? কাজ কি??

8.  কোন ব্যক্তি যদি দ্বিতীয় বিয়ে করে (ইসলাম তো তাকে অনুমতি দিয়েছেই) সেকি প্রথম স্ত্রী থেকে বিষয়টি লুকিয়ে রাখতে পারবে??? অর্থাৎ  দ্বিতীয় বিয়েরদুই তিন বছরেও সে তার সন্তান  স্ত্রীকে না জানানো??? এই বিষয়টি কতটুকু ইসলামে গ্রহণযোগ্য??
by (22 points)
+1
 জনাব দয়া করে রাগ করবেন না

1 Answer

+2 votes
by (696,600 points)
edited by

ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
(১) কোন মেয়ে যদি কোন ছেলেকে দেখে মনে মনে বাজে চিন্তা করে তাহলে দোষ মেয়েরই। কেননা সে কল্পনা করছে। 
(২)অনুরোপ প্রয়োজনের তাগিদে কোন মেয়ে শরিয়ত সম্মত পর্দা করে গেলে আর কোন পুরুষ যদি তাকে নিয়ে মনে মনে বাজে চিন্তা করে তাহলে দোষ পুরুষের। আর বেপর্দা হলে উভয়ের।

(৩)
পর্দার তিনটি স্থর নিয়ে।

প্রথম স্থরঃ 
মহিলা সর্বাবস্থায় ঘরে বসে থাকবে,অর্থাৎ ঘরের ভিতর থাকার মাধ্যমে ব্যক্তি পর্দা করবে।
আল্লাহ তা'আলা বলেনঃ 
ﻭَﺇِﺫَﺍ ﺳَﺄَﻟْﺘُﻤُﻮﻫُﻦَّ ﻣَﺘَﺎﻋًﺎ ﻓَﺎﺳْﺄَﻟُﻮﻫُﻦَّ ﻣِﻦ ﻭَﺭَﺍﺀ ﺣِﺠَﺎﺏٍ ﺫَﻟِﻜُﻢْ ﺃَﻃْﻬَﺮُ ﻟِﻘُﻠُﻮﺑِﻜُﻢْ ﻭَﻗُﻠُﻮﺑِﻬِﻦَّ
তোমরা তাঁর পত্নীগণের কাছে কিছু চাইলে পর্দার আড়াল থেকে চাইবে। এটা তোমাদের অন্তরের জন্যে এবং তাঁদের অন্তরের জন্যে অধিকতর পবিত্রতার কারণ।
{সূরা আহযাব-৫৩}
ﻭَﻗَﺮْﻥَ ﻓِﻲ ﺑُﻴُﻮﺗِﻜُﻦَّ ﻭَﻟَﺎ ﺗَﺒَﺮَّﺟْﻦَ ﺗَﺒَﺮُّﺝَ ﺍﻟْﺠَﺎﻫِﻠِﻴَّﺔِ ﺍﻟْﺄُﻭﻟَﻰ ﻭَﺃَﻗِﻤْﻦَ ﺍﻟﺼَّﻠَﺎﺓَ ﻭَﺁﺗِﻴﻦَ ﺍﻟﺰَّﻛَﺎﺓَ ﻭَﺃَﻃِﻌْﻦَ ﺍﻟﻠَّﻪَ ﻭَﺭَﺳُﻮﻟَﻪُ ﺇِﻧَّﻤَﺎ ﻳُﺮِﻳﺪُ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻟِﻴُﺬْﻫِﺐَ ﻋَﻨﻜُﻢُ ﺍﻟﺮِّﺟْﺲَ ﺃَﻫْﻞَ ﺍﻟْﺒَﻴْﺖِ ﻭَﻳُﻄَﻬِّﺮَﻛُﻢْ ﺗَﻄْﻬِﻴﺮًﺍ
তরজমাঃ
তোমরা গৃহাভ্যন্তরে অবস্থান করবে-মূর্খতা যুগের অনুরূপ নিজেদেরকে প্রদর্শন করবে না। নামায কায়েম করবে, যাকাত প্রদান করবে এবং আল্লাহ ও তাঁর রসূলের আনুগত্য করবে। হে নবী পরিবারের সদস্যবর্গ। আল্লাহ কেবল চান তোমাদের থেকে অপবিত্রতা দূর করতে এবং তোমাদেরকে পূর্ণরূপে পূত-পবিত্র রাখতে।
সূরা-আহযাব-৩৩

