আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
44 views
in সুন্নাহ-বিদ'আহ (Sunnah and Bid'ah) by (11 points)
আসসালামুয়ালাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারকাতুহ
অনেকে বাইরে থেকে আসার পরে আগুনের কাছে গিয়ে দাড়ায় কিছুক্ষণ যেনো তার সাথে কোনো আলগা জ্বীন ঘরে ঢুকলে তা বের হয়ে যায়।

এটা কি জায়েজ?শিরক হবে?হলেও কি রকম শিরক হবে?

আর জ্বিন থেকে বাচার সুন্নাহ সম্মত উপায় কী

1 Answer

0 votes
by (695,850 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

প্রশ্নের উল্লেখিত কাজটি জায়েজ নয়। এরকম চিন্তা ভাবনা লালন করা কুসংস্কারের অন্তর্ভুক্ত।

জীনের সমস্যা থেকে বাঁচতে নিম্নোক্ত আমলগুলি করতে হবে।

বিশেষতঃ যে দুআটি রাসূলুল্লাহ ﷺ  থেকে সাব্যস্ত হয়েছে:
اللَّهُمَّ ربَّ النَّاسِ، أَذْهِب الْبَأسَ، واشْفِ، أَنْتَ الشَّافي لاَ شِفَاءَ إِلاَّ شِفَاؤُكَ، شِفاءً لاَ يُغَادِرُ سقَماً
(অর্থ- হে আল্লাহ! হে মানুষের প্রতিপালক! আপনি কষ্ট দূর করে দিন ও আরোগ্য দান করুন। (যেহেতু) আপনিই রোগ আরোগ্যকারী। আপনার আরোগ্য দান হচ্ছে প্রকৃত আরোগ্য দান। আপনি এমনভাবে রোগ নিরাময় করে দিন যেন তা রোগকে নির্মূল করে দেয়।)
জিব্রাইল আ. নবী ﷺ-কে যে দোয়া পড়ে ঝাড়ফুঁক করেছেন সেটাও পড়া যেতে পারে। 

সে দুআটি হচ্ছে-

بِسْمِ اللَّهِ أَرْقِيكَ مِنْ كُلِّ شَيْءٍ يُؤْذِيكَ , مِنْ شَرِّ كُلِّ نَفْسٍ أَوْ عَيْنٍ أَوْ حَاسِدٍ , اللَّهُ يَشْفِيكَ بِسْمِ اللَّهِ أَرْقِيكَ
(অর্থ- আল্লাহর নামে আমি আপনাকে ঝাড়ফুঁক করছি। সকল কষ্টদায়ক বিষয় থেকে। প্রত্যেক আত্মা ও ঈর্ষাপরায়ণ চক্ষুর অনিষ্ট থেকে। আল্লাহ আপনাকে আরোগ্য করুন। আল্লাহর নামে আমি আপনাকে ঝাড়ফুঁক করছি।)

এই দোয়াটি তিনবার পড়ে শরীরে ফুঁ দিবেন। সূরা ইখলাস, সূরা ফালাক ও সূরা নাস তিনবার পড়ে সকাল সন্ধ্যা ও রাতে ঘুমানোর আগে পুরো শরীরে ফুঁ দিবেন।

আরো জানুনঃ- 

জীনের সমস্যা থেকে বাঁচতে নিম্নোক্ত আমলগুলি করতে হবে।

★ ঈমান (আকীদা) শক্ত রাখা।

তাহাৎ (তাওহীদ)-এ দৃঢ় থাকা সবচেয়ে বৃহৎ প্রতিরক্ষা। আল্লাহর প্রতি পূর্ণ ভরসা ও নির্দেশ মেনে চলা শয়তান-জ্বিনের প্রভাব কমায়।

★ নিয়মিত কুরআন পাঠ ও মুখস্থ আয়াত-সমূহ রাখা

আয়াতুল কুরসি (সূরা বাকারা ২:২৫৫) প্রতিদিন পড়া — সকাল/রাত বা নামাজের পরে।

সূরা আল-ইখলাস, আল-ফালাক ও আন-নাস (মুআউয্জাতাইন) — রাতে ঘুমানোর আগে ও সকাল-সন্ধ্যায় ত্রিই বার পড়ার সুন্নাহ প্রচলিত।

