বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
একজন মুসলমান হিসেবে আমাদের প্রত্যেকটা কথা, কাজ সংযত হওয়া চাই।মনে রাখতে হবে,প্রত্যেকটা কথা ও কাজের হিসাব আমাদের সবাইকে দিতে হবে। নিম্নোক্ত হাদীসটি লক্ষ্যণীয়-------
হাদীসে এসেছে,ইবনু মাসউদ (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে,
أن النبي صلى الله عليه وسلم قال : ( لَا تَزُولُ قَدَمُ ابْنِ آدَمَ يَوْمَ الْقِيَامَةِ مِنْ عِنْدِ رَبِّهِ حَتَّى يُسْأَلَ عَنْ خَمْسٍ : عَنْ عُمُرِهِ فِيمَ أَفْنَاهُ ، وَعَنْ شَبَابِهِ فِيمَ أَبْلَاهُ ، وَمَالِهِ مِنْ أَيْنَ اكْتَسَبَهُ وَفِيمَ أَنْفَقَهُ وَمَاذَا عَمِلَ فِيمَا عَلِمَ )
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কিয়ামাত দিবসে পাঁচটি বিষয় সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ হওয়ার আগপর্যন্ত আদম সন্তানের পদদ্বয় আল্লাহ্ তা'আলার নিকট হতে সরতে পারবে না। তার জীবনকাল সম্পর্কে, কিভাবে অতিবাহিত করেছে? তার যৌবনকাল সম্পর্কে, কি কাজে তা বিনাশ করেছে; তার ধন-সম্পদ সম্পর্কে, কোথা হতে তা উপার্জন করেছে এবং তা কি কি খাতে খরচ করেছে এবং সে যত টুকু জ্ঞান অর্জন করেছিল সে মুতাবিক কি কি আমল করেছে।
(সুনানু তিরমিযি-২৪১৬)
আমরা জানি তালেবানরা ভিনদেশীদের কাছ থেকে নিজ মাতৃভূমি রক্ষার জন্য আন্দোলন সংগ্রাম করে বারবার সফল হয়েছে। অদ্য আমোরিকাও তাদেরকে মুক্তিকামী বলে ঘোষনা দিয়েছে এবং তাদের সাথে শান্তিচুক্তি করেছে।যেখানে আমেরিকা আফগান ও তালেবানকে সন্ত্রাসী আখ্যা দিয়ে আফগানিস্তানে অনুপ্রবেশ করেছিলো। যারা নিজ মাতৃভূমি রক্ষার জন্য মরবে,তারাতো অবশ্যই শহীদ।
চার মাযহাব সম্বলীত সর্ব বৃহৎ ফেক্বাহী গ্রন্থ
"আল-মাওসু'আতুল ফেক্বহিয়্যায় "(২৯/১৭৪) এ বর্ণিত রয়েছে,
" ﺫﻫﺐ ﺍﻟﻔﻘﻬﺎﺀ ﺇﻟﻰ ﺃﻥ ﻟﻠﻈﻠﻢ ﺃﺛﺮﺍً ﻓﻲ ﺍﻟﺤﻜﻢ ﻋﻠﻰ ﺍﻟﻤﻘﺘﻮﻝ ﺑﺄﻧﻪ ﺷﻬﻴﺪ ، ﻭﻳُﻘﺼﺪ ﺑﻪ ﻏﻴﺮ ﺷﻬﻴﺪ ﺍﻟﻤﻌﺮﻛﺔ ﻣﻊ ﺍﻟﻜﻔﺎﺭ ، ﻭﻣِﻦ ﺻﻮَﺭ ﺍﻟﻘﺘﻞ ﻇﻠﻤﺎً : ﻗﺘﻴﻞ ﺍﻟﻠﺼﻮﺹ ، ﻭﺍﻟﺒﻐﺎﺓ ، ﻭﻗﻄَّﺎﻉ ﺍﻟﻄﺮﻕ ، ﺃﻭ ﻣَﻦ ﻗُﺘﻞ ﻣﺪﺍﻓﻌﺎً ﻋﻦ ﻧﻔﺴﻪ ، ﺃﻭ ﻣﺎﻟﻪ ، ﺃﻭ ﺩﻣﻪ ، ﺃﻭ ﺩِﻳﻨﻪ ، ﺃﻭ ﺃﻫﻠﻪ ، ﺃﻭ ﺍﻟﻤﺴﻠﻤﻴﻦ ، ﺃﻭ ﺃﻫﻞ ﺍﻟﺬﻣﺔ ، ﺃﻭ ﻣَﻦ ﻗﺘﻞ ﺩﻭﻥ ﻣﻈﻠﻤﺔ ، ﺃﻭ ﻣﺎﺕ ﻓﻲ ﺍﻟﺴﺠﻦ ﻭﻗﺪ ﺣﺒﺲ ﻇﻠﻤﺎً .
