নামাজে রুকু করা ফরজ,তবে রুকুতে তাসবিহ পড়া ফরজ নয়।
এটি সুন্নাত।
নামাজের মধ্যে যেসন কাজ ফরজ,তার মধ্যে অন্যতম হলোঃ রুকু করা। [সুরা হজ, আয়াত ৭৭; বুখারি ১/১৫০, হাদিস : ১১১৩, ১১১৪, মুসলিম ১/১৭৭, হাদিস : ৪১২]
রুকুতে কমপক্ষে তিনবার রুকুর তাসবীহ (সুবহানা রাব্বিয়াল ‘আযীম) পড়া সুন্নাত।(আবু দাউদ, হাদীস নং- ৮৮৯)
হুজায়ফা (সা.) থেকে বর্ণিত, তিনি মহানবী (সা.)-এর সঙ্গে নামাজ আদায় করেন এবং রাসুলুল্লাহ (সা.) রুকুতে এই তাসবিহ পাঠ করেন। (সুনানে তিরমিজি, হাদিস : ২৬২)
পূর্ণ হাদীসঃ
حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ حُجْرٍ، أَخْبَرَنَا عِيسَى بْنُ يُونُسَ، عَنِ ابْنِ أَبِي ذِئْبٍ، عَنْ إِسْحَاقَ بْنِ يَزِيدَ الْهُذَلِيِّ، عَنْ عَوْنِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُتْبَةَ، عَنِ ابْنِ مَسْعُودٍ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " إِذَا رَكَعَ أَحَدُكُمْ فَقَالَ فِي رُكُوعِهِ سُبْحَانَ رَبِّيَ الْعَظِيمِ ثَلاَثَ مَرَّاتٍ فَقَدْ تَمَّ رُكُوعُهُ وَذَلِكَ أَدْنَاهُ . وَإِذَا سَجَدَ فَقَالَ فِي سُجُودِهِ سُبْحَانَ رَبِّيَ الأَعْلَى ثَلاَثَ مَرَّاتٍ فَقَدْ تَمَّ سُجُودُهُ وَذَلِكَ أَدْنَاهُ " . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ حُذَيْفَةَ وَعُقْبَةَ بْنِ عَامِرٍ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ ابْنِ مَسْعُودٍ لَيْسَ إِسْنَادُهُ بِمُتَّصِلٍ . عَوْنُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُتْبَةَ لَمْ يَلْقَ ابْنَ مَسْعُودٍ . وَالْعَمَلُ عَلَى هَذَا عِنْدَ أَهْلِ الْعِلْمِ يَسْتَحِبُّونَ أَنْ لاَ يَنْقُصَ الرَّجُلُ فِي الرُّكُوعِ وَالسُّجُودِ مِنْ ثَلاَثِ تَسْبِيحَاتٍ . وَرُوِيَ عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ الْمُبَارَكِ أَنَّهُ قَالَ أَسْتَحِبُّ لِلإِمَامِ أَنْ يُسَبِّحَ خَمْسَ تَسْبِيحَاتٍ لِكَىْ يُدْرِكَ مَنْ خَلْفَهُ ثَلاَثَ تَسْبِيحَاتٍ . وَهَكَذَا قَالَ إِسْحَاقُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ .
