আল্লাহ তাআলা অনেক সময় ফাসেক (অপরাধী, অন্যায়কারী, পাপাচারী) লোকদের দিয়েও ইসলামের বা মুমিনদের উপকার ঘটান।
কিন্তু সেই উপকার তার নিজের জন্য নয়, বরং আল্লাহর হিকমাহ ও পরিকল্পনার জন্য।
মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ-
وَاللَّهُ غَالِبٌ عَلَى أَمْرِهِ وَلَٰكِنَّ أَكْثَرَ النَّاسِ لَا يَعْلَمُونَ
“আল্লাহ তাঁর কাজে প্রভাবশালী, কিন্তু অধিকাংশ মানুষ তা বোঝে না।”
(সূরা ইউসুফ, আয়াত ২১)
অর্থাৎ, আল্লাহ তাঁর ইচ্ছামতো যাকে খুশি, যেভাবে খুশি — ইসলাম বা মুমিনদের জন্য উপকারের কারণ বানিয়ে দেন, যদিও সেই ব্যক্তি নিজে পাপাচারী বা মুমিন নয়।
হাদীস শরীফে এসেছেঃ-
إِنَّ اللَّهَ لَيُؤَيِّدُ هَذَا الدِّينَ بِالرَّجُلِ الْفَاجِرِ
“নিশ্চয়ই আল্লাহ এই দ্বীনকে (ইসলামকে) সমর্থন দেন এমন ব্যক্তির মাধ্যমে, যে ফাসেক (অপরাধী)।”
(সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৩০৬২; সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১১১)
ইমাম নববী (রহ.) এই হাদীসের ব্যাখ্যায় বলেন:
অর্থ এই যে, আল্লাহ তাঁর দ্বীনকে সাহায্য করতে যাকে খুশি, যেভাবে খুশি ব্যবহার করেন। কখনো এক ব্যক্তি নিজ স্বার্থে, নাম-খ্যাতির জন্য, বা রাজনৈতিক কারণে ইসলামের কাজ করে ফেলে—
কিন্তু প্রকৃতপক্ষে আল্লাহ তাআলার পরিকল্পনায় সেটাই ইসলামের কল্যাণে পরিণত হয়।
(তাহজীবুল আওয়ালী, শরহ মুসলিম ১৩/৬৭)
★আল্লাহ কেন এমন করেন? (হিকমাহ)
১. মানব সমাজ পরীক্ষা করার জন্য — কে বুঝবে যে ফলাফল আল্লাহর হাতে, কারো হাতে নয়।
২. প্রমাণ করার জন্য যে, ইসলাম কোনো ব্যক্তিনির্ভর নয় — আল্লাহর দীন টিকে থাকে তাঁর ইচ্ছায়, কারো যোগ্যতায় নয়।
৩. হিকমাহ ও তাকদীরের রহস্য বোঝাতে — যেন মানুষ অহংকার না করে, এবং কেউ হতাশও না হয়।
৪. ইসলামের বিজয় কেবল আল্লাহর হাতে — এটা যেন স্পষ্ট হয়।