আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
77 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (4 points)

আমাদের বিবাহের বয়স ৬বছর চলে।আমাদের কোনো সন্তান নেই।দুজনেই সেইম এইজের। দ্বীনে ফেরার পর হারাম সম্পর্ক থেকে বের হতে পারিবারিকভাবে বিয়ে করে নেই।দুজনেই বেকার ছিলাম।

এখন বলি সমস্যাগুলো: 

১.আমি চেয়েছিলাম সরাসরি বিয়ে করতে,মসজিদে খেজুর ছিটিয়ে। সে এবং তার পরিবার তা করেনি। প্রথমে এংগেজমেন্ট হয়েছে। এরপর ঘরোয়াভাবে বিয়ে।এরপর এক বছর পর ২০০জন বরযাত্রীসহ অনুষ্ঠান।

২.তার পরিবারের সাথে আমার কুফু মিলেনি। আমাদের বাড়িতে কেন ওদের আত্মীয়সহ দাওয়াত দেয়না,আমার মা মেয়ে জামাইকে আদর করেনা, উপহার দেয়না আরো অনেক মন্তব্য।

৩.বিয়ের পর থেকে নিয়ে আমি টিউশন পড়িয়ে, মাদ্রাসায় শিক্ষকতা করে, আমার বাবা ভাইয়ের থেকে নিয়ে-সবভাবেই তাকে সাপোর্ট করেছি।

৪.বিয়ের ৩বছরের মাথায় আমার চাকরি হয়।সে বেকারই থেকে যায়। এই তিন বছরে আমি আমার বেতন, বোনাস,টিউশন সব টাকা আমি ওকে দিয়েছি।ওর ফ্যামিলিতে খরচ করেছি।

৫.সবচেয়ে বড় যে সমস্যাটা,তার চারিত্রিক ত্রুটি।বিয়ের ১২দিনের দিন ফোনে ওর বাজে মেয়েদের সাথে যোগাযোগ এর প্রমাণ হাতে পাই আমি।সেটা এই ৬বছরে অনেকবার প্রমাণ পেয়েছি(ন্যুডিটি, মাস্টারবেশন,বাজে চ্যাটগ্রুপ ইত্যাদি)। এতে করে ওর প্রতি আমার ন্যুনতম সম্মানটুকুও অবশিষ্ট নেই।

৭.কোনো কিছু নিয়ে ভুল বুঝাবুঝি হলে সে আমার সাথে ৫,৭,১০ এমনকি ১৫দিনও কথা বলেনা। আমার দুইটা প্রেগ্ন্যাসি আল্লাহ দিয়ে আবার নিয়ে নেন। এক বিছানায় থেকেও সে আমার প্রেগ্ন্যাসির খবর জানতে পারেনা।১০-১৫দিন পরে ঝগড়া মিটমাট হলে তখন জানে।(এটা শুনতে হয়তো খুব সহজ,কিন্তু এটাই আমার কাছে সবচে কঠিন এবং কষ্টের। গত ৩বছর ধরে চিকিৎসাধীন।কত ওষুধ, কত টেস্ট, কত ইঞ্জেকশন! শরীর মনের উপর দিয়ে কত ধকল আমার যায়! এতো কাঙ্ক্ষিত সুখবর,তার অজানাই রয়ে যায়??!!) 

৮. কিছুদিন আগেও ছোট বিষয় নিয়ে ভুল বুঝাবুঝি হয়। আমি একটা বিষয়ে ওকে কমপ্লেইন করি,সেটা এজন্য করি যেন সে আমাকে কেয়ার করে,ভালোবাসে। সে আমাকে উলটা ভুল বুঝে যাচ্ছেতাই গালাগাল দেয়।এরপর তিন দিন আর কোনো কথা নেই। ৪র্থ দিনে আমি খুব অসুস্থ্য হয়ে যাই,সে জানেও না। আমি এমনি অসুস্থ্য তার উপর এই অবহেলা মেনে নিতে পারিনি।আমি গেইটে তালা মেরে রাখি। ওকে বাসায় ঢুকতে দেইনা।

