আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
16 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (41 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহ।

আমার একটি পারিবারিক সমস্যা নিয়ে জানতে চাই। আমার স্ত্রী আমাকে স্পষ্ট করে বলেছে যে, তাকে কোনো বিষয়ে জোর করা হলে সে তার ঠিক বিপরীত কাজ করে। বিশেষত পর্দার ব্যাপারে আমি যদি চাপ দেই, তাহলে সেটা তার মনে উল্টো প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে।

বর্তমানে তার অবস্থা হলো—সে মোটামুটি পর্দা করে, তবে পরিপূর্ণভাবে নয়। বাইরে গেলে শালীন পোশাক পরে, শরীর মোটামুটি ঢাকা থাকে, মাস্ক পরে, মাথায় স্কার্ফও পরে। তবে হাতার অংশ কখনো কবজি পর্যন্ত যায় না, খানিকটা উপরে থাকে।

ফেসবুকে আগে সে খোলামেলা ছবি দিতো (চেহারা খোলা থাকতো), এখন আর তা করে না, বরং শালীনভাবে ছবি দেয়(বোরকার মতো কাপড় পরাথাকে, মুখে স্টিকার দিয়ে দেয়, কিন্তু হাতের কব্জির উপরে সামান্য পরিমান দেখা যায় এমন ছবি) আত্মীয়-স্বজন ও নন-মাহরামের সামনে গেলে সালোয়ার কামিজ পরে বড় ওড়না দিয়ে মাথা ও বুক ঢেকে রাখে। তার বক্তব্য হলো, যে পরিমাণ পর্দা করে সে নিজের ইচ্ছেতেই করে। আমি কিছু বললে বা কান্নাকাটি করলেও সেটা সে জোর হিসেবেই দেখে এবং উল্টো প্রতিক্রিয়া করে।

আমি আগেও লক্ষ্য করেছি, কোনো বিষয়ে আমি ঝের ধরে থাকলে, কিংবা বিছানা আলাদা করলে, ১–২ দিনেও তার একরোখামি কমে না। দুই পরিবার মিলে আলোচনা করলেও লাভ হওয়ার সম্ভাবনা নেই। কারণ আমাদের দুই পরিবারই মোটামুটি লিবারেল; তারা কেউ পর্দা করে না, বরং এমনটা করলে উল্টো বলবে—“আগে দেখে বিয়ে করলে না কেন?” তাই এই দিক থেকেও সহায়তা পাওয়ার সম্ভাবনা দেখি না।

সুতরাং, আমি যতটুকু পারি, নরমভাবে বোঝানো ছাড়া আর কোনো করণীয় আমার সামনে নেই।

আমার প্রশ্নগুলো হলো—

১. এই অবস্থায় কি আমি আমার স্ত্রীর সঙ্গে সংসার চালিয়ে যেতে পারবো?
২. সে যেমনভাবে পর্দা করছে, তাকে জোর না করে যদি শুধু মাঝে মাঝে নরমভাবে বোঝাই, তাহলে কি আমি দাইয়ুসের অন্তর্ভুক্ত হবো?
৩. আরেকটি প্রসঙ্গ—একজন পুরুষের টিউশনের প্রয়োজন আছে, আবার একজন মেয়েরও ভালো টিচারের প্রয়োজন আছে। আমি যদি দুজনকে শুধু এইভাবে পরিচয় করিয়ে দিই যে, “আপনারা যেভাবে ভালো মনে করেন সেভাবে পড়াশোনা করুন,” তাহলে কি এতে আমার গুনাহ হবে? আমি মূলত তাদের উপকার করতে চাই।

আল্লাহ তায়ালা যেন সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার তাওফিক দান করেন।