সূরা বাকারার শেষ দুই আয়াত রাতের পূর্বে পড়লে বাসায় কল্যাণ ও সুরক্ষা আসে — 

বাড়িতে কুরআন নিয়মিত তেলাওয়াত চালু রাখুন — সম্ভব হলে মদিনাহ-ভিত্তিক আদব অনুযায়ী সারাদিনে কিছু অংশ পড়া।
---

★রুকইয়াহ (সুন্নাহর রুকইয়া — কুরআন ও দু‘আ দিয়ে)

নিজে নিজে বা একজন বিশ্বস্ত, দ্বীনেমুখী আলেম/হাফেজের কাছে সুযোগ্য রুকইয়া করানো যেতে পারে। রুকইয়া মানে: কুরআন-আয়াত ও নবীর শিক্ষা-কৃত দু‘আ দ্বারা তাবিজ/রোগিত্রাণ।

রুকইয়ার সময় সাধারণত আয়াতুল কুরসি, মুআউয্জাতাইন, সূরা ইখলাস, ফাতিহা ইত্যাদি থেকে পাঠ করা হয় ও কবর দিয়ে হালকা পানি বা বুফ দিয়ে প্রসার করা হয়। 

★ দৈনন্দিন আজকার ও সুন্নাহি দো‘আগুলো

সকালে ও সন্ধ্যায় নবীর দো‘য়া-সংকলন (আধার-আধারে):

“আউযুবিল্লাহি মিনাশ-শয়তানির রাজীম” বলা (শয়তানের তাড়না কামনা) এবং “বিস্মিল্লাহ”-এর অভ্যাস।

ঘুমানোর আগে: আয়াতুল কুরসি, মুআউয্জাতাইন ও সূরা ইখলাস ত্রিই বার পড়া।

ঘুমানোর আগে “বিসমিকা-অল্লাহুম্মা আমুতু ওয়া আহইয়া” বলা (নবীর সুন্নাহ)।

বাড়ি থেকে বের হওয়ার আগে “বিস্মিল্লাহ, তাওক্কালতু আলাল্লাহ” ইত্যাদি ছোট দো‘য়া বলা।

গৃহে ওঠা-নামার সময়, বাথরুমে ঢোকার আগে/বের হয়ে আসার সুন্নাহি বাক্যাবলি (নবীর আদব অনুযায়ী) বলা।

★সুরক্ষা মূলক আচরণগুলো করবেন।

ওযু (অল্পতম) রাখা: নিয়মিত ওযু রাখলে শয়তান দূরে থাকে — নবী-সুন্নাহে এর প্রতি গুরুত্ব আছে।

ঘর-পরিস্কার ও আলোর ব্যবহার: অন্ধকারে মন্দ শক্তি সক্রিয় হতে পারে — হালকা ও পরিমিত আলো,পরিষ্কার-শুচিতা রাখুন।

চিত্র/প্রতিমা ও গৃহে নাজায়েজ বস্তু না রাখা।

★বিশেষ কিছু সুন্নাহি আমল — নিয়মিত রুটিন (প্রস্তাবিত)

প্রতিদিন (সকালে ও সন্ধ্যায়):

‘আস্তাগফিরুল্লাহ’/ইস্তেগফার ও সকালে-সন্ধ্যায় মুআউয্জাত এবং আয়াতুল কুরসি পাঠ।

দু‘আ: “আউজুবিল্লাহিমিনাশশাইতানির রাজীম” সব কাজের আগে।

ঘুমানোর আগে:

ওযু করে বসে আয়াতুল কুরসি ও মুআউয্জাতাইন পড়া, তারপর উপর থেকে হালকা থুতু (বুফ) দিয়ে সমস্ত শরীরে (নবীর প্রক্রিয়া-স্বরূপ) ছোঁয়া (যদি আরামদায়ক মনে হয়)।

নামাজের পরে:
কিছু সময় কুরআন পাঠ ও ধৈর্য্যের সাথে দোয়া করা।

★অন্তরে শান্তি ও ধৈর্য্য রাখুন

প্রতিকূলতা ও পরীক্ষায় ধৈর্য্য ও দোয়াই বড় কাজে আসে। কষ্টে থাকলে আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করুন:

“اللَّهُمَّ أَنْتَ رَبِّي لاَ إِلَهَ إِلاَّ أَنْتَ خَلَقْتَنِي وَأَنَا عَبْدُكَ 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...