আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
34 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (1 point)

السلام عليكم و رحمة الله و بركاته

আমার বাবার  অনেক ঋন প্রায় ২০ লাখ টাকার মতো। এইসব ঋনের সবই করা হয়েছে সুধ, কিস্তির মাধ্যমে। আমরা তিন বোন, ভাই নেই। তেমন আত্মীয়ও নেই। যারা আছে তাদের সাথে আমার বাবা মা সম্পর্ক রাখেন না। বাবা মায়ের নিজেদের মধ‍্যেও  ভালো সম্পর্ক নেই। সবসময় ঝগড়া করে। আমার বাবা আমাদের তেমনভাবে পছন্দ করেন না। যবে থেকে বুঝতে পেরেছে আমরা চাকরি করতে চাই না তবে থেকে আমাদের আরো বেশি পছন্দ করেন না। আমাদের পড়াশোনার খরচের জোগাড়ও করেন না।

আমরাও চাই পড়াশোনা ছেড়ে দিতে কিন্তু আমার মা দেন না। তিনি বলেন আমাদের পড়তেই হবে এবং তিনি ঋন করে, আমাদের পড়ার টাকা জোগাড় করতেও রাজি, কিন্তু আমরা তিন বোন কেউই পড়তে চাই না। সহশিক্ষায় পড়তে চাই না। কিন্তু তারা মাদ্রাসায় দিবে না।  মায়ের কথা আমাদের পড়াশোনা করে চাকরি করতে হবে। পর্দা করেই চাকরি করবো অথবা চাকরি না করলেও পড়াশোনা অনার্স কমপ্লিট করবো। কিন্তু আমরা কোনো অবস্থাতেই পড়াশোনা করতে চাই না, চাকরিও করতে চাই না।

তাদের আমাদের বিয়ের ব‍্যপারেও কোনো গুরুত্ব নেই। আমার বড় বোনের ২৪ বছর তাও বিয়ে দেয় না। বলে যে বিয়ে দিতে টাকা লাগবে, তারা ঋনগ্রস্থ এখন বিয়ের টাকা নেই।

আর যদি বলি আমরা নন মাহরাম কারো সামনে যাবো না শুধু ছেলে দেখবে তাহলে বলে এখন নাকি এমন করে বিয়ে দেওয়া যায় না এবং অশ্লীল গালিগালাজ করে বলে তোরা খুজে নে এমন ছেলে আমি খুজতে পারবোনা।

আমাকে বলছে পড়াশোনা করতে হবে এবং পাশাপাশি  ইনকাম করার কথাও বলে। ইউটিউব, ফেসবুকে ফেস না দেখিয়ে ভিডিও দিতে বলে, অথবা ফ্রিল‍্যানসিং শিখতে বলে + পড়াশোনা।

কিন্তু আমি কোনো অবস্থাতেই পড়াশোনা এবং কোনো ইনকামের চেষ্টা কোনো কিছুই করতে চাই না।
১)এতে করে কী তাদের পাশে না দাড়ানোর জন্য আমাদের কোনো রকম দায়ভার আছে?

আমার মা বলেন আল্লাহ শুধু আখিরাতের কথা বলে নাই দুনিয়াও করতে হবে। মাকে কষ্ট দিয়ে নামাজ পড়লে, পর্দা করলে কোনো লাভ হবে না। এইসব বলে আমাদের বদদোয়াও দেয়।

যদি বলি পড়তে চাইনা, চাকরিও করবো না বিয়ে দিয়ে দাও তাহলেও অনেক গালিগালাজ করে আরও বলে ভালো পরিবার পাবো না, স্বামী ভালো হবে না, ভবিষ্যতে মানুষের লাথি - ঝাটা খাবো, আমার সন্তানেরাও আমাকে কষ্ট দিবে আরো নানা কটু কথা। এবং আমার মায়ের কোনো কথা  না শুনলেই নামাজ, পর্দা ইত্যাদি নিয়ে কটু কথা শোনায় এবং অনেক অশ্লীল ভাষায় বদদোয়া করে।

২)এসব কি এমতাবস্থায় কবুল হবে। কারন পড়াশোনা করবো না বললে মা অনেক কষ্ট পায়।

আরও বলে আমাদের শুধু শুধু বড় করছে, শুধু শুধু আমাদের পিছনে টাকা নষ্ট করছে। আরো বলে পড়াশোনার পিছনে যে এত টাকা নষ্ট করেছি তা ফেরত দিতে।  আমরা নাকি তাদেরকে দেখবো না, খাওয়াবোনা ইত্যাদি। 

৩) এমতাবস্থায় যদি আমি বাড়িতে স্পষ্ট ভাষায় বলে দেই আমি  আর পড়াশোনা করবো না এবং ঘরে বসে থাকবো কিছুই করবো না। তাহলে কী আমার গুনাহ হবে?

আমাদের একটা বাড়ি আছে যার বাজার মূল‍্য দেড় কোটি টাকা। আর কোনো সম্পত্তি নেই। তাদেরকে বলেছিলাম এটা বিক্রি করে ঋন দিয়ে বাকি টাকা দিয়ে আরেকটা ছোটোখাটো বাড়ি করে সহজে দ্বীনের পথে চলতে। কিন্তু তারা তাতে রাজি নয় তারা এই বাড়ির উপর লোন নিতে চায়। লোন পেলে তারা সব ঋন দিতে পারবে। কিন্তু লোন না পেলে কীভাবে কী করবে তার কোনো উপায় তারা জানেনা। আর লোন না পাওয়ার চান্স আছে। আমার বাবা ফেসবুক থেকে মাঝে মাঝে কিছু ইনকাম করে তবে তিনি ফেসবুকে অশালিন ভিডিও দেয়।

তারা এমনিতে অনেক টাকা নষ্ট করে অপ্রোজনীয় কাজে কিন্তু  প্রয়োজনীয় কাজের ক্ষেত্রেই তাদের টাকা থাকে না। তারা কখনো আমাদের কথা শোনে না। তাদের মতের বিরুদ্ধে হলেই অশ্লীল গালিগালাজ করে আর গায়েও হাত তোলে।

* ৪) এখন যদি আমি এত টাকা পড়াশোনায় ইনভেস্ট করার পরে, মাকে কষ্ট দিয়ে তার অবাধ‍্য হয়ে  পড়াশোনা বন্ধ করে এবং কোনো ইনকাম না করে বাড়িতে বসে থাকি তাহলে কী আমার গুনাহ হবে?