দ্বিতীয় স্থরঃ
প্রয়োজনে ঘর থেকে বের হওয়া যাবে,এক্ষেত্রে এক বা উভয়  চক্ষু খোলা রেখে সমস্ত শরীর ঢেকে রাখতে হবে।
যেমন আল্লাহ তা'আলা বলেনঃ
ﻳَﺎ ﺃَﻳُّﻬَﺎ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲُّ ﻗُﻞ ﻟِّﺄَﺯْﻭَﺍﺟِﻚَ ﻭَﺑَﻨَﺎﺗِﻚَ ﻭَﻧِﺴَﺎﺀ ﺍﻟْﻤُﺆْﻣِﻨِﻴﻦَ ﻳُﺪْﻧِﻴﻦَ ﻋَﻠَﻴْﻬِﻦَّ ﻣِﻦ ﺟَﻠَﺎﺑِﻴﺒِﻬِﻦَّ ﺫَﻟِﻚَ ﺃَﺩْﻧَﻰ ﺃَﻥ ﻳُﻌْﺮَﻓْﻦَ ﻓَﻠَﺎ ﻳُﺆْﺫَﻳْﻦَ ﻭَﻛَﺎﻥَ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻏَﻔُﻮﺭًﺍ ﺭَّﺣِﻴﻤًﺎ
তরজমাঃ
হে নবী! আপনি আপনার পত্নীগণকে ও কন্যাগণকে এবং মুমিনদের স্ত্রীগণকে বলুন, তারা যেন তাদের চাদরের কিয়দংশ নিজেদের উপর টেনে নেয়। এতে তাদেরকে চেনা সহজ হবে। ফলে তাদেরকে উত্যক্ত করা হবে না। আল্লাহ ক্ষমাশীল পরম দয়ালু।
সূরা আহযাব-৫৯

তৃতীয় স্থরঃ
মহিলাদের সমস্ত দেহ আবৃত থাকবে কিন্তু ফিতনার আশংকা না থাকলে মুখমণ্ডল ও হাতের তালু খোলা রাখা যাবে।এ স্থর নিয়ে অনেক বিতর্ক রয়েছে।তবে সর্বাবস্থায় ফিতনার আশংকা না থাকাই লক্ষণীয়।

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
যেহেতু মানুষের প্রয়োজন ভিন্ন ভিন্ন হবে, তাই স্পষ্টভাবে ঘোষনা মানুষের জন্য বিপদ ডেকে আনবে। এ জন্য স্পষ্টভাবে মুখ ঢাকার ঘোষণা আসেনি। 

(৪)
ভ্রমণ শুধুমাত্র ছেলেদের জন্য নয়, বরং মেয়েরাও পর্দার সাথে মাহরামকে সাথে নিয়ে ভ্রমণ করতে পারবে।

(৫)
যা ইসলামের প্রাথমিক যুগে নেই,সেগুলোর প্রচলন বিদআত।হযরত আয়েশা রাযি থেকে বর্ণিত
عن أمِّ المؤمنين أم عبدالله عائشةَ رضي الله عنها قالت: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: ((من أحدث في أمرنا هذا ما ليس منه فهو رَدٌّ))؛ [رواه البخاري ومسلم]، وفي رواية لمسلم: ((من عمِل عملًا ليس عليه أمرنا فهو رَدٌّ)).
মর্মার্থ-দ্বীনে ইসলামে নতুন কিছু আবিস্কার করা,সংযোজিত করার নামই হল বিদআত।


