আপনি যদি দ্বীনের দাওয়াতের কাজ করতে আগ্রহী হন, সেক্ষেত্রে পরামর্শ থাকবে আপনি আপনার মাহরাম পুরুষের সাথে মাস্তুরাত জামাতে চলে যাবেন।
https://ifatwa.info/104923/ নং ফাতওয়ায় উল্লেখ রয়েছে যে,
রাসুল সা. ভ্রু উপড়ে ফেলা, দাঁতের মাঝে ফাঁক সৃষ্টি করা ইত্যাদি রূপচর্চাকে আল্লাহর সৃষ্টির মধ্যে বিকৃতি গণ্য করে এগুলো যারা করে তাদের অভিশপ্ত বলেছেন।
হাদীস শরীফে এসেছে,
( ﻟَﻌَﻦَ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﺍﻟْﻮَﺍﺷِﻤَﺎﺕِ ﻭَﺍﻟْﻤُﺘَﻔَﻠِّﺠَﺎﺕِ ، ﻭَﺍﻟْﻤُﺘَﻨَﻤِّﺼَﺎﺕِ ﺍﻟْﻤُﻐَﻴِّﺮَﺍﺕِ ﺧَﻠْﻖَ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﻋَﺰَّ ﻭَﺟَﻞَّ ) ﻭﺻﺤﺤﻪ ﺍﻷﻟﺒﺎﻧﻲ ﻓﻲ ﺻﺤﻴﺢ ﺍﻟﻨﺴﺎﺋﻲ
তরজমা: নবীজী সা. অভিশাপ করেছেন। সেই সব নারীদের উপর, যারা দেহাঙ্গে উল্কি (ট্যাটু) অংকন করে, এবং সৌন্দর্য প্রদর্শনের মানসে দাঁতের মাঝে ফাঁক সৃষ্টি করে, এবং ভ্রু-কে চেঁছে সরু (প্লাক) করে আল্লাহর সৃষ্টির মধ্যে পরিবর্তন আনে। [সুনানে নাসাঈ-৫২৫৩]
,
বিশিষ্ট হাদীস বিশারদ ইমাম নববী রাহ উক্ত হাদীসের ব্যাখ্যা করে বলেন:
ﻭَﺍﻟْﻤُﺮَﺍﺩ ﻣُﻔَﻠِّﺠَﺎﺕ ﺍﻟْﺄَﺳْﻨَﺎﻥ ﺑِﺄَﻥْ ﺗَﺒْﺮُﺩ ﻣَﺎ ﺑَﻴْﻦ ﺃَﺳْﻨَﺎﻧﻬَﺎ ﺍﻟﺜَّﻨَﺎﻳَﺎ ﻭَﺍﻟﺮُّﺑَﺎﻋِﻴَّﺎﺕ ... ﻭَﺗَﻔْﻌَﻞ ﺫَﻟِﻚَ ﺍﻟْﻌَﺠُﻮﺯ ﻭَﻣَﻦْ ﻗَﺎﺭَﺑْﺘﻬَﺎ ﻓِﻲ ﺍﻟﺴِّﻦّ ﺇِﻇْﻬَﺎﺭًﺍ ﻟِﻠﺼِّﻐَﺮِ ﻭَﺣُﺴْﻦ ﺍﻟْﺄَﺳْﻨَﺎﻥ , ﻟِﺄَﻥَّ ﻫَﺬِﻩِ ﺍﻟْﻔُﺮْﺟَﺔ ﺍﻟﻠَّﻄِﻴﻔَﺔ ﺑَﻴْﻦ ﺍﻟْﺄَﺳْﻨَﺎﻥ ﺗَﻜُﻮﻥ ﻟِﻠْﺒَﻨَﺎﺕِ ﺍﻟﺼِّﻐَﺎﺭ , ﻓَﺈِﺫَﺍ ﻋَﺠَﺰَﺕْ ﺍﻟْﻤَﺮْﺃَﺓ ﻛَﺒُﺮَﺕْ ﺳِﻨّﻬَﺎ ﻓَﺘَﺒْﺮُﺩﻫَﺎ ﺑِﺎﻟْﻤِﺒْﺮَﺩِ ﻟِﺘَﺼِﻴﺮَ ﻟَﻄِﻴﻔَﺔ ﺣَﺴَﻨَﺔ ﺍﻟْﻤَﻨْﻈَﺮ , ﻭَﺗُﻮﻫِﻢ ﻛَﻮْﻧﻬَﺎ ﺻَﻐِﻴﺮَﺓ , ﻭَﻳُﻘَﺎﻝ ﻟَﻪُ ﺃَﻳْﻀًﺎ ﺍﻟْﻮَﺷْﺮ , ﻭَﻣِﻨْﻪُ : ( ﻟَﻌْﻦ ﺍﻟْﻮَﺍﺷِﺮَﺓ ﻭَﺍﻟْﻤُﺴْﺘَﻮْﺷِﺮَﺓ) , ﻭَﻫَﺬَﺍ ﺍﻟْﻔِﻌْﻞ ﺣَﺮَﺍﻡ ﻋَﻠَﻰ ﺍﻟْﻔَﺎﻋِﻠَﺔ ﻭَﺍﻟْﻤَﻔْﻌُﻮﻝ ﺑِﻬَﺎ ﻟِﻬَﺬِﻩِ ﺍﻟْﺄَﺣَﺎﺩِﻳﺚ , ﻭَﻟِﺄَﻧَّﻪُ ﺗَﻐْﻴِﻴﺮ ﻟِﺨَﻠْﻖِ ﺍﻟﻠَّﻪ ﺗَﻌَﺎﻟَﻰ , ﻭَﻟِﺄَﻧَّﻪُ ﺗَﺰْﻭِﻳﺮ ﻭَﻟِﺄَﻧَّﻪُ ﺗَﺪْﻟِﻴﺲ
ভাবার্থ: ﻣُﻔَﻠِّﺠَﺎﺕ এর দ্বারা উদ্দেশ্য হল, দাঁতের মধ্যখানে রেত দ্বারা ফাক সৃষ্টি করা, আর এ কাজ বয়স্ক মহিলারা সোন্দর্য্য প্রদর্শন ও বয়স লুকানোর জন্য করে থাকে।কেননা শুধুমাত্র ছোট অবস্থায়-ই দাতের মধ্যে ফাক-ফোকর থাকে,বড় হলে আর তা থাকে না। আর তাই কিছুসংখ্যক মহিলা যখন বড় হয়ে যায়,তখন তারা বয়স লোকানোর জন্য এ পদ্ধতিকে গ্রহণ করে থাকে। এ পদ্ধতিকে বুঝানোর জন্য الوشر (আল-ওয়াশর)শব্দকে ও ব্যবহার করা হয়ে থাকে,
