ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
আয়িশাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন,
عَنْ عَائِشَةَ ـ رضى الله عنها ـ قَالَتْ تَزَوَّجَنِي النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم وَأَنَا بِنْتُ سِتِّ سِنِينَ، فَقَدِمْنَا الْمَدِينَةَ فَنَزَلْنَا فِي بَنِي الْحَارِثِ بْنِ خَزْرَجٍ، فَوُعِكْتُ فَتَمَرَّقَ شَعَرِي فَوَفَى جُمَيْمَةً، فَأَتَتْنِي أُمِّي أُمُّ رُومَانَ وَإِنِّي لَفِي أُرْجُوحَةٍ وَمَعِي صَوَاحِبُ لِي، فَصَرَخَتْ بِي فَأَتَيْتُهَا لاَ أَدْرِي مَا تُرِيدُ بِي فَأَخَذَتْ بِيَدِي حَتَّى أَوْقَفَتْنِي عَلَى باب الدَّارِ، وَإِنِّي لأَنْهَجُ، حَتَّى سَكَنَ بَعْضُ نَفَسِي، ثُمَّ أَخَذَتْ شَيْئًا مِنْ مَاءٍ فَمَسَحَتْ بِهِ وَجْهِي وَرَأْسِي ثُمَّ أَدْخَلَتْنِي الدَّارَ فَإِذَا نِسْوَةٌ مِنَ الأَنْصَارِ فِي الْبَيْتِ فَقُلْنَ عَلَى الْخَيْرِ وَالْبَرَكَةِ، وَعَلَى خَيْرِ طَائِرٍ. فَأَسْلَمَتْنِي إِلَيْهِنَّ فَأَصْلَحْنَ مِنْ شَأْنِي، فَلَمْ يَرُعْنِي إِلاَّ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ضُحًى، فَأَسْلَمَتْنِي إِلَيْهِ، وَأَنَا يَوْمَئِذٍ بِنْتُ تِسْعِ سِنِينَ.
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন আমাকে বিবাহ করেন, তখন আমার বয়স ছিল ছয় বছর। তারপর আমরা মদিনায় এলাম এবং বনু হারিস গোত্রে অবস্থান করলাম। সেখানে আমি জ্বরে আক্রান্ত হলাম। এতে আমার চুল পড়ে গেল। পরে যখন আমার মাথার সামনের চুল জমে উঠল। সে সময় আমি একদিন আমার বান্ধবীদের সাথে দোলনায় খেলা করছিলাম। তখন আমার মাতা উম্মে রূমান আমাকে উচ্চস্বরে ডাকলেন। আমি তাঁর কাছে এলাম। আমি বুঝতে পারিনি, তার উদ্দেশ্য কী? তিনি আমার হাত দরে ঘরের দরজায় এসে আমাকে দাঁড় করালেন। আর আমি হাঁফাচ্ছিলাম। শেষে আমার শ্বাস-প্রশ্বাস কিছুটা প্রশমিত হল। এরপর তিনি কিছু পানি নিলেন এবং তা দিয়ে আমার মুখমন্ডল ও মাথা মাসেহ করে দিলেন। তারপর আমাকে ঘরের ভিতর প্রবেশ করালেন। সেখানে কয়েকজন আনসারী মহিলা ছিলেন। তাঁরা বললেন, কল্যাণময়, বরকতময় এবং সৌভাগ্যমন্ডিত হোক। আমাকে তাদের কাছে দিয়ে দিলেন। তাঁরা আমার অবস্থান ঠিক করে দিলেন, তখন ছিল দ্বিপ্রহরের পূর্ব মুহূর্ত। হঠাৎ রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে দেখে আমি হকচকিয়ে গেলাম। তাঁরা আমাকে তাঁর কাছে তুলে দিল। সে সময় আমি নয় বছরের বালিকা।( সহীহ বোখারী-২১৫৩)
সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
