আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
259 views
in সুন্নাহ-বিদ'আহ (Sunnah and Bid'ah) by (22 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ।আমরা প্রায়ই কোথাও কোথাও কিছু আমলে তদবির দেখি যেগুলো সুন্নাহ ভিত্তিক নয় অর্থাৎ হাদীস দ্বারা সাব্যস্ত নয়।বরং পরবর্তী কিছু আল্লাহর নেককার বান্দাদের নিজস্ব গবেষণা/অভিজ্ঞতার আলোকে তারা সেটা প্রদান করেছেন।যেমন আমালে কোরআন,আমালিয়্যাতে কাশ্মীরি ইত্যাদি।এক্ষেত্রে দেখেছি বর্তমান ওলামায়ে কেরামগণ বিভিন্ন ভাগে বিভক্ত হয়েছেন।যেমন-

১।আমাদের আহলে হাদীসের ভাইগণ এই বই+আমল গুলোলে ডিরেক্ট ছুড়ে ফেলে দিয়েছেন।

২।কোনো কোনো আলিমগণ বলেছেন কোরআন ও হাদিসের আমলগুলো গ্রহণীয়।কিন্তু ভোররাতে উঠে,সন্ধায় অমুক,অমুক জলে দম মেরে ফুঁ দিয়ে খাওয়া এগুলো জায়েজ নয়।এরক রীতি-রেওয়াজ ওয়ালা আমলগুলো বিদয়াত।

৩।কোনো আলিমগণ সম্পূর্ণটাকেই জায়েজ বলেছেন।কেনোনা নেককার বান্দাদের নিজস্ব অভিজ্ঞতার আলোকে যেহেতু এই আমল/তদবির গুলো পরীক্ষিত।এবং ওই নেককার বান্দাগণ হক্কানী ও গ্রহণযোগ্য।

আমার রুহানিয়্যাত ও ব্যক্তিগত চিকিৎসার জন্য নববী চিকিৎসা কোথায়/কোন বইয়ে পেতে পারি?জানালে উপকৃত হতাম।এবং উল্লেখিত তদবির/আমল গুলো মানার ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা/অনুমতি কতটুকু?

1 Answer

0 votes
by (574,230 points)
জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 


শরীয়তের বিধান অনুযায়ী  কয়েক প্রকার তাবিজ,ঝাড়ফুক জায়েজ নয়। যথা-

১-কুরআন হাদীস দ্বারা ঝাড়ফুক দেয়া ছাড়া শুধু তামা, পিতল বা লোহা দ্বারা তাবিজ বানিয়ে লটকিয়ে রাখা। অর্থাৎ শুধু এগুলো লটকানো দ্বারাই রোগমুক্ত হওয়া যাবে বিশ্বাস করে তা লটকানো নাজায়িজ।

২-এমন তাবিজ যাতে আল্লাহর নাম, কুরআনের আয়াত, দুআয়ে মাসূরা ব্যতিত শিরকী কথা লিপিবদ্ধ থাকে।

৩-তাবীজকে মুয়াসসার বিজজাত তথা তাবীজ নিজেই আরোগ্য করার ক্ষমতার অধিকারী মনে করে তাবিজ লটকানো। এ বিশ্বাস জাহেলী যুগে ছিল, বর্তমানেও ইসলাম সম্পর্কে কিছু অজ্ঞ ব্যক্তিরা তা মনে করে থাকে।

