আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
35 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (14 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লহি ওয়া বারকাতুহ উস্তায।
আমি তালাকপ্রাপ্তা।  ২য় বিবাহের ক্ষেত্রে (প্রকাশ্য) মাসনা হব কি হবনা দ্বিধাগ্রস্থ।
★আমার প্রত্যাশা- মাদ্রাসা ব্যাকগ্রাউন্ডের, গভীর দ্বীনি ইলম ও আমলওয়ালা পূর্ণতাকওয়াবান জীবনসঙ্গী এবং পরিপূর্ণ দ্বীন প্র্যাক্টিসিং পরিবারের সদস্য হওয়া।
কিন্তু আমি জেনারেল ব্যাকগ্রাউন্ডের, ননপ্র্যাক্টিসিং পরিবারের, দ্বীনি ইলমের ত্বলিবাহ। বিবাহের বাজারে পাত্রী হিসেবেও "চাহিদাসম্পন্ন" নই।।
ফলে, প্রত্যাশিত পাত্রের ওয়াহিদা হওয়া বাস্তবিক অর্থেই অসম্ভব।  তবে মাসনা, সুলাসা, রুবাইয়ার ক্ষেত্রে সম্ভব। [ বিভিন্ন ম্যাট্রিমনি-র বায়োডাটা পড়ে মনে হলো ]

সমস্যা হলো,
আমার পরিবার, আত্মীয়, সমাজ সবকিছু বহুবিবাহের বিরুদ্ধে।। লোকের সমালোচনা, কটুকথা, বাঁকাদৃষ্টি, তিরস্কার হজম করার ভয়ে আমার "মা" কে রাজি করানো মুশকিল! তবে ভাইকে বুঝালে বুঝবে।

জানতে চাওয়া___

১.বাবা না থাকায় একমাত্র বড় ভাইয়ের অনুমতিই কি বিবাহের জন্য যথেষ্ট হবে?
২. মা সরাসরি অভিভাবক না হলেও মাকে কষ্ট দিয়ে প্রত্যাশিত জীবনসঙ্গী পাওয়া কি কল্যাণকর হবে?!

[ মায়ের মনোভাব হলো, প্রয়োজনে অশিক্ষিত রিকশাওয়ালার কাছে দিব অথবা সারাজীবন ঘরে রেখে দিব তবু সতীনের ঘরে দিবনা... কিন্তু আমিতো অন্যরকম জীবন চাই __যা আমার রব জানেন!]

1 Answer

0 votes
by (687,660 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 

قوله صلى الله عليه وسلم : ( لا نكاح إلا بولي وشاهدي عدل ) رواه البيهقي من حديث عمران وعائشة ، وصححه الألباني في صحيح الجامع (7557) 

রাসুলুল্লাহ  সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “অভিভাবক ও দুইজন সাক্ষী ছাড়া কোন বিবাহ নেই।” [তাবারানী কর্তৃক সংকলিত, সহীহ জামে (৭৫৫৮)]।

ফাতাওয়ার কিতাবে আছেঃ- 

وَاخْتَلَفُوا فِي تَرْتِيبِ الأَْوْلِيَاءِ فِي النِّكَاحِ وَذَلِكَ عَلَى التَّفْصِيل الآْتِي:
92 - قَال الْحَنَفِيَّةُ: الْوَلِيُّ فِي النِّكَاحِ الْعَصَبَةُ بِنَفْسِهِ وَهُوَ مَنْ يَتَّصِل بِالْمَيِّتِ حَتَّى الْمُعْتِقِ بِلَا تَوَسُّطِ أُنْثَى عَلَى تَرْتِيبِ الإِْرْثِ وَالْحَجْبِ، فَيُقَدَّمُ الاِبْنُ عَلَى الأَْبِ عِنْدَ أَبِي حَنِيفَةَ وَأَبِي يُوسُفَ خِلَافًا لِمُحَمَّدٍ حَيْثُ قَدَّمَ الأَْبَ، وَفِي الْهِنْدِيَّةِ عَنِ الطَّحَاوِيِّ: إِنَّ الأَْفْضَل أَنْ يَأْمُرَ الأَْبُ الاِبْنَ بِالنِّكَاحِ حَتَّى يَجُوزَ بِلَا خِلَافٍ، وَابْنُ الاِبْنِ كَالاِبْنِ، ثُمَّ يُقَدَّمُ الأَْبُ، ثُمَّ أَبُوهُ، ثُمَّ الأَْخُ الشَّقِيقُ، ثُمَّ لأَِبٍ، ثُمَّ ابْنُ الأَْخِ الشَّقِيقِ، ثُمَّ لأَِبٍ، ثُمَّ الْعَمُّ الشَّقِيقُ، ثُمَّ لأَِبٍ، ثُمَّ ابْنُهُ كَذَلِكَ، ثُمَّ عَمُّ الأَْبِ كَذَلِكَ، ثُمَّ ابْنُهُ كَذَلِكَ، ثُمَّ عَمُّ الْجَدِّ كَذَلِكَ، ثُمَّ ابْنُهُ كَذَلِكَ، كُل هَؤُلَاءِ لَهُمْ إِجْبَارُ الصَّغِيرَيْنِ وَكَذَا الْكَبِيرَيْنِ إِذَا جُنَّا، ثُمَّ الْمُعْتَقُ وَلَوْ أُنْثَى، ثُمَّ ابْنُهُ وَإِنْ سَفَل، ثُمَّ عَصَبَتُهُ مِنَ النَّسَبِ عَلَى تَرْتِيبِهِمْ
[«الموسوعة الفقهية الكويتية» (41/ 275)]
সারমর্মঃ-
বিবাহের ওয়ালি হওয়ার ক্ষেত্রে সবচেয়ে অগ্রগামী হলো তার ছেলে, ছেলের ছেলেও ছেলের মতোই,অতঃপর বাবা,অতঃপর তার দাদা,অতঃপর নিজের ভাই,অতঃপর বৈপিত্রীয় ভাই, অতঃপর নিজের ভাইয়ের ছেলে,অতঃপর বৈপিত্রীয় ভাইয়ের ছেলে,অতঃপর নিজের চাচা,অতঃপর বৈপিত্রীয় চাচা,অতঃপর নিজের চাচার ছেলে,
অতঃপর বৈপিত্রীয় চাচার ছেলে,অতঃপর অনুরুপ ভাবে বাবার চাচা,অতঃপর অনুরুপ ভাবে তার ছেলে,,,,

