আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
21 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (23 points)
edited by
১) কোনো কোনো এপে ইমেইজ ডাউনলোড এর অপশন থাকে। কিন্তু আবার কপিরাইটও দেওয়া থাকে। যেমন একটা এপে ছবি ডাউনলোড করা যায় কিন্তু ব্যক্তিগত ব্যবহারের জন্য। এখানে ব্যক্তিগত ব্যবহার বলতে কী বুঝানো হয়? আমি যদি কোনো  ডিজাইনের আইডিয়া নিয়ে সেখান থেকে নিজ থেকে ডিজাইন বানাই তাহলে কি সেটা ব্যক্তিগত ব্যবহার বলে গণ্য হবে?(সেটা পাবলিকালি শেয়ার করব এমন নিয়ত)। আবার কোনো কিছু কেউ বানাতে চাচ্ছে। যেমন ফার্ণিচার। অনেকে এই এপ থেকে ছবি ডাউনলোড করে কর্মচারীকে দেখিয়ে ফার্ণিচার বানিয়ে নেয়। ব্যক্তিগত ব্যবহার হিসেবে কি গণ্য হবে? আবার সেই ফার্ণিচার অন্য কেউ এসে দেখে সুন্দর বলে সেও বানাতে চাওয়ার জন্য ছবি চাইলে তাকে কি দেওয়া যাবে?

২) কোনো ছবি শেয়ারের সময় সেই ছবিতে লোগো থাকে আবার কোনো কোনোটাতে থাকেনা। ছবিগুলোর ইনফোগুলো উপকারি হয়। ইসলামিক। এইক্ষেত্রে সেগুলো ডাউনলোড করে শেয়ার করা যাবে? (ব্যক্তি জানে না এগুলোর কপিরাইট আছে কিনা)। আবার লোগো ওয়ালা ডিজাইনিং/লোগো ছাড়া থেকে ডিজাইন এর আইডিয়া নিতে পারবে কিনা? ডিজাইন হুবুহু হবেনা। বেশ-কম থাকবে। (এছাড়া কখনো কখনো মালিকের মতামতও জানা যায়না যে এটাতে তার অনুমতি আছে কিনা)

৩)
কোনো আমলে চেষ্টা বলতে কী বুঝানো হয়ে থাকে কুরআন-সুন্নাহর আলোকে?

অনেকসময় নতুন কোনো আমলে নামলে প্রথম প্রথম অনেক তাগিদ কাজ করে। এরপর ঈমানী পরিক্ষা শুরু হয়। তখন বান্দা হয়তো পিছিয়ে যায় কিংবা ঈমানী শক্তিতে হিম্মত নিয়ে এগিয়ে যায়। আবার আরও সামনে গেলে আবার নাফসের ধোঁকায় পড়ে গাফিলতি করে কিংবা গুনাহ করে ফেলে। আমলে অলসতা করে ফেলে। আবার উদ্দেশ্য স্মরণ হলে আবারও তাওবাহ করে ফিরে এসে আমলে লেগে যায়। এভাবে সে বারবার নিজেকে রিমাইন্ডার দিয়ে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করে। উদ্দেশ্যকে স্মরণ করে। আখিরাতকে প্রাইওরিটি দিতে চায়। এটাকেই কি কুরআন সুন্নাহর আলোকে চেষ্টা বলে? এই প্রসেস টা অনেকবার হয়। অর্থাৎ চেষ্টা করতে করতে সামনে এগিয়ে গিয়ে আবারও শয়তানের ধোঁকায় পড়ে কিংবা অলসতা করে আমলে ঢিল পড়ে যায়। আবার তাওবাহ করে বান্দা ফিরে এসে। এখানে বান্দা দুনিয়ার মোহে আটকে যায় আবার তাওবাহ করে উদ্দেশ্য স্মরণ করে ফিরে আসার চেষ্টা করে। এভাবে অনেকবার তার করতে হয়। দেখা যাচ্ছে একদিনেই অনেকবার ভুল হচ্ছে সাথে অনেকবার আল্লাহর স্মরণ করিয়ে চেষ্টায়ও নামতে হচ্ছে। এভাবে প্রতিদিন ই হচ্ছে। আবার কোনো সময় ২/১ দিন অলস সময় যাচ্ছে। বা নাফসের খায়েশাত অনুসরণ হয়ে যাচ্ছে। কিন্তু এভাবে প্রতিনিয়ত চেষ্টা করে,ভুল করে তাওবাহ করে ফিরে আসছে। সেটা হোক ১দিনের ভিতর কিংবা ২দিনের ভিতর। কোনো সময় আরও দেরি হয়ে যায়। আবার এই প্রসেসটা চলতে চলতে তার মধ্যে এতোদিনে আমল্টা বসে গেছে। সে এই আমলে নিয়মিত হয়ে গেছে। কিন্তু প্রতিনিয়ত সে এটা স্মরণ করার রাখার চেষ্টায় রাখে যে আল্লাহর সুনজর থেকে ছুটে যাবে তাই আবাওর ফিরে আসতে হবে। এভাবে সে রিমাইন্ডার দিতে থাকে নিজেকে