(৬)
দ্বীনের ক্ষেত্রে হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যা বলে গেছেন সেটা কেউ পরিবর্তন বা  সংযোজন  করতে পারবে না।
(৭)
ডঃ মুহাম্মদ সাইফুল্লাহ লিখেন,
উত্তরঃ ইজমাঃ ইজমা হচ্ছে মুসলিম উম্মাহর ‘আলেমদের অথবা মুজতাহিদদের ইসলামী শরিয়তের কোনো একটি বিষয় যে বিষয়ে সুস্পষ্ট কুরআন ও হাদিসের নস বা দলীল নেই এ ধরনের কোনো একটি বিষয়ে সমস্ত উলামায়ে কিরামের কোনো এক যুগে একত্রিত হয়ে ঐক্যমতে পৌছার নাম। এটা শুধুমাত্র আইম্মাতুল ইজতিহাদ বা যারা ইজতিহাদ করে থাকেন তাদের অর্থাৎ মুজতাহিদ ‘আলেমগণই করবেন। এটি বিভিন্ন যুগে বা বিভিন্ন সময়ে হতে পারে। ঐ যুগের মুজতাহিদ ‘আলেমরা একত্রিত হয়ে একটি নির্দিষ্ট বিষয়ে যখন ঐক্যমতে পৌছবে তখনই মূলত ইজমা সাব্যস্ত হবে। তবে যে বিষয়ে সুস্পষ্ট নস বা দলীল রয়েছে সে বিষয়ে ইজমা বৈধ নেই। শুধুমাত্র যে সমস্ত বিষয়ে কুরআন ও হাদিসে সুস্পষ্ট নস বা দলীল নেই কিন্তু কিছু নির্দেশনা পাওয়া যায় সেটিকে সামনে নিয়ে ঐ সময়ের শ্রেষ্ঠ ‘আলেমগণ যদি কোনো বিষয়ে ঐক্যমতে পৌছেন এবং ঐক্যমতে পৌছার পর তাদের যেই বক্তব্য থাকে এটাকেই ইজমা বলা হয়ে থাকে। এ ধরণের ইজমা সাহাবীদের বিভিন্ন হুকুমের উপর প্রমাণিত হয়েছে এবং তাদের পরে তাবে’য়ীদের কাছ থেকেও প্রমাণিত হয়েছে। আবার কোনো মাস’আলার ক্ষেত্রে যেখানে কোনো মতভেদ পাওয়া যায়নি বা কোনো ইখতিলাফ পাওয়া যায়নি সেটিকে পজিটিভলি ইজমা হিসেবে গ্রহণ করা হয়েছে। ইজমার সাথে সরকার অথবা রাষ্ট্রের কোনো সম্পর্ক নেই। এটি শুধুমাত্র আইম্মাতুল ইজতিহাদ যারা রয়েছেন তারাই মূলত আলোচনা করে বা ইজতিহাদ করে মৌলিক কোনো একটি বিষয়ে ঐক্যমতে পৌছার চেষ্টা করবেন।



(৮) 
ডঃ মুহাম্মদ সাইফুল্লাহ লিখেন,
কিয়াসঃ বিবেকের উপর নির্ভর করে যে দলীল পেশ করা হয় তাকে কিয়াস বলে। কুরআন এবং হাদিস থেকে সুস্পষ্ট কোনো দলীল পাওয়া না গেলে কুরআন এবং হাদিসের নির্দেশনা অনুযায়ী যে আন্দাজ বা অনুমান করা হয়ে থাকে সেই অনুমান বা আন্দাজকে কিয়াস বলা হয়। এখানে কিয়াস হচ্ছে, যেসমস্ত মাস’আলার ক্ষেত্রে সুস্পষ্টভাবে কুরআন এবং হাদিসের নির্দেশনা আছে সে সমস্ত মাস’আলাকে যে সমস্ত মাস’আলার ক্ষেত্রে সুস্পষ্টভাবে নির্দেশনা নেই সেটার উপর প্রয়োগ করা। আর এ কিয়াস ইসলামী শরিয়তের মধ্যে বৈধ এবং এটি কিয়ামাত পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে যেটি ‘আলেমগণ করতে পারবেন সরকার নয়। তবে কিয়াসের ক্ষেত্রে অনেক মূলনীতি রয়েছে। সে মূলনীতি অনুসরণ করেই তাদের কিয়াস করতে হবে। কিয়াসের ক্ষেত্রে মৌলিক বিষয় হচ্ছে চারটি:-

