হাদীস শরীফে এসেছেঃ
وَعَنِ ابنِ مَسعُود رضي الله عنه، قَالَ: ذُكِرَ عِنْدَ النَّبيِّ صلى الله عليه وسلم رَجُلٌ نَامَ لَيْلَةً حَتَّى أَصْبَحَ، قَالَ: «ذَاكَ رَجُلٌ بَالَ الشَّيطَانُ في أُذُنَيْهِ - أَوْ قَالَ: فِي أُذُنِهِ». متفقٌ عَلَيْهِ
আব্দুল্লাহ ইবনে মাসঊদ রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, এমন একটি লোকের কথা নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট উল্লেখ করা হল, যে সকাল পর্যন্ত ঘুমিয়ে রাত্রি যাপন করে। তিনি বললেন, “এ এমন এক মানুষ, যার দু’কানে শয়তান প্রস্রাব করে দিয়েছে।” অথবা বললেন, “যার কানে প্রস্রাব করে দিয়েছে।” [বুখারি ১১৪৪, ৩২৭০, মুসলিম ৭৭৪, নাসায়ি ১৬০৮, ১৬০৯, ইবন মাজাহ ১৩৩০, আহমদ ৩৫৪৭, ৪০৪৯]
,
এই হাদীসের ব্যাখ্যায় বলা হয়েছেঃ
শায়ত্বন (শয়তান) তার কানে প্রস্রাব করে দেয়, এই কান বলতে বর্ণনাকারীর সন্দেহ এক কানেও হতে পারে, দুই কানেও হতে পারে। তবে বুখারীর এক বর্ণনায় শুধুমাত্র এক কানের কথা এসেছে। কানে পেশাব করার বিষয়টি বাস্তবেই হতে পারে। ইমাম কুরতুবী বলেন, অন্যভাবে অর্থাৎ রূপক অর্থেও হতে পারে।
তবে বাস্তবে হওয়া তো অসম্ভব কিছু নয়, কেননা সহীহ হাদীস দ্বারা প্রমাণিত যে, শায়ত্বন (শয়তান) খায়, পান করে, বায়ু নির্গত করে, বিবাহ করে সুতরাং তার পেশাব করার বাস্তবতায় কোন বাধা নেই।
কেউ কেউ এর সম্ভাব্য তাবীল করেছেন যে, তাকে সলাত থেকে এমনভাবে গাফিল করে রাখা হয় যেন তার কানে পেশাব করে দেয়া হয়েছে ফলে সে আযানও শোনে না, মোরগের ডাকাও শোনে না।
ইমাম খাত্ত্বাবী বলেন, ‘আরাবেরা ফাসাদ শব্দকে ‘বাওল’ উপনামে ব্যবহার করে থাকে। কেউ কেউ বলেছেন, এর দ্বারা উদ্দেশ্য হলো শায়ত্বন (শয়তান) নিদ্রিত ব্যক্তির কান এমনভাবে বন্ধ করে রেখে দিয়েছে যে, সে আযান ইক্বামাত কিছুই শুনতে পায় না।
আল্লামা ত্বীবী বলেন, চক্ষু বা আরো অন্যান্য অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ থাকা সত্ত্বেও কানের কথা খাস করে বলা হয়েছে এ করণে যে, ভারী নিদ্রা হলে কান একেবারেই অচল হয়ে যায়। কানে কিছু শুনলেই তো সে জাগবে এবং সলাতে দাঁড়াবে। যেমন আল্লাহর বাণীঃ ‘আমি গুহায় আশ্রয় গ্রহণকারীদের কানের উপর নিদ্রা ঢেলে দিলাম।’ এখানে নিদ্রা বলতে অতীব ভারী নিদ্রা যাকে কোন শব্দই জাগাতে পারে না।