আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
36 views
in ঈমান ও বিশ্বাস (Faith and Belief) by (7 points)
আমরা ৩ বোনের মধ্যে মেজো বোনকে ছোট বেলা থেকেই ফ্যামিলির সবাই ভাগি্গচ্ছা বা ভাগ্যবতী বলতো।

সবাই তাকে অনেক আদর করে ।তার হাতে দোকান উদ্বোধন করেন। সবাই তাকে বেশি ভালোবাসে।তার বিয়ের পর বাবার ব্যবসায় অনেক লস হয়,যার কারন হিসেবে তারা বলে,ওর বিয়ে হয়ে গেছে দেখে ওর বাবার রিজিক কমে গেছে।

১/ভাগ্যবতী,অভাগা এগুলো কতটুকু যৌক্তিক? ভাগ্যবতী বলতে কি আসলেই কিছু আছে?

২/ এই যে তাঁরা যে এগুলো বলে , এগুলো করে যে ওর সাথেই নাকি ওর বাবার রিজিক বাড়া কমা সংশ্লিষ্ট এগুলো কি শিরক?

৩/ যে যেটা বিশ্বাস করে তার সাথে কি সেটাই হয় ?

ওর বিয়ের পর আসলেই আব্বু অনেক ডাউনফল করেছে,যেমনটা আব্বু বিশ্বাস করতো ও ছোট থাকতেই ❗

৪/ বাবার কি তাঁর সন্তানদের মধ্যে এমন বিভাজন করা উচিত,যে একজনকে কম আদর করা আর অন্যজনকে বেশি, যেহেতু অন্যরা কষ্ট পায় ❓

৫/ মানে আত্মীয়দের ওকে নিয়ে মাতামাতি দেখে ভাবি যে, ইশশ্ আল্লাহ আমার ভাগ্যটাও এমন হতো❗আমাকেও আব্বু ওর মতই আদর করতো যদি। অনেক খারাপ লাগে। এক্ষেত্রে করনীয় কি ?

৬/আমার বিয়ের পর আমার হাজবেন্ডের রিয়াকে আল্লাহ বারাকাহ দিয়েছেন আলহামদুলিল্লাহ। এক্ষেত্রে সে যদি বলে , "আমার স্ত্রী আমার জন্য বারাকাহ নিয়ে আসছে"

তাহলে এই কথায় কি ঠিক হবে? জায়েজ হবে ?

1 Answer

0 votes
by (676,560 points)
জবাবঃ-
بسم الله الرحمن الرحيم

(০১)
https://ifatwa.info/79127/ নং ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছে,
হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 
ইমরান বিন হুসাইন (রদ্বি, ) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (স) বলেছেন,

لَيْسَ مِنَّا مَنْ تَطَيَّرَ، أَوْ تُطُيِّرَ لَهُ أَوْ تَكَهَّنَ، أَوْ تُكُهِّنَ لَهُ أَوْ سَحَرَ، أَوْ سُحِرَ لَهُ-

, ‘‘সে ব্যক্তি আমাদের দলভুক্ত নয়, যে ব্যক্তি (কোন বস্ত্ত, ব্যক্তি কর্ম বা কালকে) অশুভ লক্ষণ বলে মানে অথবা যার জন্য অশুভ লক্ষণ দেখা (পরীক্ষা) করা হয়, যে ব্যক্তি (ভাগ্য) গণনা করে অথবা যার জন্য (ভাগ্য) গণনা করা হয়। আর যে ব্যক্তি যাদু করে অথবা যার জন্য (বা আদেশে) যাদু করা হয়।’’ (ত্বাবারানী ১৪৭৭০, সহীহুল জামে’ ৫৪৩৫ ,সিলসিলা ছহীহা ২১৯৫)

এগুলোতে বিশ্বাস করা শিরক। এভাবে শুভ অশুভ নির্ণয়ের বিধান প্রসঙ্গে রসূলুল্লাহ (স) বলেন,

اَلطِّيَرَةُ شِرْكٌ

‘কুলক্ষণে বিশ্বাস করা শিরক’।[আবুদাঊদ, তিরমিযী; মিশকাত, ৪৫৮৪]