এমনিতেও পড়াশোনা করতে আমার ভালো লাগে না। আমি ভালো স্টুডেন্টও নই। আমার বোনেরাও পড়তে চায় না।

৫) আর যদি তারপরও পড়াশোনা ছাড়তে না দেয় তাহলে যদি আমরা গুরুত্বের সহিত পড়াশোনা না করি শুধু উপর দিয়ে দেখানো পড়াশোনায় যুক্ত থাকি তাহলে কী গুনাহ হবে?

**** তারা আমাদের বিয়ের ব‍্যাপারেও গুরুত্ব দেয় না, দ্বীনদার ভালো পাত্র খুজে না। নন মাহরামের সামনে না গিয়ে বিয়ের  ব‍্যাপারে আপত্তি করে। বাবা ছাড়া আমাদের আর কোনো মাহরাম  নেই যারা সাহায্য করবে?

৬) এখন আমাদের কী করা উচিত

একটু ধৈর্যের সহিত পড়ে সবগুলো প্রশ্নের সমাধান এবং কী করণীয় বলে দিলে খুব উপকৃত হতাম।

1 Answer

0 votes
by (709,260 points)
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
আলহামদুলিল্লাহ!
নিতান্তই কোনো মহিলা নিরুপায় হলে তার জন্য প্রচলিত মিক্সিং সমাজ ব্যবস্থায় চাকুরী করার রুখসত ফুকাহায়ে কিরাম দিয়ে থাকেন।এ সম্পর্কে বিস্তারিত ব্যখ্যা হল,

বিবাহের পূর্বে মহিলাদের ভরণ-পোষণের সম্পূর্ণ দায়িত্ব তার পিতার উপর।পিতা না থাকলে বড় ভাই বা অন্যান্য গার্জিয়ানদের উপর।আর বিবাহের পর তার স্বামীর উপর।অতঃপর ছেলের উপর। তাই নিজের পায়ে দাঁড়ানো বা স্বাবলম্বী হওয়ার জন্য মহিলাদের ভবিষ্যৎ চিন্তার আশু কোন প্রয়োজন নেই।
কারণ, আল্লাহ তা'আলা এটা বহু পূর্বেই ব্যবস্থা করে রেখেছেন। 
তবে যদি দায়িত্বশীল কোন ব্যক্তি না থাকে অথবা থাকা সত্ত্বেও দেখাশুনা না করে বা করতে না পারে, 
তখন নিজের চলার জন্য নারী এমন কোনো পেশা গ্রহণ করতে পারে যেখানে শর'য়ী পর্দা লংঘিত হবে না। যেমনঃ- নুরানী মুআল্লীম ট্রেনিং নিয়ে বাড়ীতে বসে মহিলাগণকে কুরআনের তা'লীম দেওয়া, হাতের কাজ করা ইত্যাদি।
সর্বাবস্থায় সহ-চাকুরী থেকে বিরত থাকবে,কিন্ত যদি পূর্ণ পর্দার সাথে চাকুরী করতে অপরগ হয় অথবা সহ-চাকুরী ব্যতীত জীবিকানির্বাহের আর কোনো ব্যবস্থা না থাকে,তাহলে এতমাবস্থায় অন্যান্য হারাম কাজে জড়িত না হয়ে ইস্তেগফারের সাথে উক্ত চাকুরী করবে এবং সাথে সাথে পর্দাসহ চাকুরীকে খুজতে থাকবে।এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন- https://www.ifatwa.info/632


সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
আপনি পড়াশোনা কম্পিলিট করবেন। এবং যথাসম্ভব পর্দা রক্ষা করার আপ্রাণ চেষ্টা করবেন। এ সময় 
আপনি ঘরে বসে পর্দা রক্ষা করে অনলাইনে ব্যবসা করতে পারেন।এতে কোনো সমস্যা হবে না। যদি আপনাদের সাধারণ জীবনপাত করাটাও সম্ভবপর না হয়, তাহলে এমন পরিস্থিতিতে সম্পূর্ণ পর্দাবৃত হয়ে বাহিরে চাকুরী করতে পারবেন। এই রুখসত আপনার পরিস্থিতি বিবেচনায় প্রদত্ত হল। আল্লাহ আপনার বাবা মা ও পরিবারকে হেদায়েত দান করুক। 

বিঃদ্রঃ
তাহাজ্জুদ পরে আল্লাহর কাছে দু'আ করবেন। যাতে অতিদ্রুত বিয়েটা হয়ে যায়, তাহলে ফ্রিমিক্সিং পরিবেশে পড়াশোনা ও চাকুরি নামক অভিশাপ থেকে আপনারা বোনরা বেঁচে যাবেন। যদি রুখসত সমুহ গ্রহণ না করে আল্লাহর উপর তাওয়াক্কুল করে ঘরে বসে থাকেন, তাহলে সেটাই উত্তম হবে, দেখবেন আল্লাহ একটি রাস্তা খুলে দিবেন। এক্ষেত্রে মাতাপিতার কথা না শুনার জন্য কোনো গোনাহ হবে না।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...