আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
12 views
ago in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (32 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারকাতুহ। বিষয় গুলো নিয়ে ভীষণ দ্বিধাদ্বন্দে থাকায় এখানে প্রশ্ন করছি।
১. আমার আম্মা মারা যাওয়ার পর মামা খালা রা আমাদের নানান ভাবে দূরত্ব করেছে আমার বাবার সাথে সম্পর্ক অস্বীকার করেছে। এর ফলে একটা ঝামেলা হয় এবং তাদের সাথে সম্পর্ক টা নষ্ট হয়ে যায়। আমি আমার দিক থেকে চেষ্টা করেছিলাম।কিন্তু আমার বাবার সন্মানে আমিও দূরত্ব সৃষ্টি করি। এর পরে তারা আমার সাথে আর কোনো ভাবেই যোগাযোগ করতে চায় না এমনকি আরও অন্যান্য আত্মীয়ের মাঝেও আজেবাজে কথা বলেছে। এর মাঝে একবার সামনাসামনি দেখা হলেও তারা কথা বলেনি।
আমি চাচ্ছিলাম সম্পর্ক টা ঠিক করতে এক্ষেত্রে কি করতে পারি?বা এক্ষেত্রে এই আত্মীয়ের সাথে আত্মীয়ের হক কিভাবে আদায় করব?
২. আমি আগে জেনারেল এ ছিলাম। আলহামদুলিল্লাহ হেদায়েত পাওয়ার পর পর্দা শুরু করি। তো একেবারে খাস পর্দা করতে পারি না। নিয়ত করি কিন্তু এখনও পারি না। তো আমার হাজবেন্ড বলেন শুধু হিজাব পরেও পর্দা হবে। সব সময় মুখ ঢাকা লাগবে না। ফিলিস্তিনের মহিলা রা তো মুখ ঢাকে না। এসব বলে।
প্রশ্ন হচ্ছে - মুখে মাস্ক পরে কালারফুল কাপড় দিয়ে বোরখা পরলে তাতে কি পর্দা হবে?
৩. আমাদের দাম্পত্য জীবনের বয়স ৮ বছর আলহামদুলিল্লাহ। তবে এখনও সন্তান হয় নাই। অনেকে বলে দত্তক নিতে, আবার কেও কেও বিভিন্ন কবিরাজের সন্ধান দেয়। একবার স্বামীর কথায় একটা তাবিজ বেধেছিলাম পরে অবশ্য খুলে ফেলেছিলাম আবার।
আবার অনেক বলে অমুক জায়গায় দান করবা খাওয়াবা মানত কর।
এগুলো তো জায়েজ না বলে জানি। শ্বশুর বাড়ির লোক জনও রাগ করেন। তারা আরও বিয়ে দিতে চান তাদের ছেলে কে। এখন আমি কবিরাজি চিকিৎসা করব কিনা? । এক্ষেত্রে কি করা যায়? বা সুন্নতি কোনো চিকিৎসা থাকলে জানাবেন ইন শা আল্লাহ।

1 Answer

0 votes
ago by (672,750 points)
জবাবঃ- 
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 

আত্মীয়তার সম্পর্ক রক্ষা করার মূল কথা হলো-‘পরস্পরের সঙ্গে মেহেরবানী করা ও অনুগ্রহ করা।’
আত্মীয়তার সম্পর্কের ক্ষেত্রে মেহেরবাণী ও অনুগ্রহ সম্পর্কে আল্লামা কুরতবি রহমাতুল্লাহি আলাইহি যথার্থই বলেছেন, রাহেম বা আত্মীয়তার সর্ম্পক দুই ধরনের হয়-
>> সাধারণ সম্পর্কএ সম্পর্কটি ব্যাপক এবং বিস্তৃত। যাকে বলা হয় দ্বীনি সম্পর্ক। একজন মানুষের সঙ্গে ঈমানি বন্ধনের কারণে তার সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখা। ঈমানদারদের সঙ্গে ভালবাসা রাখা। তাদের সার্বিক সহযোগিতা করা। সব সময় তাদের কল্যাণে কাজ করা।