ইবনু মাসঊদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ যখন তোমাদের কেউ রুকূ করবে তখন রুকূতে তিনবার “সুবাহানা রব্বিয়াল আযীম” (আমার মহান প্রভুর পবিত্রতা বর্ণনা করছি) বলবে। তাহলে তার রুকূ পূর্ণ হবে। আর এটা হল সর্বনিম্ন পরিমাণ। যখন সে সিজদা করবে তখন সিজদায় তিনবার “সুবহানা রব্বিয়াল আলা” বলবে। তাহলে তার সিজদা পূর্ণ হবে। আর এটা হল সর্বনিম্ন পরিমাণ।
(তিরমিজি ২৬১ ইবনু মাজাহ (৮৯০)
حَدَّثَنَا مَحْمُودُ بْنُ غَيْلاَنَ، حَدَّثَنَا أَبُو دَاوُدَ، قَالَ أَنْبَأَنَا شُعْبَةُ، عَنِ الأَعْمَشِ، قَالَ سَمِعْتُ سَعْدَ بْنَ عُبَيْدَةَ، يُحَدِّثُ عَنِ الْمُسْتَوْرِدِ، عَنْ صِلَةَ بْنِ زُفَرَ، عَنْ حُذَيْفَةَ، أَنَّهُ صَلَّى مَعَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَكَانَ يَقُولُ فِي رُكُوعِهِ " سُبْحَانَ رَبِّيَ الْعَظِيمِ " . وَفِي سُجُودِهِ " سُبْحَانَ رَبِّيَ الأَعْلَى " . وَمَا أَتَى عَلَى آيَةِ رَحْمَةٍ إِلاَّ وَقَفَ وَسَأَلَ وَمَا أَتَى عَلَى آيَةِ عَذَابٍ إِلاَّ وَقَفَ وَتَعَوَّذَ . قَالَ أَبُو عِيسَى وَهَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
হুযাইফা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাথে নামায আদায় করছেন। তিনি (রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)) রুকূতে ‘সুবহানা রব্বিয়াল আযীম’ এবং সিজদায় ‘সুবহানা রব্বিয়াল আ’লা’ বলতেন। যখনই কোন রাহমাত সম্পর্কিত আয়াতে আসতেন, তখনই তিনি সামনে অগ্রসর হওয়া বন্ধ রেখে ‘রাহমাত’ চাইতেন। যখনই তিনি কোন শাস্তি সম্পর্কিত আয়াতে আসতেন, তখন সামনে অগ্রসর হওয়া বন্ধ রেখে শাস্তি হতে আশ্রয় চাইতেন।
সহীহ। তিরমিজি ২৬২ মিশকাত-(৮৮১)।
(০২)
অন্ধকার স্থানে নামায পড়াতে কোন সমস্যা নেই।
عَنْ عَائِشَةَ زَوْجِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، أَنَّهَا قَالَتْ: «كُنْتُ أَنَامُ بَيْنَ يَدَيْ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَرِجْلاَيَ، فِي قِبْلَتِهِ فَإِذَا سَجَدَ غَمَزَنِي، فَقَبَضْتُ رِجْلَيَّ، فَإِذَا قَامَ بَسَطْتُهُمَا»، قَالَتْ: وَالبُيُوتُ يَوْمَئِذٍ لَيْسَ فِيهَا مَصَابِيحُ
হযরত আয়শা রাঃ থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসূল সাঃ এর সামনে ঘুমিয়ে থাকতাম। তখন আমার দু’পা থাকতো তার সামনের দিকে। যখন তিনি সেজদা দিতে চাইতেন, তখন আমাকে [আলতু] খোঁচা দিতেন, আমি তখন পা গুটিয়ে নিতাম। আবার যখন তিনি দাঁড়িয়ে পড়তেন, তখন পা বিছাতাম। আয়শা রাঃ বলেন, সে সময় আমাদের ঘরে কোন বাতি ছিল না। [বুখারী, হাদীস নং-৩৮২]
আয়েশা রাঃ থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: এক রাতে আমি রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কে বিছানায় পাচ্ছিলাম না। তখন আমি আমার হাত দ্বারা তাঁকে খুঁজতে লাগলাম। তখন আমার হাত তার পদযুগলের উপর পতিত হল। তখন তাঁর পা খাড়া ছিল আর তিনি ছিলেন সিজদারত। তিনি বলছিলেন:
