আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

+1 vote
55 views
in ঈমান ও বিশ্বাস (Faith and Belief) by (9 points)
আসসালামু আলাইকুম উস্তায,আমি ফেসবুক ও টেলিগ্রামের একটি চ্যানেলে কথা দুইটা পেয়েছি এগুলো সত্যতা কতটুকু?
১."তোমার রব যদি তোমাকে ইস্তেগফার করার কথা মনে করিয়ে দেন, তবে জেনে নাও তিনি তোমাকে ক্ষমা করতে চান"
~আলি ইবনে আবি তালিব (রা.)

২.তাহাজ্জুদের ফজিলত এটুকুই যথেষ্ট, নিয়মিত তাহাজ্জুদ পড়লে আমি উর্ধজগতে আলোকিত ব্যক্তিত্ব হয়ে যাবো। আমাকে অনুপস্থিত  দেখলে ফিরিশতাগণ আল্লাহর কাছে আমার সম্পর্কে জানতে চাইবে।
লেখা: শাইখ আতিক উল্লাহ হাফি.

আর একটা বিষয় জানার ছিল
অনেক দিন আগে শুনেছিলাম
হযরত মুসা (আঃ) ও বনী ইসরাইলের এক বন্ধ্যা নারীর ঘটনা।
ঘটনাটি হলো:
হযরত মুসা (আঃ) তুর পাহাড়ে আল্লাহর  সাথে কথা বলতে যেতেন, একদিন তুর পাহাড়ে যাওয়ার পথে হযরত মুসা(আঃ) এর সঙ্গে মহিলা দেখা হল যিনি রাস্তার পাশে বসে কান্না করছিলেন হযরত মুসা (আঃ) উক্ত মহিলার দিকে এগিয়ে গেলেন এবং তার কাছে কান্না করার কারণ জানতে চাইলেন মহিলাটি তখন উত্তর দিলো আমি একজন নিঃসন্তান নারী আমার কোন সন্তান নেই মহান আল্লাহ তায়ালার কাছে আপনি জিজ্ঞাসা করুন আমি কি কখনো মা হতে পারবো না? মানুষজন আমাকে বন্ধ্যা বলে কটাক্ষ করে হযরত মুসা (আঃ) তুর পাহাড়ে গিয়ে মহান আল্লাহর কাছে ওই মহিলা ব্যাপারে প্রশ্ন করলেন জবাবে মহান আল্লাহ তায়ালা বলেন তার ভাগ্যে কোন সন্তান নেই
হযরত মুসা (আঃ) উক্ত মহিলার কাছে গিয়ে বললেন তার ভাগ্যের কোনো সন্তান নেই, এই কথা শুনে মহিলাটি কান্নায় ভেঙে পড়লো,  এমন করে তিনবার সে হযরত মুসা (আঃ) কে আল্লাহর কাছে জিজ্ঞেস করতে বললেন এবং তিনবারে আল্লাহ বললেন তার ভাগ্যে সন্তান নেই কিন্তু একদিন হঠাৎ হযরত মুসা (আঃ) তার কোলে সন্তান দেখতে পেলেন এবং আল্লাহকে জিজ্ঞেস করলেন তার ভাগ্যে তো সন্তান ছিল না তখন আল্লাহ বলেছেন আমি যতবার তার ভাগ্যে সন্তান নেই লিখে রেখেছি ততবার সে আমাকে হে দয়াময় হে দয়াময় বলে ডেকেছে তাই আমি খুশি হয়ে তাকে সন্তান দান করেছি।

এই ঘটনাটা কি সত্য?

1 Answer

0 votes
by (677,430 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

১. উক্তি: “তোমার রব যদি তোমাকে ইস্তেগফার করার কথা মনে করিয়ে দেন, তবে জেনে নাও তিনি তোমাকে ক্ষমা করতে চান” -আলি ইবনে আবি তালিব (রা.)