১. যে মাস’আলার উপর আপনি কিয়াস করবেন সেটাকে মাকীস আলাইহি বলা হয় যে মাস’আলাটাকে আপনি কিয়াস করবেন অর্থাৎ যেই মাস’আলাতে সুস্পষ্ট দলীল রয়েছে।

২. যেই মাস’আলাটি এর ক্ষেত্রে কিয়াস করে হুকুম প্রদান করবেন সেটাকে মাকিস বা কিয়াসকৃত মাস’আলা বলা হয়ে থাকে এই মাস’আলার ক্ষেত্রে সুস্পষ্ট কোনো দলিল নেই তাই এই মাস’আলাটিকে সুস্পষ্ট দলীল নির্ভর মাস’আলার উপর কিয়াস করা হয়ে থাকে।

৩. এই দুইটি মমাস’আলার ক্ষেত্রে হুকুম প্রয়োগ করার জন্য যে কারণটি উল্লেখ করা হয়ে থাকে সেটাকে ‘ইল্লত বলা হয়। ‘ইল্লত হচ্ছে যে কারণে আপনি মাকিস আলাইহির হুকুমকে এ মাস’আলার উপর প্রয়োগ করবেন দুটি মাস’আলার সাথে সমন্বয় ও সাদৃশ্যতার কারণেই মূলত একই হুকুম দেয়া হয়ে থাকে আর সেই হুকুম নির্ভর করে ‘ইল্লতের উপর।

৪. এই দুটি মাস’আলার মধ্যে ‘ইল্লত বের করার যে প্রক্রিয়ার বা পদ্ধতির অনুসরণ করা হয়ে থাকে তাকে তরীকাতুল ইজতিহাদ বলা হয়ে থাকে। ইস্তিমবাত বা ইজজতিহাদের এ পদ্ধতির সুনির্দিষ্ট মূলনীতিও শর্ত রয়েছে যার উপর নির্ভর করে মুজতাহিদ ‘আলেম দুটি মাস’আলার মাঝে সমন্বয়কারী ‘ইল্লত বের করে থাকেন।

ইজতিহাদ যিনি করবেন তিনি সুনির্দিষ্ট মূলনীতির উপর ইজতিহাদটি করবেন। যেমন আমরা একটি উদাহরণ দিতে পারি আল্লাহ্ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা কুরআনে কারীমের সূরা ইসরার ২৩ নং আয়াতে বলেছেন,

