আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
785 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (0 points)
edited by
তাফসির ইবনে কাসিরে বেশকিছু ইসরাইলী বর্ণনা আছে।এখানে ইসরাইলী বর্ণনা বলতে আসলে কি বুঝায়?
তাওরাত,যাবুর,ইঞ্জিল বুঝায় নাকি ইসরাইলদের নিজেদের কোনো গ্রন্থ বুঝায়?
ইসরাইলী বর্ণনা  থাকার জন্য কী এই তাফসীর ততটা নির্ভরযোগ্য নয়?

1 Answer

0 votes
by (675,600 points)
জবাব
بسم الله الرحمن الرحيم 

শরীয়তের বিধান অনুযায়ী ইসরায়েলী রেওয়ায়েতের ক্ষেত্রে হুকুম হলো যেই রেওয়ায়াত অহি অথবা জ্ঞানের বিপরিত।
সেটা মানা যাবেনা।
(ফাতাওয়ায়ে ফরিদিয়্যাহ ১/৩৫২)

★ঈসরায়েলী রেওয়ায়াত দ্বারা মূলত বুঝানো হয়েছে যেটা বনি ঈসরাইল (ইহুদী নাছারা) দের কিতাব থেকে নকল করা হয়েছে।
,
অবশ্য আমাদের পরিভাষায় যেই ঘটনার আলোচনা বা তার কোনো অংশের আলোচনা কুরআন মাজীদ বা রাসুল সাঃ থেকে বর্ণিত আছে,সেটাকে ইসরায়েলী রেওয়ায়াত বলা যাবেনা।
বরং সেটাকে আমাদের দ্বীনের মধ্যেই গননা করা হবে।
আর যেই ঘটনার আলোচনা হুবহু  বা কোনো অংশ কুরআন মাজিদ,অথবা রাসুল সাঃ  এর থেকে 
পাওয়া যায়না,সেটকে ঈসরায়েলী রেওয়ায়াত বলা হয়।

যেহেতু ইহুদি নাসারারা তাদের কিতাবে বিকৃত করে ফেলেছে,তাই তাদের ঐ রেওয়ায়েতের উপর পুরোপুরি ভরসা করা যাবেনা,যেগুলো শুধুমাত্র তাদের কিতাবেই আছে।
সুতরাং সেই রেওয়ায়েত গুলোর হুকুম হলোঃ
যদি তার মধ্যে কোনো এমন বিষয়  পাওয়া যায়,যেটার সত্যতা কুরআন হাদীস থেকে পাওয়া যায়,তাহলে আমরা সেগুলো বিশ্বাস  করবো সেগুলো রেওয়ায়েত করাও আমাদের জন্য জায়েজ  হবে।

★যদি তার মধ্যে এমন বিষয় হয়,যেটার সত্যতা কুরআন হাদীস থেকে পাওয়া যায়না,কিন্তু সেটা কুরআন  হাদীসের উছুলের বিপরিতও নয়,তাহলে এমন রেওয়ায়েতের হুকুম হলো, যে আমরা সেই রেওয়ায়েত গুলো বিশ্বাসও করবোনা,আবার মিথ্যাও বলবোনা।
অবশ্য সেই রেওয়ায়েত গুলো বর্ণনা করার সুযোগ রয়েছে।
★আর যেসমস্ত রেওয়ায়েত গুলো কুরআন হাদীসের উছুলের খেলাফ,তাহলে সেগুলোকে আমরা মিথ্যা বলে সাব্যস্ত করবো,এমন রেওয়ায়েত কে বর্ণনা করা জায়েজ  হবেনা।