৪-যে কালামের অর্থ জানা যায় না এমন শব্দ দ্বারা তাবিজ লেখা।

৫-আরবী ছাড়া অন্য কোন ভাষায় তাবিজ লেখা।

এ সকল সুরতে সর্বসম্মত মতানুসারে নাজায়িজ ও হারাম এবং শিরক। এতে কোন সন্দেহ নেই।

কিন্তু তাবিজে কুরআনের আয়াত, আল্লাহর নাম, দুআয়ে মাসুরা বা শিরকমুক্ত অর্থবোধক থাকলে তা  জায়িজ।  কেননা এসব তাবিজের ক্ষেত্রে মুয়াসসার বিজজাত তথা আরোগ্যের ক্ষমতা আল্লাহ তাআলাকেই মনে করা হয়। যেমন ডাক্তার প্রদত্ত ঔষদের ক্ষেত্রে মুয়াসসার বিজজাত আল্লাহকে মনে করার কারণে তা নাজায়িজ নয়। যদি মুয়াসসার বিজজাত ঐ ঔষধকে মনে করলে ঔষধ সেবনও হারাম হবে।
.
عَنْ عَمْرِو بْنِ شُعَيْبٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ جَدِّهِ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَ يُعَلِّمُهُمْ مِنَ الْفَزَعِ كَلِمَاتٍ: «أَعُوذُ بِكَلِمَاتِ اللَّهِ التَّامَّةِ، مِنْ غَضَبِهِ وَشَرِّ عِبَادِهِ، وَمِنْ هَمَزَاتِ الشَّيَاطِينِ وَأَنْ يَحْضُرُونِ» وَكَانَ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ عُمَرَ يُعَلِّمُهُنَّ مَنْ عَقَلَ مِنْ بَنِيهِ، وَمَنْ لَمْ يَعْقِلْ كَتَبَهُ فَأَعْلَقَهُ عَلَيْهِ

আমর ইবনে শুআইব তাঁর পিতা ও তিনি তাঁর দাদা থেকে বর্ণনা করেন যে,রাসূল (সঃ) ইরশাদ করেন,তোমাদের কেউ যখন ঘুম অবস্থায় ঘাবড়িয়ে উঠে,সে যেন  أَعُوذُ بِكَلِمَاتِ اللَّهِ التَّامَّةِ، مِنْ غَضَبِهِ وَشَرِّ عِبَادِهِ، وَمِنْ هَمَزَاتِ الشَّيَاطِينِ وَأَنْ يَحْضُرُونِ দো’আটি পাঠ করে। আব্দুল্লাহ ইবনে আমর তাঁর উপযুক্ত সন্তানদের তা শিক্ষা দিতেন এবং ছোটদের গলায় তা লিখে লটকিয়ে দিতেন।{সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-৩৮৯৫}

এ হাদীস স্পষ্টভাষায় উল্লেখ করা হয়েছে যে, আব্দুল্লাহ বিন আমর বিন আস রাঃ তাঁর অবুঝ সন্তানদের জন্য তাবীজ লিখে তা লটকিয়ে দিতেন।

আল্লামা ইবনে আবেদীন শামী রহঃ উল্লেখ করেন-

إنما تكره العوذة إذا كانت بغير لسان العرب ، ولا يدرى ما هو ولعله يدخله سحر أو كفر أو غير ذلك ، وأما ما كان من القرآن أو شيء من الدعوات فلا بأس به

নিশ্চয় নিষিদ্ধ তাবীজ হল যা আরবী ছাড়া অন্য ভাষায় লিখা হয়, বুঝা যায় না তাতে কি আছে? অথবা যাতে জাদু, কুফরী ইত্যাদি কথা থাকে। আর যেসব তাবীজে কুরআন বা দুআ সম্বলিত হয় তা ব্যবহারে কোন সমস্যা নেই। {ফাতওয়ায়ে শামী- এইচ এম সায়ীদ ৬/৩৬৩}

★সুতরাং এ মূলনীতি গুলো মেনে আকাবিরিনে কেরাম (যেমন আশরাফ আলী থানভি রহঃ)  দের লিখিত কিতাবের তাবিজ গ্রহন করা যাবে।
তবে এসব মূলনীতি ফলো না করলে কোনো তাবিজই জায়েজ হবেনা।
,
★কিছু ইসলামী স্কলারদের মতে যেহেতু এ পুরা বিষয়ই নাজায়েজ, তাই তাদের মতানুসারী গন সেই মত অনুযায়ী আমল করতে পারবেন,কোনো সমস্যা নেই। 

আরো জানুনঃ   


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (22 points)
আমার প্রশ্ন টি তাবীয ব্যবহারের ব্যপারে ছিলো না মুহতারাম উস্তায।প্রশ্নটি ছিলো হাদিসে না থাকা কিছু আমল, শুধুমাত্র নেককার বান্দাদের অভিজ্ঞতার আলোকে কতটুকু পালনীয়? আর যদি জায়েজ হয়,তাহলে এরকম কিছু বই আপনার জানা থাকলে সাজেস্ট করুন যেখানে এরুপ আমল রয়েছে।যেমন-আমালে কোরআন(হাকীমুল উম্মত থানভী রহ.),আমালিয়্যাতে কাশ্মীরী(আনোয়ার শাহ কাশ্মীরী রহ.) প্রভৃতি বইগুলো কতটুকু গ্রহণযোগ্য? 

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...