আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
6 views
ago in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (3 points)
আমার পরিবারে প্রায় দুই তিন বছর যাবৎ ভয়াবহ সমস্যা নেমে এসেছে।বাবার ব্যাবসা বন্ধ হয়ে গেছে কোনো উপার্জন নেই।অনেক টাকা ঋণ হয়ে গেছে।তবুও কোনো দিকে কিছু করতে পারছে না।মা দিন দিন অসুস্থ হয়ে যাচ্ছে।বাসা থেকে টুক টাক গয়না চুরি হয়েছে।আজকে বাসা থেকে ভালো অ্যামাউন্টের টাকা খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।রোগে শোকে আমার পরিবার পাগল প্রায়।কোন দিকে কোনো আর্থিক সাহায্যকারী নেই।বাবার কোনো ছেলে সন্তানও নেই।এমতাবস্থায় আমাদের করনীয় কী?এত গুলো চাপ কীভাবে তারা সামাল দিবে?

1 Answer

0 votes
ago by (679,500 points)
জবাবঃ-
بسم الله الرحمن الرحيم

ইসলামে কষ্টের সময় কিছু মৌলিক নির্দেশনা আছে:

সবার আগে আল্লাহর কাছে নিজের, পরিবারের এবং পূর্বের গুনাহের জন্য তাওবা করা।

বেশি বেশি ইস্তিগফার (استغفار) পড়া:

أستغفر الله العظيم وأتوب إليه
(আমি মহান আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাই এবং তাঁর দিকে ফিরে আসি।)

★পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ নিয়মিতভাবে আদায় করা, বিশেষত তাহাজ্জুদ ও দুহা নামাজ পড়া।

সূরা ওয়াকিয়া প্রতিদিন পড়া যেতে পারে; হাদিসে এসেছে এটি রিজিক বৃদ্ধির জন্য কল্যাণকর।

إِنَّا لِلَّهِ وَإِنَّا إِلَيْهِ رَاجِعُونَ
ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিঊন – কষ্টের সময় এই দোয়া পড়া উত্তম (সূরা বাকারা: ১৫৬)।

★যদি পরিবারের কারও কাছে এখনো কিছু স্বর্ণ/সম্পদ থাকে এবং নেসাব পরিমাণ পূর্ণ হয়, তবে তার যাকাত আদায় করা উচিত।

সামান্য হলেও আল্লাহর রাস্তায় সদকা করলে বরকত আসে।

নিম্নোক্ত দোয়াটি নিয়মিত পড়াঃ-
হাদিসে এসেছে, যে ব্যক্তি এই দোয়াটি নিয়মিত পড়ে আল্লাহ তার দুশ্চিন্তা দূর করেন এবং তাকে অপ্রত্যাশিত জায়গা থেকে রিজিক দেন:

اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنَ الهَمِّ وَالحَزَنِ، وَأَعُوذُ بِكَ مِنَ العَجْزِ وَالكَسَلِ، وَأَعُوذُ بِكَ مِنَ الجُبْنِ وَالبُخْلِ، وَأَعُوذُ بِكَ مِن غَلَبَةِ الدَّيْنِ وَقَهرِ الرِّجَالِ

আল্লাহুম্মা ইন্নি আউযু বিকা মিনাল হাম্মি ওয়াল হাজান,
ওয়া আউযু বিকা মিনাল আজজি ওয়াল কাসাল,
ওয়া আউযু বিকা মিনাল জুবনি ওয়াল বুকল,
ওয়া আউযু বিকা মিন গালাবাতিদ দাইনি ওয়া কাহরির রিজাল।

ঋণ, দুশ্চিন্তা ও আর্থিক কষ্ট দূর করার জন্য প্রতিদিন অন্তত সকালে ও রাতে একবার করে পড়ুন।

হযরত ইউনুস (আঃ)-এর দোয়া

(কোরআন, সূরা আল-আম্বিয়া 21:87)

لَا إِلَهَ إِلَّا أَنْتَ سُبْحَانَكَ إِنِّي كُنْتُ مِنَ الظَّالِمِينَ

উচ্চারণ:

লা ইলা-হা ইল্লা আনতা সুবহানাকা ইন্নি কুন্তু মিনাজ্জালিমীন।

কষ্ট, রোগ ও হতাশার সময় বেশি বেশি পড়ুন।

আয়াতুল কুরসি (সূরা বাকারা 2:255)