أَعُوذُ بِرِضَاكَ مِنْ سَخَطِكَ، وَبِمُعَافَاتِكَ مِنْ عُقُوبَتِكَ، وَأَعُوذُ بِكَ مِنْكَ لَا أُحْصِي ثَنَاءً عَلَيْكَ أَنْتَ كَمَا أَثْنَيْتَ عَلَى نَفْسِكَ
“(হে আল্লাহ!) আমি আশ্রয় গ্রহণ করছি তোমার ক্রোধ হতে তোমার সন্তুষ্টির, তোমার শাস্তি থেকে তোমার ক্ষমার আর আমি তোমার আশ্রয় গ্রহণ করছি তোমা হতে। তোমার প্রশংসা করে আমি শেষ করতে পারব না, তুমি নিজে ঐরূপ, যেরূপ তুমি নিজের প্রশংসা করেছ। ” (সুনান নাসাঈ, হা/১৬৯, সহীহ)
,
অন্ধকারের মধ্যে নামাজ পড়া সহিহ আছে। সিজদার জায়গার দিকে নজর রাখা সুন্নাত। কিন্তু তার জন্য ঐ জায়গা দেখতে পাওয়া বা দেখতে থাকা জরুরি নয়।
শামী ১:৪৭৭পৃঃ
,
সঠিক নিয়ম হল, ইমাম সাহেবের উভয় দিকে সালাম ফিরানোর পর মাসবুক তার অবশিষ্ট নামায আদায়ের জন্য দাঁড়াবে। ইমামের প্রথম সালামের পরই দাঁড়িয়ে যাওয়া ঠিক নয়। কারণ ইমাম সাহু সিজদা দিলে মাসবুকেরও ইমামের সাথে সিজদা করা আবশ্যক। আর ইমামের সাহু সিজদা নেই এটা প্রায় নিশ্চিত হবে দ্বিতীয় সালামের পর। তাই দ্বিতীয় সালামের পরই মাসবুক দাঁড়াবে।
(মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক ৩১৫৫; আলবাহরুর রায়েক ১/৩৭৮; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ৩/১০৫; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/৯১; আদ্দুররুল মুখতার ১/৫৯৭)
ইমামের দুই দিকে সালাম ফেরানোর পরেই মাসবুকের দাঁড়ানো উচিত। এর আগে দাঁড়ানো অনুত্তম।
খিজানাতুল আকমাল : ১/৫৮;
বাদায়িউস সানায়ে : ১/৫৬৩; হালবাতুল মুজাল্লি : ২/৪৬৪;
হাশিয়াতুত তাহতাবি আলাল মারাকি, পৃষ্ঠা : ২৫২
আগুন দিয়ে শাস্তি দেয়া এটা আল্লাহ তাআলা নির্ধারিত শাস্তি। আর আল্লাহ তাআলার নির্ধারিত শাস্তি কোন বান্দার প্রয়োগ করা জায়েজ নয়।
হাদীস শরীফে এসেছেঃ
عَنْ عِكْرِمَةَ أَنَّ عَلِيًّا عَلَيْهِ السَّلاَمُ أَحْرَقَ نَاسًا ارْتَدُّوا عَنِ الإِسْلاَمِ فَبَلَغَ ذَلِكَ ابْنَ عَبَّاسٍ فَقَالَ لَمْ أَكُنْ لأَحْرِقَهُمْ بِالنَّارِ إِنَّ رَسُولَ اللَّهِ -صلى الله عليه وسلم- قَالَ « لاَ تُعَذِّبُوا بِعَذَابِ اللَّهِ »
হযরত ইকরিমা রাঃ থেকে বর্ণিত। হযরত আলী রাঃ একদল মুরতাদকে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দিলেন। এ সংবাদ ইবনে আব্বাস রাঃ এর কাছে পৌঁছলে তিনি বলেনঃ আমি হলে তাদের আগুন দিয়ে পুড়াতাম না। কারণ, রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেনঃ “তোমরা আল্লাহর শাস্তি দিয়ে কাউকে শাস্তি দিও না।
{সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-৪৩৫৩, সুনানে বায়হাকী কুবরা, হাদীস নং-১৬৬৩৫, সুনানে তিরমিজী, হাদীস নং-১৪৫৮, সুনানে দারা কুতনী, হাদীস নং-৯০, সুনানে নাসায়ী কুবরা, হাদীস নং-৩৫২৩, সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীস নং-৫৬০৬, সহীহ বুখারী, হাদীস নং-২৮৫৪, মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং-২৫৫২}