আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

+1 vote
233 views
in সুন্নাহ-বিদ'আহ (Sunnah and Bid'ah) by (21 points)
1। অনেকে বলেন, মানুষ শুক্র থেকে সৃষ্ট, মাটি থেকে নয়। এদেরকে কুরআনের আয়াত বলার পরও বোঝানো সম্ভব হয়না। কি করণীয়?
2। অনেক আলেমরা বিদআতি কাজ করে থাকেন, যেমনঃ ঈদে মিলাদুন্নাবি পালন, মিলাদ কিয়াম করা, মৃত্যুবার্ষিকী পালন। আমার পরিবারের বেশিরভাগ মানুষ তাদেরকে অনুসরণ করেন। বোঝাতে গেলে বলেন তারা তো আলেম। না জেনে কি এসব করছে?
প্রশ্ন হল তারা আলেম হয়েও কেন এসব বিদআতি কাজ করে থাকেন?
3। পরিবারের মানুষকে এসব থেকে দূরে থাকার দাওয়াত দিলে বলে আগের যুগের মানুষরাই বেশি জান্নাতি এটাতো রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, তাহলে এখনকার হুজুরদের কথা কেন বিশ্বাস করব? করনীয় কি?

4। শবে বরাত উপলক্ষে কি রোজা আছে? এই রাতে আল্লাহ অনেক মানুষকে ক্ষমা করে দেন, ক্ষমা প্রার্থনা করতে যদি সালাত আদায় করা হয় তবে তা কি বিদআত হবে?
5। শবে বরাতে রাত জেগে ইবাদত করার ব্যাপারে হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, তাহলে একে বিদআত কেন বলা হয়?

1 Answer

0 votes
by (597,330 points)

ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
(১) মানুষ শুক্র থেকে সৃষ্টি, তবে মানুষের আদি পিতা মাঠি থেকে সৃষ্টি। 
(২) তাদের বিদ’আতি কাজের জন্য তাদের কিয়ামতের ময়দানে জিজ্ঞাসা করা হবে। 
(৩) তাদের একথার যুক্তিসংগত নয়। 
(৪+৫)
শবে বরাত প্রসঙ্গ।
হযরত আবু মুসা আশ'আরী রাযি থেকে বর্ণিত,
ﻋﻦ ﺃﺑﻲ ﻣﻮﺳﻰ ﺍﻷﺷﻌﺮﻱ ﺭﺿﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻪ ﻋﻦ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﻗﺎﻝ : ﺇﻥَّ ﺍﻟﻠَّﻪَ ﻟﻴﻄَّﻠﻊُ ﻓﻲ ﻟﻴﻠﺔِ ﺍﻟﻨِّﺼﻒِ ﻣﻦ ﺷﻌﺒﺎﻥَ ﻓﻴﻐﻔﺮُ ﻟﺠﻤﻴﻊِ ﺧﻠﻘِﻪ ﺇﻟَّﺎ ﻟﻤﺸﺮِﻙ ﺃﻭ ﻣﺸﺎﺣﻦٍ .
রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেন, আল্লাহ তা'আলা শা'বানের মধ্যরাত্রিতে মুশরিক এবং হিংসুক ব্যতীত সকল মু'মিন মুসলমানকে ক্ষমা করে দেন।
(সুনানে ইবনে মা'জা-১৩৯০)