 اللَّهُ لَا إِلَٰهَ إِلَّا هُوَ الْحَيُّ الْقَيُّومُ ... وَهُوَ الْعَلِيُّ الْعَظِيمُ

 প্রতিদিন ফজর ও এশার নামাজের পর এবং রাতে ঘুমানোর আগে পড়ুন।

সূরা ওয়াকিয়া
হাদিসে এসেছে যে এটি রিজিক বৃদ্ধির জন্য সহায়ক।
রাতে ইশার পর বা ঘুমানোর আগে একবার পড়ে নিতে পারেন।

সকাল-সন্ধ্যার আমল,

সূরা ইখলাস (قُلْ هُوَ اللَّهُ أَحَدٌ) – ৩ বার

সূরা ফালাক (قُلْ أَعُوذُ بِرَبِّ الْفَلَقِ) – ৩ বার

সূরা নাস (قُلْ أَعُوذُ بِرَبِّ النَّاسِ) – ৩ বার
সকালে ও সন্ধ্যায় পড়ে গায়ে ও বাসার চারদিকে ফুঁ দিন।

★পরস্পরকে দোষারোপ না করা।

ঘরের মধ্যে কলহ বা হতাশা যেন না জন্মায়। কষ্টের সময়ে ধৈর্য (সবর) ও একে অপরকে সান্ত্বনা দেওয়া জরুরি।

★বাস্তব পদক্ষেপ (চেষ্টা ও তাওয়াক্কুল)

ইসলাম আমাদের চেষ্টা করা ছাড়তে বলে না; বরং বলে, “উট বেঁধে রাখো, তারপর আল্লাহর ওপর ভরসা করো।”

অর্থনৈতিক দিক,
পরিবারের কেউ ছোট কোনো ব্যবসা, অনলাইন কাজ, টিউশন বা সেলাই/ঘরে বসে কাজের মতো কিছু শুরু করতে পারে—even ছোট আয়ের চেষ্টা করাও গুরুত্বপূর্ণ।

ঋণদাতাদের সঙ্গে খোলামেলা কথা বলে কিস্তিতে বা সময় নিয়ে পরিশোধের জন্য অনুরোধ করতে পারেন।

চুরি ও টাকা হারানোর বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে নিন। প্রয়োজনে তালা-চাবি বদলানো বা নিকটজনদের নজর রাখা দরকার।

যদি সন্দেহজনক পরিস্থিতি থাকে, স্থানীয় প্রশাসন/পুলিশের কাছে অভিযোগ জানাতে দ্বিধা করবেন না।

মানসিক সহায়তা
মা অসুস্থ থাকায় চিকিৎসা জরুরি; সরকারি হাসপাতাল বা বিনা খরচের চিকিৎসা সেবার খোঁজ নিতে পারেন।

পরিবারের কেউ যেন হতাশায় না পড়ে—এ নিয়ে আলাপ করা, ইমাম সাহেব বা বিশ্বস্ত আত্মীয়ের সঙ্গে কথা বলা সহায়ক হতে পারে।

কষ্টের সময় ধৈর্য ও চেষ্টা দুটোই জরুরি।

আল্লাহ বলেন: “নিশ্চয়ই কষ্টের সঙ্গে সহজি আসে।” (সূরা ইনশিরাহ 94:6)

★ আপনার যদি মনে করেন যে আপনাদের পরিবারের কেউ বা আপনাদের প্রতিবেশীদের মধ্যে কেউ আপনাদের সাথে শত্রুতা করতেছে বা আপনাদের উপর জাদু করেছে, সেক্ষেত্রে সে ব্যাপারেও কোনো গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিতে পারেন।

আপনারা চাইলে বৈধ রুকইয়াহ কারীর শরণাপন্ন হতে পারেন।

কোন প্রমাণ পেলে তার ব্যাপারে আইনি পদক্ষেপ নিতে পারেন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

ago by (3 points)
আমি পরিবারের রুকইয়াহ করতে আগ্রহী। কিন্তু আমাদের জানাশোনা  ভালো রুকইয়াহকারী নেই। অযোগ্য কারো কাছে গিয়ে প্রতারিত হতে চাই না এবং ইসলাম পরিপন্থী কিছু করতে চাই না।এ ব্যাপারে আপনাদের সাহায্য প্রার্থী।

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...