ঈসরায়েলী রেওয়ায়েত সম্পর্কে তাফসীরে ইবনে কাসিরে এসেছেঃ 
تفسير ابن كثير ط العلمية (1/ 10):
"ولهذا غالب ما يرويه إسماعيل بن عبد الرحمن السدي الكبير في تفسيره عن هذين الرجلين ابن مسعود وابن عباس، ولكن في بعض الأحيان ينقل عنهم ما يحكونه من أقاويل أهل الكتاب التي أباحها رسول الله صلى الله عليه وسلم حيث قال: «بلغوا عني ولو آيةً، وحدثوا عن بني إسرائيل ولا حرج، ومن كذب علي متعمدًا فليتبوأ مقعده من النار». رواه البخاري  عن عبد الله بن عمرو، لهذا كان عبد الله بن عمرو رضي الله عنهما قد أصاب يوم اليرموك زاملتين  من كتب أهل الكتاب، فكان يحدث منهما بما فهمه من هذا الحديث من الإذن في ذلك.
ولكن هذه الأحاديث الإسرائيلية تذكر للاستشهاد لا للاعتضاد؛ فإنها على ثلاثة أقسام: أحدها ما علمنا صحته مما بأيدينا مما يشهد له بالصدق، فذاك صحيح. والثاني ما علمنا كذبه بما عندنا مما يخالفه. والثالث ما هو مسكوت عنه لا من هذا القبيل ولا من هذا القبيل، فلانؤمن به ولانكذبه، ويجوز حكايته لما تقدم، وغالب ذلك مما لا فائدة فيه تعود إلى أمر ديني. ولهذا يختلف علماء أهل الكتاب في هذا كثيرًا.
ويأتي عن المفسرين خلاف بسبب ذلك، كما يذكرون في مثل هذا أسماء أصحاب الكهف، ولون كلبهم، وعددهم، وعصا موسى من أي الشجر كانت، وأسماء الطيور التي أحياها الله لإبراهيم، وتعيين البعض الذي ضرب به القتيل من البقرة، ونوع الشجرة التي كلم الله منها موسى، إلى غير ذلك مما أبهمه الله تعالى في القرآن مما لا فائدة في تعيينه تعود على المكلفين في دينهم ولا دنياهم. ولكن نقل الخلاف عنهم في ذلك جائز كما قال تعالى: {سيقولون ثلاثة رابعهم كلبهم، ويقولون خمسة سادسهم كلبهم رجمًا بالغيب، ويقولون سبعة وثامنهم كلبهم، قل ربي أعلم بعدتهم ما يعلمهم إلا قليل فلا تمار فيهم إلا مراءً ظاهرًا ولاتستفت فيهم منهم أحدًا} [الكهف: 22] فقد اشتملت هذه الآية الكريمة على الأدب في هذا المقام وتعليم ما ينبغي في مثل هذا، فإنه تعالى أخبر عنهم بثلاثة أقوال، ضعف القولين الأولين، وسكت عن الثالث، فدل على صحته إذ لو كان باطلًا لرده كما ردهما، ثم أرشد على أن الاطلاع على عدتهم لا طائل تحته، فقال في مثل هذا: {قل ربي أعلم بعدتهم} فإنه ما يعلم ذلك إلا قليل من الناس ممن أطلعه الله عليه، فلهذا قال: {فلاتمار فيهم إلا مراءً ظاهرًا} أي لاتجهد نفسك فيما لا طائل تحته ولاتسألهم عن ذلك فإنهم لايعلمون من ذلك إلا رجم الغيب.
فهذا أحسن ما يكون في حكاية الخلاف: أن تستوعب الأقوال في ذلك المقام، وأن تنبه على الصحيح منها، وتبطل الباطل، وتذكر فائدة الخلاف وثمرته لئلايطول النزاع والخلاف فيما لا فائدة تحته، فتشتغل به عن الأهم فالأهم. فأما من حكى خلافًا في مسألة ولم يستوعب أقوال الناس فيها فهو ناقص إذ قد يكون الصواب في الذي تركه، أو يحكي الخلاف ويطلقه ولاينبه على الصحيح من الأقوال فهو ناقص أيضًا، فإن صحح غير الصحيح عامدًا فقد تعمد الكذب، أو جاهلًا فقد أخطأ، وكذلك من نصب الخلاف فيما لا فائدة تحته أو حكى أقوالًا متعددةً لفظًا ويرجع حاصلها إلى قول أو قولين معنى فقد ضيع الزمان وتكثر بما ليس بصحيح فهو كلابس ثوبي زور، والله الموفق للصواب". 

যার সারমর্ম হলো  শরীয়তের উসুলের দিক লক্ষ্য করলে যদি সেগুলোকে সত্য বলে মনে হয়,তাহলে সেগুলো সত্য।
আর যদি শরীয়তের উছুলের দিক লক্ষ্য করলে সেগুলোকে মিথ্যা বলে মনে হয়,তাহলে সেগুলো মিথ্যা।
আর যদি শরীয়ত এক্ষেত্রে চুপ থাকে,তাহলে সেটাকে আমরা সত্যও বলবোনা,মিথ্যাও বলবোনা।
তবে সেটাকে বয়ান করা যাবে,তথা বয়ান করা জায়েজ আছে  । 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...