ইমাম নাসিরুদ্দিন আলবানি রাহ উক্ত হাদীসকে সহীহ বলেছেন।
যেমন বর্ণিত রয়েছে-
ﺇﻥَّ ﺍﻟﻠَّﻪَ ﻟﻴﻄَّﻠﻊُ ﻓﻲ ﻟﻴﻠﺔِ ﺍﻟﻨِّﺼﻒِ ﻣﻦ ﺷﻌﺒﺎﻥَ ﻓﻴﻐﻔﺮُ ﻟﺠﻤﻴﻊِ ﺧﻠﻘِﻪ ﺇﻟَّﺎ ﻟﻤﺸﺮِﻙ ﺃﻭ ﻣﺸﺎﺣﻦٍ
ﺍﻟﺮﺍﻭﻱ : ﺃﺑﻮ ﻣﻮﺳﻰ ﺍﻷﺷﻌﺮﻱ ﺍﻟﻤﺤﺪﺙ : ﺍﻷﻟﺒﺎﻧﻲ ﺍﻟﻤﺼﺪﺭ : ﺻﺤﻴﺢ ﺍﺑﻦ ﻣﺎﺟﻪ ﺍﻟﺠﺰﺀ ﺃﻭ ﺍﻟﺼﻔﺤﺔ : 1148 ﺣﻜﻢ ﺍﻟﻤﺤﺪﺙ : ﺣﺴﻦ
ﺇﻥَّ ﺍﻟﻠﻪَ ﻟَﻴَﻄَّﻠِﻊُ ﻓﻲ ﻟﻴﻠﺔِ ﺍﻟﻨِّﺼﻒِ ﻣﻦﺷﻌﺒﺎﻥَ ، ﻓﻴَﻐﻔِﺮ ﻟﺠﻤﻴﻊِ ﺧﻠﻘِﻪ ﺇﻻ ﻟﻤﺸﺮﻙٍ ﺃﻭ ﻣُﺸﺎﺣﻦٍ
ﺍﻟﺮﺍﻭﻱ : ﺃﺑﻮ ﻣﻮﺳﻰ ﺍﻷﺷﻌﺮﻱ ﺍﻟﻤﺤﺪﺙ : ﺍﻷﻟﺒﺎﻧﻲ ﺍﻟﻤﺼﺪﺭ : ﺍﻟﺴﻠﺴﻠﺔ ﺍﻟﺼﺤﻴﺤﺔ ﺍﻟﺠﺰﺀ ﺃﻭ ﺍﻟﺼﻔﺤﺔ : 1563 ﺣﻜﻢ ﺍﻟﻤﺤﺪﺙ : ﺫﻛﺮ ﻟﻪ ﺷﻮﺍﻫﺪ
ইমাম নাসিরুদ্দিন আলবানি রাহ উক্ত হাদীসকে সহীহ বলেছেন।
তিনি (সিলসিলাতুল আহাদিস-সাহিহাহ-৩/২১৮)এ উক্ত সনদের দুর্বলতা উল্লেখ পূর্বক হাদীসের অন্যান্য সনদের ভিত্তিতে হাদীসের মতন তথা হাদীসের শব্দ ও তার মর্মার্থর বিশুদ্ধতা প্রমাণ করে হাদীসকে সহীহ বলেছেন। যেমন বর্ণিত রয়েছে- 
ﻭ ﺃﻣﺎ ﺣﺪﻳﺚ ﺃﺑﻲ ﻣﻮﺳﻰ : ﻓﻴﺮﻭﻳﻪ ﺍﺑﻦ ﻟﻬﻴﻌﺔ ﺃﻳﻀﺎً ﻋﻦ ﺍﻟﺰﺑﻴﺮ ﺑﻦ ﺳﻠﻴﻢ ﻋﻦ ﺍﻟﻀﺤﺎﻙ ﺑﻦ ﻋﺒﺪ ﺍﻟﺮﺣﻤﻦ ﻋﻦ ﺃﺑﻴﻪ ﻗﺎﻝ : ﺳﻤﻌﺖ ﺃﺑﺎ ﻣﻮﺳﻰ ﻋﻦ ﺍﻟﻨﺒﻲ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ( ﻧﺤﻮﻩ ) .ﺃﺧﺮﺟﻪ ﺍﺑﻦ ﻣﺎﺟﻪ ( 1390 ) ﻭﺍﺑﻦ ﺃﺑﻲ ﻋﺎﺻﻢ ﺍﻟﻼﻟﻜﺎﺋﻲ .ﻗﻠﺖ : ﻭﻫﺬﺍ ﺇﺳﻨﺎﺩ ﺿﻌﻴﻒ ؛ ﻣﻦ ﺃﺟﻞ ﺍﺑﻦ ﻟﻬﻴﻌﺔ ، ﻭﻋﺒﺪ ﺍﻟﺮﺣﻤﻦ ، ﻭﻫﻮ ﺍﺑﻦ ﻋﺮﺯﺏ ، ﻭﺍﻟﺪ ﺍﻟﻀﺤﺎﻙ : ﻣﺠﻬﻮﻝ ، ﻭﺃﺳﻘﻄﻪ ﺍﺑﻦ ﻣﺎﺟﻪ ﻓﻲ ﺭﻭﺍﻳﺔ ﻟﻪ ﻋﻦ ﺍﺑﻦ ﻟﻬﻴﻌﺔ .
" ﺍﻟﺴﻠﺴﻠﺔ ﺍﻟﺼﺤﻴﺤﺔ " ( 3 / 218 )

ফাতাওয়ায়ে শামীতে২/২৪-২৫ এ বর্ণিত রয়েছে-দুই ঈদের রাত এবং শা'বানের মধ্যরাত এবং রমজানের শেষ দশের রাতে জাগরিত থেকে ইবাদত বন্দেগী করা মুস্তাহাব। এই রজনী সমূহের সমস্ত অংশ বা অধিকাংশ অংশজুড়ে ইবাদত-বন্দেগী করা মুস্তাহাব।
এই রাত্রি সমূহে পূথক পূথক ভাবে ইবাদত-বন্দেগী করতে হবে।জামাত বন্দী হয়ে করা যাবে না। নফল মোটকথাঃ নামায,কুরআন তেলায়াত,হাদীস আলোচনা,তাসবিহ, দুরুদ ইত্যাদি পড়ে রাত্রি জাগরণ করা মুস্তাহাব। বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন- https://www.ifatwa.info/1163

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
মোল্লা আলী কারী রাহ মিরকাত কিতাবে উল্লেখ করেন, যে সারা বৎসরে একান্নটি রোজা রাখা সুন্নত। এর একটি হল, শবে বরাতের রোযা। শবে বরাতের রোযা সম্পর্কে যে হাদীস পাওয়া যায়, তার সনদ অত্যন্ত দুর্বল , বিধায় হানাফি  ফুকাহায়ে কেরামের কেউ কেউ শবে বরাতের রোযাকে নিরুৎসাহিত করে থাকেন। 

মোটকথা,
শবে বরাতের রোযা রাখা যাবে।  যেহেতু ইহুদিরা যে কোনো উপলক্ষ্যে একটি রোযা রাখে, তাই মুসলমানদের উচিৎ দুইটি রোযা রাখা। তবে একটি রোযা রাখলেও সওয়াবে কোনো ঘাটতি আসবে না। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 211 views
...