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
১.বাবা না থাকায় একমাত্র বড় ভাইয়ের অনুমতিই বিবাহের জন্য যথেষ্ট হবে।
তিনিই এখন আপনার অভিভাবক। 

২. মা সরাসরি অভিভাবক না হলেও মাকে কষ্ট দিয়ে প্রত্যাশিত জীবনসঙ্গী পাওয়া কল্যাণকর হবেনা।

তা ছাড়া বৈধ কাজে মায়ের আদেশ মানা আবশ্যক। 

আল্লাহ তাআলা বলেন,

وَوَصَّيْنَا الْإِنسَانَ بِوَالِدَيْهِ إِحْسَانًا ۖ حَمَلَتْهُ أُمُّهُ كُرْهًا وَوَضَعَتْهُ كُرْهًا ۖ وَحَمْلُهُ وَفِصَالُهُ ثَلَاثُونَ شَهْرًا

“আমি মানুষকে তার পিতা-মাতার সাথে সদ্ব্যবহারের আদেশ দিয়েছি। তার মা তাকে কষ্টসহকারে গর্ভে ধারণ করেছে এবং কষ্টসহকারে প্রসব করেছে। তাকে গর্ভে ধারণ করতে ও তার স্তন্য ছাড়তে লেগেছে ত্রিশ মাস।” (সূরা আহকাফ-১৫)

আল্লাহ তা'আলা আরও বলেন,

وَقَضَى رَبُّكَ أَلاَّ تَعْبُدُواْ إِلاَّ إِيَّاهُ وَبِالْوَالِدَيْنِ إِحْسَانًا إِمَّا يَبْلُغَنَّ عِندَكَ الْكِبَرَ أَحَدُهُمَا أَوْ كِلاَهُمَا فَلاَ تَقُل لَّهُمَآ أُفٍّ وَلاَ تَنْهَرْهُمَا وَقُل لَّهُمَا قَوْلاً كَرِيمًا

তোমার পালনকর্তা আদেশ করেছেন যে, তাঁকে ছাড়া অন্য কারও এবাদত করো না এবং পিতা-মাতার সাথে সদ্ব-ব্যবহার কর। তাদের মধ্যে কেউ অথবা উভয়েই যদি তোমার জীবদ্দশায় বার্ধক্যে উপনীত হয়; তবে তাদেরকে ‘উহ’ শব্দটিও বলো না এবং তাদেরকে ধমক দিও না এবং বল তাদেরকে শিষ্ঠাচারপূর্ণ কথা।(সূরা বনী ইসরাঈল-২৩)

أن جاهمة جاء إلى النبي صلى الله عليه وسلم، فقال: يا رسول الله، أردت أن أغزو وقد جئت أستشيرك، فقال: «هل لك من أم؟» قال: نعم، قال: «فالزمها، فإن الجنة تحت رجليها»

“হযরত জাহিমাহ (রা.) রাসুলুল্লাহ (সা.) এর কাছে এসে বললেন, ইয়া রাসুলুল্লাহ! আমি যুদ্ধে অংশগ্রহণের ইচ্ছা করেছি, আপনার কাছে পরামর্শ নিতে এসেছি। রাসুলুল্লাহ (সা.) বললেন, “তোমার কি মা আছেন?” সাহাবী জবাব দিলেন, “হ্যাঁ!”। রাসুলুল্লাহ (সা.) বললেন, “তাঁর সেবাকে নিজের উপর আবশ্যক করে নাও। নিশ্চয়ই তাঁর দুই পায়ের নিচে রয়েছে জান্নাত।” (সুনানে নাসাঈ: ৩১০৪)


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by
জাযাকাল্লাহু খয়রন।
 মাকে আরো বুঝানোর চেষ্টা করব ইনশাআল্লাহ।  তবু যদি খুশিমনে রাজি না হন সেক্ষেত্রে কি আমি আরো অপেক্ষা করব?  [ আমার বয়স ৩০ শেষ হতে চলল ] নাকি গতানুগতিক ননপ্র্যাক্টিসিং পরিবারে বিবাহ করে নিব।  
পরামর্শ দেয়ার অনুরোধ রইলো উস্তায। 
by (14 points)
জাযাকাল্লহু খয়রন। 
মাকে আরো বুঝানোর চেষ্টা করব ইনশাআল্লাহ।  তবু যদি খুশিমনে রাজি না হন সেক্ষেত্রে কি আমি আরো অপেক্ষা করব?  [ আমার বয়স ৩০ শেষ হতে চলল ] নাকি গতানুগতিক ননপ্র্যাক্টিসিং পরিবারে বিবাহ করে নিব।  
পরামর্শ দেয়ার অনুরোধ রইলো উস্তায। 
by (687,660 points)
এক্ষেত্রে আপনি যদি নিজেই বিবাহ করে নেন, শরীয়তসম্মত পন্থায়, তাহলে সেই বিবাহ শুদ্ধ হয়ে যাবে।

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...