আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমতুল্লাহ উস্তাজ,
দু:খিত উস্তাজ,প্রেক্ষাপট বুঝানোর জন্য একটু বড় করেই লিখতে হচ্ছে।
#আমার বয়স প্রায় ২৯।আমি একজন অবিবাহিত মেয়ে।ছোটো বেলায় বাবা মারা যায় তারপর আল্লাহর অশেষ রহমতে আমার আম্মুই আমি ও আমার ছোটো বোন কে লালন পালন করেন।তাই ছোটো বেলা থেকেই আলহামদুলিল্লাহ পড়াশোনায় সিরিয়াস ছিলাম,এবং ইঞ্জিনিয়ারিং শেষে জবে ঢুকে সংসারের হাল ধরে তারপর নিজের বিয়ে শাদি নিয়ে ভাববো এমন টাই পরিকল্পনা ছিল।যাই হোক আল্লাহর অশেষ রহমতে জবে ঢুকার পর হেদায়েতের ছোয়া পাই নিজেকে একটু একটু করে পরিবর্তন করতে শুরু করি, দ্বীনি ইলম ও আমল শেখা শুরু করি আলহামদুলিল্লাহ।কিন্তু দ্রুতই বুঝতে পারি বিয়েটা জীবনের খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয় এবং পর্দানশিন মেয়ের জন্য আরও গুরুত্বপূর্ণ কারন মাহরাম এর ব্যাপার আছে আর আমার বাবা, ভাই নেই আমার জন্য আরো গুরুত্বপূর্ণ।কিন্তু ততদিনে বয়স প্রায় ২৫/২৬। আর পরিবারে বাবা, ভাই বা কোনো দায়িত্বশীল আত্মীয়স্বজন ও নেই যে কিনা আমার বিয়ে নিয়ে ভাববে বা একটু চেষ্টা করবে।বয়স ২৬/২৭ হওয়ার পর থেকে আমার মা নিজের মতো চেষ্টা করছে কিন্তু সেটা তেমন ফলপ্রসূ নয়।কারন তার পরিচিত সার্কেলে তেমন দ্বীনদার বা পছন্দসই ছেলে পাওয়া সসম্ভাবনা খুবই কম।আর প্রচলিত পদ্ধতিতে ঘটক ও ধরা যাচ্ছে না কারন ঘটক আগেই ছবি চেয়ে বসে।তাই অনলাইন কিছু দ্বীনি ম্যাট্রিমনি প্ল্যাটফর্মে বায়ো দিয়ে রেখেছি কিন্তু যেহেতু বয়স বেশি আবার জব ও করি তাই দ্বীনদারিতা, শিক্ষাগত যোগ্যতা, চেহারা সুরত ইত্যাদি দিক দিয়ে মানানসই প্রস্তাব আসলে তেমন একটা আসেনা।আর এদিক আমার ছোটো বোনের ও বিয়ের বয়স হয়ে গিয়েছে,আম্মু খুবই দুশ্চিন্তা গ্রস্থ।এমতাবস্থায় উস্তাজ আপনাদের কাছে কিছু পরামর্শ চাই :
#ছেলের দ্বীনদারিতা ও যদি তেমন একটা পছন্দ না হয় & ছেলেকেও যদি পছন্দ না হয় তাহলে মনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে বিয়ে করা কি ঠিক হবে?(আমার যত প্রস্তাব আসে এই ক্যাটাগরির ই)
#আমার মার দুশ্চিন্তা দূর হবে আর আমার বোনের বিয়ের ব্যাপারে অগ্রসর হওয়া যাবে এসব বিবেচনা করে আমি যদি নিজের অপছন্দ স্বত্ত্বেও বিয়ে করি তবে আল্লাহর কাছে এর জন্য কোনো উত্তম বিনিময় পাবো?
#আম্মু দুশ্চিন্তা র কারনে প্রায়ই আমার সাথে চিল্লাপাল্লা করে এবং কেন একা একা বিয়ে করতে পারলাম না এসব যোগ্যতা কেন নাই এসব নিয়ে কথা শোনায়।যার কেউ নেই সে এরকম একা একা পছন্দ বিয়ে করলে কোনো গুনাহ হয় না ইত্যাদি নানাম অযৌক্তিক কথাবার্তা বলে আর কি,সে নিজেও হয়ত বুঝতে পারে তার কথাবার্তা গুলো অযৌক্তিক কিন্তু তবুও রাগের মাথায় বলে।কিন্তু আমি সচরাচর কিছু বলিনা,চুপ করে থাকি এবং কান্নাকাটি করি।কারন এই ভয় পাই যে বলার শুরু করলে আমিও হয়ত উল্টাপাল্টা কিছু বলে ফেলব আম্মু কষ্ট পাবে & আমার গুনাহ হবে,আর আম্মুর সাথে রাগ করেও থাকিনা,যথাসম্ভব স্বাভাবিক থাকার চেষ্টা করি যেন কিছুই হয় নি।কিন্তু আসলে আমার খুব কষ্ট হয় এবং মনের অবস্থা খুবই খারাপ।আমার কাছে মনে হচ্ছে আমি বিষয় টা খুবই স্বাভাবিক নিচ্ছি বলে আমার আম্মু রাগ উঠলেই আমার সাথে যা ইচ্ছে তাই বলে মেজাজ ঠান্ডা করা টা খুব সিলি ভাবে নিচ্ছি কিন্তু এতে যে আমি মানসিক ভাবে প্রচন্ড অসুস্থ হয়ে যাচ্ছি সেটা সে বুঝতে পারছে না। তাই আমি যদি এ ধরনের সিচুয়েশনে র পর ২/১ দিন রাগ করে আম্মুর সাথে কথাবার্তা না বলি তবে কি আমার গুনাহ হবে?উস্তাজ দয়া করে আম্মুকে বুঝানো র পরামর্শ দিবেন না।কারন এটা সম্ভব না।আমি জানি আমি সিচুয়েশনে র মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি।
কষ্ট করে এত বড় লিখা টা পড়েছেন আমি কৃতজ্ঞ।
جزاك الله خيرا.