আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
47 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (1 point)
اَلسَّلَامُ عَلَيْكُمْ وَرَحْمَةُ ٱللَّٰهِ وَبَرَكَاتُهُ

শায়েখ আমার এক বান্ধবী একটা মাসায়েল জানতে চেয়েছে সে যেভাবে বলেছে আমি ঠিক সেভাবে লেখে দিচ্ছি।
আমার বয়স যখন ১৭ তখন আমার দ্বীনের ব্যাপারে এত বুঝ ছিলোনা কারণ আমি ইলমের সাথে জড়িত ছিলাম না। আমি অনলাইনে একটা জিনিস কিনতে গিয়ে একজন ছেলের সাথে পরিচয় হয়। আমি তাকে ভাই হিসেবে ট্রিট করতাম কিন্তু সে প্রায় আমার খোঁজ খবর নিতে নক করতো বিষয় টা আমার ফিতনা মনে হলে আমি তাকে বলি আমি আসলে এসব পছন্দ করিনা এগুলো যায়েজ নেই। তখন সে আমাকে পছন্দ করার কথা বলে আর বলে আমার পরিবারের সাথে যোগাযোগ করে আমার বিষয়ে প্রস্তাব দিবে (যদি আমার আপত্তি না থাকে) আমি বলেছি ঠিক আছে কিন্তু কোনো যোগাযোগ হবেনা। তখন সেও রাজি হয় কিন্তু কদিন পর আবারও নক করে এবং পরিবারের বিষয় বিভিন্ন জিনিস জিজ্ঞেস করে, আমিও উত্তর দেই। এভাবে কথা বলতে বলতে একটা সময় পর বিষয় টা হারাম রিলেশনসীপে গড়ায়। আমি যখন বুঝতে পারছি তখন তাকে বললে সে আমাকে গোপনে বিয়ে করার কথা বলে এবং আমাকে এক প্রকার ব্লাকমেইল করে যেন আমি না না বলতে পারি। ব্লাকমেইল করে মরে যাবে এসব বলে।  আমি রাজি হই কারন আমাকে যতটুকু সে বলেছিল সে পাচ ওয়াক্ত সালাত আদায় করে এবং তাবলীগের দাওয়াতের কাজ করে। সত্যি বলতে এক প্রকার বাধ্য হয়ে রাজি হই। বিয়েতে সেখানে দুইজন সাক্ষী ছিলো ছেলে পক্ষের, দুজনের বয়স ছিলো ২৫ বছরের মতো। মেয়ে পক্ষের কোনো সাক্ষী ছিলো না। আমি এক প্রকার বাধ্য হয়ে বিয়ে করি কারণ সে তার সুইসাইড এর কথা বলতো। এরপর আমি তার মধ্যে দ্বীনের কোনো বিষয় সেভাবে দেখতে পাইনা, অথচ সে তাবলীগ করতো। সে সালাতের ব্যাপারেও সচেতন না, প্রায়ই নামাজ কাযা হয়। তার সাথে আমার বিয়ের দুই বছর হয়েছে এখন পর্যন্ত শারীরিক কিছু হয়নি কারণ আমি এই বিষয়ে ভীষণ কঠোর ছিলাম।৷ আর আমিি আসলে অপরাধ বোধে নিজেকে শেষ করছিলাম তাই তার সাথে এমনিতে দেখা করলেও শারীরিক কিছু হয়নি আলহামদুলিল্লাহ।
শাইখ আল্লাহর কসম আমাদের মধ্যে শারীরিক কোনো সম্পর্ক হয়নি আর আমি সত্যি তার মতো মানুষের সাথে আর থাকতে চাই না। আমার মা বাবাও তার সাথে আমার বিয়ে দিতে রাজিনা। আমি কি নিজেকে গড়ার আর একটা  সুযোগ পাবোনা?  আমাকে কি আল্লাহ মাফ করবেন? আমি আইওএম এ ভর্তি হওয়ার পর নিজের জীবনের আসল উদ্দেশ্য জানতে পারি।  আমার সত্যি তার উপর থেকে মন উঠে গেছে।
আমি প্রয়োজনে কখনো বিয়ে করবোনা তবুও আমি এই সম্পর্ক থেকে মুক্তি চাই। আমি নিজেকে ভেঙে ফেলেছি কিন্তু আমি আবারও নিজেকে দ্বীনের আলোয় আলোকিত করতে চাই, আমার এখন কি করার উচিত আর এখানে তালাকের বিধানটাই বা কি?  এখানে কি বিয়ে হয়েছে?
শায়েখ আমার বান্ধবী এটা কোথাও পোস্ট করতে না করছে ও মানসিক ভাবে ভীষন চাপে পড়ে গেছে তাই দয়া করে ওর পাপ গোপন রাখবেন।