(১) আবু-বকর যখন দেখলেন যে, রাসূলুল্লাহ সাঃ এর মত পাত্র আর পাওয়া যাবে না। তখন তিনি ছয় বৎসর বয়সে বিয়ে দিয়ে দেন। কিন্তু যেহেতু তখন আয়েশা রাযি.সংসার কি তিনি তা বুঝবেন না। সে জন্য উনাকে রাসূলুল্লাহ সাঃ নয় বৎসর বয়সে ঘরে নিয়ে আসেন। এভাবে উম্মতের জন্যও বিধান। অর্থাৎ যে কোনো বয়সে বিয়ে করা যাবে। তবে সহবাসের উপযোগী হওয়ার পূর্বে সহবাস করা যাবে না।
(২)বিয়ের ক্ষেত্রে বয়সের কোনো তফাৎ নেই।বরং যে কোনো বয়সের কাউকে যে কেউ বিয়ে করতে পারবে।এমনকি ছোট্ট শিশুসন্তানকেও বিয়ে করা যাবে।যেমন হযরত আয়েশা রাযি এর বিয়ে হয়েছিলো।তবে সহবাসের যোগ্য হওয়ার পূর্বে উক্ত শিশুসন্তানের সাথে সহবাস করা যাবে না।তারপরও যদি কেউ করে নেয় তাহলে কাযীর দরবারে তাকে জবাবদিহি করতে হবে।বালেগ হওয়ার পর বিয়ে হওয়াটা স্বাভাবিক।পুরুষ সাধারণত ১৫ বছর পর বালেগ হয়।এবং মহিলা ১৩ বছর পর বালেগ হয়।তবে এর পূর্বে ও বালেগ হতে পারে।পুরুষের বালেগ হওয়ার আলামত স্বপ্নদোষ হওয়া।মহিলার বালেগ হওয়ার আলামত ঋতুস্রাব হওয়া।সাধারণত পুরুষ ১৫বছর পর বিয়ে করবে এবং মহিলা তের বছর পর বিয়ে করবে।এবং স্ত্রী থেকে স্বামী দু-বছরের বড় হওয়া উত্তম। কেননা জান্নাতে পুরুষরা থাকবে ৩৩ বছরের আর নারীরা থাকবে ৩১ বছরের।যেমনটা সুয়ূতী রাহ, তাফসীরে জালালাইনে উল্লেখ করেছেন।
(৩) আল্লাহ তা’আলা বলছেন,
فَإِنْ خِفْتُمْ أَلاَّ تَعْدِلُواْ فَوَاحِدَةً
আর যদি এরূপ আশঙ্কা কর যে, তাদের মধ্যে ন্যায় সঙ্গত আচরণ বজায় রাখতে পারবে না, তবে, একটিই ।(সূরা নিসা-০৩)
উক্ত আয়াত দ্বারা বুঝা যাচ্ছে যে, বে-ইনসাফের ভয় থাকলে, একটি বিবাহ করতে হবে।
وَلَن تَسْتَطِيعُواْ أَن تَعْدِلُواْ بَيْنَ النِّسَاء وَلَوْ حَرَصْتُمْ فَلاَ تَمِيلُواْ كُلَّ الْمَيْلِ فَتَذَرُوهَا كَالْمُعَلَّقَةِ وَإِن تُصْلِحُواْ وَتَتَّقُواْ فَإِنَّ اللّهَ كَانَ غَفُورًا رَّحِيمًا
তোমরা কখনও নারীদেরকে সমান রাখতে পারবে না, যদিও এর আকাঙ্ক্ষী হও। অতএব, সম্পূর্ণ ঝুঁকেও পড়ো না যে, একজনকে ফেলে রাখ দোদুল্যমান অবস্থায়। যদি সংশোধন কর এবং খোদাভীরু হও, তবে আল্লাহ ক্ষমাশীল, করুণাময়। (সূরা নিসা-১২৯)
উক্ত আয়াতে বলা হচ্ছে যে, ওয়াজিব ভরণ পোষণ সমান সমান আদায় করার পরও মহব্বত এবং সহবাসে সমতা বজায় রাখা যাবে না। হ্যা এটা অবশ্য ওয়াজিবও না। বরং ওয়াজিব ভরণ পোষণে সমতা বজায় রাখাই ওয়াজিব।
আপনার শিক্ষকের যদি উদ্দেশ্য এমন থাকে যে, যে দুইটি বিয়ে করবে, সে কখনো সমতা বজায় রাখতে পারবে না, এ জন্য সে জাহান্নামের আগুনে জ্বলবে, তাহলে তার একথা বিশুদ্ধ । আরে যদি উনি বলেন, যে দুই বিয়ে করবে, তার দুই বিয়ের অপরাধে সে জাহান্নামে জ্বলবে, তাহলে তার একথা কুফরী কথা । কেননা যেখানে আল্লাহ চার পর্যন্ত বিয়েকে জায়েয বলেছেন, সেখানে উনি কেন হারাম করবেন। যেহেতু উনার কথা ব্যখ্যাযোগ্য তাই উনাকে কাফির বলা যাবে না।