আব্দুল্লাহ বিন আমর বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (স) একদা বললেন, কুলক্ষণ যে ব্যক্তিকে কোন কাজ থেকে ফিরিয়ে রাখে, নিশ্চয়ই সে শিরক করে। ছাহাবীগণ আরয করলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! উহার কাফফারা কি হবে? তিনি বললেন, ঐ ব্যক্তি বলবে-

اَللَّهُمَّ لاَ خَيْرَ إِلاَّ خَيْرُكَ وَلاَ طَيْرَ إِلاَّ طَيْرُكَ وَلاَ إِلَهَ غَيْرُكَ

‘হে আল্লাহ! আপনার কল্যাণ ছাড়া কোন কল্যাণ নেই। আপনার সৃষ্ট কুলক্ষণ ছাড়া কোন কুলক্ষণ নেই। আর আপনি ছাড়া কোন মা‘বূদও নেই’    [আহমাদ ৭০৪৫, সিলসিলা ছহীহা ১০৬৫]

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
কাউকে ভাগ্যবতী বলে বিশ্বাস করা, কাউকে অভাগা বলে বিশ্বাস করা এগুলো যৌক্তিক নয়। এহেন বিশ্বাস খুবই মারাত্মক,ঈমানের জন্য ক্ষতিকর। 
তাই দ্রুত তওবা করে এহেন বিশ্বাস থেকে ফিরে আসতে হবে। 

শরীয়তের দৃষ্টিকোণ হতে ভাগ্যবতী বলতে আসলে কিছু নেই।

আরো জানুনঃ- 

(০২)
এ ধরনের বিশ্বাস শিরকের অন্তর্ভুক্ত। 

(০৩)
না,এটি সঠিক নয়।
বরং তাকদীরে যাহা আছে,তাহাই হবে।

আল্লাহ তা’আলা সকল মাখলুকের তাকদীর আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবী সৃষ্টির পঞ্চাশ হাজার বৎসর পূর্বে লিখেছেন। সেখানে যাহা লেখা আছে,তাহাই হবে।

হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 

حَدَّثَنِي أَبُو الطَّاهِرِ، أَحْمَدُ بْنُ عَمْرِو بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرِو بْنِ سَرْحٍ حَدَّثَنَا ابْنُ، وَهْبٍ أَخْبَرَنِي أَبُو هَانِئٍ الْخَوْلاَنِيُّ، عَنْ أَبِي عَبْدِ الرَّحْمَنِ الْحُبُلِيِّ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرِو، بْنِ الْعَاصِ قَالَ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ " كَتَبَ اللَّهُ مَقَادِيرَ الْخَلاَئِقِ قَبْلَ أَنْ يَخْلُقَ السَّمَوَاتِ وَالأَرْضَ بِخَمْسِينَ أَلْفَ سَنَةٍ -
আবূ তাহির, আহমাদ ইবনু আমর ইবনু আবদুল্লাহ ইবনু আমর ইবনু সারহ (রহঃ) ...... ‘আবদুল্লাহ ইবনু আমর ইবনুল আস (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি যে, তিনি বলেছেনঃ আল্লাহ তা’আলা সকল মাখলুকের তাকদীর আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবী সৃষ্টির পঞ্চাশ হাজার বৎসর পূর্বে লিখেছেন।  (মুসলিম শরীফ ইসলামিক ফাউন্ডেশন ৬৫০৭, ইসলামিক সেন্টার ৬৫৫৮)

(০৪)
না,এধরণের বিভাজন করা উচিত নয়।

(০৫)
মুরব্বিদের মাধ্যমে তাদেরকে বুঝানোর পরামর্শ থাকবে। 
শরীয়তের মাসয়ালা তাদেরকে জানাতে হবে। 

(০৬)
বিবাহের দ্বারা যেহেতু সংসারে বারাকাহ আসে, তাই প্রশ্নে উল্লেখিত কথা বলার দরুন কোনো সমস্যা হবেনা।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...