বিসমিহি তা'আলা
জবাবঃ-
মসজিদ সমূহের মধ্যে সবচেয়ে ফযিলতপূর্ণ মসজিদ হলো মসজিদে হারাম।কেননা এই মসজিদ সকল মসজিদ সমূহের কিবলা এবং মূল।
যে ব্যক্তি মসজিদে হারামে এক ওয়াক্ত নামায পড়বে সে এক লাখ নামাযের সওয়াব পাবে।
এরপর হলো মসজিদে নববীর দরজা।এরপর হলো মসজিদে আক্বসা।এই মসজিদ দ্বয়ে এক ওয়াক্ত নামায পঞ্চাশ হাজার নামাযের সমতূল্য।
এরপর স্থান হলো শহরের জামে মসজিদ এর।এতে এক ওয়াক্ত নামায পাঁচশত নামাযের সওয়াবের সমতূল্য।অতপর মহল্লার পাঞ্জেগানা মসজিদ।তাতে এক ওয়াক্ত নামায পচিশ নামাযের সওয়াবের সমতূল্য।
এ ব্যখ্যা হযরত আনাস রাযি থেকে বর্ণিত রয়েছে(ইবনে মা'জা র সূত্রে মিশকাতে বর্ণিত রয়েছে)
তবে মহল্লাবাসীর জন্য জামে মসজিদের চেয়ে মহল্লার পাঞ্জেগানা মসজিদে নামায পড়া অনেক অনেক উত্তম।সাহাবায়ে কেরাম তাবেঈন এবং সালাফে সালেহীন এর আ'মলও এটার উপর প্রমাণ করে।যে,তারা সকল নিজ নিজ মহল্লার পাঞ্জেগানা মসজিদেই নামায পড়তেন।মহল্লার মসজিদ ছেড়ে তারা জামে মসজিদে কখনো যেতেন না।
এত্থেকে বুঝা যায় যে,জামে মসজিদ সম্পর্কিত যে সওয়াবের কথা হাদীসে বর্ণিত রয়েছে,সেটার সম্পর্ক মূলত জুম্মার সাথে।অর্থাৎ জুম্মা মহল্লার মসজিদে না পড়ে শহরের জামে মসজিদে পড়াতে অনেক সওয়াব।
হ্যা জনসাধারণের জন্য পাঞ্জেগানা মসজিদের নামাযেও পাঁচশত নামাযের সওয়াব পাওয়া যাবে।
আল-আশবাহ ওয়ান-নাযাঈর(পৃষ্টা-১৯৫) নামক কিতাবে বর্ণিত রয়েছে যে,জনসাধারণের জন্য মহল্লার পাঞ্জেগানা মসজিদই সওয়াবের দিক দিয়ে জামে মসজিদের সমতূল্য।তবে যদি জামে মসজিদের ইমাম আলেম হন,আর পাঞ্জেগানা মসজিদের ইমাম আলেম না হন, তাহলে এমতাবস্থায় সর্বদা জামে মসজিদে নামায পড়াই উত্তম।জুম্মায় এবং অন্যান্য নামাযেও।
জাওয়াহিরুল ফিকহ-৩/১০১
প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
উপরোক্ত ব্যখ্যা এ হিসেবে করা হয়েছে যে,যেখানে পূর্ববর্তী সময়ে মহল্লার মসজিদ সমূহে জুম্মা হত না।কেননা তখন মহল্লার মসজিদ সমূহে ৪০জন মুসাল্লি হত না।কিন্তু এখন যেহেতু প্রায় মসজিদে ৪০জন মুসাল্লি হয়ে যায় সে হিসেবে ইমাম আবু-ইউসুফ রাহি এর মাযহাবকে অনুসরণ করে মহল্লার মসজিদ কে বড় গ্রামের মসজিদ ধরে নিয়ে তাতে জুম্মা আদায় করা হয়।এবং উলামায়ে কেরাম তাতে সম্মতি দিয়ে থাকেন।
(বিঃদ্রঃ হানাফি মাযহাব অনুযায়ী শহর বা বড় গ্রাম ছাড়া জুম্মা ওয়াজিব হয় না, এটা তারাফইন হযরাতদ্বয়ের মাযহাব।তবে ইমাম আবু ইউসুফরাহ ছোট্ট গ্রামে ৪০জন মুসাল্লির শর্তে জুম্মাকে ওয়াজিব করে থাকেন)
তাই এক গ্রামে কখনো দুই তিনটি জুম্মার মসজিদ রয়েছে,সেখানে জুম্মাকে পড়ে নেয়া হয়।এবং কখনো কখনো কোনো গ্রামে জুম্মার একাধিক মসজিদ থাকার পরও সেখানে দুয়েকটা পাঞ্জেগানা মসজিদও থাকে।
তো প্রশ্নের উত্তর এভাবে দেয়া যায় যে,পাঞ্জেগানা মসজিদের আশপাশে যারা রয়েছেন,তারা পাঞ্জেগানা মসজিদেই নামায পড়বেন।এতেও তারা জামে মসজিদের সওয়াব তথা পাঁচশত নামাযের সওয়াব পাবেন।
তবে তারা জুম্মাকে জামে মসজিদে গিয়ে আদায় করবেন। এবং সম্ভব হলে শহরের জামে মসজিদে গিয়ে জুম্মার নামায আদায় করবেন।এতেই তাদের জন্য রয়েছে বেশী সওয়াব।
আল্লাহ-ই ভালো জানেন।
উত্তর লিখনে
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ, Iom.