আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
6 views
ago in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (5 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহ উস্তাদ,

আমি আলহামদুলিল্লাহ নিয়মিত কুরান পড়ার চেষ্টা করি। কিন্তু, বছর দুয়েক আগে পারিবারিক ব্যস্ততার কারণে কিছুদিন কুরান পড়া থেকে বিরত ছিলাম। তখন আমার মনের মধ্যে খুব কষ্ট হয় এবং আল্লাহ তা'আলাকে বলি, আমি এখন থেকে নিয়মিত কুরান পড়ব। কিন্তু, আমি সেই ওয়াদা রাখতে পারিনি। এখনো মাঝে মাঝে সপ্তাহে ২-১ দিন বাদ চলে যায় কুরান পড়তে। আমার খুব ভয় হচ্ছে, আল্লাহর সাথে কৃত ওয়াদা না রাখতে পারার কারণে। এমতাবস্থায় আমার কি কাফফারা আদায় করতে হবে ??

উস্তাদ, আমি খুব চেষ্টা করি প্রতিদিন তিলাওয়াত করতে, কিন্তু মাঝে মাঝে বিভিন্ন কারণে হয়ে উঠে না। আমাকে পরামর্শ দিয়ে সাহায্য করবেন, ইনশাআল্লাহ

1 Answer

0 votes
ago by (673,380 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

সুরা মায়েদার ৮৯ নং আয়াতে আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন 
 لَا یُؤَاخِذُکُمُ اللّٰہُ بِاللَّغۡوِ فِیۡۤ اَیۡمَانِکُمۡ وَ لٰکِنۡ یُّؤَاخِذُکُمۡ بِمَا عَقَّدۡتُّمُ الۡاَیۡمَانَ ۚ فَکَفَّارَتُہٗۤ اِطۡعَامُ عَشَرَۃِ مَسٰکِیۡنَ مِنۡ اَوۡسَطِ مَا تُطۡعِمُوۡنَ اَہۡلِیۡکُمۡ اَوۡ کِسۡوَتُہُمۡ اَوۡ تَحۡرِیۡرُ رَقَبَۃٍ ؕ فَمَنۡ لَّمۡ یَجِدۡ فَصِیَامُ ثَلٰثَۃِ اَیَّامٍ ؕ ذٰلِکَ کَفَّارَۃُ اَیۡمَانِکُمۡ اِذَا حَلَفۡتُمۡ ؕ وَ احۡفَظُوۡۤا اَیۡمَانَکُمۡ ؕ کَذٰلِکَ یُبَیِّنُ اللّٰہُ لَکُمۡ اٰیٰتِہٖ لَعَلَّکُمۡ تَشۡکُرُوۡنَ ﴿۸۹﴾

আল্লাহ তোমাদেরকে পাকড়াও করেন না তোমাদের অর্থহীন কসমের ব্যাপারে, কিন্তু যে কসম তোমরা দৃঢ়ভাবে কর সে কসমের জন্য তোমাদেরকে পাকড়াও করেন। সুতরাং এর কাফফারা হল দশ জন মিসকীনকে খাবার দান করা, মধ্যম ধরনের খাবার, যা তোমরা স্বীয় পরিবারকে খাইয়ে থাক, অথবা তাদের বস্ত্র দান, কিংবা একজন দাস-দাসী মুক্ত করা। অতঃপর যে সামর্থ্য রাখে না তবে তিন দিন সিয়াম পালন করা। এটা তোমাদের কসমের কাফ্ফারা, যদি তোমরা কসম কর, আর তোমরা তোমাদের কসম হেফাযত কর। এমনিভাবে আল্লাহ তোমাদের জন্য তাঁর আয়াতসমূহ বর্ণনা করেন যাতে তোমরা শোকর আদায় কর। 
,
★সুতরাং শপথ তিন প্রকার। এক. যদি অতীত ঘটনা সম্পর্কে ইচ্ছাকৃতভাবে মিথ্যা শপথ করা হয়, তাকে 'ইয়ামিনে গুমুস' বা পাপে নিমজ্জিত শপথ বলা হয়। উদাহরণত, কেউ কোনো কাজ করে জেনেশুনে শপথ করে বলল যে সে কাজটি করেনি। এ মিথ্যা শপথ কবিরা গুনাহ। তবে এর জন্য কাফফারা ওয়াজিব হবে না।