৯. আমি আমার ভুল স্বীকার করি, যে আমি রাগ দেখাই বেশি। কিন্তু সেটা ওর ভালোবাসা পাওয়ার জন্য।সে এটা না বুঝে উলটা আমার সাথে খারাপ ব্যবহার করে।

আমি এখন এটা দুই পরিবারের কাউকে জানাতে চাচ্ছিনা।জানিয়ে লাভও নেই।এলাকার যারা বিচারক সব ঘোষখোর,সুদী মহাজন,নেশাগ্রস্ত। আমি ইসলাম মতো শরঈ সমাধান চাই।

আমি চাচ্ছি যে: 

অপশন-১(সংসার করতে চাইলে)
১. মোহরের টাকা দিতে হবে।
২.যে গয়নাগাটি বিক্রি করা হয়েছে তা দিতে হবে(তাদের বাড়ি থেকেই আমাকে দেওয়া গয়না বিক্রি করে শ্বশুরের ঋণ দিয়েছিলাম)
৩.গয়না না দিতে চাইলে মোহরের টাকাকে ৬বছর আগের স্বর্ণের দামে কনভার্ট করে বর্তমান বাজার মূল্যে দিতে হবে।
৪.ঝগড়া হলে কথা না বলে ১০-১৫দিন থাকবে না মর্মে লিখিত দিতে হবে।
৫.আগামী ৬মাসের মধ্যে শুদ্ধ করে কুরআন পড়া শিখতে হবে এবং নিয়মিত পড়তে হবে।

অপশন-২(উপরের শর্ত মেনে না নিলে)
১.বিচ্ছেদ।
২.আমার মোহরের টাকা+বিক্রিত গয়নাগাটির সমপরিমাণ টাকা দিতে হবে।
৩.বিগত ৬বছরের ভরণপোষণ বাবদ সকল টাকা আনুমানিক হিসাবমতো ফেরত দিতে হবে। যেহেতু সে আমার কোনো ভরণপোষণই দেয়নি।উলটো আমি তাকে সাপোর্ট করেছি।
সাথে আমার থেকে ৩বছরে নেওয়া সকল টাকা(বেতন) ফেরত দিতে হবে। আমার ভাইদের কাছ থেকে নেওয়া টাকাও ফেরত দিতে হবে।
আমার চিকিৎসাবাবদ হওয়া খরচও আমার ভাগ থেকে কাটা যাবেনা কারণ আমাকে চিকিৎসা করানোর দায়িত্ব তারই।সন্তান হলে আমার একার হতো না,তারও হতো।<!--/data/user/0/com.samsung.android.app.notes/files/clipdata/clipdata_bodytext_251011_221951_259.sdocx-->

আমার এই চাওয়া ২টা কী অযৌক্তিক? বা ইসলামী আইনের সাথে বেমানান? দয়া করে জানাবেন। মিন ফাদলিক

আমি চাচ্ছি যে পারিবারিকভাবে সালিশ হলেও যেনো আমি ইসলামকে প্রেজেন্ট করতে পারি।ইসলাম আমাকে কতটুকু বা কী অধিকার দিয়েছে।

1 Answer

0 votes
by (690,810 points)
জবাবঃ-
بسم الله الرحمن الرحيم

কোন মারাত্মক সমস্যা ছাড়া কোন মহিলা তার স্বামী থেকে তালাক চাওয়া হারাম ও কবীরা গুনাহ্।

সাওবান (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন:

أَيُّمَا امْرَأَةٍ سَأَلَتْ زَوْجَهَا طَلَاقًا فِيْ غَيْرِ مَا بَأْسٍ ؛ فَحَرَامٌ عَلَيْهَا رَائِحَةُ الْـجَنَّةِ.

