আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
13 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (8 points)
edited by
আসসালামু আলাইকুম।
মুহতারাম, আমার এক বন্ধু ক্রেডিট কার্ড থেকে দুই লক্ষ টাকা লোন নিবে, আর আমারও টাকার প্রয়োজন থাকায় তার সাথে ৫০ হাজার টাকা লোন নেই। এখন আমি এই লোনের বাকী টাকা পরিশোধ করে সুদ থেকে বের হয়ে আসতে চাচ্ছি।

 কিন্তু বন্ধু টাকা পরিশোধ করতে পারবে মা, কিস্তি চালিয়ে যাবে। যেহেতু পুরো টাকাটা একসাথে একটা লোন হিসেবে নেয়া, তাই শুধু আমার অংশের টাকাটা আলাদা করে পুরোপুরি পরিদশোধের অপশন নেই৷  এখন আমি কিভাবে আমার অংশের লোন পরিশোধ করতে পারব দয়া করে জানাবেন। আমি সুদ থেকে পুরোপুরি বের হয়ে আসতে চাচ্ছি। আমার বকেয়া যে টাকা সেটা আমার কাছে জমানো আছে।

1 Answer

0 votes
by (85,500 points)

ওয়া আলাইকুমুস সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।

জবাবঃ

https://ifatwa.info/14543/ নং ফাতওয়ায় উল্লেখ রয়েছে যে,

ডেবিট কার্ড (ব্যাংক কার্ড অথবা চেক কার্ড হিসেবে পরিচিত) হল এমন একটি প্লাস্টিক কার্ড, যেটি কেনাকাটার সময় ক্যাশ টাকার বিকল্প মাধ্যম হিসেবে কাজ করে। কার্যত, এই কার্ডকে ইলেকট্রনিক চেক বলা চলে। কারণ এই কার্ড দিয়ে দ্রব্য ও সেবা ক্রয় করলে, সরাসরি গ্রাহকের ব্যাংক একাউন্ট থেকে টাকা উত্তোলন দেখানো হয়। ডেবিট কার্ড সাধারণত ক্যাশ অথবা ব্যক্তিগত চেক এর মত কাজ করে।

.

■ ডেবিট কার্ড এবং ক্রেডিট কার্ড

ক্রেডিট কার্ড হল এমন একটি প্লাস্টিক কার্ড, যে কার্ডের বিপরীতে ব্যাংক অথবা আর্থিক প্রতিষ্ঠান তার গ্রাহকদেরকে নির্দিষ্ট পরিমাণে ঋণ মঞ্জুর করে থাকে এবং গ্রাহক সেই মঞ্জুরকৃত ঋণের টাকা তার চাহিদা মত যে কোন সময় পণ্য এবং সেবা ক্রয় করতে পারে অথবা ক্যাশ টাকা উত্তোলন করতে পারে। এবং নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সেই টাকা আবার ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে ফেরত দিতে বাধ্য থাকে।

.

■ ডেবিট কার্ড এবং ক্রেডিট কার্ডের পার্থক্য হল-

ডেবিট কার্ডের ক্ষেত্রে পণ্য ও সেবা ক্রয় করার জন্য গ্রাহককে সাথে সাথেই টাকা প্রদান করতে হয়। ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে খরচকৃত টাকা গ্রাহককে সাথে সাথে প্রদান করতে হয় না।

ডেবিট কার্ডকে ক্যাশ কার্ড বলা চলে। অপরপক্ষ, ক্রেডিট কার্ডকে এক কথায় লোন কার্ড বলা চলে।

ডেবিট কার্ডের সাথে লিংক করা একাউন্টে যে পরিমাণ ব্যালেন্স থাকে, গ্রাহক শুধু সেই টাকা ব্যবহার করতে পারেন। অন্যদিকে, ক্রেডিট কার্ডের বিপরীতে ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান যে পরিমাণ টাকা গ্রাহকের জন্য ঋণ মঞ্জুর করে থাকে, গ্রাহক শুধু সেই টাকা ব্যবহার করতে পারেন।

.

ডেবিট কার্ডের মাধ্যমে একাউন্টে শুধু নিজের জমা করা টাকা ব্যবহার করা যায়। অপরপক্ষে, ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান যে ক্রেডিট লিমিট দিয়ে থাকে, সেই টাকা ক্রেডিট কার্ড দিয়ে ব্যবহার করা যায়।

.

