আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
497 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (45 points)
edited by
আসসালামু আলাইকুম, শায়খ।

আমরা একটা বিড়াল পালি, কিন্তুু পাশের বাড়ির আর একটা বিড়াল আছে, সেইটা আমাদের বিড়ালের সাথে খুব বেশি মারপিট করে। না দেখে বোঝা সম্ভব না, আমাদের বিড়ালের অবস্থা এতটাই খারাপ করে ফেলেছে যে ওর হাতে পায়ে পচন ধরা শুরু হয়েছে। আজকেও আমাদের বিড়ালের সামনের হাতের মাংস খুলে নিয়েছে পাশের বাড়ির বিড়ালটা।
বিড়ালদের কে ঘরে আটকে রাখা সম্ভব না,এখানে সবকিছু খোলা মেলা বাসা গুলি। এমন চলতে থাকলে আমাদের বিড়ালটা কিছুদিন পর হয়তো মারা যাবে। আর আমাদের যে প্রতিবেশীর বিড়াল, সেই প্রতিবেশীরাও অনেক বেশি খারাপ আচরণ করে। তাদেরকে এই বিষয়ে বলে কোন লাভ হবে না। এদিকে উনাদের বিড়ালের অত্যাচারে আমরা অনেকটা অতিষ্ঠ টাইপ, বারবার আমাদের এখানে আসে অন্য মেয়ে বিড়ালের জন্য এবং আমাদের বিড়ালকে মেরে যায়।  অনেকটা হাস্যকর এবং হালকা বিষয় মনে হচ্ছে হয়তো, কিন্তু আসলেই অনেক বেশি ক্লান্ত আমরা, আমাদের কেউ একদমই ভয় পায় নাই বিড়ালটা এবং আমাদের অনেক বেশি অত্যাচার করছে বারবার এখানে এসে।
ওই বিড়াল টাকে দূরে কোথাও ফেলে দিয়ে আসলে আমরা কি গুনাহগার হব? এছাড়া অন্য কোন রাস্তা দেখছিনা আমাদের বিড়ালটাকে বাঁচানোর, বারবার আক্রমণে মুমূর্ষু অবস্থা প্রায়।
উত্তম উপদেশ দিয়ে সাহায্য করবেন প্লিজ।
by (10 points)
ভাই/বোন,
ওস্তাদের কথার সাথে একাত্ম প্রকাশ করে আমি একটু যোগ করতে চাই আর তা হল, আপনার বিড়ালকে আগে চিকিৎসা করান। ওর আগে সুস্থতা দরকার। আমিও বিড়াল পালি। আপনি চাইলে আপনাকে পশু চিকিৎসক এর সাথে কথা বলিয়ে দিতে পারি। আর একান্ত পালতে না পারলে কাউকে খুজে বের করুন যে বিড়াল পালতে আগ্রহি। ফেইসবুকে অনেক গ্রুপ পাবেন। কোথাও ছেড়ে দিয়েন না, পালা বিড়াল বাহিরে সংগ্রাম করে টিকতে পারবেনা।

1 Answer

0 votes
by (574,200 points)
জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 


প্রথমেই কিছু মাসয়ালা জেনে নেইঃ
★প্রাণী লালন-পালন কয়েকটি শর্তে ভিত্তিতে জায়েয।

(১)প্রাণীকে নিয়মিত খাবার দাবার প্রদান করতে হবে।

হযরত ইবনে উমর থেকে বর্ণিত,

عن ابن عمر رضي الله عنهما قال : قال النبي صلى الله عليه وسلم : ( دخلتِ امرأةٌ النارَ في هِرَّة حبَسَتْها، لا هي أطعَمَتْها ولا هي ترَكَتْها تأكُلُ مِن خَشَاش الأرض حتى ماتَتْ )

নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, এক নারী একটি বিড়ালের কারণে জাহান্নামে গিয়েছিল, সে তাকে বেঁধে রেখেছিল। সে তাকে খাবারও দেয়নি, ছেড়েও দেয়নি, যাতে সে যমীনের পোকা মাকড় খেতে পারত। আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) সূত্রেও নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে অনুরূপ হাদীস বর্ণিত আছে।(সহীহ বোখারী-৩৩১৮,সহীহ মুসলিম-২২৪২)