এই উক্তিটি আলি (রা.) থেকে সহিহ সূত্রে বর্ণিত হিসেবে পাইনি। হাদিসের কিতাবগুলোতে এর কোনো সনদ পাইনি। তবে অর্থের দিক থেকে এটি কুরআন ও সহিহ হাদিসের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ, যেমন,

“নিশ্চয়ই আল্লাহ তওবাকারীকে ভালোবাসেন।” (সূরা বাকারা: ২২২)

“আমার বান্দা যখন আমাকে স্মরণ করে, আমি তাকে স্মরণ করি।” (সহিহ বুখারি, মুসলিম)

অর্থাৎ, যদি তোমার মনে ইস্তিগফারের তাওফিক আসে, তা আল্লাহর রহমতের নিদর্শন। 

২. তাহাজ্জুদের ফজিলত সম্পর্কিত উক্তি (শাইখ আতিক উল্লাহ হাফি-এর লেখা)

“তাহাজ্জুদ পড়লে আমি উর্ধজগতে আলোকিত ব্যক্তিত্ব হয়ে যাবো, ফেরেশতারা অনুপস্থিত দেখে আল্লাহর কাছে জিজ্ঞেস করবে” — এই কথাটি কোনো হাদিসে খুজে পাইনি।

তাহাজ্জুদের প্রকৃত ফজিলত কুরআন ও সহিহ হাদিসে আছে, যেমন—

“রাতের কিছু অংশে তাহাজ্জুদ পড়, এটি তোমার জন্য নফল। আশা করা যায় তোমার রব তোমাকে প্রশংসনীয় স্থানে দাঁড় করাবেন।” (সূরা ইসরা: ৭৯)

হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 

حَدَّثَنَا الْقَعْنَبِيُّ، عَنْ مَالِكٍ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ أَبِي سَلَمَةَ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، وَعَنْ أَبِي عَبْدِ اللهِ الأَغَرِّ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ " يَنْزِلُ رَبُّنَا تَبَارَكَ وَتَعَالَى كُلَّ لَيْلَةٍ إِلَى سَمَاءِ الدُّنْيَا حِينَ يَبْقَى ثُلُثُ اللَّيْلِ الآخِرُ، فَيَقُولُ : مَنْ يَدْعُونِي فَأَسْتَجِيبَ لَهُ، مَنْ يَسْأَلُنِي فَأُعْطِيَهُ، مَنْ يَسْتَغْفِرُنِي فَأَغْفِرَ لَهُ " .

আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ আমাদের মহা মহীয়ান রবব প্রতি রাতের এক তৃতীয়াংশ অবশিষ্ট থাকতে দুনিয়ার নিকটবর্তী আকাশে অবতরণ করে বলেন, আছে কেউ আমাকে ডাকবে, আমি তার ডাকে সাড়া দিবো? আছে কেউ আমার কাছে চাইবে, আমি তাকে দান করবো? আছে কি কেউ আমার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করবে, আমি তাকে ক্ষমা করে দিবো।
(বুখারী (অধ্যায় : তাহাজ্জুদ, অনুঃ রাতের শেষ ভাগে ও সলাতে দু‘আ করা, হাঃ ১১৪৫), মুসলিম (অধ্যায় : মুসাফিরের সলাত, অনুঃ রাতের শেষাংশে দু‘আ যিকিরে উৎসাহ দান) 

রাসুলুল্লাহ ﷺ বলেছেন:
“ফরজের পর শ্রেষ্ঠ সালাত হলো রাতের সালাত।” (সহিহ মুসলিম ১১৬৩)

অতএব, তাহাজ্জুদ অত্যন্ত ফজিলতপূর্ণ।

৩. হযরত মূসা (আঃ) ও বন্ধ্যা নারীর ঘটনা

এই কাহিনী কোনো সহিহ কিতাব (কুরআন, সহিহ হাদিস) বা বিশ্বস্ত তাফসিরে নেই। এটি ইসরাইলিয়াত (ইহুদি-খ্রিষ্টান বর্ণনা) ধরনের গল্প, যার সনদ নেই।

হ্যাঁ দোয়া ভাগ্য পরিবর্তন করতে পারে — এটা সহিহ হাদিসে আছে:

“দোয়া হলো তাকদিরকে পরিবর্তন করার মাধ্যম।” (তিরমিজি, হাসান)

কিন্তু মূসা (আঃ)-এর এই নির্দিষ্ট ঘটনার কোনো সহিহ দলিল খুজে পাইনি।

ঈসরায়েলী রেওয়ায়াত এর বিধান জানুনঃ- 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...