1 Answer

0 votes
ago by (80,280 points)

ওয়া আলাইকুমুস সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।

জবাবঃ

ইসলামী শরীয়তে বিবাহ শুদ্ধ হবার জন্য কয়েকটি শর্ত রয়েছে। যথা-

. বর ও কনেকে কিংবা তাদের প্রতিনিধিকে ইজাব তথা প্রস্তাবনা ও কবুল বলতে হয়।

. উক্ত ইজাব ও কবুলটি বলতে হয় দুইজন প্রাপ্ত বয়স্ক মসলিম পুরুষ বা একজন পুরুষ ও দুইজন মহিলার সামনে।

,

قوله صلى الله عليه وسلم : ( لا نكاح إلا بولي وشاهدي عدل ) رواه البيهقي من حديث عمران وعائشة ، وصححه الألباني في صحيح الجامع (7557

বিয়ের আকদের সময় সাক্ষী রাখতে হবে। রাসুলুল্লাহ  সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “অভিভাবক ও দুইজন সাক্ষী ছাড়া কোন বিবাহ নেই।” [তাবারানী কর্তৃক সংকলিত, সহীহ জামে (৭৫৫৮)]۔

,

. ইজাব ও কবুলটি উভয় সাক্ষ্যি স্বকর্ণে শুনতে হবে।

উক্ত তিনটির কোন একটি শর্ত না পাওয়া গেলে ইসলামী শরীয়তে বিবাহ শুদ্ধ হয় না।

,

উপরোক্ত তিনটি শর্ত  পাওয়া গেলে বিবাহ হবে, অন্যথায় বিবাহ হবেনা।

,

বিবাহ সহীহ হওয়ার জন্য শর্ত হল দু’জন আযাদ প্রাপ্ত বয়স্ক বিবেকবান দুই জন মুসলিম স্বাক্ষীর সামনে পাত্র/পাত্রি প্রস্তাব দিবে আর অপরপক্ষে পাত্র/পাত্রি তা কবুল করবে। আর সাক্ষীগণ উভয়ের কথা সুষ্পষ্টভাবে শুনবে।

আরো জানুনঃ 

https://ifatwa.info/11771/

,

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!

,

প্রশ্নে উল্লেখিত বিবাহে যদি মেয়ে ও ছেলে যেই সময়ে বিবাহ করেছিলো, সেই সময়ে যদি উভয়েই বালেগ, বালেগাহ হয়ে থাকে, আর উপরোক্ত শর্ত সমূহ মেনে তারা বিবাহ করে থাকে, তাহলে সেই বিবাহ হয়ে গিয়েছে। এক্ষেত্রে সেই স্বামীর পক্ষ থেকে তালাক ব্যতীতত এই মুহুর্তে সেই মহিলার/মেয়ের অন্যত্রে বিবাহ বসা জায়েজ হবেনা। সে এখনো সে ছেলের স্ত্রী।

,

হ্যাঁ যদি সেই ছেলে বিবাহ হয়ে যাওয়ার পর কোনো সময়ে সেই স্ত্রীকে তালাক প্রদানের ক্ষমতা দিয়ে থাকে, বা নিকাহনামায় ১৮ নং ধারায় হ্যাঁ লিখে থাকে, তাহলে স্ত্রী নিজেকে নিজে তালাক প্রদানের ক্ষমতা পেয়ে যাবে। সেই ক্ষমতাবলে সেই স্ত্রী নিজেকে নিজে তালাক দিয়ে ইদ্দত পালন করার পর অন্যত্রে বিবাহ বসতে হবে।

,

আর যদি সেই বিবাহে উপরোক্ত শর্ত সমূহ থেকে কোনো একটি শর্ত মানা না হয়ে থাকে, অথবা সেই সময়ে যদি সেই মেয়ে বালেগাহ না হয়ে থাকে, তাহলে উক্ত বিবাহই সহীহ হয়নি। তাই তালাকের কোনো প্রশ্নই উঠেনা।

এই মূহুর্তে মেয়ের অন্য কোথাও পারিবারিক ভাবে বিয়ে হলে বিয়ে জায়েজ হবে।

আরো জানুনঃ

https://www.ifatwa.info/4801


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী আব্দুল ওয়াহিদ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...