সুরা লুকমানের ৩৪ নং আয়াতে মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ
اِنَّ اللّٰهَ عِنۡدَهٗ عِلۡمُ السَّاعَۃِ ۚ وَ یُنَزِّلُ الۡغَیۡثَ ۚ وَ یَعۡلَمُ مَا فِی الۡاَرۡحَامِ ؕ وَ مَا تَدۡرِیۡ نَفۡسٌ مَّاذَا تَکۡسِبُ غَدًا ؕ وَ مَا تَدۡرِیۡ نَفۡسٌۢ بِاَیِّ اَرۡضٍ تَمُوۡتُ ؕ اِنَّ اللّٰهَ عَلِیۡمٌ خَبِیۡرٌ ﴿۳۴﴾
কিয়ামতের জ্ঞান কেবল আল্লাহর নিকটই আছে, তিনিই বৃষ্টি বর্ষণ করেন, জরায়ুতে কী আছে তা তিনিই জানেন। কেউ জানে না আগামীকাল সে কী অর্জন করবে, কেউ জানে না কোন্ জায়গায় সে মরবে। আল্লাহ সর্বজ্ঞ, সর্বাধিক অবহিত।
এ আয়াতে পাঁচটি বস্তুর জ্ঞান সম্পূর্ণভাবে আল্লাহরই জন্য নির্দিষ্ট থাকা এবং অপর কোন সৃষ্টির সে জ্ঞান না থাকার কথা বলা হয়েছে। সুতরাং এর মাধ্যমেই সূরায়ে লুকমান শেষ করা হয়েছে। বলা হয়েছে যে, কেয়ামত সম্পর্কিত জ্ঞান কেবল আল্লাহরই রয়েছে (অর্থাৎ, কোন বছর কোন তারিখে সংঘটিত হবে) এবং তিনি বৃষ্টি বর্ষণ করেন ও মাতৃগর্ভে কি আছে তা তিনিই জানেন (অর্থাৎ, কন্যা না পুত্র, কতদিন বাঁচবে, কি রিযিক পাবে, কোন স্বভাবের অধিকারী হবে ইত্যাদি) এবং আগামীকাল কি অর্জন করবে তা কোন ব্যক্তি জানে না।
(অর্থাৎ, ভাল-মন্দ কি লাভ করবে) অথবা কোন স্থানে মারা যাবে, তাও কেউ জানে না। প্রথম তিন বস্তু সম্পর্কিত জ্ঞান যদিও একথা স্পষ্টভাবে বলা হয়নি যে, আল্লাহ ব্যতীত অন্য কারো এগুলোর জ্ঞান নেই। কিন্তু বাক্যবিন্যাস ও প্রকাশভঙ্গি থেকে একথাই বোঝা যায় যে, এসব বস্তুর জ্ঞান কেবল আল্লাহর অসীম জ্ঞান ভাণ্ডারেই সীমিত রয়েছে। অবশ্য অবশিষ্ট বস্তুদ্বয় সম্পর্কে একথা স্পষ্টভাবেই বলা হয়েছে যে, আল্লাহ ব্যতীত অন্য কারো এগুলোর তথ্য ও তত্ত্ব জানা নেই। [দেখুন, তাবারী, কুরতুবী]
এ পাঁচ বস্তুকে সূরা আল-আন’আমের ৫৯ নং আয়াতে (অদৃশ্য জগতের চাবিসমূহ বলে আখ্যায়িত করা হয়েছে)। তাছাড়া কিয়ামত কখন সংঘটিত হবে সে ব্যাপারে হাদীসে জিবরীল নামে খ্যাত হাদীসেও অনুরূপ বলা হয়েছে যে, এর জ্ঞান আল্লাহ ছাড়া আর কারো কাছে নেই। [দেখুন: বুখারী: ৪৭৭৭, মুসলিম: ৯, ১০]
তাফসীরে আহসানুল বয়ানে উল্লেখ রয়েছে যে হাদীসে বর্ণিত হয়েছে যে, গায়েবের চাবিকাঠি হল পাঁচটি, যা আল্লাহ ছাড়া কেউ অবগত নন। (বুখারীঃ সূরা লুকমানের তফসীর, ইস্তিস্কা অধ্যায়)
(ক) কিয়ামত কখন হবে? কিয়ামতের নিকটবর্তী কিছু নিদর্শন নবী (সাঃ) বলেছেন; কিন্তু কিয়ামত প্রতিষ্ঠিত হওয়ার সঠিক সময় নিশ্চিতরূপে একমাত্র আল্লাহই জানেন, তা কোন ফিরিশতা জানেন না এবং কোন প্রেরিত নবীও না।
(খ) বৃষ্টি কখন কোথায় হবে? মেঘের চিহ্ন ও অনুকূল হাওয়া দেখে আন্দাজ লাগানো হয় বা লাগানো যায় যে, অমুক এলাকায় বৃষ্টি হতে পারে। কিন্তু এ কথা সকলে জানে যে, এই আন্দাজ কখনো সঠিক হয় আবার কখনো বেঠিক। এমনকি আবহাওয়া দফতরের প্রচারিত খবর অনেক সময় সঠিক হয় না। যাতে পরিষ্কার বুঝা যাচ্ছে যে, বৃষ্টি কোথায় কখন হবে একমাত্র আল্লাহ ছাড়া অন্য কেউ জানে না।
(গ) মাতৃগর্ভে কি আছে? বিভিন্ন যন্ত্রের সাহায্যে সম্ভবতঃ অসম্পূর্ণ ধারণা পাওয়া যেতে পারে যে, তা ছেলে না মেয়ে। কিন্তু মাতৃগর্ভের এই বাচ্চা সৎ না অসৎ, সৌভাগ্যবান না দুর্ভাগ্যবান, পূর্ণ না অপূর্ণ, বিকলাঙ্গ না অবিকলাঙ্গ, সুশ্রী না কুশ্রী হবে ইত্যাদি বিষয়ক জ্ঞান আল্লাহ ছাড়া আর কেউ জানে না।
(ঘ) মানুষ আগামী কাল কি করবে? তা দ্বীনী বিষয় হোক বা পার্থিব বিষয়, কেউ আগামী কালের বিষয়ে জ্ঞান রাখে না যে, আগামী কাল পর্যন্ত তার জীবন থাকবে কি না? আর যদি থাকে, তাহলে সে তাতে কি আমল করবে?
(ঙ) মৃত্যু কোথায় হবে? ঘরে না বাইরে, স্বদেশে না বিদেশে, যুবক অবস্থায় না বৃদ্ধাবস্থায়, নিজের আশা ও চাহিদা পূর্ণ হওয়ার পর নাকি তার পূর্বে? এ সব কেউ জানে না।
★★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই বোন,
অনু পরমানু এগুলো হল, বৈজ্ঞানিক আবিস্কার।যা বিভিন্ন সুত্র ব্যবহার করে বের করা হয়েছে।
এগুলো জানাকে গায়েব জানা বলেনা।
এগুলো গায়েবের অন্তর্ভুক্ত নয়।
,
সুতরাং এগুলো জানা বা জানার চেষ্টা করা জায়েজ।
,
আরো জানুনঃ