আসসালামু আলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহ।
আমার একটি পারিবারিক সমস্যা নিয়ে জানতে চাই। আমার স্ত্রী আমাকে স্পষ্ট করে বলেছে যে, তাকে কোনো বিষয়ে জোর করা হলে সে তার ঠিক বিপরীত কাজ করে। বিশেষত পর্দার ব্যাপারে আমি যদি চাপ দেই, তাহলে সেটা তার মনে উল্টো প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে।
বর্তমানে তার অবস্থা হলো—সে মোটামুটি পর্দা করে, তবে পরিপূর্ণভাবে নয়। বাইরে গেলে শালীন পোশাক পরে, শরীর মোটামুটি ঢাকা থাকে, মাস্ক পরে, মাথায় স্কার্ফও পরে। তবে হাতার অংশ কখনো কবজি পর্যন্ত যায় না, খানিকটা উপরে থাকে।
ফেসবুকে আগে সে খোলামেলা ছবি দিতো (চেহারা খোলা থাকতো), এখন আর তা করে না, বরং শালীনভাবে ছবি দেয়(বোরকার মতো কাপড় পরাথাকে, মুখে স্টিকার দিয়ে দেয়, কিন্তু হাতের কব্জির উপরে সামান্য পরিমান দেখা যায় এমন ছবি) আত্মীয়-স্বজন ও নন-মাহরামের সামনে গেলে সালোয়ার কামিজ পরে বড় ওড়না দিয়ে মাথা ও বুক ঢেকে রাখে। তার বক্তব্য হলো, যে পরিমাণ পর্দা করে সে নিজের ইচ্ছেতেই করে। আমি কিছু বললে বা কান্নাকাটি করলেও সেটা সে জোর হিসেবেই দেখে এবং উল্টো প্রতিক্রিয়া করে।
আমি আগেও লক্ষ্য করেছি, কোনো বিষয়ে আমি ঝের ধরে থাকলে, কিংবা বিছানা আলাদা করলে, ১–২ দিনেও তার একরোখামি কমে না। দুই পরিবার মিলে আলোচনা করলেও লাভ হওয়ার সম্ভাবনা নেই। কারণ আমাদের দুই পরিবারই মোটামুটি লিবারেল; তারা কেউ পর্দা করে না, বরং এমনটা করলে উল্টো বলবে—“আগে দেখে বিয়ে করলে না কেন?” তাই এই দিক থেকেও সহায়তা পাওয়ার সম্ভাবনা দেখি না।
সুতরাং, আমি যতটুকু পারি, নরমভাবে বোঝানো ছাড়া আর কোনো করণীয় আমার সামনে নেই।
আমার প্রশ্নগুলো হলো—
১. এই অবস্থায় কি আমি আমার স্ত্রীর সঙ্গে সংসার চালিয়ে যেতে পারবো?
২. সে যেমনভাবে পর্দা করছে, তাকে জোর না করে যদি শুধু মাঝে মাঝে নরমভাবে বোঝাই, তাহলে কি আমি দাইয়ুসের অন্তর্ভুক্ত হবো?
৩. আরেকটি প্রসঙ্গ—একজন পুরুষের টিউশনের প্রয়োজন আছে, আবার একজন মেয়েরও ভালো টিচারের প্রয়োজন আছে। আমি যদি দুজনকে শুধু এইভাবে পরিচয় করিয়ে দিই যে, “আপনারা যেভাবে ভালো মনে করেন সেভাবে পড়াশোনা করুন,” তাহলে কি এতে আমার গুনাহ হবে? আমি মূলত তাদের উপকার করতে চাই।
আল্লাহ তায়ালা যেন সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার তাওফিক দান করেন।
والسلام