এজন্য অন্য হাদীসে বলা হয়েছে ﻟَﻌْﻦ ﺍﻟْﻮَﺍﺷِﺮَﺓ ﻭَﺍﻟْﻤُﺴْﺘَﻮْﺷِﺮَﺓ (দাঁত ফাককারী ও যার দাত ফাক করা হয়েছে উভয়ের উপর আল্লাহর লা'নত)।
উপরুক্ত প্রমাণাদির ধরুণ দাঁত ফাক করার উক্ত পদ্ধতিকে হারাম সাব্যস্ত করা হয়েছে।
বিস্তারিত জানুন- https://ifatwa.info/466
,
কিন্তু শরীরে কোনো ত্রুটি সৃষ্টি হলে সেটা ঠিক করা বৈধ।
রাসুলের সা. যুগে এক ব্যক্তির নাক কেটে গেলে তিনি রুপার ও রাসুলের সা. নির্দেশে পরবর্তীতে স্বর্ণের নাক বানিয়ে নিয়েছিলেন। আরফাজা ইবনে আসআদ রা. বলেন, জাহেলি যুগের কুলাব যুদ্ধের সময় আমার নাকে আঘাত লাগে। তখন আমি একটি রূপার নাক বাঁধিয়ে নেই। কিন্তু তা দুর্গন্ধময় হয়ে পড়লে রাসুল সা. একটি স্বর্ণের নাক বানিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দেন। (সুনানে তিরমিজি: ১৭৭৬)
,
★ সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী বোন!
ডেন্টাল ব্রেস এমন একটি ডিভাইস যা দাঁতের পাটি ওপরে নিচে সামঞ্জস্যপূর্ণ করতে ব্যবহৃত হয়। দাঁতের পাটি অসামঞ্জস্যপূর্ণ হওয়ায় কিছু কামড়ে ধরতে যাদের সমস্যা হয়, তাদের চিকিৎসার জন্যই মূলত ডেন্টাল ব্রেস ব্যবহৃত হয়। এ ছাড়া দাঁত উঁচু বা আঁকাবাঁকা থাকলে তা ঠিক করতেও ডেন্টাল ব্রেস ব্যবহার করা হয়।
,
দাঁতে ত্রুটি থাকলে অর্থাৎ দাঁতের পাটি অসামঞ্জস্যপূর্ণ হলে বা দাঁত খারাপ দেখায় এ রকম উঁচু, ফাঁকা বা আঁকাবাঁকা হলে ত্রুটি দূর করার জন্য অভিজ্ঞ চিকিৎকের পরামর্শ অনুযায়ী ডেন্টাল ব্রেস ব্যবহার করা যেতে পারে। এটা আল্লাহর সৃষ্টিতে বিকৃতি গণ্য হবে না।
,
দাঁত যদি স্বাভাবিক হয়, তাহলে দাঁতের স্বাভাবিক সৌন্দর্য নষ্ট করে অধিকতর সৌন্দর্যের জন্য দাঁত সরু করা বা দাঁতের মধ্যে ফাঁক সৃষ্টি করা ইত্যাদি বৈধ নয়।
★সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে আসলেই আপনার দাঁতের মাঝে ফাঁকা ফাঁকা হলে সেক্ষেত্রে অভিজ্ঞ চিকিৎকের পরামর্শ অনুযায়ী ডেন্টাল ব্রেস ব্যবহার করতে পারবেন।
আরো জানুনঃ-
https://ifatwa.info/92786/
★ আপনাদের এলাকায় বা আপনাদের জেলার ভেতর মহিলা ডাক্তার থাকতে পারে। আপনি খোঁজ করে তাদের কাছে যাবেন।
যদি আপনার জেলায় কোনক্রমেই মহিলা ডাক্তার না পান, সেক্ষেত্রে পুরো ডাক্তারের কাছে গেলে আপনার গুনাহ হবেনা।
এক্ষেত্রে চিকিৎসার জন্য পর্দা ঘেরা পরিবেশ নিশ্চিত করতে বলবেন,সেই পর্দা ঘেরা পরিবেশে যে কোনো নারী বা আপনার মাহরাম কেউ থাকে,সেটিও নিশ্চিত করতে বলবেন।