‘‘যে কোন মহিলা কোন মারাত্মক সমস্যা ছাড়া নিজ স্বামীর নিকট তালাক চাইলো তার উপর জান্নাতের সুগন্ধি হারাম হয়ে যাবে’’। (আবূ দাউদ ২২২৬; তিরমিযী ১১৮৭; ইব্নু মাজাহ্ ২০৫৫)

ইসলামী স্কলারগন বলেছেন, যেসব কারণে স্ত্রীর জন্য স্বামীর কাছ থেকে তালাক চাওয়ার অনুমতি আছে তা হলোঃ-

★যদি কোনো বাস্তবসম্মত কারণে উভয়ের পক্ষে একসঙ্গে বসবাস করাটা অসম্ভব হয়ে পড়ে তাহলে স্ত্রীর জন্য স্বামীর কাছ থেকে তালাক চাওয়ার অনুমতি আছে।

★যদি স্বামীর মাঝে দৈহিক এমন ত্রুটি থাকে, যার কারণে দাম্পত্যজীবনের স্বাভাবিকতা খুবই দুরূহ হয়ে যায়। যেমন—পাগল হওয়া, যৌন অক্ষম হওয়া, কুষ্ঠরোগে আক্রান্ত হওয়া। 
বলা বাহুল্য, স্বামীর মাঝে উক্ত ত্রুটিগুলো থাকা অবস্থায় স্ত্রীকে ভালোভাবে রাখা সম্ভব নয়।

★স্বামী স্ত্রীর আবশ্যকীয় জরুরত তথা ভরণ-পোষণ দিতে অক্ষম হলে। কেননা, এটা স্ত্রীর মৌলিক অধিকার। 

★শরিয়ত নির্দেশিত কারণ ছাড়া স্বামী স্ত্রীকে কষ্ট দেওয়া বা জুলুম করা।

এটা শারীরিকভাবেও হতে এবং মানসিকভাবে হতে পারে। যেমন—স্ত্রীকে মারধর করা, গালাগাল করা, স্ত্রীকে তার পিতা-মাতার সঙ্গে দেখা সাক্ষাতে বাধা প্রদান করা, বেপর্দা কিংবা হারাম কাজে স্ত্রীকে জোরপূর্বক বাধ্য করা। 

★স্বামীর মধ্যে দ্বিনদারির প্রতি অবহেলা চরম পর্যায়ের হলে। যেমন—নামাজ না পড়া, মদ পান করা, পরকীয়া কিংবা চারিত্রিক অন্যায়-অপকর্মে লিপ্ত হওয়া। 

বিস্তারিত জানুনঃ- 

★★মোহরানার টাকার হকদার স্ত্রী।
এর একচ্ছত্র মালিকানা স্ত্রীর।
মোহরানার সম্পদের উপর স্বামীর কোনো হক নেই।

মোহরানার টাকা যদি স্বামী আদায় না করে,সেক্ষেত্রে উক্ত মোহরানার টাকা স্বামীর জিম্মায় ঋণ হিসেবে বাকি থেকে যাবে।

স্ত্রী যদি উক্ত দেনমোহর মাফ না করে, আর স্বামীও তা পরিশোধ না করে, তাহলে কিয়ামতের ময়দানে স্বামীর অপরাধী সাব্যস্ত হবে। তাই দেনমোহরের টাকা পরিশোধ করে দেয়া জরুরী।

মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ   
  
وَالْمُحْصَنَاتُ مِنَ الْمُؤْمِنَاتِ وَالْمُحْصَنَاتُ مِنَ الَّذِينَ أُوتُوا الْكِتَابَ مِن قَبْلِكُمْ إِذَا آتَيْتُمُوهُنَّ أُجُورَهُنَّ [٥:٥] 

তোমাদের জন্যে হালাল সতী-সাধ্বী মুসলমান নারী এবং তাদের সতী-সাধ্বী নারী, যাদেরকে কিতাব দেয়া হয়েছে তোমাদের পূর্বে, যখন তোমরা তাদেরকে মোহরানা প্রদান কর। [সূরা মায়িদা-৫] 