ডেবিট কার্ডের ক্ষেত্রে গ্রাহকের একাউন্টে টাকা জমা থাকলে প্রতিষ্ঠান কর্তৃক গ্রাহককে সুদ বা মুনাফা প্রদান করা হয় । অন্যদিকে, ক্রেডিট কার্ডের আউটস্ট্যান্ডিং ব্যালেন্স থাকলে তার বিপরীতে গ্রাহক কর্তৃক ক্রেডিট কার্ড প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানকে সুদ প্রদান করতে হয়।

.

ডেবিট কার্ডে কোন একোয়াটেড মান্থলি ইনস্টলমেন্ট (ইএমআই) সুবিধা পাওয়া যায় না। অন্যদিকে, ক্রেডিট কার্ডে একোয়াটেড মান্থলি ইনস্টলমেন্ট (ইএমআই) সুবিধা পাওয়া যায়।

.

ডেবিট কার্ডে কেনাকাটার পর পুনরায় পেমেন্ট করার প্রয়োজন হয় না। অন্যদিকে, ক্রেডিট কার্ডে কেনাকাটা পর পুনরায় পেমেন্ট করতে হয়, সেটা গ্রাহক পুরো টাকা পরিশোধ করতে পারে অথবা সর্বনিম্ম বিল পরিশোধ করতে পারে।

.

ডেবিট কার্ডধারীকে কোন প্রসেসিং ফি প্রদান করতে হয় না। অন্যদিকে, ক্রেডিট কার্ডের গ্রাহককে জয়নিং, প্রসেসিং ফি, লেট পেমেন্ট ফি, বার্ষিক ফি প্রদান করতে হয়।

.

ডেবিট কার্ডের গ্রাহকের কাছে বিল পেপার হিসেবে কোন স্টেটমেন্ট প্রদান করা হয় না। অন্যদিকে, ক্রেডিট কার্ড গ্রাহকের কাছে স্টেটমেন্ট প্রদান করা হয়। যেখানে লেনদেনের বিস্তারিত বর্ণনা থাকে, বর্তমানে ব্যালান্স কত আছে, মিনিমাম কত টাকা প্রদান করতে হবে এবং বিল প্রদান করার শেষ তারিখ উল্লেখ করা থাকে।

.

সেভিংস/কারেন্ট/এসটিডি অ্যাকাউন্টধারী যেকোনো গ্রাহক ডেবিট কার্ড নিতে পারে। অপরপক্ষে, ক্রেডিট কার্ড গ্রহণ করার জন্য ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানে ন্যূনতম শর্ত পূরণ করতে হয়। যেমন, গ্রাহকের কত টাকা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ঋণ মঞ্জুর করা আছে, নিয়মিত ব্যাংকের লেনদেন করেন কিনা ইত্যাদি যাচাই-বাছাই করার পরে গ্রাহককে ক্রেডিট কার্ড প্রদান করা হয়। 

বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন- https://www.economics.com.bd/ডেবিট-ক্রেডিট-কার্ড-কি/ 

.

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই!

.

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে সুদ প্রদানের শর্তে ক্রেডিট কার্ড উত্তোলন, ব্যবহার ও সুদ প্রদান করা জায়েজ হবে না। সুতরাং আপনি সুদভিত্তিক লোন গ্রহণ বা উত্তোলন করবেন না। আর যদি ইতিপূর্বে উত্তোলন করে থাকেন তাহলে তা (আপনার অংশটুকু) পরিশোধ করে বের হয়ে যাবেন এবং আল্লাহর কাছে তাওবা ও ইস্তিগফার পাঠ করবেন। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী আব্দুল ওয়াহিদ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)
by (8 points)
মুহতারাম, 
যেহেতু পুরো টাকাটা একসাথে নেয়া, তাই আংশিক ভাবে পরিশোধের সুযোগ নাই৷ আমি আমার বন্ধুকে বলেছিলাম ওর অংশের টাকাটা শোধ করতে যাতে পুরো লোনটা একেবারে বন্ধ হয়ে যায়। কিন্তু ওর কাছে এটা পরিশোধের মতো টাকা নাই৷ আমি আমার অংশের বকেয়া টাকাটা ম্যানেজ করে রেখেছি।

এক্ষেত্রে, আমি কি করবো দয়া করে জানাবেন। 

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...