والسلام

1 Answer

0 votes
ago by (671,100 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

(০১)
মহান আল্লাহ্ বলেন, 

ٱلرِّجَالُ قَوَّٰمُونَ عَلَى ٱلنِّسَآءِ بِمَا فَضَّلَ ٱللَّهُ بَعۡضَهُمۡ عَلَىٰ بَعۡضٖ وَبِمَآ أَنفَقُواْ مِنۡ أَمۡوَٰلِهِمۡۚ فَٱلصَّٰلِحَٰتُ قَٰنِتَٰتٌ حَٰفِظَٰتٞ لِّلۡغَيۡبِ بِمَا حَفِظَ ٱللَّهُۚ وَٱلَّٰتِي تَخَافُونَ نُشُوزَهُنَّ فَعِظُوهُنَّ وَٱهۡجُرُوهُنَّ فِي ٱلۡمَضَاجِعِ وَٱضۡرِبُوهُنَّۖ فَإِنۡ أَطَعۡنَكُمۡ فَلَا تَبۡغُواْ عَلَيۡهِنَّ سَبِيلًاۗ إِنَّ ٱللَّهَ كَانَ عَلِيّٗا كَبِيرٗا ٣٤ [النساء: ٣٤] 

পুরুষরা নারীদের তত্ত্বাবধায়ক, এ কারণে যে, আল্লাহ তাদের একের উপর অন্যকে শ্রেষ্ঠত্ব দিয়েছেন এবং যেহেতু তারা নিজদের সম্পদ থেকে ব্যয় করে। সুতরাং পুণ্যবতী নারীরা অনুগত, তারা লোকচক্ষুর অন্তরালে হিফাজতকারিনী ঐ বিষয়ের যা আল্লাহ হিফাজত করেছেন। আর তোমরা যাদের অবাধ্যতার আশঙ্কা কর তাদেরকে সদুপদেশ দাও, বিছানায় তাদেরকে ত্যাগ কর এবং তাদেরকে (মৃদু) প্রহার কর। এরপর যদি তারা তোমাদের আনুগত্য করে তাহলে তাদের বিরুদ্ধে কোনো পথ অনুসন্ধান করো না। নিশ্চয় আল্লাহ সমুন্নত মহান। [সূরা আন-নিসা: ৩৪] 


★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,
স্ত্রী অবাধ্য হলে বাধ্য করার জন্য করনীয়ঃ-

প্রথম পদক্ষেপ হচ্ছে উপদেশ দেওয়া ।
খুব ভালো ভাবে নিজে বুঝানো,তাতে কাজ না হলে মুরব্বিদের মাধ্যমে বুঝানো।
স্ত্রী বাবার বাসার মুরব্বিদের মাধ্যমে বুঝানো।
তাতে কাজ না হলে দ্বিতীয় পদক্ষেপ বিছানা পরিত্যাগ করা ।
তাকে আলাদা বিছানায় থাকতে দেয়া।
প্রয়োজনে আলাদা রুমেও থাকতে পারেন।

এতে কাজ না হলে কিছুদিনের জন্য বাবার বাসায় রেখে আসতে পারেন।

তাতেও কাজ না হলে তৃতীয় পদক্ষেপ মৃদু প্রহার করা। 
,
আল্লাহ্ তায়ালা বলেন, وَاضْرِبُوهُنَّ এবং তাদেরকে প্রহার করবে। 

এর তাফসীরে হাফেয ইবন কাসীর [রহ.] বলেন, যদি উপদেশ প্রদান ও আলাদা রাখার পরও কোনো কাজ না হয়, স্ত্রীগণ সংশোধনের পথে ফিরে না আসে, তবে হালকা করে তাদেরকে প্রহার করবে। 

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,
পরামর্শ থাকবে স্ত্রীকে পূর্ণ পর্দায় নিয়ে আসার জন্য ও তাকে আপনার বাধ্য করার জন্য ও পূর্ণ শরীয়তের উপর চালানোর জন্য উপরোক্ত পদ্ধতি গুলো অবলম্বন করার।

এরপরে কাজ না হলে তাকে তালাক দিলে আপনার কোনো গুনাহ হবেনা।

বিস্তারিত জানুনঃ- 

(০২)
হ্যাঁ, প্রশ্নের বিবরন আছে আপনি দাইয়ুস হবেন।

(০৩)
এতে আপনার গুনাহের কাজে সহযোগিতার  গুনাহ হবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...