(২)প্রাণীকে কোনো প্রকার কষ্ট দেয়া যাবে না।

عن جابر بن عبد الله رضي الله عنهما قال : ( نَهَى رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم عَن الضَّرْبِ في الوَجْهِ ، وَعَن الوَسْمِ في الوَجْهِ )

রাসূলুল্লাহ সাঃ মুখে প্রহার করা  এবং মুখে ট্যাটু অঙ্কন করা যাবে না।(সহীহ মুসলিম-২১১৬)

বিস্তারিত জানুনঃ  

★পশু-পাখির প্রতি নম্রতা প্রদর্শন ইবাদতের পর্যায়ভুক্ত। পশু-পাখিকে কষ্ট দেয়া গুনাহের কাজ।
,
রাসূলুল্লাহ সা. বলেছেন : “আল্লাহ তায়ালা প্রত্যেক বিষয়ে তোমাদের ওপর ‘ইহসান’ অত্যাবশ্যক করেছেন। অতএব তোমরা যখন হত্যা করবে, দয়ার্দ্রতার সাথে হত্যা করবে; আর যখন যবেহ করবে তখন দয়ার সাথে যবেহ করবে। তোমাদের সবাই যেন ছুরি ধারালো করে নেয় এবং তার যবেহকৃত জন্তুকে কষ্টে না ফেলে” (সহিহ মুসলিম : ১৯৫৫)।

আরো জানুনঃ 

★অন্যের সম্পদে তার সন্তুষ্টি চিত্তে অনুমতি ব্যাতিত হস্তক্ষেপ করা জায়েজ নয়।
   
وَعَنْ أَبِىْ حُرَّةَ الرَّقَّاشِىِّ عَنْ عَمِّه قَالَ : قَالَ رَسُوْلُ اللّٰهِ ﷺ : «أَلَا لَا تَظْلِمُوا أَلَا لَا يَحِلُّ مَالُ امْرِئٍ إِلَّا بِطِيبِ نَفْسٍ مِنْهُ». رَوَاهُ الْبَيْهَقِىُّ فِىْ شُعَبِ الْإِيْمَانِ وَالدَّارَقُطْنِىِّ فِى الْمُجْتَبٰى

আবূ হুররাহ্ আর্ রক্কাশী (রহঃ) তাঁর চাচা হতে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ সাবধান! কারো ওপর জুলুম করবে না। সাবধান! কারো মাল তার মনোতুষ্টি ছাড়া কারো জন্য হালাল নয়।
(সহীহ : আহমাদ ২০৬৯৫, শু‘আবুল ঈমান ৫১০৫, ইরওয়া ১৪৫৯, সহীহ আল জামি‘ ৭৬৬২,মিশকাতুল মাসাবিহ ২৯৪৬।)
,
★★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,বোন
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে পাশের বাড়ির বিড়ালকে আপনি কোনো শাস্তি দিতে পারবেননা,মালিকের অনুমতি ব্যাতিত তাকে অন্য কোথাও রেখে আসতেও পারবেননা।
,
যেহেতু প্রাণি পোষার যে কয়টি শর্ত রয়েছে,তার মধ্যে অন্যতম হলো ""প্রাণীকে কোনো প্রকার কষ্ট দেয়া যাবে না""
সুতরাং আপনার জন্য উচিত যে ঐ বিড়ালের মালিকের অনুমতি নিয়ে তাকে অন্য কোথাও রেখে আসা,বা অন্য কোনো সমঝোতায় আসা।
যদি কোনো কিছুতেই সমাধান না হয়,তাহলে আপনার বিড়াল যেহেতু আপনার বাসায় থাকার কারনেই এসব যন্ত্রণার মুখোমুখি হচ্ছে,তাই বিড়াল পোষার শর্ত পালন না হওয়ার কারনে আপনার বিড়ালকেই অন্যত্রে রেখে আসা উচিত। 
যেখানে সে ভালোভাবে থাকতে পারবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...