فَلَا تَقُل لَّهُمَا أُفٍّ

“এমনভানে তাদের (মাতা-পিতা) প্রতি তোমরা আচরণ করবে না যার ফলে তারা উফ বলতে পারে।” এখন এটার উপর কিয়াস করে সমস্ত ‘উলামায়ে কিরাম বলেছেন যে উফ বলার উপর যতপ্রকার আচরণ রয়েছে সবগুলোই হারাম। সুতরাং তাদেরকে প্রহার করা, ধাক্কা দেয়া, থাপ্পড় দেয়া বা এর চেয়ে খারাপ বা ভয়ংকর যে কাজগুলো আছে সবকিছুই হারাম যেহেতু উফ বলাই হারাম। এখন কেউ যদি বলেন যে, আল্লাহ্ তা’আলা তো শুধুমাত্র উফ বলাকে হারাম করেছেন সুতরাং আমি তাদেরকে এমনভাবে প্রহার করবো যাতে করে উফ করতেই না পারে। এ বিষয়টি থেকে এভাবে বুঝার সুযোগ নেই। তাই সমস্ত ইমামের ঐক্যমতে এটাকে কিয়াসে জলী অর্থাৎ সুস্পষ্ট কিয়াস বলা হয়ে থাকে। এ ধরনের কিয়াস শরিয়তে বহু রয়েছে এবং বহু থাকবে কেননা আল্লাহর বান্দাগণ কিয়ামাত পর্যন্ত বিভিন্ন ‘আমাল করবে, মু’আমালাত করবে, লেনদেন করবে তাই ইসলামী শরিয়তে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক যে ইসলামী শরিয়তকে আল্লাহ্ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা কিয়ামাত পর্যন্ত আগত মানুষের জন্য সামঞ্জস্যপূর্ণ করেছেন এবং কিয়ামাত পর্যন্ত আগত মানুষের কাছে ইসলামি শরিয়তকে প্রযোজ্য করেছেন। আর এ জন্যই এর উন্মুক্ত দিকগুলো হল কিয়ামাত পর্যন্ত যে বিধানগুলো আল্লাহ্ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা দলিলের মাধ্যমে দিয়েছেন সেগুলোকে বিভিন্ন ঘটনা, বিভিন্ন সমস্যা, বিভিন্ন মাস’আলার থেকে বের করবেন আর এই বের করার পদ্ধতিটাই মূলত কিয়াস যেটি করবেন শুধুমাত্র আইম্মাতুল ইজতিহাদ বা যারা ইজতিহাদ করার যোগ্যতা রাখেন তারাই। কিন্তু এখন দুঃখের বিষয় যেটি হচ্ছে সেটি হল এখন প্রত্যেকেই মনে করে থাকেন যে তিনি মুজতাহিদ। অর্থাৎ কুল্লুন মুজতাহিদের যুগে আমরা এখন অবস্থান করছি। ইজতিহাদ করার মতো কোনো যোগ্যতা যার নেই, ইজতিহাদ কিভাবে করতে হয় এগুলোও জানেন না, ইজতিহাদের উসূল সম্পর্কে যাদের কোনো জ্ঞান নেই এধরণের ব্যক্তিগন এখন ইজতিহাদ করে তাদের কিয়াসমতো তারা মাস’আলা দিচ্ছেন যার ফলে অনেক বিভ্রান্তি দেখা দিচ্ছে। এক্ষেত্রে আমাদের সতর্ক থাকতে হবে। কেউ যদি মনে করেন যে আমি ইজতিহাদ করার যোগ্যতা রাখি সেক্ষেত্রে তার উচিত হচ্ছে ‘আলেমদের সাথে আলোচনা করা বা শেয়ার করা। যদি দেখা যায় যে ‘আলেমগন তার বক্তব্যকে এক্সেপ্ট করছেন তাহলে তিনি তার এই চেষ্টা অব্যাহত রাখতে পারবেন। তবে তখন ‘আলেমরাই তাকে বলবে যে হ্যা আপনার ইজতিহাদ করার যোগ্যতা রয়েছে বা আপনি ইজতিহাদের জ্ঞান রাখেন। তাহলে তিনি ইজতিহাদ করতে পারবেন। তবে ইজতিহাদের জন্য মৌলিক যে শর্তটি রয়েছে সেটি হচ্ছে কুরআন এবং সুন্নাহর দলীলের জ্ঞান থাকতে হবে, নাসিখ-মানসুখের জ্ঞান থাকতে হবে, শরিয়তের মৌলিক যে সমস্ত ফাহামগুলো রয়েছে অথবা মাফাহিম রয়েছে সেগুলো থাকতে হবে। যদি এগুলো জানা না থাকে এবং ইজতিহাদ করেন তাহলে তিনি নিজেও পথভ্রষ্ট হবেন এবং অন্যকেও পথভ্রষ্ট করবেন। আল্লাহ্ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা আমাদেরকে বুঝার তৌফিক দান করুন। আমীন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (22 points)
 জনাব চমৎকার উত্তর দিয়েছেন। আল্লাহ আপনাকে প্রতিদান দিক। ধন্যবাদ আপনাকে। কিন্তু জনাব অনুগ্রহ করে 7 ও 8  নাম্বার প্রশ্নের উত্তর  টা একটু কষ্ট করে দেন প্লিজ।
by (696,600 points)
সংযোজন ও সংশোধন করা হয়েছে।

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...