তাদের ক্ষতি হয় এমন কাজকে তাদের থেকে প্রতিহত করা। তাদের জন্য ন্যায় ও ইনসাফ প্রতিষ্ঠা করা। লেন-দেন ও যাবতীয় ব্যবহারিক কর্মকাণ্ডে বৈষম্য দূর করা এবং তাদের ন্যায় সঙ্গত অধিকার প্রতিষ্ঠাসহ তাদের হকগুলো আদায় করা।
যেমন- অসুস্থদের দেখতে যাওয়া; তাদের হকসমূহের ব্যাপারে সচেতন থাকা; তাদের গোসল দেয়া; জানাযার নামাজ আদায় করা; দাফন-কাফন ইত্যাদিতে অংশগ্রহণ করা।
,
>> বিশেষ সম্পর্কমাতা-পিতা উভয় দিক থেকে রক্তের সম্পর্কের আত্মীয়তা রক্ষা করা। তাদের হক বা অধিকারসমূহ এবং তাদের অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করা সন্তানের ওপর ওয়াজিব বা আবশ্যক।
যেমন- পিতামাতার খরচ বহন করা; তাদের খোঁজ-খবর নেয়া; প্রয়োজনের সময় বিশেষ করে বার্ধক্যে তাদের পাশে থাকা।
আর যখন অনেক আত্মীয়ের অধিকার একত্রিত হয়; তখন নিকটাত্মীয় হওয়ার ক্ষেত্রে অধিকার বাস্তবায়ন অগ্রাধিকার পাবে। পর্যায়ক্রমে তারপর যেটি তুলনামূলক কাছের সেটি অগ্রাধিকার পাবে।
,
নিকটাত্মীয়দের সঙ্গে আত্মীয়তার সম্পর্ক রক্ষার ধরন আল্লাম ইবনু আবি জামরাহ রাহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন-
>> আত্মীয়তার সম্পর্ক বজায় রাখা অনেক সময় মালামাল ও ধন-সম্পদ দ্বারা হয়;
>> প্রয়োজনের সময় সাহায্য করার দ্বারা হয়;
>> ক্ষতিকে প্রতিহত করার মাধ্যমে হয়;
>> পরস্পরের সঙ্গে হাসি-খুশি ও ব্যবহারের মাধ্যমে হয়;
>> দোয়া করার দ্বারাও হয়;
>> সাধ্যানুযায়ী কারো কাছে কল্যাণকর কিছু পৌঁছানো দ্বারাও হয়;
>> সাধ্য ও সামর্থ অনুযায়ী ক্ষতি থেকে বাঁচানোর দ্বারাও হয় এবং তাদের উপকার করার দ্বারাও হয়।
,
সুতরাং সময় সুযোগ তেমন না মিললে শুধু ফোনে কথা বলেও আত্মীয়তা সম্পর্ক ঠিক রাখা যাবে।
তবে সময় সুযোগ হলে মাঝে মাঝে অল্প সময়ের জন্য হলেও নিকটতম আত্মীয়দের সাথে দেখা সাক্ষাৎ করা দরকার।

আরো জানুনঃ- 

https://ifatwa.info/18346/ ফতোয়ায় উল্লেখ রয়েছেঃ 
আত্মীয়তা সম্পর্ক ছিন্ন করা নাজায়েজ,এক্ষেত্রে রাসুলুল্লাহ সাঃ অনেক কঠোরভাষা ব্যবহার করেছেন।

হাদীস শরীফে এসেছে  

حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ جُبَيْرِ بْنِ مُطْعِمٍ، عَنْ أَبِيهِ، يَبْلُغُ بِهِ النَّبِيَّ صلي الله عليه وسلم قَالَ " لَا يَدْخُلُ الْجَنَّةَ قَاطِعُ رَحِمٍ " . - صحيح

জুবাইর ইবনু মুত্বঈম (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্নকারী জান্নাতে প্রবেশ করবে না।

.(বুখারী ৫৯৮৪, মুসলিম ১৯-(২৫৫৫), আবূ দাঊদ ১৬৯৬, তিরমিযী ১৯০৯, সহীহুল জামি‘ ৭৬৭১, সহীহ আত্ তারগীব ওয়াত্ তারহীব ২৫৪০ সহীহ আল আদাবুল মুফরাদ ৪৫, মুসান্নাফ ‘আবদুর রাযযাক ২০২৩৪, মুসনাদুল বাযযার ৩৪০৫, আহমাদ ১৬৭৩২, মুসনাদে আবূ ইয়া‘লা ৭৩৯২, সহীহ ইবনু হিব্বান ৪৫৪, শু‘আবুল ঈমান ৭৯৫২, ‘ত্ববারানী’র আল মু‘জামুল কাবীর ১৪৯১, আর মু‘জামুল আওসাত্ব ৯২৮৭।)

আরো জানুনঃ 

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
(০১)
এক্ষেত্রে আপনি তাদের সাথে আত্মীয়তার সম্পর্ক রক্ষা করার চেষ্টা করবেন। তাদের সাথে দেখা-সাক্ষাৎ হলে আপনি সালাম বিনিময় করবেন।

মাঝে মাঝে তাদেরকে ফোন দিবেন, কথা বলার চেষ্টা করবেন,ভালো মন্দ জিজ্ঞাসা করবেন।

তারা যদি কথা না বলেন, তারপরও মাসে দু একবার ফোন দিয়ে হলেও তাদের সাথে কমপক্ষে সালাম বিনিময় করার চেষ্টা করবেন

(০২)
মুখে মাস্ক পরে বোরখা পরলেও তাতে পূর্ণ পর্দা হবেনা।

এ সংক্রান্ত বিস্তারিত জানুনঃ- 

(০৩)
আপনি শরীয়ত সম্মত পন্থায় কবিরাজী চিকিৎসা করতে পারেন।

তবে পরামর্শ থাকবে এক্ষেত্রে আপনি বিজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে চলার চেষ্টা করবেন। এক্ষেত্রে এলোপ্যাথি হতে পারে বা হোমিওপ্যাথি হতে পারে।

যদি কোন রুকইয়াহ কারীর শরণাপন্ন হন বা কবিরাজ এর কাছে যান,সেক্ষেত্রে তারা যদি তাবিজ দেয়, শরীয়তসম্মত তাবিজ হলে তা আপনি আকীদা বিশুদ্ধ রেখে ব্যবহার করতে পারবেন।

অন্যথায় নয়।

বিস্তারিত জানুনঃ- 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...