এইক্ষেত্রে কুরআন-সুন্নাহর আলোকে কি এটাই চেষ্টা বলে?
নাকি আমি চেষ্টায় নামলে এমনটা করা যাবেনা? ভুল গ্রহণীয় না?

এছাড়া তাকওয়া অর্থাৎ উত্তমতার আলোকে চেষ্টা কাকে বলে?

1 Answer

0 votes
by (677,700 points)
জবাবঃ-
بسم الله الرحمن الرحيم

https://ifatwa.info/66897/ নং ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছেঃ- 
আবিস্কার এবং প্রকাশনা সত্ত্বের ক্রয়-বিক্রয়
আবিস্কার সত্ত্ব এমন একটি সত্ত্বকে বলা হয়, যা প্রচলিত নিয়মানুসারে কিংবা আইনগত দিক দিয়ে ওই ব্যক্তির অনুকূলে থাকে,যে ব্যক্তি নতুন কোনো জিনিষ আবিস্কার করেছে বা কোনো জিনিষের নতুন আকৃতি বা রূপ দান করেছে।আর আবিস্কার সত্ত্বের অর্থ হল,এককভাবে ওই ব্যক্তির জন্যই নিজের আবিস্কৃত জিনিষ বানানোর এবং বাজারজাত করার অধিকার থাকবে।আবার কোনো কোনো সময় আবিস্কারক তার আবিস্কার সত্ত্ব অন্য কারো কাছে বিক্রয় করে দিয়ে থাকে।আর সত্ত্ব ক্রয়কারী তখন আবিস্কারকের মত বাণিজ্যিক ভিত্তিতে ওই জিনিষ প্রস্তুত করে থাকে।এমনিভাবে কোনো ব্যক্তি যদি কোনো কিতাব, বই লিখে কিংবা সংকলন করে, তাহলে ওই কিতাব-বই, প্রকাশ-প্রচার ব্যবসায়িক ভিত্তিতে বাজারজাত করার অধিকার লেখক বা সংখকলকের জন্য সংরক্ষিত থাকে।আবার কোনো কোনো সময় কিতাবের লেখক ওই সত্ত্ব অন্যের কাছে বিক্রয় করে দিয়ে থাকে।আর ওই সময় ক্রেতা এই কিতাবের প্রকাশ-প্রচার এবং ব্যবসা-বাণিজ্য করার সত্ত্বাধিকারী হয়ে যায়।যে অধিকার পূর্বে লেখকের ছিল,সেই অধিকার চলে আসে ক্রেতার নিয়ন্ত্রণে। 
এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন-https://www.ifatwa.info/1197

https://ifatwa.info/48167/ ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছেঃ
কেহ যদি অন্যের টিশার্ট ডিজাইন দেখে দেখে ডিজাইন করে,বা  তাহা হতে কিছু অংশ কাটসাট করে নিজের ডিজাইনে নিয়ে আসে,তাহলে তা জায়েয হবে না।এবং এভাবে ইনকাম করাটাও জায়েয হবে না।
অর্ধেক ডিজাইন এভাবে ধোকাবাজি. চুরি করলে অর্ধেক ইনকাম হারাম।পূর্ণ ডিজাইন এভাবে ধোকাবাজি, চুরি করলে পূর্ণ ডিজাইন হারাম।

তবে যদি সেই ডিজাইন যে মূলত করেছে,তার থেকে বা কর্তৃপক্ষ থেকে অনুমতি নিয়ে সে তার ডিজাইন দেখে দেখে এসব করে ইনকাম করে,তাহলে তার একাজ ও ইনকাম জায়েজ হবে।

https://ifatwa.info/52640/ ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছেঃ-
অন্যায় ভাবে কোনো কিছু ব্যবহার করা শরীয়তে জায়েজ নেই।
কাহারো অনুমতি ছাড়া তার ডিজাইন এভাবে ব্যবহার করে ইনকাম করা তাকে ধোকা দেয়ার শামিল, বিধায় তাহা জায়েজ নেই।
  
হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

وَعَنْ أَبِىْ حُرَّةَ الرَّقَّاشِىِّ عَنْ عَمِّه قَالَ : قَالَ رَسُوْلُ اللّٰهِ ﷺ : «أَلَا لَا تَظْلِمُوا أَلَا لَا يَحِلُّ مَالُ امْرِئٍ إِلَّا بِطِيبِ نَفْسٍ مِنْهُ». رَوَاهُ الْبَيْهَقِىُّ فِىْ شُعَبِ الْإِيْمَانِ وَالدَّارَقُطْنِىِّ فِى الْمُجْتَبٰى

আবূ হুররাহ্ আর্ রক্কাশী (রহঃ) তাঁর চাচা হতে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ সাবধান! কারো ওপর জুলুম করবে না। সাবধান! কারো মাল তার মনোতুষ্টি ছাড়া কারো জন্য হালাল নয়। (বায়হাক্বী- শু‘আবুল ঈমান, দারাকুত্বনী- মুজতাবা)
সহীহ : আহমাদ ২০৬৯৫, শু‘আবুল ঈমান ৫১০৫, ইরওয়া ১৪৫৯, সহীহ আল জামি‘ ৭৬৬২,মিশকাতুল মাসাবিহ ২৯৪৬।)

হাদীস শরীফে এসেছেঃ
 
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «مَنْ غَشَّنَا فَلَيْسَ مِنَّا»

হযরত আবু হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেনঃ যে ধোঁকা দেয়, সে আমার উম্মতের অন্তর্ভূক্ত নয়। {মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা, হাদীস নং-২৩১৪৭, সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-১৬৪, সুনানে দারেমী, হাদীস নং-২৫৮৩, সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস নং-২২২৫, সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীস নং-৪৯০৫}

قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «الْمُسْلِمُونَ عَلَى شُرُوطِهِمْ

হযরত আবূ হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেনঃ মুসলমানগণ তার শর্তের উপর থাকবে। {সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-৩৫৯৪, সুনানে দারা কুতনী, হাদীস নং-২৮৯০, শুয়াবুল ঈমান, হাদীস নং-৪০৩৯}

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
(০১)
আমি যদি অনুমতি নেয়া ছাড়া সেই ডিজাইন দেখে দেখে ডিজাইন বানান, তাহলে তাহা জায়েজ হবেনা। 

অনেকে এই এপ থেকে ছবি ডাউনলোড করে কর্মচারীকে দেখিয়ে ফার্ণিচার বানিয়ে নেয়। এটি ব্যক্তিগত ব্যবহার হিসেবে গণ্য হবেনা।

আবার সেই ফার্ণিচার অন্য কেউ এসে দেখে সুন্দর বলে সেও বানাতে চাওয়ার জন্য ছবি চাইলে প্রশ্নের বিবরন মতে তাকে দেওয়া যাবেনা।

(০২)
শেয়ার করার অনুমতি না থাকলে সেগুলো শেয়ার করা যাবেনা।

লোগো ওয়ালা ডিজাইনিং/লোগো ছাড়া থেকে ডিজাইন এর আইডিয়া অনুমতি ছাড়া নিতে পারবেনা।

(০৩)
“আমলে চেষ্টা” বলতে কুরআন ও সুন্নাহর আলোকে বোঝানো হয়—
আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য যে কাজগুলো করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, সেগুলো নিষ্ঠার সঙ্গে পালন করার জন্য সচেতন প্রয়াস ও পরিশ্রম করা।

অর্থাৎ, শুধু ভালো কাজের ইচ্ছা করাই নয়; বরং আল্লাহর বিধান মানতে বাস্তবে চেষ্টা করা, গুনাহ থেকে বাঁচার জন্য সংগ্রাম করা এবং নফস ও শয়তানের বাঁধা অতিক্রম করার জন্য প্রয়াস চালানো।

মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ- 
 “আর যারা আমাদের পথে চেষ্টা করে (মুজাহাদা করে), আমরা অবশ্যই তাদেরকে আমাদের পথে পরিচালিত করব।”
(সূরা আল-আনকাবুত ২৯:৬৯)

এখানে “মুজাহাদা” শব্দটি এসেছে, যার অর্থ—আল্লাহর পথে আনুগত্য ও ইবাদতের জন্য প্রাণপণ চেষ্টা।

আবার বলেছেন:

“মানুষের জন্য তেমনই আছে যা সে চেষ্টা করেছে।”
(সূরা আন-নাজম ৫৩:৩৯)

অর্থাৎ, মানুষ তার আমল অনুযায়ী প্রতিদান পাবে। শুধু কথায় বা মনে কামনা নয়; কাজে প্রমাণ রাখতে হবে।

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
প্রশ্নের বিবরণ মতে কুরআন সুন্নাহর আলোকে এটিকেও চেষ্টা বলে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...