ﻭﺍﺧﺘﻠﻔﻮﺍ ﻓﻲ ﺍﻋﺘﺒﺎﺭﻩ ﺷﻬﻴﺪ ﺍﻟﺪﻧﻴﺎ ﻭﺍﻵﺧﺮﺓ ، ﺃﻭ ﺷﻬﻴﺪ ﺍﻵﺧﺮﺓ ﻓﻘﻂ ؟ .
ﻓﺬﻫﺐ ﺟﻤﻬﻮﺭ ﺍﻟﻔﻘﻬﺎﺀ ﺇﻟﻰ ﺃﻥ ﻣَﻦ ﻗُﺘﻞ ﻇﻠﻤﺎً : ﻳُﻌﺘﺒﺮ ﺷﻬﻴﺪ ﺍﻵﺧﺮﺓ ﻓﻘﻂ ، ﻟﻪ ﺣﻜﻢ ﺷﻬﻴﺪ ﺍﻟﻤﻌﺮﻛﺔ ﻣﻊ ﺍﻟﻜﻔﺎﺭ ﻓﻲ ﺍﻵﺧﺮﺓ ﻣﻦ ﺍﻟﺜﻮﺍﺏ ، ﻭﻟﻴﺲ ﻟﻪ ﺣﻜﻤﻪ ﻓﻲ ﺍﻟﺪﻧﻴﺎ ، ﻓﻴُﻐﺴَّﻞ ، ﻭﻳﺼﻠَّﻰ ﻋﻠﻴﻪ " ﺍﻧﺘﻬﻰ
জুমহুর ফুকাহায়ে কিরাম মনে করেন,জুলুম-নির্যাতনে নিহত ব্যক্তির ব্যপারে শহীদের হুকুম আরোপ করা হবে।তবে এ শহীদ সে শহীদ নয়, যে কাফিরদের সাথে যুদ্ধক্ষেত্রে শহীদ হবে।
কোন প্রকারের জুলুম-নির্যাতনে নিহত হলে তাকে মাধ্যমে শহীদ কাকে বলা যাবে?এ প্রশ্নের জবাবে বলা যায় যে,চুরের হাতে নিহত ব্যক্তি শহীদ।
ডাকাতের হাতে নিহত ব্যক্তি শহীদ।
খেলাফত বিদ্রোহীর হাতে নিহত ব্যক্তি শহীদ।
আত্মরক্ষার্তে নিহত ব্যক্তি শহীদ।
নিজ মাল, দ্বীন, পরিবারবর্গ বা মুসলমানদের অথবা (যিম্মিদের) আশ্রয়প্রার্থীদের রক্ষার্তে নিহত ব্যক্তি শহীদ।
অন্যায়ভাবে গ্রেফতারকৃত ব্যক্তি জেলে মারা গেলে সেও শহীদ।
এখন ফুকাহায়ে কিরামের নিকট এ ব্যাপারে মাতানৈক্য হয়েছে যে,তাকে কি শুধু আখেরাত হিসেবে শহীদ বলা হবে না দুনিয়া-আখেরাত উভয় হিসেবে শহীদ বলা হবে।
জুমহুর ফুকাহায়ে কেরাম মনে করেন যে, অন্যায়ভাবে নিহত ব্যক্তিকে শুধুমাত্র আখেরাত হিসেবে শহীদ বলা হবে।হ্যা অবশ্যই সে কাফিরের সাথে যুদ্ধক্ষেত্রে শহীদের সমপরিমাণ সওয়াব পাবে।
তবে শহীদের দুনিয়াবি হুকুম তথা গোসল কাপন তার উপর আরোপিত হবে না।বরং তাকে গোসল দিয়ে কাফন পড়িয়ে তারপর দাফন করা হবে। [আল-মাওসু'আতুল ফেক্বহিয়্যায় "২৯/১৭৪] বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন-
https://www.ifatwa.info/480
সুপ্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
তালাবান রাষ্ট বানাতে চাই না,এ কথা দ্বারা যদি তার উদ্দেশ্য হয়,কুরআন সুন্নাহকে অবজ্ঞা করা, তাহলে তার ঈমানে সমস্যা চলে আসবে।
আর যদি তার উদ্দেশ্য হয়,ভিন্ন কিছু,যেমন অনুন্নত বা জীবনের মান নিম্ন মানের, তাহলে সে কাফির হবে না।