وَلَا جُنَاحَ عَلَيْكُمْ أَن تَنكِحُوهُنَّ إِذَا آتَيْتُمُوهُنَّ أُجُورَهُنَّ  [٦٠:١٠] 

তোমরা, এই নারীদেরকে প্রাপ্য মোহরানা দিয়ে বিবাহ করলে তোমাদের অপরাধ হবে না। [সূরা মুমতাহিনা-১০]

যদি আপনার স্ত্রী তার সন্তুষ্টি চিত্তে মাফ করে দেয়,বা কমিয়ে দেয়,তাহলে তা জায়েজ হবে।
তার থেকে জোড় করে কমিয়া নেওয়া যাবেনা।
,    
মহান আল্লাহ তায়ালা বলেনঃ  

واحل لكما ما وراء ذلكم ان تبتغوا باموالكم محصنين غير مسافحين فما استمتعتم به منهن فاتوهن اجورهن فريضة ولا جناح عليكم فيما تراضيتم به من بعد الفريضة ان الله كان عليما حكيما

উল্লিখিত নারীরা ছাড়া অন্যদেরকে তোমাদের জন্য বৈধ করা হয়েছে, যে স্বীয় সম্পদ দ্বারা প্রয়াসী হবে তাদের সাথে বিবাহবন্ধনে, ব্যভিচারে নয়। অতএব তাদের নিকট থেকে তোমরা যে আনন্দ উপভোগ করেছ (সে কারণে) তাদের ধার্যকৃত মোহর তাদেরকে প্রদান করবে। আর মোহর নির্ধারিত থাকার পরও কোনো বিষয়ে পরস্পর সম্মত হলে তাতে তোমাদের কোনো অপরাধ হবে না। নিশ্চয়ই আল্লাহ সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়।-সূরা নিসা : ২৪

واتوا النساء صدقاتهن نحلة فان طبن لكم عن شيئ منه نفسا فكلوا هنيئا مرئيا

এবং তোমরা নারীদেরকে দাও তাদের মোহর খুশিমনে। এরপর তারা যদি স্বেচ্ছায় স্বাগ্রহে ছেড়ে  দেয় কিছু অংশ তোমাদের জন্য তাহলে তা স্বচ্ছন্দে ভোগ কর।-সূরা নিসা : ৪

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
প্রশ্নের বিবরণ মতে আপনার এই চাওয়া ২টা অযৌক্তিক নয়। ইসলামী আইনের সাথে বেমানান নয়।

এটি আপনার ন্যায্য দাবী। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by
১.মানে শ্বশুর বাড়ি থেকে আমাকে দেওয়া গয়না,যেগুলো বিক্রিও করে দেওয়া হয়েছে। আমি এখন সেগুলোর মালিকানা দাবি করতে পারবো? সেই পরিমাণ টাকা বা গয়না আমাকে দিতে হবে,এমন? 
২.মোহরের টাকাকে,টাকায় না নিয়ে ৬বছর আগের স্বর্ণের দাম অনুযায়ী, বর্তমান বাজার দরে স্বর্নের দামে চাওয়া যাবে কিনা? 
by (690,810 points)
(০১)
আপনি এখন সেগুলো দাবি করতে পারবেন।সেই পরিমাণ টাকা বা গয়না আপনাকে দিতে হবে।

২. আপনার মহর কি হিসেবে নির্ধারণ করা হয়েছিল? স্বর্ণ হিসেবে? যে এত পরিমাণ দেয়া হবে! 

নাকি টাকা হিসাবে?

 যদি টাকা হিসেবে মোহরানা নির্ধারণ করা হয়ে থাকে, সেক্ষেত্রে আপনি সমপরিমান টাকায পাবেন।

আর যদি স্বর্ণ হিসেবে মোহরানা নির্ধারণ হয়ে থাকে, সে ক্ষেত্রে বর্তমানেও সেই পরিমাণ স্বর্ণ আপনি মোহরানা হিসেবে পাবেন।

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...