দুই. নিজ ধারণায় সত্য মনে করে কোনো অতীত ঘটনা সম্পর্কে শপথ করা। অথচ বাস্তবে তা অসত্য। যেমন- কোনো অসমর্থিত সূত্রে জানা গেল, অমুক ব্যক্তি এসে গেছে। এর ওপর নির্ভর করে কেউ আল্লাহর নামে শপথ করে বলল, 'অমুক ব্যক্তি এসে গেছে।' এরপর দেখা গেল, এটি বাস্তবের বিপরীত। এ ধরনের শপথকে 'ইয়ামিনে লগ্ভ' বলা হয়। 

এ ছাড়া অনিচ্ছাকৃতভাবে মুখে শপথবাক্য উচ্চারিত হলে একেও 'ইয়ামিনে লগ্ভ' বা অহেতুক শপথ বলা হয়। এ-জাতীয় শপথে কোনো গুনাহ নেই। কাফফারাও দিতে হয় না।

তিন. আল্লাহর নাম নিয়ে ভবিষ্যতে কোনো কাজ করা বা না করার শপথ করা। এ রকম শপথকে 'ইয়ামিনে মুনআকিদ' বা কার্যকর শপথ বলা হয়। এ শপথ ভঙ্গ করলে কাফফারা ওয়াজিব হবে। এমনকি কোনো কোনো অবস্থায় গুনাহও হয়।

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন, 
কসম করে তাহা ভঙ্গ করলে সেক্ষেত্রে কাফফারা আবশ্যক হয়।

প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে আপনি তো কসম করেননি,শুধুমাত্র আল্লাহর কাছে ওয়াদা করেছেন,সুতরাং এমতাবস্থায় আপনার কাফফারা আদায় করতে হবেনা।

নিয়মিত কুরআন তিলাওয়াতে অভ্যস্ত হওয়ার জন্য কিছু বাস্তবসম্মত পদক্ষেপ অনুসরণ করলে সহজ হয়:

★নিয়ত ও দোয়া:

প্রথমেই আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে নিয়ত করুন।
দোয়া করুন যেন তিনি আপনাকে কুরআনের সঙ্গে দৃঢ়ভাবে জুড়ে দেন।

★ছোট থেকে শুরু করুন:

শুরুতেই বেশি পড়ার চেষ্টা না করে প্রতিদিন ৫–১০ আয়াত বা ১ পৃষ্ঠা নির্দিষ্ট করুন।
ধীরে ধীরে পরিমাণ বাড়ান।

★নির্দিষ্ট সময় ঠিক করুন।

ফজরের পর অথবা রাতে ঘুমানোর আগে তিলাওয়াতের সময় নির্দিষ্ট করুন।
প্রতিদিন একই সময়ে পড়লে অভ্যাস গড়ে ওঠে।

★কুরআন কাছে রাখুন:

ঘরে এমন জায়গায় কুরআন রাখুন যেখানে সহজেই চোখে পড়ে।
মোবাইল অ্যাপে কুরআন ইনস্টল রাখলে যাত্রাপথেও পড়া সম্ভব।

★কুরআন বুঝার চেষ্টা করুন:

তিলাওয়াতের পাশাপাশি তর্জমা পড়লে মনোযোগ ও আগ্রহ বাড়ে।
ধীরে ধীরে তাফসির পড়লে অর্থ হৃদয়ে গেঁথে যায়।

৬. পরিবেশ তৈরি করুন:

পরিবারে মিলিতভাবে কুরআন পাঠের ব্যবস্থা করা যায়।
পবিত্র পরিবেশে বসে পড়লে মনোযোগ বাড়ে।

৭. অল্প হলেও নিয়মিত রাখুন:

সপ্তাহে একদিন বেশি পড়ার চেয়ে প্রতিদিন সামান্য পড়া উত্তম।
রাসুলুল্লাহ ﷺ বলেছেন: “আল্লাহর নিকট আমলগুলো সেইটাই প্রিয়, যেটা নিয়মিত করা হয় যদিও তা অল্প হয়।” (বুখারি, মুসলিম)


৮. তিলাওয়াতকে ইবাদতের আনন্দ মনে করুন:

শুধু দায়িত্ব মনে করে নয়, বরং আল্লাহর কালাম হিসেবে পড়ুন।
মনোযোগ দিয়ে ধীরে ধীরে সুন্দর করে পড়লে অন্তরে প্রশান্তি আসে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

ago by
জাযাকাল্লাহ খইরন, উস্তাদ

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...